somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আজ ফিলিস্তিনিদের ‘নাকবা’র ৬৬ বছর পূর্ণ হলো!!!! মাতৃভূমির জন্য, আত্মপরিচয়ের জন্য রক্তাক্ত সংগ্রামের ৬৬ বছর

১৫ ই মে, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্বাধীনতাহীনতায়
কে বাঁচিতে চায়রে? কে বাঁচিতে চায়???

তারপরও যদি হয় নিজ ভুমি থেকে বিতাড়িত- তার কষ্ট যন্ত্রনা আমরা ৯ মাসেই বুঝেছি! কি যন্ত্রনার সে সময়!!!!নিজ ভুমি, আর আত্মপরিচয়ে বলিয়ন হবার কি দুর্বার অনুভব.....
ফিলিস্তিনের নাগরিকরা বুঝতছেন আজ ৬৬ বছর হল!!!!!!

সামুর পাঠকদের জন্য লেখাটা পুরোটাই কপি করে দিলাম! (অনেকে আলসি করে লিংকেও ক্লিক করতে চায় না ;) তাই )



আজ ফিলিস্তিনিদের ‘নাকবা’র ৬৬ বছর পূর্ণ হলো৷
আরবি শব্দ নাকবার অর্থ মহাবিপর্যয়৷ বলপূর্বক ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েলের আনুষ্ঠানিক পত্তন ও স্বাধীনতা ঘোষণা৷ ৬৬ বছর আগে ১৯৪৮ সালের ১৪ মে তেলআবিবে জায়নবাদী নেতা বেন গুরিয়ান এই ঘোষণা দেন৷ তার পরদিন ১৫ মে আরব দেশগুলো একযোগে ইসরায়েল আক্রমণ করলেও শোচনীয়ভাবে পরাজয় বরণ করে আমেরিকা-ব্রিটেনের অস্ত্র-সমর্থনপুষ্ট ইসরায়েলের কাছে৷ ১০ লাখের মধ্যে সাড়ে সাত লাখ ফিলিস্তিনি নিজ ভূমি থেকে বিতাড়িত হয়ে বিভিন্ন আরব দেশে আশ্রয় নেয়৷ সেই শরণার্থী জীবন চলছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে৷ আর ইসরায়েল দশকের পর দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের ভূমি ও সম্পদ দখল করে নিচ্ছে, নিত্যনতুন ইহুদি বসতি স্থাপন করছে, ধ্বংস করে দিচ্ছে ফিলিস্তিনি আরবদের শত শত বছরের পুরোনো জনপদগুলো৷...

