পূর্ববর্তী পর্বের লিংক সমূহ
জন্মান্তরবাদ : কেবলই বিশ্বাস? মিথ? বিজ্ঞান সম্মত? মিথ্যা নাকি সত্য!! -১
জন্মান্তরবাদ : কেবলই বিশ্বাস? মিথ? বিজ্ঞান সম্মত? মিথ্যা নাকি সত্য!! -২
প্রথম পর্বে এর প্রাথমিক ধারনা ও আলোচনা এবং ২য় পর্বে নাফস রুহ আত্মা নিয়ে বিভিন্ন ধর্মের আলোকে সংক্ষিপ্ত আলোচনা হয়েছে।
জন্মান্তরবাদ এ মৌলিক আলোচনায় হিন্দু ধর্মে যেহেতু এটা স্বীকৃত এবং তারা অধিকাংশই মেনে চলে তাই সে পর্ব উহ্য রইল। কিন্তু যেহেতু ইসলাম এবং মুসলমানদের মাঝে এটা নিয়ে মতবিরোধ বেশি তাই ইসলাম ধর্মের আলোকে কোরআনের আয়াত এবং হাদীস নির্ভর এই দর্শনের আলোচনা নিয়ে এই পর্ব :
মৌলিক আলোচনা:
জন্মান্তরবাদ অর্থ হল এক জন্ম থেকে অন্য জনম। মৃত্যু বরনের পর আবার জন্ম গ্রহন করা, আবার জন্মের পর মৃত্যু বরন করা, এভাবে আত্মার মুক্তি বা জন্মচক্র থেকে মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত বারবার জীবন চক্রে জন্ম-মৃত্যুর মাধ্যমে গমনাগমনের উপর যে বিশ্বাস ও মতবাদ বা দর্শন রয়েছে, তাকেই জন্মান্তরবাদ বলে।
উল্লেখ্য যে, এই দর্শনে মৃত্যু হল স্থুল দেহ/রুপ ত্যাগ এবং জন্ম হলো নতুন দেহ/রুপ গ্রহন। আত্মা অবিনশ্বর। মৃত্যু বলতে শুধুই দেহ থেকে আত্মা বের হয়ে যাওয়াকে বুঝায় এবং জন্ম বলতে সেই বের হয়ে যাওয়া আত্মা আবার নতুন কোনো স্থুল দেহ/রুপ ধারন করে পৃথিবীতে আগমন করাকে বুঝায়।
আত্মার এই আসা যাওয়ার কারন হল তার বাসনা ও কর্ম। বাসনা পূরন ও কর্মের ফল ভোগ করার জন্যেই জীবাত্মা বার বার বিভিন্ন যোনী/মাধ্যমে আসা যাওয়া করে। কর্ম ভালও হতে পারে আবার মন্দও হতে পারে। ভাল কর্মের জন্যেও জন্ম গ্রহন করতে হয়, আবার খারাপ কর্মের জন্যেও জন্ম গ্রহন করতে হয়। যতক্ষন না পদার্থ বাসনা ত্যাগ করে অ-পদার্থ বা বস্তু থেকে অ-বস্তুতে যাবার যোগ্য হয়। বস্তু জগতে বস্তুগত দুর্বলতা ত্যাগ করে অবস্তু জগতের উপযোগী না হয়ে ওঠে।
খারাপ কর্মের ফল ভোগের জন্য জন্ম গ্রহনটা হয়তো সবাই বুঝে ও মেনে নেয়, কিন্তু ভাল কর্মের ফল ভোগের টা অনেকেই মানতে চায় না। এর কারন হল ভাল কর্ম সত্ত্বেও সেই জীবাত্মা বাসনা বা মোহ মুক্তি (কামনা, বাসনা, কিছু হতে চাওয়া, অতৃপ্ততা) থাকার ফলে সে অ-বস্তু জগতে প্রবেশাধিকার পায় না। এবং তা অর্জনের জন্যই তাকে চক্রাবর্তনে থাকতে হয়। সবাই এটাই জানে যে ভাল কর্মের ফলে ভাল পরিণামই মেলার কথা। কিন্তু নির্বান লাভ বা জন্ম-মৃত্যু বারন হয়ে মহামুক্তি লাভে তা যথেষ্ট নয়। নির্মোহ আত্মা হওয়া না পর্যন্ত তা চলমান থাকে।
ভাল কর্মের জন্যেও জন্ম গ্রহন করতে হয়, তখন যখন সেখানে বাসনা থাকে। যেমন কেউ ভাবল " আমি খাওয়াইলে আল্লাহ আমাকে উত্তম খাবার দিবে, আমি দান করলে আল্লাহ আমাকে অনেক ধনী বানাবে"। এরূপ ভাবার ফলে আল্লাহ সেই ব্যক্তির বাসনা পূরনের জন্যে তাকে আবার পৃথিবীতে পাঠাবে, তবে আগের চেয়ে উত্তমরূপে। এই বাসনাযুক্ত কর্মের জন্যে সে মূক্তি লাভ করবে না, তবে উন্নত জীবন লাভ করবে। তাই কেউ ধনীর ঘরে জন্ম গ্রহন করে, আবার কেউ গরীবের ঘরে। ভাল কর্ম তখনই মুক্তির কারন হবে যখন তা শুধুই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হবে। তাই শাস্ত্রে উল্লেখ আছে যে, বাসনা থাকিতে জীবের আসা-যাওয়া (জন্ম-মৃত্যু) বারণ হবে না।
