ধিক্কার নিজেরে! চেতনারে!!! রাষ্ট্রকে!!!! বীর শ্রেষ্ঠ আব্দুর রউফের শাহাদাৎ বার্ষিকীতে ছিলনা কোন রাষ্ট্রীয় কর্মসূচী!!!!!!!!!!!!!!
যে জাতি তার ইতিহাস মনে রাখে না, তার বীরদের সম্মান দেয়না সে জাতি উন্নতি করতে পারেনা, আর কোন বীরের জন্ম দেয়না।
আমরা আসলেই কি?
রাষ্ট্র আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছে?
জীবন জীবিকার ব্যাস্ত নাগরিককে রাষ্ট্রীয় মিডিয়া, নাটক, অনুষ্ঠান, ঘৌষনা, প্রচারণা স্মরণ করিয়ে দেবে-তার অস্ততি্বের গোড়াার কথা। সংসাকৃতিক সংগঠনগুলো কেবলই কি অর্থের জণ্যই তাদের সকল দৌড়!
আর সবশেষে আমরা সাধারন নাগরিক। জীবেন দৌড়ে পূজিবাদের চাবুকে জর্জরিত সকাল থেকে রাত াব্দি খেটে খাওয়া সাধারন মানুষ- মনে পড়ায় শুধূ কলজেটাতে যেন জ্বলছে। আহা কি হল? কেমনে ভুলে গেলাম। একটু স্মরণ করার কথা মনে করেওতো এটলিষ্ট নিজের দায় থেকে মুক্ত হতে পারতাম....... অথচ বাস্তবতা কত দু:খজনক....
রোববার নীরবে পালিত হলো দেশমাতৃকার জন্য জীবন উৎসর্গকারী বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফের শাহাদাৎবার্ষিকী।
১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে বীরদর্পে যুদ্ধ করে শহীদ হন জাতির এ শ্রেষ্ঠ সন্তান।
কিন্তু স্বাধীনতা সংগ্রামের এ শ্রেষ্ঠ সৈনিকের ৪৩তম শাহাদাৎবার্ষিকী পালনে ছিল না রাষ্ট্রীয় কোনো আয়োজন। এ নিয়ে ফরিদপুরে ও রাঙামাটিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে রয়েছে চরম ক্ষোভ।
দিবসটি পালনে তাঁর সমাধিক্ষেত্র রাঙামাটিতে ছিলনা রাষ্ট্রীয় কোনো আয়োজন। তবে গ্রামবাসীর উদ্যোগে পারিবারিকভাবে ফরিদপুরের মধুখালীতে মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
দুপুরে মধুখালীর আড়পাড়া গ্রামে রউফের বাড়ি প্রাঙ্গণে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা খোরশেদ আলমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক আবু হেনা মোরশেদ জামান বলেন, বিগত দিনগুলোতেও দিনটি সরকারি উদ্যোগে হওয়ার দরকার ছিলো। কিন্তু তা নানা কারণে তা হয়ে ওঠেনি। আগামীতে স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে শাহাদাৎবার্ষিকী পালন করা হবে ।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিজিবি প্রতিনিধি মেজর আনোয়ার জাহিদ, মধুখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমার মোল্লা, ইউপি চেয়ারম্যান সাহাবউদ্দিন আহমেদ সতেজ প্রমুখ।
সভা শেষে জেলা প্রশাসন ও বিজিবির পক্ষ থেকে বীর মাতাকে উপহার সামগ্রী দেওয়া হয় ও গ্রামবাসীর মধ্যে খাবার বিতরণ করা হয়।
এদিকে, আব্দুর রউফের শাহাদাৎবার্ষিকীতে কোনো রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন পার্বত্য চট্টগ্রামের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক সাংবাদিক সুনীল কান্তি দে।
তিনি বলেন, এমন একটি দিনে রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা না থাকাটা খুবই দুঃখজনক। সরকারি পদে থেকে যারা এ আনুষ্ঠানিকতা করেন না। তাদের শাস্তি হওয়া উচিত। এটি জাতির জন্য কলঙ্কজনক।
তৎকালীন ইপিআর এ (বর্তমানে বিজিবি) কর্মরত মুন্সি আবদুর রউফ ছিলেন ল্যান্স নায়েক। ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে বিডিআর দলের সঙ্গেও তিনিও ছুটে আসেন পার্বত্য চট্টগ্রামে।
২০ এপ্রিল রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাটে শত্রু বাহিনীর সঙ্গে তুমুল যুদ্ধ শুরু হলে মুন্সি আবদুর রউফ বীরদর্পে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে থাকেন। তিনি একাই শত্রু বাহিনীর তিনটি নৌযান ধ্বংস করেন।
ওইদিনের যুদ্ধের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে তার সমরসঙ্গী ও রাঙামাটি জেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রবার্ট রোনাল্ড পিন্টু বাংলানিউজকে জানান, ওইদিন পাক বাহিনীর গোলার আঘাতে আমাদের নৌযানও ধ্বংস হয়েছিল। আমরা বেশ কয়েকজন সাঁতরে পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে আশ্রয় নিই। মুন্সি আব্দুর রউফকেও সেখান থেকে সরে যাওয়ার জন্য অনেক ডাকাডাকি করি। কিন্তু তিনি বললেন, তোমরা নিরাপদে সরে যাও। আমি যুদ্ধ চালিয়ে যাব। হঠাৎ পাক বাহিনীর ছোঁড়া মর্টারের আঘাতে ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায় মুন্সি আব্দুর রউফের শরীর।
পরে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দয়াল কৃষ্ণ চাকমা নামে এক পাহাড়ি মুন্সি আব্দুর রউফের ছিন্ন ভিন্ন শরীর একত্রিত করে সেখানেই সমাধিস্থ করেন।
মুন্সি আব্দুর রউফের এ বীরত্বের জন্য তাঁকে মুক্তিযুদ্ধের শ্রেষ্ঠ সম্মাননা ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
স্বাধীনতা লাভের ২৫ বছর পরে ১৯৯৬ সালে তাঁর সমাধিস্থল চিহ্নিত করা হয়। এরপর থেকে স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসেই শুধু রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতায় তাঁর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানো হয়। আর তাঁর বীরমাতা মুকিদুন্নেসাকে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ ও বিজিবির পক্ষ থেকে সম্মাননা দেওয়া হয়।
কিন্তু ২০ এপ্রিল তাঁর শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রীয়ভাবে বিজিবি কিংবা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের উদ্যোগে কোনো আয়োজন করা হয় না।
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার সালামতপুর গ্রামে ১৯৪৩ সালের ১ মে জন্মগ্রহণ করেন বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ। বাবা মেহেদী হোসেন স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামতি করতেন। তিন ভাই বোনের মধ্যে আব্দুর রউফ ছিলেন সবার বড়।
উপজেলার কামারখালী হাইস্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়াকালীন তৎকালীন ইপিআর বর্তমানে বিজিবিতে যোগ দেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সঙ্গে যুক্ত হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন
তথ্য সূত্র: সংবাদটা পড়ে অব্দি নিজেকে খুব ছোট মনে হচ্ছিল। তাই বিবেকের জ্বালাটা সবাইকে ছড়িয়ে দিলাম।