somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের দেশে কবে সেই ছেলে হবে? সত্যটাকে সত্য সাহসে অনায়াসে বলবে!!!!! কুলদীপ নায়ারের বিশ্লেষন ও আমাদের নপুংষকতা!

১৫ ই জুন, ২০১৫ রাত ৯:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভারতের প্রখ্যাত সাংবাদিক ও সাবেক কূটনীতিক কুলদিপ নায়ার। তিনি ভারতের দ্য স্টেটসম্যান পত্রিকায় বিশ্লেষণ করেছেন নরেন্দ্র মোদির সামপ্রতিক ঢাকা সফর নিয়ে।

কুলদিপ নায়ার লিখেছেন, ঢাকায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরটি হয়েছে অসময়ে। তিনি সেখানে কেবল ভারত-বিরোধী অনুভূতিকেই আরও তীব্রতর করে তুলেছেন। কেননা, নয়া দিল্লিকে নিরপেক্ষ হিসেবে মনে হয়নি।

কুলদিপ নায়ার আরো্ লিখেছেন:

আমি জানি না কেন, এবং কতদিন ধরে আমাদেরকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্তৃত্বপরায়ণ শাসনকে সমর্থন দিয়ে যেতে হবে। এটা সত্য যে, তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। শেখ মুজিব পশ্চিম পাকিস্তান থেকে পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন করেছেন। কিন্তু এ পরিচয়ের কারণেই হাসিনা সংবিধান ও প্রচলিত নিয়মনীতিকে অবজ্ঞা করার অধিকার পেতে পারেন না।

একটি উদাহরণ দেখুন, ঢাকা ও চট্টগ্রামের সাম্প্রতিক সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। শাসক দল আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের পক্ষে ব্যাপক হারে বাক্সে ব্যালট পেপার ঢোকানো হয়েছে। ভোটার ও অন্যান্যদের কাছে চিত্রটি ভয়াবহ হয়ে ধরা দেয়। শেখ মুজিব নিশ্চিতভাবে তার কবরে ঘুমিয়ে পড়ছেন। তিনি রাওয়ালপিন্ডির সামরিক জান্তা শাসকদের বিরুদ্ধে মানুষের আত্মপ্রকাশের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
...

ভারত অনেক ভাগ্যবান। কারণ, যেভাবে প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু দেশকে গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ করে গেছেন, তা এখনও কায়মনোবাক্যে অনুসরণ করা হয়। কিন্তু তার কন্যা ইন্দিরা গান্ধী গণতন্ত্রকে কক্ষচ্যুত করেছিলেন। তিনি কেবলমাত্র গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধই করেননি, অনেক মৌলিক অধিকারকেও বাতিল করেছিলেন। কিন্তু মানুষ বিষয়গুলোকে ভালোভাবে নেয়নি। নির্বাচনে মানুষ নিজেদের দমিত ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিল। এটা অভাবনীয় ছিল যে, এমনকি মহান ইন্দিরা গান্ধীও পরাজিত হতে পারেন!

১৯৮০ সালের দিকে পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর তিনি স্রেফ দায়িত্ব পালনকারী আমলাদেরও শাস্তি দেয়ার পথ বের করে নিয়েছিলেন। এটা দুঃখজনক যে, পূর্বের জনতা সরকারের ঘনিষ্ঠ ছিল বলে যাকেই সন্দেহ করেছিলেন তিনি, তার বিরুদ্ধেই প্রতিশোধ নেয়া হয়েছিল। জরুরী অবস্থার রচয়িতা ভারতের কংগ্রেস পার্টি শেষপর্যন্ত শিক্ষা পেয়েছিল। দলটি নিজেদের কুকর্ম নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে। কিন্তু দলটি জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছে তা দেখাই আমার স্বপ্ন। কারণ, দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা চাওয়ার মধ্যে বড় ধরণের পার্থক্য রয়েছে।

শাসনের প্রতি গণমানুষের কিছু একটা বলার অধিকার থেকে জন্ম নেয় বাংলাদেশ। দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেশটি মত প্রকাশের প্রাণশক্তি হারিয়েছে। অথচ এটি এক সময় এ জাতির ছিল। এটিই স্বয়ং একটি অবনমন। কিন্তু এটা আরও মর্মভেদী একটি বিষয় যে, এ পরিবর্তনটা করছে এমন এক পরিবার, যারা পশ্চিম পাকিস্তানের নিষ্ঠুরতা থেকে জাতিকে মুক্ত করেছিল।

এর জন্য হাসিনা ছাড়া কাউকে দায়ী করার নেই। তিনি নিজেই গণতন্ত্রের অগ্নিশিখাকে নিভিয়ে ফেলছেন। শেখ মুজিবের কন্যা এমনটি করছেন - এটা কেবল হতাশাজনকই নয়, অপ্রতিভ একটি বিষয়। তিনি জাতিকে শিকল পরাতে পারেন, এমন ভাবনাটাও যন্ত্রণাদায়ক। কিন্তু এটা হতে পারে। কেননা, তিনি সঠিক ও ভুল এবং নৈতিক ও অনৈতিকের মধ্যের রেখাটি মুছে ফেলেছেন।