এবং এই দর্শনে আরেকটা উল্লেখযোগ্য বিষয় হল পুলসিরাত! পিতার কাছ থেকে মাতৃগর্ভে স্তানান্তরিত হওয়ার সবচে ঝুকিপূর্ণ পথ এবং কালকেই বোঝানো হয়। কোটি কোটি জীবাত্মার রেসে ভাগ্যবান মাত্র এক বা দুজন সেই রেহেম বা গর্ভে স্থান লাভ করে থাকে। এবং স্বর্গ জীবনের এক স্তরও মাতৃগর্ভকেও বোঝানো হয়। মায়ের গর্ভে সন্তানের কোন খাবার কোন কিছুর জণ্য ভাবতে হয়না। মায়ের কাছ থেকেই তা লাভ করে থাকে। যা স্বর্গীয় ধারনার অনুরুপ। আবার জন্মচক্রে এটাই বারযাখ বা কবর হিসেবেও অভিহিত হয়। কারণ চক্রের কারণেই বারবার এই অন্তরাল বা বারযাখ বা স্তর অতিক্রম করে ভবে আসতে হয়। সেই হিসাবে মুক্তিপিয়াসীদের কাছে এটা কবর তুল্য।
এই দাবী শুধু করলে।তো হবে না। চাই যথেস্ট তথ্য উপাত্ত, যুক্তি প্রমাণ। এই দর্শন চর্চায় জন্মান্তরবাদের প্রমান দেওয়ার চেষ্টা আছে কুরআন ও হাদিস থেকে। এ অংশে জন্মান্তরবাদের আলোচনা থাকবে। আর কুরআন হাদিস থেকে উদ্ধৃতি ও তার ব্যাখ্যা থাকবে। এতে তথ্য রয়েছে তাদের জন্য, যারা জন্মান্তরবাদ বিশ্বাস করে না ও যারা বিশ্বাস করে; কিন্তু বিশ্বাস দুর্বল।
আল্লাহ তায়ালা বলেন "কিরূপে তোমরা আল্লাহকে অবিশ্বাস করছ? অথচ তোমরা মৃত ছিলে, অতঃপর তিনিই তোমাদেরকে জীবিত করেছেন, পুনরায় তিনি তোমাদেরকে মৃত করবেন এবং পুনরায় তোমাদেরকে জীবিত করা হবে। তারপর তোমারা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন করবে।" (Al-Baqara 2:28)
এই আয়াত নিয়ে একটু ভাবুন, আমরা মৃত ছিলাম (জন্মের আগের কথা, জীবত করা হল (জন্ম গ্রহন করলাম), আবার মৃত্যু বরন করব (মানে মরে যাবো), আবার জীবিত হবো (মানে হাসরে উঠবো)। আলেমরা এভাবেই ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দেয় যে, আমরা মরা ছিলাম, এইবার জন্ম নিলাম, আবার হাসরে উঠবো। কাহিনী শেষ, জন্মান্তরবাদ বলতে কিছুই নেই।
কিন্তু একটু লক্ষ করুন, শেষে আল্লাহ বললেন 'তারপর তোমারা তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন করবে।" প্রত্যাবর্তন অর্থ হল যেখান থেকে আসা, আবার সেখানেই ফিরে যাওয়া। মৃত্যুর পর জীবত হওয়া মানেই প্রত্যাবর্তন নয়। তাই আল্লাহ আগে জীবিত করার কথা বলেছেন, পরে প্রত্যাবর্তন করার কথা বলেছেন। অর্থাৎ আমাদের জীবত করার পর আবার আসতে হবে পৃথিবীতে। কারন আমরা পৃথিবীতেই ছিলাম। তা না হলে আল্লাহ 'প্রত্যাবর্তন' এর কথা উল্লেখ করতেন না।
অপর আয়াতে আল্লাহ বলেন: (হে নবী) তুমি বলঃ তোমাদের (নিরূপিত) শরীকদের মধ্যে এমন কেহ আছে কি যে প্রথমবারও সৃষ্টি করে এবং পুনরাবর্তন করতে পারে? তুমি বলে দাওঃ আল্লাহই প্রথমবারও সৃষ্টি করেন, অতঃপর তিনিই পুনর্বারও সৃষ্টি করছেন, অতএব তোমরা (সত্য হতে) কোথায় ফিরে যাচ্ছ? (Yunus 10:34)
