১. ২৫ মার্চ রাতে ঢাকার ইপিআর এ হামলার কথা শোনার পর বলেছিলেন, উই রিভোল্ট। নিজে যাচ্ছিলেন সোয়াত জাহাজ থেকে গোলাবারুদ খালাস করতে। কিন্তু রিভোল্টের পর নিজের কমান্ডিং অফিসার জানজুয়াকে গ্রেফতার ও হত্যা করেন। সুযোগ পেয়ে ২৭ তারিখ রেডিওতে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। এর আগে আবেগের বশে হোক আর দায়িত্ব নিয়েই হোক নিজেকে প্রেসিডেন্ট হিসেবেও ঘোষণা করে বসেন। সে যাক। যুদ্ধ শুরু। নিজে একটি সেক্টর ও নিজ নামের অদ্যাক্ষর জেড ফোর্স-এর প্রধান হলেন। দেশ স্বাধীন করার পর বঙ্গবন্ধুর সরকার তাঁকে বীর উত্তম উপাধি দেন। একই সাথে সেক্টর কমান্ডার, বীর উত্তম ও স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠকারী আর কেউ ছিলো না। তাই তিনি তখন থেকেই নায়ক...
২. দিন যায়। সময়ের পরিক্রমায় তিনি হন চীফ অফ আর্মি স্টাফ। ৩ নভেম্বর এক অভ্যূত্থানে তাঁকে গৃহবন্দী করেন ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ। আর্মিতে তুমুল জনপ্রিয় নায়কের গ্রেফতারে দ্বিধাগ্রস্থ ছিল সৈনিক রা। বাসার টেলিফোন লাইন কাটা থাকলেও বেড রুমের টেলিফোন থেকে জিয়া ফোন করেন কর্নেল তাহেরকে, বলেন সেভ মাই লাইফ। তাহের দলবল নিয়ে ও অন্যান্য বাহিনীর সহায়তায় নায়ককে মুক্ত করে ৭ নভেম্বর। সেদিনের রুম থেকে জিয়ার বের হওয়ার ভিডিও আমার কাছে শতাব্দির সেরা এন্ট্রি। সৈন্যরা ও জনগণ নায়ককে বানিয়ে দেয় মহানায়ক...
৩. জিয়ার সাথে তাহেরের কোন চুক্তি ছিল না। তবে দাবী ছিল জিয়া যেন, রেডিও স্টেশনে গিয়ে তাহেরদের পক্ষ হয়ে ভাষণ দেন আর বিভিন্ন দাবীও যেন পূরণ করেন। ১৯৭১-এর মত আবারও তড়িৎ সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নায়ক এবারও ভুল করলেন না। তাহেরের ফাঁদে পা দিলেন না। অবশ্য মহানায়ককে পরামর্শ দিয়ে বাঁচিয়েছিল, কর্নেল আমিনুল হক, মীর শওকত আলীরা। তাহের মীর শওকত কে বলেন, ইউ শাট আপ, জবাবে মীর শওকত তাহেরকে বলেন, ইউ গেট লস্ট। তাহের রাগ করে চলে যায়। তাহের পরে তার অনুসারীদের বলে, খেলা হাতের বাইরে চলে গেল...
৪. এরপর শুধুই এগিয়ে যাওয়ার পালা। যেই আর্মিতে কোন শৃঙ্খলা ছিল না সেই আর্মিতে চেইন অব কমান্ড প্রতিষ্ঠা করেন। দেশের স্বার্থে কিছুদিন প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক থেকে হয়ে যান রাষ্ট্রপতি। বহুদলীয় গণতন্ত্র ফেরত আনেন। ৬ বছর নির্বাসনে থাকা শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে ধানমন্ডির ৩২ নং বাড়ি বুঝিয়ে দেন। মহানায়ক হয়ে যান, বাংলাদেশের এ যাবৎ কালের শ্রেষ্ঠ সরকারপ্রধান...
স্যালুট মহানায়ক!
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:০৩