আম্রিকা!!! স্বপ্নের দেশ! দি ল্যান্ড অফ অপরচুনিটি!!! জীবন বাজি ধরে হইলেও অনেকে এইখানে আস্তে চায়। কয়েক বছর আগেও যদি কুনু আধ্যাত্মিক ফকির বাবা কইত যে বাবা তুই কিছুদিন পর আম্রিকা যাইয়া থাকবি তাইলে আমি হয়ত তারে মুগুর নিয়া তাড়া করতাম! মাগার লাইফ জিনিসটাই আলাদা! একশ ভাগ আনপ্রেডিক্টেবল! বলতে গেলে এই আনপ্রেডিক্টেবিলিটি টাই আমাদের বাচাইয়া রাখে। যাই হউক, আজকে আমি আম্রিকায়। যেইটা কস্মিনকালেও কুনুদিন কল্পনা করি নাই, সেইটা বাস্তব হইয়া গেছে। ভোজবাজির মতন কইরাই লাইফের সব এস্পেক্ট চেঞ্জ হইয়া গেছে। কিন্তু এই চেঞ্জটা খুব সহজ ছিল না আমার জন্য। অনেক চড়াই-উৎরাই পার হইতে হইছে, অনেক কিছু শিখছি লাইফে। এই শিক্ষা চলতেই আছে, মরার আগ পর্যন্ত চলবে।
আম্রিকা একটা ইন্টারেস্টিং দেশ। লিমিটলেস ফ্রিডম আছে এইখানে। মজা করার হাজারো উপকরণ আছে, লাইফটাকে উপভোগ করার জন্য যা যা লাগে তার জন্য মোটামুটি সবকিছুই আছে। কিন্তু এরকম মজাদার একটা লাইফস্টাইলের মধ্যেও মাঝে মাঝে কাছে মনে হয় কি যেন একটা স্টিল মিসিং। অনেক খুঁজাখুঁজি করে একদিন মনে হইল এই মিসিং জিনিসটা হইল কোয়ালিটি ফ্রেন্ডের অভাব। এইখানে পথ চলতে যাইয়া অনেকের সাথে পরিচয় হয়। সবাই তথাকথিত ফ্রেন্ডও হয় (কিছু রেয়ার এক্সেপশন ছাড়া)। কিন্তু সবাই এত ব্যাস্ত থাকে যে একটু চোখের আড়াল হইলেই ফ্রেন্ডশিপ কালের অতল গহ্বরে হারায় যায়। আমি অনেকের সাথেই কর্মসূত্রে মিশছি, অনেক সময় স্পেন্ডও করছি কিন্তু আজকে তাদের অনেকেই নাই। অনেকেই যাওয়ার পথে। আমি কেউর দোষ দিচ্ছিনা, আসলে মোস্টলি এইখানকার সিস্টেমটাই এইরকম।
মাঝে মাঝেই মাথার মধ্যে কিছু ইন্টারেস্টিং চিন্তাভাবনা আসে, চিন্তা করি আমি কে? আমি এখানে কেন? আমার রুট কোথায়? পারপাস অফ লাইফ কিডা? ব্যাপারগুলা মাঝে মাঝেই ভাবায় কিন্তু কোন স্ট্রেইট এনসার পাওয়া যায় না। যখন দেশের কোথা চিন্তা করি তখন ইন্টারেস্টিং অনেক কিছুই স্মৃতির পাতায় ভাসে উঠে। কিন্তু মজার ব্যাপার হইল মেমরির অনেক কিছুই আমি আস্তে ভুলে যাচ্ছি। অন্যভাবে বললে ব্যাপারটা এমন দাঁড়ায় যে আমি নিজেকেই/নিজের একটা পার্টকে আস্তে আস্তে ভুলে যাচ্ছি। ব্যাপারটা বেশ আতঙ্কজনক। তাইলে কি করা যায়? ডায়েরির পাতায় নিজেকে ডকুমেন্ট করা ছাড়া কোন উপায় নাই দেখি!!! কিন্তু এইটার একটা সমস্যাও আছে। ডায়রির একটা সমস্যা হইল, এই লেখাটা নিজের জন্যই লেখা হয়, সো এইটাতে এমন কিছু লেখা থাকে যেইটা খুব পারসোনাল, সেনসিটিভ এবং কম্প্রোমাইজিংও হইতে পারে। এই সেনসিটিভ ব্যাপারগুলা মেমরি থেকে খুব সহজে ইরেজ হয় না, ইরেজ হয় কম সেনসিটিভ জিনিসগুলা। আর সবচেয়ে বড় সমস্যা হইল এই একান্ত ব্যাক্তিগত লেখাগুলা কারো হস্তগত হইলে লজাস্কর পরিস্থিতি থেকে শুরু করে ব্ল্যাকমেইল পর্যন্ত অনেক কিছুই হইতে পারে এইখান থেকে। আমি নিজে দুইবার অনেক সময় ব্যয় করে লাইফের অনেক কিছু লিপিবদ্ধ করছিলাম। পরে যখন নিজেই নিজের লেখা পরতেছিলাম তখন বাধ্য হইয়া ডায়েরি দুইটারে নিজের হাতে পুড়াইয়া দেওয়া লাগছে!!!
এই সবগুলা সমস্যার সমাধান পাইছি ফেইসবুকের নোটে আর সামু ব্লগে। এইখানে লাইফের স্টোরিগুলা নিজের মত করেই লেখা যায়। ইভেন এইখানে নিজের সিক্রেটও স্পিল করা যায় বড় ধরনের কোন রিস্ক ছাড়াই। আর সবচেয়ে বড় ফায়দাটা হইল নিজেরে/ নিজের পাস্টরে ভালোভাবে প্রিজারভ করা যায় (নন-ফিকশন লিখলে)। আমার আম্রিকা আসার স্টোরিটা আমার কাছে খুব সিগনিফিকেন্ট একটা স্টোরি। যাতে ফিউচারে চাইলেই নিজের স্মৃতিচারণ নিজেই করতে পারি এই জন্য আম্রিকা আসার কাহিনীটা নিয়া এই সিরিজটা লিখতেছি। আর বোনাস হিসাবে কিছু ফেইসবুক লাইক/ব্লগের হিট তো থাকবেই...!!!
(চলপে.....)
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ৯:৩১