এই আয়াতে দেখা যায় যে, আল্লাহ বললেন তিনিই প্রথমে সৃষ্টি করেছেন এবং তিনিই তা পুনরায় সৃষ্টি করছেন (চলমান) এবং করবেন। (আরবী ভাষায় বর্তমান কাল ও ভবিষ্যতকালের শব্দ একই)। অর্থাৎ আল্লাহ এখনও পুনরায় সৃষ্টি করছেন তার পুরনো ধ্বংস হওয়া সৃষ্টিকে। অর্থাৎ আল্লাহ এখনও মৃতদের জীবত করছেন। কিন্তু মোল্লারা ত বলে যে কিয়ামতের পর জীবিত করবেন এবং হাসরের মাঠে উঠাবেন। এখান থেকেও বুঝা থেকেও বুঝা মানুষের জন্ম ও মৃত্যু হচ্ছে বার বার। যা জন্ম থেকে জন্মান্তর পর্যন্ত চলতেছে।
এইবার অন্য একটি আয়াতের দিকে লক্ষ করুন। আল্লাহ বলেন "তিনিই মৃত হতে জীবন্তের এবং জীবন্ত হতে মৃতের আবির্ভাব ঘটান এবং ভূমির মৃত্যুর পর ওকে পুনরুজ্জীবিত করেন। এভাবেই তোমরা প্রত্যাবর্তন করবে। (Ar-Room 30:19)
এই আয়াতে আল্লাহ বললেন যে তিনি মৃত হতে জীবিত বের করেন এবং জীবিত হতে মৃতকে। এখান থেকেও বুঝা যায় যে জন্মান্তরবাদ সত্য। কারন আল্লাহ আগে এখানে মৃত্যের কথা বলছে, মৃত থেকে তিনি জীবত করেন। তিনি বলেন কি যে, অনস্তিত্ব থেকে তিনি জীবন বের করেন। যেন অন্য আয়াতে আল্লাহ স্পষ্টভাবে বলছেন যে, "তারা কি লক্ষ্য করেনা যে, কিভাবে আল্লাহ সৃষ্টিকে অস্তিত্ব দান করেন? অতঃপর পুনরায় সৃষ্টি করবেন।" (Al-Ankaboot 29:19)। এই আয়াতে অনস্তিত্ব থেকে সৃষ্টির কথা বলে দিয়েছেন। কিন্তু উপরের আয়াতে আল্লাহ মৃতের থেকে জীবনকে বের করার কথা বলেছেন। মানে প্রানী মরার পর আবার জীবন লাভ করবে। আর মৃতকে অস্তিত্বহীন বলা যায় না। যেহেতু আল্লাহ এখানে অস্তিত্ব থেকে প্রান বের করার বা পুনরায় সৃষ্টির কথা উল্লেখ করেছেন, সেহেতু বলাই যায় যে প্রানীর মৃত্যুর পর জীবন ও জীবনের পর আবার মৃত্যু আছে।
অন্য একটি আয়াতে আল্লাহ বলেন' (হে নবী) আপনি বলুনঃ তোমাদেরকে প্রথম যেভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে, তোমরা তেমনিভাবে ফিরে আসবে। (Al-Araf 7:29)
এই আয়াত ত একদম স্পষ্ট প্রমান বহন করে যে জন্মান্তরবাদ মহাসত্য। কারন আল্লাহ বলেছেন আমাদের প্রথম যেভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে, সেভাবেই আল্লাহর নিকট ফিরে যাবো। এখানে আল্লাহ আদম (আ) এর সৃষ্টির কথা বলেননি, বলেছেন আমাদের সবার কথা, কারন আয়াতে আল্লাহ বহুবচন শব্দ ব্যবহার করেছেন। আল্লাহ ত আমাদের মায়ের গর্ভে রেখে ধাপের ধাপে সৃষ্ট করেছেন তাঁর মহাকুদরতী পদ্ধতিতে। সুতরাং আমাদের প্রত্যাবর্তনও ঠিক এইভাবেই হবে, যেভাবে আমাদের জন্ম হয়েছে পৃথিবীতে। বিষয়টা খুবই সহজ। একটু চিন্তা করলেই বুঝতে পারবেন।
এব্যপারে অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেনঃ “যেভাবে আমি প্রথম সৃষ্টি করেছি সেভাবেই আমি সেটার পুনরাবর্তন ঘটাব”। [সূরা আল-আম্বিয়া: ১০৪]