১৮৯৭ সালে সুইজারল্যান্ডের ব্যাসেলে প্রথম জায়নবাদী কংগ্রেসে ইহুদিরা ফিলিস্তিনে এই রাষ্ট্র স্থাপনের প্রস্তাব করে৷ তখন ফিলিস্তিন ছিল অটোমান সাম্রাজ্যের অধীন৷ অটোমান সুলতান আবদুল হামিদ এই প্রস্তাব নাকচ করে দেন৷ প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯১৭ সালে ফিলিস্তিন ও ট্রান্স জর্ডান ব্রিটিশদের দখলে যায়৷ ওই বছর ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বেলফোর ফিলিস্তিনে ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ব্রিটেনের সহযোগিতা প্রদানের অঙ্গীকার ঘোষণা করেন৷ ইউরোপ থেকে ক্রমেই ইহুদিরা গিয়ে আবাস গড়তে থাকে ফিলিস্তিনে৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলারের নেতৃত্বে ইউরোপজুড়ে ইহুদিনিধন শুরু হলে ফিলিস্তিনে ইহুদিদের গমন বেড়ে যায়৷ ১৯৪৭ সালে নবগঠিত জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে ইহুদি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে দুই ভাগ করে দুটি রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা করে৷ ১৯৪৮ সালের ১৪ মে ব্রিটেন আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের কর্তৃত্বের অবসান ঘটায়, জায়নবাদীরা ঘোষণা দেয় স্বাধীন ইসরায়েল রাষ্ট্রের৷ ১৫ মে তাই নাকবা৷
এর পরের সাড়ে ছয় দশকের ইতিহাস একদিকে ইসরায়েল রাষ্ট্রের শক্তিশালী, আগ্রাসী ও সম্প্রসারণশীল হওয়ার, অন্যদিকে ফিলিস্তিনিদের নিগ্রহের, ভূমি হারানোর ও হত্যা-নিপীড়নের শিকার হওয়ার৷ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সর্বাত্মক সমর্থন-সহায়তায় ইসরায়েল ক্রমশ পরিণত হয়েছে এক দুর্ধর্ষ রাষ্ট্রে৷ অবশ্য অনেক উদারপন্থী ইহুদি ইসরায়েলের দখলদাির ও আগ্রাসনকে সমর্থন দেয় না, এমনকি কোনো কোনো গোঁড়া ইহুদি ইসরায়েল রাষ্ট্রকে ইহুদিদের রাষ্ট্র হিসেবে মানে না৷ তবে তাদের কণ্ঠস্বর ঠাঁই পায় না পাশ্চাত্যের মূলধারার. মিডিয়ায়!
সিংহভাগ গণমাধ্যমে৷ তবু তাঁরা থেমে নেই৷
তেমনই একজন হলেন ইউরি আভনেরি৷ শান্তিবাদী আন্দোলন গুশ শালেমের প্রতিষ্ঠাতা ইউরি আভনেরি জায়নবাদী প্যারা মিলিশিয়াগোষ্ঠী ইরগুনের সদস্য ছিলেন৷ কিন্তু তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি ১৯৩৮ সালে বেরিয়ে আসেন৷ ১৯৪৮ সালে আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে একটি ব্রিগেডের কমান্ডার ছিলেন৷ ইসরায়েলের সংসদ নেসেটেরও সদস্য হন৷ ইসরােয়ল রাষ্ট্র অভ্যুদয়ের অল্প সময়ের মধ্যেই তিনি উপলব্ধি করেন যে ইহুদিদের নামে গঠিত হলেও শেষ পর্যন্ত ইসরায়েল কিছু উগ্রপন্থী ও ধনী ইহুদির ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব স্থাপনের জন্য নিবেদিত৷ ফলে, তিনি ফিলিস্তিন-ইসরায়েল শান্তি স্থাপনের কাজে নামেন, মুখোমুখি হন হুমকি ও লাঞ্ছনার৷ ১৯৮২ সালে অবরুদ্ধ বৈরুতে গিয়ে ফিলিস্তিন নেতা ইয়াসির আরাফাতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন৷ এটা ছিল কোনো ফিলিস্তিনি নেতার সঙ্গে কোনো ইসরায়েলি নেতার প্রথম সাক্ষাৎ৷ এ জন্য ইউরি আভনেরির মা তাঁকে ত্যাগ করেন৷ ৯০ বছর বয়সী আভনেরি এখনো ইসরায়েলের নানা অন্যায়-অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে যাচ্ছেন৷ আরেক ইসরায়েলি শান্তিবাদী কর্মী ও লেখক ইয়ায়েল লোটান৷ তিনি ২০০৮ সালে ইসরায়েলের ৬০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ভারতীয় সাময়িকী ফ্রন্টলাইন-এ ‘সিক্সটি ইয়ারস অব সিন’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ লেখেন৷ সে জন্য তিনি উগ্র ইহুদি ও ইসরায়েলিদের নিন্দা-সমালোচনার শিকার হন৷ কিন্তু ২০১০ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত লোটান ফিলিস্তিনিদের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলে গেছেন৷
আভনেরি-লোটানদের প্রয়াস বিফলে যায়নি৷ এইটন বরস্টেইন ও তাঁর তরুণ ইসরায়েিল বন্ধুরা মিলে প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘জকরত’ নামের একটি সংগঠন, যার অর্থ স্মরণ করা৷ ১৯৪৮ সালে কীভাবে শত শত ফিলিস্তিনি গ্রাম নিশ্চিহ্ন করা হয়েছিল আর আজকের ইসরায়েলে সেগুলোর অবস্থান কোথায় ছিল, তা ইসরায়েলিদের কাছে তুলে ধরার জন্য কাজ করছে জকরত৷
ইসরায়েল সরকার ‘নাকবা’ স্মরণ করা নিষিদ্ধ করেছে৷ দুই বছর আগে নাকবা দিবসে তেলঅাবিবে জকরত কার্যালয়ে হানা দেয় ইসরায়েলি পুলিশ, নিগৃহীত করে এর কর্মীদের৷ কিন্তু তাতে দমে যায়নি এই সংগঠন৷ এবারের নাকবা পালন করতে তারা তৈরি করেছে ‘আই-নাকবা’ নামে মোবাইল ফোনের জন্য একটি অ্যাপ্লিকেশন৷ এটি ব্যবহার করে জানা যাবে ১৯৪৮ সালে কীভাবে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ফিলিস্তিনিদের আর আজকের ইহুদি বসতিগুলো গড়ে তোলা হয়েছে কোেনা কোনো ফিলিস্তিনি জনপদে৷ এভাবেই তো ইতিহাসের সত্য ফিরে আসে৷ জায়নবাদীদের শত চেষ্টার মুখেও মুছে যায় না ফিলিস্তিনিদের হাজার বছরের অধিকার আর ছয় দশকের বেশি সময়ের সংগ্রামের ইতিহাস, মুছে যায় না ইসরায়েলের ৬৬ বছরের পাপ৷

