somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাখাল বালকের গল্প আমাদের জঙ্গীবাদ তত্ত্ব আর বাংলার আকাশে দূর্যোগের ঘনঘটা!

০৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলা বিহার উড়িষ্যার নবাব সিরাজউদ্দৌলা!
বাংলার আকাশে আজ দূর্যোগের ঘনঘটা!
কে দেবে আশা? কে দেবে ভরসা!!!!

সিরাউদ্দৌলা নাটকের এই ডায়ালগ অনেকেরই মনে থাকার কথা। আজ সিরাজ নেই।

সেই বাংলা বিহার উড়িষ্যাও নেই। সময়ের পথ বেয়ে আজ বাংলা স্বাধীন। কিন্তু তবুও কেন আজ বাংলাদেশের আকাশে তেমনি দূর্যোগের ঘনঘটা। কেন আজ তেমনি আশংকা!

রাখাল বালক আর বাঘের গল্পতো সবাই জানেন। সবাই বিশ্বাস করেছিল তাকে। কিন্তু সে যখন তার চেতনাকে নিয়ে অন্যের বিশ্বাসকে হাসি খেলার আইটেমে পরিণত করেছিল- অবশেষে যখন সত্যি বাঘ আসে -তখন কেউ তার ডাকে আর সাড়া দেয় নি।

আমাদের দেশিয় প্রেক্ষাপটে কেবলই ক্ষমতায় থাকাই যেখানে মূখ্য- সেখানে নিয়ম তান্ত্রিক সরকার পরিবর্তনের বা সাধারন জনগণের নূন্যতম সরকার বাছাইয়ের স্বাভাবিক পঞ্চবার্ষিক অধিকারটুকুও যখন কেড়ে নেয়া হল- তখন মানুষ রীতিমত বাকরুদ্ধ হয়ে গেল। আর আমজনতার সেই অবস্থার সুযোগে অনির্বাচিত পথে ক্ষমতা কুক্ষিগত হয়ে গেল এককেন্দ্রিকতায়। আর স্বাভাবিক ভাবেই সেই অবস্থাকে টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজন হল নানা ছল চাতুরি মিথ্যা আর প্রোপাগান্ডার। মানুষকে ব্যস্ত রাখতে, কনফিউজড রেখে শাসন বা ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে তাই নিত্য নিত্য গল্প আসতে লাগল!
এই পলিমাটির দেশে সূফিবাদের দেশে আউল বাউলের দেশে ধর্মান্ধতা, জঙ্গীবাদের বাঘের জুজু জাতিকে গেলানো হল! সাথে দেশী বিদেশী চক্রের তথ্য, সহায়তা বা গোয়েন্দা ফাঁদে পা দিয়ে দিব্যি দৌড়ে চলল সকল ষড়যন্ত্র!!! জঙ্গিবাদের জুজু-দমনের সাম্রাজ্যবাদী কৌশলের বাংলা ভার্সন।

শুধু জাতিতে সীমাবদ্ধ রইল না। বিদেশি প্রভূদের সমর্থন পেতে আন্তর্জাতিক ভাবেও চলমান ক্রিয়াশীল এন্টিমুসলিম ফোর্সের স্রোতে গাঁ ভাসিয়ে দিয়ে কেবলই সাময়িক ক্ষমতা আর গদি টিকীয়ে রাখার লড়াইয়ে সমান তালে চলতে লাগল- এইসকল প্রচারণা। দেশের মাত্রা ছাড়িয়ে বিদেশে পত্র পত্রিকায় ইন্টারভিউতে! গদগদ হয়ে নিজ দেশ জাতির বিপক্ষে যায় এমন তথ্য, উপাত্ত, এই দেশের কথিত দেশপ্রেমিক দাবীদাররাই তুলে ধরতে লাগল!

বিশ্ব বিবেক বা নেতৃত্ব তখন মোছের তলে হেসেছিল কিনা কেউ দেখেনি। তবে সচেতন দেশপ্রেমিক আমজনতার অন্তরাত্মা বারবার কেঁপে উঠেছিল। একি আত্মঘাতি পথে পথচলা।
ইয়জিদ যেমন স্রেফ ক্ষমতার আর গদির লোভে ধর্ম, কোরআন, রাসূল সত্য সকল কিছূর বিপরীত স্রোতে দাড়িয়েছিল, সময়ে সময়ে মীরজাফর, হামিদকারজাই, সিসির মতো লোক যেমন দেশের, আপমার জনতার বিরুদ্ধে স্রোতেই স্বার্থ হাসিলে মত্ত আমরা দেখি আমাদের প্রিয় চেতনার মূলাধারে সেই ভাইরাস! সাধারন মানুষের এই আতকে ওঠাতে থোরাই কেয়ার তাদের! সময়ের সাথে চলতে থাকে প্রোপাগান্ডার প্লাবন!