এই আয়াত থেকেও বুঝা যায় মাতৃগর্ভের মাধ্যমে আবারও জন্মগ্রহন করার কথা। আমাদের আল্লাহ উলঙ্গ করে সৃষ্টি করেছিলেন, আবারও শিশুর বেশে উলঙ্গ হয়েই জন্ম গ্রহন করতে হবে মৃত্যুর পর। এই বিষয়টা আরো পরিস্কার করে দিয়েছেন রাসূল (স)। হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মহানবী (সাঃ) কে বলতে শুনেছি যে, "কিয়ামতের দিন মানুষকে উলঙ্গ পদে, উলঙ্গ দেহে ও খাতনাহীন অবস্হায় কবর থেকে হাশরের ময়দানে একত্রিত করা হবে ।" (বোখারী-মুসলিম ।)
উপরে বর্নিত আয়াত যে জন্মান্তরবাদের ব্যপারেই নাজিল হয়েছে, তার প্রমান স্বরুপ অন্য আরেক হাদিসে আছে, নবী করিম (সাঃ) বলেছেন, " কিয়ামতের দিন তোমোদের উলঙ্গ পদে, উলঙ্গ দেহে ও খাতনাহীন অবস্হায় হাশরের ময়দানে একত্রিত করা হবে।"একথা বলে তিনি কুরআনের এ আয়াত পাঠ করলেন, 'প্রথমবার সৃষ্টি করার সময় আমি যেরূপ সূচনা করেছি , দ্বিতীয়বারও আমি তাদেরকে অনুরূপভাবে সৃষ্টি করব।'
আল্লাহ মানুষকে তার কর্মের ফল দিবেন। আর তার ফল দেওয়ার জন্যে ত পৃথিবীতেই আসতে হবে এটাই স্বাভাবিক। কারন সূরা যিলযালে আল্লাহ বলেন 'তুমি যা করবা তার বদলা পাইয়া'। অর্থাৎ আমি কাউকে ভালবাসলে ভালবাসা পাবো, আর কাউকে আঘাত করলে আঘাত পাবো। ভালাবাসা পাওয়ার জন্যে ত আমাকেমাকে পৃথিবীতেই আসতে হবে, আর আঘাত পাওয়ার জন্যেও তাই। অবশ্যই থাপ্পরের বিনিময় থাপ্পরই হবে, থাপ্পরের বিনিময়ে আগুন জ্বালানোর কোনো যুক্তিকতাই নাই। আর আল্লাহ ত অবিচারক নন, উনি সর্বোত্তম বিচারক। অবশ্যই তিনি আমাদের থাপ্পরের বিনিময়ে আগুনে জ্বালানোর মত বেইনসাফী করবেন না। আল্লাহ তায়ালা অন্য আয়াতে বলেনঃ "তোমাদের সকলকে তাঁরই দিকে ফিরে যেতে হবে, আল্লাহর ও‘য়াদা সত্য; নিশ্চয়ই তিনিই প্রথমবার সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর তিনিই পুনর্বার সৃষ্টি করবেন, যাতে এরূপ লোকদের যারা ঈমান এনেছে এবং ভাল কাজ করেছে তাদেরকে ইনসাফ মত প্রতিফল প্রদান করেন; (Yunus 10:4)
আমাদের সাথে যা ঘটে, তা আমাদেরই কর্মের ফল, কিন্তু একটি শিশু জন্ম থেকেই তবে কেন প্রতিবন্ধি হয়!!! অবশ্যই স্রষ্টা অবিচারক নন। অনেকেই বলে যে পরীক্ষার জন্য, কিন্তু পরীক্ষা ত সবার একই, তবে প্রশ্ন পত্র কেন ভিন্ন! একেকজনকে কেন একেকভাবে পরীক্ষা নিবেন!!! এটা কোন ধরনের ইনসাফ!!! এথেকেও বুঝা যায় জন্মান্তরবাদ সত্য এবং প্রভু নির্দোষ। উনি শুধু আমাদের কর্মের ফল প্রদান করেন ।যেমন আল্লাহ বলেনঃ 'তোমাদের যে বিপদ-আপদ ঘটে তাতো তোমাদেরই কৃতকর্মের ফল।' (Ash-Shura 42:30)
আবার কেন প্রানী পশু কূলে জন্ম গ্রহন করে মানুষ কেন মানব জনম হারিয়ে পশুকূলে যায়, সেটাও আল্লাহ কুরআনে স্পষ্ট ভাবেই বলে দিয়েছেন সূরা ত্বীনের মধ্যে। আল্লাহ বলেন : "অবশ্যই আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি সর্বোত্তম গঠনে। তারপর আমি তাকে ফিরিয়ে দিয়েছি হীনদের হীনতম রূপে। তবে যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্য রয়েছে নিরবচ্ছিন্ন পুরস্কার। সুতরাং এরপরও কিসে তোমাকে কর্মফল সম্পকের্ অবিশ্বাসী করে তোলে? আল্লাহ কি বিচারকদের শ্রেষ্ঠ বিচারক নন?"