কৃতজ্ঞতা: মূল লেখক-আসজাদুল কিবরিয়া: সাংবাদিক৷

প্রকাশক হিসাবে প্রথম আলো।
[email protected]
মূল সূত্র:


সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মে, ২০১৪ রাত ৮:০২
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

প্রজাতির শেষ জীবিত প্রাণ !

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫১



বিবিসির একটা খবর চোখে এল সেদিন । উত্তরাঞ্চলীয় সাদা গন্ডার প্রজাতির শেষ পুরুষ গন্ডারটি মারা গেছে । তার নাম ছিল সুদান । মৃত্যুর সময় তার বয়স ৪৫। বিবিসির সংবাদটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর মধ্যে সে একজন ।।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ১৩ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯



আপনারা কতজন Umma Kulsum Popi চেনেন, আমি ঠিক জানি না। আমার পর্যবেক্ষণ মতে, বাংলাদেশে সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ এবং পরিমার্জিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের একজন হলেন উনি। যদি বলি দেশের সেরা পাঁচজন কনটেন্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিস অস্বীকার করে রাসূলের (সা.) আনুগত্য সম্ভব

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আর আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=কবিতাগুলো যেনো এক একটি মধুমঞ্জুরী ফুল=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:২০



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনের মাধুরী মিশিয়ে যে কবিতা লিখি
কবিতাগুলো যেনো আমার এক একটি মঞ্জুরী লতা ফুল,
মনের ডালে ডালে রঙবাহারী রূপ নিয়ে
ঝুলে থাকে কবিতা দিবানিশি
যে কবিতার সাথে নিত্য বাস,
তাদের আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পোষ্টে যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ২/১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, বুঝবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৩ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



আপনার পোষ্ট যদি ক্রমাগতভাবে ০ কিংবা ১'টি মন্তব্য পেতে থাকে, তখন খোঁজ নিলে দেখবেন যে, সোনাগাজী সেমি-ব্যানে আছে!

কোন বিষয়ের উপর অনেক মানসম্পন্ন পোষ্ট লিখলেও সামুতে আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×