অবশেষে- যখন অষ্ট্রেলিয়া আসতে চাইল না খেলতে! তখন টনক নড়ে উঠল। ইতালিয়ান নাগরিকের হত্যাকান্ড যেন আগুনে ঘি ঢালল! এরপরই জাপানী নাগরিকের নিহত হওয়া!
সরাদেশের মতো সারা বিশ্বও চমকে উঠল। থমকে গেল। বিভিন্ন দূতাবাস, জাতিসংঘ মিশন একের পর এক সতর্কতা জারি করতে লাগল তাদের নাগরিকদের সুরক্ষায়!
দেশের পবিত্র মাটি সিক্ত হল অতিথি বিদেশীদের রক্তে! কি দু:খজনক। আল্লাহ তাঁদের আত্মাকে শান্তি দান করুন।

শাস্ত্রে বলে যখন দুই ভাইয়ে ঝগড়া থাকে তখন সবসময়ই তৃতীয় পক্ষ সুবিধা নেয়! আমাদের দেশের এই অস্থিতিশীল সময়ে কারা এই সুবিধা নেয়ার চেষ্টায় আছে তা খুঁজতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে।
কিন্ত বাস্তবতা হল এখনো সেই গতবাধা গীত- বিরোধীদের দমন, ফাসানোর ব্লাইন্ড গেম আর সাচিবিক মূখস্ত বক্তব্য চলছে।
এখন ত্বারস্বরে চিৎকরছে সবাই এই দেশে আইএস নেই!

অথচ এই দেশের প্রতিটা পত্রিকা মিডিয়ায় এখনো বাসী হয়নি খুব সাধারন কিছূ পুস্তককে জিহাদী বই বলে চালানোর ঘটনা। এই দেশের ধর্মপ্রাণ প্রতিটা সাধারন মুসলিমের ঘরেই ইসলামী বই থাকে। থাকা স্বাভাবিক। অথচ স্রেফ ভিন্নমতো দমন দলনের কৌশল আর রাখাল বালকের তত্ত্বে জঙ্গিবাদের জুজু প্রতিষ্ঠা করতেই গিয়েই যে সেইসব জিহাদী বই তত্ত্ব তাতো এখন দিবালোকের মতো স্পষ্ট!
আর ভিন্নমত আর বিরোধী দল দমনে এই একনায়ক মনোভাব যে আখেরে পুরা দেশটাকেই ক্ষতিগ্রস্থ করছে, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব আর ৪০ বছরের ধিরে ধীরে সামান্য যা অজর্ন তাকেও ধূয়ে মুছে দিচ্ছে- তা কে কাকে বোঝাবে? জীবনটাতো হিন্দি সিনেমা না। ৩ ঘন্টায় সব শেষ করে বিজয়ীর হাসি হেসে সব শেষ! কাউন্টার এনকাউন্টার, হত্যা, গুম খুন আর জেল -জুলুম, পুলিশি রাস্ট্র তকমা ঘোচাতে জঙ্গীতত্তের অপব্যবহার যে আজ বুমেরাং হয়ে ফিরছে এটাতো অবধারিতই ছিল। কিন্তু তারচে বড় ক্ষতিটা হতে চলেছে জাতি হিসাবে আমাদের সবার।
আন্তর্জাতিক অঙ্গণের দীর্ঘদিনের অর্জন প্রশ্নের মূখেপড়ছে। সারা বিশ্বে প্রবাসী বাংলাদেশীরাও প্রশ্নবোধক চিহ্নের বাইরে থাকতে পারবে না। যার ধাক্কা আসবে বহুল গর্বের রেমিটেন্সে! যা অর্থনীতে প্রাণপাখির কাজ করছে। তার সাথে আরও বহু অনাকঙ্খিত পরিস্থিতি ও প্রশ্ন!

বিদেশী বায়াররা আসতে চাইছে না। ক্রিকেটের কোচগণ হঠাৎই ছুটি নিয়ে নিজ নিজ দেশে চলে গেলেন। জাতিসংঘ সহ সকল বিদেশি প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের সতর্ক চলাফেরার আহবান জানাচ্ছে। এত এত ন্যক্কার জনক ঘটনার পরও আমাদের উদৌগ কি গৎ বাদা বিবৃতিতে। তা যেন না হয়। তবেই দেশের মঙ্গল।

আশা করি বিজ্ঞ দেশ পরিচালকগণ যদি নীতিগত ভুল থাকে তা স্বীকার করে দেশ এবং জাতিকে সুরক্ষিত করার জন্য এবং আন্তর্জাতিক ভাবে গ্রহনযোগ্য পথেই হাটবেন। আমরা আম জনতা আমাদের শাক দিয়ে মাছ ঢাকলে আমরা তাতেই সন্তুষ্ঠ। কিন্তু দয়া করে আমাদের মতো বাকী বিশ্ব নেতৃত্বকে মনে করবেন না। দেশের স্বার্থে একেবারে সত্য সঠিক এবং নিরেট তথ্য দিয়ে তদন্ত করে সকলের আস্থা ফিরিয়ে আনুন। দূর্যোগের মেঘ কেটে যাক। আবার খেলতে আসুক সকল দল । আবার নিশ্চিন্তে ঘুরতে আসুক বিদেশী অতিথিরা। আবার মূখরিত হোক বিদেশী বায়ারদের পদচারনায় এয়ারপোর্ট।

আমারও নিশ্চিন্ত হই আমাদের সুজলা সুফলা শস্য শ্যমলা, আউল বাউল সুফি দরবেশ, সাধু-সন্তের বাংলাদেশে।







সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:২৭
৭টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×