আয়াত জন্মান্তরবাদ এর প্রমান বহন করে। মানুষের কুকর্মের জন্যেই তাকে আল্লাহ পশু কূলে পাঠান। অনেকেই এই আয়াতের ব্যখ্যা বলে যে যারা শনিবারের বিধি-নিষেধ পালন না করে মাছ শিকার করেছিল, তাদের আল্লাহ বানর বানিয়ে দিয়েছিলেন, তাই আল্লাহ এই আয়াত নাজিল করেছেন। কিন্তু এটা মিথ্যাচার। আল্লাহ বানরের ঘটনা কুরআনের অন্য জায়গায় আলোচনা করেছেন। আর কুরআন ত সর্বকালের জন্য ও সার্বজনীন। সূরা ত্বীনে আল্লাহ সেসব মানুষের কথাই বলেছেন, যাদেরকে পাপ কর্মের ফলে পশু কূলে স্থানান্তর করেছেন।
আত্মার এই আসা যাওয়ার শুরু কোথায়? কেন আমরা এই চক্রে আবদ্ধ হলাম। আল্লাহ কি দায়ী? না আমরাই দায়ী? সৃষ্টি তত্ত্বের শুরু নিয়ে গবেষনা কারীদের লিপিবদ্ধ বিবরনীতে পাওয়া যায় এর একটা আউটলাইন। এটিখলিলের লিখিত আত্মর্দশনে সত্য দর্শন এ পাই-
সৃষ্টির আদিতে বস্তুনচিয় সৃষ্টির পর আল্লাহ সমস্ত আত্মাকে একসাথে তৈরি করে সারিবদ্ধভাবে দাড় করিয়ে জিজ্ঞাস করলেন "আমি কি তোমাদের প্রভু নই?" (আলাসতু বিররাব্বকিকুম)। উত্তরে আত্মা (রূহ) বলল "না"। অতঃপর তাদের শাস্তি প্রদান করা হল, তারপর আবার পূর্বের ন্যায় জিজ্ঞাস করা হল 'আমি কি তোমাদের প্রভু নই?" এবারও তারা অস্বীকার করল, এভাবে কয়েকবার করা হলে তাদের শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে দুর্বল করা হল। তারপর আবার যখন তাদের জিজ্ঞাস করা হল 'আমি কি তোমাদের প্রভু নই?" তখন তারা বলল "হ্যা" (কালু বালা)। অত:পর আত্ম সমূহের মধ্যে প্রতিযোগীতা শূরু হল। সকলেই দেখাতে চায় সে আল্লাহর সবচে প্রিয়, সবচে বাধ্য, সবচেয়ে যোগ্য। এই প্রতিযোগীতার মাঝে আল্লাহ তাদের থামালেন। থাম। তোমাদের আমি বস্তুচক্রে পাঠাব পরীক্ষার জন্য। পৃথিবীতে তোমরা অল্পকাল অতিবাহিত করবে। যাতে প্রমাণ হবে তোমরা কে সত্যবাদী! তোমাদের জন্য সময়ে সময়ে পথ প্রদর্শক প্রেরণ করব। যারা তার অনুসরণ করবে তারাই মুক্তি লাভ করবে। আর এই স্বীকৃতি প্রদানের প্রমাণ করার জন্যেই প্রানীকূলকে পৃথিবীতে আসতে হল কর্মের মাধ্যমে তা প্রমান করার জন্য। আত্মার সেই জগতকেই 'গঞ্জে মুখ্ফি' বলা হয়। এটাই জন্ম গ্রহনের প্রথম স্ট্যাশন (নয় বাতনের প্রথম পর্যায়)।
আমরা সবাই জন্মের পূর্বে গঞ্জ জাতে গোপন ছিলাম স্রষ্টার সাথে। সেটাই মূলত আলমে আরওয়া/ ব্রহ্মলোক। আবার আমাদের আবার যে কোনো মূল্যে সেখানেই ফিরে যেতে হবে সাধনার দ্বারা। সেখানে পৌঁছাতে পারলে আর আমাদের জন্মমৃত্যু হবে না, তখনই আমাদের জন্মমৃত্যু চক্র মুক্ত হবো, পাবো আমরা জান্নাতুল ফিরদাউস। বৌদ্ধধর্ম মতে যাকে 'নির্বাণ' বলা হয়।