হাসিনা স্বৈরশাসকের প্রতিচ্ছবির প্রতিনিধিত্ব করছেন। এ অবস্থার মধ্যে মোদির সফরটি ছিল স¤পূর্ণ দুর্ভাগ্যজনক। তার উচিৎ ছিল বাংলাদেশের কোথাও বলা যে, এ দেশটি বিপ্লব থেকে সৃষ্ট। তাই দেশটির উচিৎ সে ধরণের ভাবনার দীপ্তি ছড়ানো অব্যাহত রাখা। কিন্তু তিনি বরং হাসিনাকে আশ্বস্ত করার পথ বেছে নিয়েছেন। বাংলাদেশের মানুষ হতাশ। কেননা, মানুষ তার কাছে এমন কিছু লক্ষণ প্রত্যাশা করছিল, যাতে মনে হয়, হাসিনা যেভাবে দেশ চালাচ্ছেন, তাতে ভারত খুশি নয়।
- See more at: Click This Link

===
আর আমরা। স্বাধীন সার্বভোম বাংলাদেশে গণতন্ত্র, সংবিধান আর ভোটাধিকারের হত্যাযজ্ঞ দেখছি নিরবে। আমাদের সুশীল সমাজ আজ কুশীলতা আর গালির সিনোনেম হয়ে গেছে! আমাদের এত এত মিডিয়া প্রিন্ট ইলেকট্রনিক্স সব যেন সেই তোষামোদ কবিতার হুজুররে মতে অমত কার--- চেতনাকে আক্ষরিক বাস্তবায়নের প্রতিযোগীতায় লিপ্ত!

মতামত বদলে এখন সম্ভবত মতমত বলার সময় এসেছে। কারণ মতে অমত তো আর প্রকাশই পাচ্ছে না। পেলেও জেল জুলুম, খুন গুম, পারীয়ে থাকা, হত্যায় তার সমাপ্তি হচ্ছে। তহলে শুধুই মত মত! জ্বি হুজুরী কালচারে বাধ্য করা হচ্ছে, হচ্ছি বা আমরাই তেলাপোকা তত্ত্বে নিজেদের খোলসে ঢুকিয়ে ফেলছি!!!

একটা দেশে স্বকীয়তা নিয়ে মাথা উচু করে থাকতে হলে যে স্বজাত্য বোধ, দেশপ্রেম তা কি স্বৈরাচারীতায় বিকশিত হয় না হয়েছে! আর যখনই ঐ শূন্যতা থাকে তখন কেবলই বেঁচে থাকা তো নয় ক্লিব দেহধারন করে চলা কেবল।

কুলদীপ নায়ারকে স্যালুট। অকপটে সত্যটাকে বলতে পেরেছেন। আর আমাদের সুশীল, ক্ষমতার উচ্ছিষ্টভৌগীদের কথা বাদই দিলাম.. জাতির বিবেক খ্যাত সাংবাদিক, শিক্ষক, বিচারক, সুধি সমাজ, যেই জনগোষ্ঠী পান থেকে চুন খসলে চিৎকারে মাতিয়ে তুলতো দুনিয়া তাদের রহস্যজনক নিরবতা নপুংষকাতেই মনে করিয়ে দেয়! তাদের জ্ঞান কি বিলুপ্ত? তারা কি গণতন্ত্রের সংজ্ঞা ভূলে গেছে? তারা কি সংবিধানকে অবজ্ঞা করছে না। আজ যদি একাত্তর হতো- মুক্তিযুদ্ধ হতো- মনে হয় এই দেশ ইহজনমে স্বাধীন হতো না। কারণ এই তথাকথিত প্রগতিশিল সুমীল ধনবান সকল মোঘলরা যেভাবে অনির্বাচিত স্বৈরাচারের পদলেহন করছে- তাতে তা সাধূ সন্ত না হয়েও খোলা চোখে বলে দেয়া যায়।

বাংলাদেশ মুক্ত হোক স্বৈরশাসন থেকে। একাত্তরের চেতনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের চেতনায় জেগে উঠুক দেশবাসী। মানুষের মতো বাঁচার জন্য। নয়তো ইতিহাসে কেবলই অক্ষমতার দায়ে শুধূ দোষি নয়- চির কলংকিত হয়ে থাকতে হবে সবাইকে।


তথ্যসূত্র: Click This Link
http://www.sheershanewsbd.com/2015/06/15/84641

সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জুন, ২০১৫ রাত ৯:৪১
১০টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ঋণ মুক্তির দোয়া

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৯



একদিন রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে নববিতে প্রবেশ করে আনসারি একজন লোককে দেখতে পেলেন, যার নাম আবু উমামা। রসুল সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, ‘আবু উমামা! ব্যাপার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×