কিন্তু যতদিন আমরা সাধনায় পূর্ন সিদ্ধি লাভ করতে না পারব, ততদিন মৃত্যুর পর ফিরে যেতে হবে 'গঞ্জে মুখফি'তে। এভাবে বার বার আসা যাওয়া করতে হবে আমাদের। যাকে বলা হয় 'অরুজ-নজুল' ভাঙ্গা গড়ার খেলা। অরুজ মানে উপরে যাওয়া আর নুজুল মানে নিন্মে আসা। অরুজ এর নয়টি ধাপ, আবার নুজুলেরও নয়টি ধাপ। নুজুলের ধাপ গুলোকেই 'বাতন' বলা হয়ে থাকে। অর্থাৎ প্রতিটি প্রাণীকে পৃথিবীতে জন্ম নিতে নয়টি স্টেশন ভ্রমণ করে আসতে হয়, ইহাকেই 'নয় বাতন' বলা হয়। এই ধাপ গুলোর ব্যপারের আল্লাহ বলেনঃ "তিনি তোমাদের ক্রমে ক্রমে (পর্যায়ক্রমে বা ধাপে ধাপে) সৃষ্টি করেছেন।" (সূরা নূহঃ ৭১:১৪)।
নয় বাতন বা সুপ্ত/গুপ্ত (যা গবেষক ব্যাতিত সাধারনের ধারনার বাইরে) জানার এবং বোঝার সুবিধার্থে নামগুলো উল্লেখ করা হল নয়টি বাতনী বা সুপ্ত/গুপ্ত স্তরগুলো হলঃ ১.গঞ্জে মুখফি, ২.জামাদাত, ৩.নাবাদাত, ৪.হায়ানাত, ৫.নুতফা, ৬.আলক্বা, ৭.দায়রা, ৮.জনীন, ৯.তেফেলি।
গঞ্জে মুখফি হল বাতনের প্রথম ধাপ। গঞ্জে মুখফির জগতকেই গঞ্জে জাত বলা হয়। আর বাতনের শেষ ধাপ হলো 'তেফেলি'। হোক সে মানুষ কিংবা অন্য কোনো প্রানী, তাকে এই নয়টি ধাপ অতিক্রম করতেই হবে জন্ম নিতে হলে।
১.গঞ্জে মুখফি (গঞ্জে জাত বা আলমে আরওয়া বা রূহের জগত): সমস্ত প্রাণীর আত্মা এখানেই ছিল, আবার এখানেই চলে যাবে মৃত্যুর পর।
২.জামাদাত (অর্থাৎ ধাতু বা জড়): এটা দ্বিতীয় ষ্টেশন বা মঞ্জিল। গঞ্জে মুখফি হতে কুয়াশাকারে আত্মা পৃথিবীতে নেমে আসে।
৩.নাবাদাত (অর্থাৎ বৃক্ষ): কুয়াশাকারে নেমে এসে আত্মা কোনো বৃক্ষের উপর পতিত হয়।
৪.হায়ানাত (অর্থাৎ পশু): এটা চতুর্থ স্ট্যাশন। সেই বৃক্ষ যে পুরুষ প্রানী ভক্ষন করে, আত্মা তাঁর মস্তকে চলে যায় এবং সুপ্ত হয়ে থাকে।
৫. নোৎফা (অর্থাৎ মণি বা বীর্য): আত্মা সুপ্ত হয়ে মস্তকে মধ্যে অবস্থান করে। যদি বৃক্ষ বা বৃক্ষের ফল মানুষ খায় তবে আত্মা মানুষের মস্তকে, আর যদি অন্য কোনো প্রাণীতে ভক্ষ করে, তবে আত্মা সেই প্রানীর মস্তকে চলে যায় (বাবার মস্তকে থাকে)।
৬.আলক্ব (অর্থাৎ জমাট বাধা রক্ত বা ঝুলে থাকা): তারপর বীর্য বাবার মস্তক থেকে মাতৃ রেহেম বা গর্ভাশয়ে নেমে এসে জমাট বাধা রক্তের গঠন ধারন করে। সূরা আলাকে ২য়য় আয়াতে এই বিষয়ে উল্লেখ করেছেন।
৭. জনিন (অপরিনত শেকেল): মানে অপরিনত দেহ। অর্থাৎ তখন দেহের আকার ধারন করে ঠিকই, কিন্তু পূর্ন হয় না।
৮.দায়রা (অর্থাৎ পূর্ন শেকেল): সবশেষে দেহ পূর্নতা লাভ করে একটি পূর্ন আকৃতি ধারন করে ২৮০ দিনে। মানে ৯ মাস দশ দিনে। অনেকেই দশ মাস দশ দিনের কথা বলে থাকে, সেটা ভুল তথ্য।
৯. তেফেলি ( এটার অর্থ শিশু। এখানে অর্থ হবে তেলেফি কামেল বা পূর্ন বিকাশ): অবশেষে প্রানী শিশু আকারে জন্ম গ্রহন করে পৃথিবীতে আসে।
এব্যাপারে মহান আল্লাহ্ বলেন,
ﻓَﺈِﻧَّﺎ ﺧَﻠَﻘْﻨَﺎﻛُﻢْ ﻣِﻦْ ﺗُﺮَﺍﺏٍ ﺛُﻢَّ ﻣِﻦْ ﻧُﻄْﻔَﺔٍ ﺛُﻢَّ ﻣِﻦْ ﻋَﻠَﻘَﺔٍ ﺛُﻢَّ ﻣِﻦْ ﻣُﻀْﻐَﺔٍ ﻣُﺨَﻠَّﻘَﺔٍ ﻭَﻏَﻴْﺮِ ﻣُﺨَﻠَّﻘَﺔٍ ﻟِﻨُﺒَﻴِّﻦَ ﻟَﻜُﻢْ ﻭَﻧُﻘِﺮُّ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺄَﺭْﺣَﺎﻡِ ﻣَﺎ ﻧَﺸَﺎﺀُ ﺇِﻟَﻰ ﺃَﺟَﻞٍ ﻣُﺴَﻤًّﻰ ﺛُﻢَّ ﻧُﺨْﺮِﺟُﻜُﻢْ ﻃِﻔْﻼً - ‘
অতঃপর আমরা তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছি। এরপর বীর্য থেকে (নুফতা), জমাট বাঁধা রক্ত থেকে (আলক্বা) , এরপর পূর্ণ আকৃতি (দায়রা) ও অপূর্ণ আকৃতি বিশিষ্ট গোশতপিন্ড থেকে (জনিন), তোমাদের কাছে ব্যক্ত করার জন্যে। আর আমরা নির্দিষ্ট কালের জন্য মাতৃগর্ভে যা ইচ্ছা রেখে দেই, এরপর শিশু অবস্থায় বের করি (তেফেলি)। (সূরা হজ্জ ২২/৫)।
এভাবে দুনিয়াতে আসার পর আবার ফিরে যেতে হয় সেই গঞ্জমুখফিতে। এভাবেই চলতে থাকে আমাদের আসা যাওয়ার পালা। কিন্তু এই মার্তৃগর্ভের বা জঠরের যন্ত্রতা অনেক ভয়ানক। স্রষ্টার দয়ার ফলে জন্মের পর আমরা সেই যন্ত্রনাকে ভুলে যাই। এটাকেই গূড় বা কবরের আজাব বলে। মূলত মাতৃগর্ভটাই কবর। এই কবরের আজাব থেকে কারো মুক্তি নেই, এমনকি ওলী-আল্লাহ, গাউস কুতুবদেরও না, অবতাররাও এই যন্ত্রনা ভোগ করে মানব কূলে জন্ম নেন।
তাই সাধনার দ্বারা জন্ম মৃত্যুকে বারণ করে নির্বান লাভের মাধ্যমে ওলী আল্লাহ, সাধু, মনি-ঋষীগন এই কবরের আযাব থেকে চিরমুক্তি লাভ করিয়া স্রষ্টার সাথে মিলিত হন। এই স্তরকেই বাকা বিল্লাহর স্তর বলা হয়।
বাসনা থাকতে জীবের এই আসা যাওয়া বারণ হবে না। সে শত কোটি জনম এভাবেই ভ্রমন করতে থাকবে আর জঠরের যন্ত্রনা ভোগ করবে। জন্মমৃত্যু বারনের উপায় একটাই, সেটা হল বাসনাকে বর্জন করা। বাসনাই হল 'কাম'। কাম শুধু যৌনতাই নয়। আমাদের বাসনা থেকে মুক্তি লাভ করতে হবে, তবেই আমরা প্রকৃত মুক্তি লাভ করব। যাকে বলা হয় জন্মমৃত্যু বারণ বা নির্বান লাভ।
আসা যাওয়া শুধু মানব কূলেই নয়, পাপ কর্মের কারনে ৮৪ এর ফেরে পরে গিয়ে পশু কূলেও আসতে হতে পারে।
জন্মান্তরবাদ নিয়ে সবার একই প্রশ্ন... যদি বার বার পৃথিবীতে আসা যাওয়া করতে থাকি, তবে কি কিয়ামত হবে না? কবরের আযাব কি মিথ্যা? হাশর হবে না? পুলসিরাত হবে না? মিজানের পাল্লা হবে না? জান্নাত জাহান্নাম কি নেই?
কিয়ামত দ্বারা সবাই বুঝি এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড ধ্বংস হওয়াকে। কিন্তু এর হাকীকত কি? কিয়ামত এর হাকিকত হল.. মৃত্যুই কিয়ামত। এই দেহ হল বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড। যা আছে ব্রহ্মান্ডে তা আছে দেহভান্ডে। এই দেহেই রয়েছে চন্দ্র-সূর্য গ্রহ নক্ষত্র। এই দেহেই রয়েছে সাগর পাহাড়। এই দেহেই রয়েছে আরশ কুরসি লৌহ কলম।
কবর দ্বারা সাধারনত বুঝায় মানুষ মারা যাওয়ার পর যে গর্তে তাকে দাফন করা হয়ে, সেটাকেই। কিন্তু হাদিসে করবের আযাবের কথা বলা আছে সত্যি, তবে সেগুলো রূপক অর্থে। কারন অনেক মানুষ আছে, যাদের দাফন করা হয় না। তাহলে তাদের কবরের আযাব কিভাবে হবে? অথচ আল্লাহর রাসূল (স) এর হাদিস থেকে জানা যায় যে, সবারই কবরের আযাব হবে অথবা জান্নাতের বাগান হবে কবর। তবে ত হাদিস মিথ্যা হয়ে যায়। মূলত কবর হলো মাতৃগর্ভ। যেটা অনেক আগেই উল্লেখ করেছি। সবাইকে এই করব বা আলমে বারজাখ অতিক্রম করেই হাসরে উঠতে হবে।
হাসরের মাঠ দ্বারা বুঝায় পরিনামের মাঠ। হাসর মানেই পরিনাম। পৃথিবীই হাসরের মাঠ। আমরা সবাই এখন পরিনামের মাঠেই আছি। পূর্বের জন্মের কর্মফল পাচ্ছি সবাই। ভালর বিনিময়ে ভাল পাচ্ছি, খারাপের বিনিময়ে খারাপ প্রতিদান পাচ্ছি। তাই ত কেউ জন্ম থেকেই অন্ধ, নেংড়া, বোবা হয়, আর কেউ হয় সুদর্শন। কেউ রাজার ঘরে জন্ম নেয়, আর কেউ জন্ম নেয় ভিখারীর ঘরে। কেউ বা আবার পশুকূলে জন্মগ্রহন করে।
মিজান তথা দাঁড়িপাল্লা হল পাপ ও পূন্য পরিমাপের কুদরতী যন্ত্র। যেটার মাধ্যমে মানুষের কৃতকর্ম গুলো পরিমাপ করা হবে। পাপ ও পূন্য ধরা ছুয়া যায় না, এগুলো ত বস্তুই নয়। তবে দাঁড়িপাল্লায় পরিমাপের বিষয়টা নিশ্চয়ই অযৌক্তিক। কিন্তু না! আল্লাহ অযৌক্তিক কিছু বলতেই পারেন না। মিজান এর হাকীকত হল মানুষের বিবেক। বিবেক মানুষকে পাপ ও পূন্যের পরিমাপ করে। এটা কম বেশি বিবেকবান মানুষ সবাই বুঝে। তাই একই কর্মের জন্য কেউ পাপী আবার কেউ পূন্যবান হতে পারে এই বিবেকের কারনে। যার বিবেক যেটাকে পাপ বলবে, সেটা তারজন্য পাপই, আর বিবেক যেটাকে পূন্য বলবে, সেটা পূন্য বা সওয়াব।
জান্নাত ও জাহান্নাম এই দুনিয়ার মাঝেই।
কোথায় স্বর্গ কোথায় নরকে
কে বলে তা বহুদূর
মানুষেরই মাঝে স্বর্গ নরক
মানুষেতে সুর অসুর
তবে প্রকৃত জান্নাত মূলত একটাই। সেটা হল জান্নাতুল ফেরদাউস। যেটাকেই বলা হয় 'নির্বাণ লাভ' বা 'জন্ম-মৃত্যু বারন'। এবিষয় নিয়ে পরে বিস্তারিত লেখার চেষ্টা করব।
বিষয়টি প্রতিটি অংশ এত ব্যপকতর যার স্রেফ সংক্ষেপ আউটলাইন টানার চেষ্টা করেছি। আর যতটা খোলাসা করে বলা সম্ভব সেটাও বললাম। বাকীটা নিজ নিজ গুরু বা নিজ নিজ গবেষনায় জেনে নিবেন। যদি সত্য জানার আগ্রহ থাকে। সত্য পাবার ইচ্ছা থাকে।
কাউকে জোর করে বিশ্বাস কারানোর জন্য এ লেখা নয়। একটা প্রচলিত দর্শন এবং তার পূর্ন একটা রুপ অনুসন্ধানে ব্রতী হয়ে যা পেয়েছি তাই সকলের জন্য উপস্থাপন করেছি। দ্বি-মত, ভিন্নমত, বহুমত থাকতেই পারে। তা নিয়ে বিষয় ভিত্তিক তাত্ত্বিক আলোচনা সু-স্বগত।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৪৭