somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইডিয়টস জার্নি টু আম্রিকা!!! (এক)

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



(আগের কাহিনীর পর.........।)

এই কাহিনীর শুরুটা হইছিল ২০০৭ সালে! এস এস সি দিনাজপুর সরকারি কলেজে ভর্তি হবার পর শহরের রেলবাজারে সম্প্রীতি ছাত্রাবাস নামে একটা মেসে উঠছিলাম! ওইখানে আমিই ছিলাম সবচেয়ে জুনিয়র আর বাকি সবাই সিনিয়র! মানে সবাইরে বাইয়া/বাই কইরা ডাকা লাগছে আরকি! মেসে দুইজন বড় ভাই ছিল এপ্লিক্যান্ট (ভরতি পরীক্ষা দিয়া বেড়াইত!), তেনারা বেশ টেনশিতই থাকত সবসময়। একদিন দুপুরের দিকে দেখি ওরা সবার কাছ থেইকা দুয়া নিতেছে আর বড় ভাইগোরে কইতেছে ভাই দুয়া কইরেন!!! আমি শুইনা চিন্তা করলাম, কাহিনিডা কি? দ্বিচক্রযান লইয়া আবার কোথাও ভর্তি পরীক্ষা দিতে যাইতেছে নাকি?!!!

একটু ঘাটাঘাটি করতে যাইয়া শুনলাম, অকি!!!! ওনারা নাকি ডিভি লটারি কাটতে যাইতেছে! আমি তখন এক বড় ভাইরে জিগাইলাম এইডা আবার কি জিনিস? খায় না মাথায় মাখে? তখন উনি আমারে কষ্ট কইরা প্রথম আলোর আর্টিকেল দেখাই দিল। পইড়া টইরা আমি বুঝলাম, আম্রিকা আসার লটারি! আমি মনে মনে কই লটারি... হুহ!!! গেবনেও আমি একটা লটারি লাগাইতে পারি নাই! এলাকায় বৈশাখী মেলাগুলাতে টিকেট কাইটা কত্ত টাকা নষ্ট করছি (আর আমার ফ্রেন্ডরা রেডিও/ঘড়ি পাইছে!!!)! কেউ আমারে ফিরি দিলেও ডিভি লটারি কাটতাম না!!!

কিন্তু ফ্যাঁকড়াটা লাগলো অন্য জাগায়। টিকিট কাটতে নাকি ইন্টার পাশ হওয়া লাগবে! এইখানে ধরা খাই গেলাম! সেন্টিমেন্টে লাইগা গেল! আমি তো ইন্টার পাশ না! চাইলেও কাটতে পারতাম না। ওনাদের হই-হল্লা আর লটারি কাটার আনন্দ দেইখা আমার মিজাজটাই বিলা হইয়া গেল! সেই দিনই মনে মনে টাইমার সেট কইরা লাইলাম যে, খালি ইন্টার পাশটা কইরা লাই, তারপর অবশ্যই ডিভি লটারি কাটমু! যা থাক কপালে চুলামার!!!

এরপর ক্যামনে ক্যামনে কইরা টাইম পার হইয়া গেল।ফেল করতে করতে মুটামুটি ভালো কইরা পাশ কইরা লাইলাম! তক্কে তক্কে আছিলাম কবে লটারি ছাড়বে আর কবে টিকিট কাটমু! একদিন প্রথম আলোতে দেখি, লটারি ছাড়ছে!!!!! একটু ঘাইটা দেখি অকি! ব্যাপারটা আলাদা! কুনো টিকিট নাই! জাস্ট ইন্টারনেটে বইসা এপ্লাই করলেই হয়! মাগার সমস্যাটা হইল অন্য জাগায়। ইন্টারনেট কি জিনিশ ওইটাই বুঝতাম না!

আগের বড় ভাই দের কাছ থেইকা জানলাম আসলে ওইটা কুনু ব্যাপার না, গুলশান মার্কেটের ওইখানে একটা সাইবার ক্যাফে আছে (এইবার যাইয়া দেকছি ওইটা আর নাইক্কা) ওইখানে তুমার ট্রান্সক্রিপ্ট আর এক কপি সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডের ছবি লইয়া যাইবা, ওরাই যা করার কইরা দিবে!

আমি পাবলিকটা একটু মুখচোরা আছিলাম! ছবি টবি তুলতামনা। হাজার খুইজাও যখন একখান ছবি পাইলাম না তখন বাধ্য হইয়া ফডু প্যালেস থেইক্কা ঝকঝকা চাইর কপি ছবি তুইল্লা ছাইবার ক্যাফেতে হুড়মুড় কইরা ঢুইকা পড়লাম! যাইয়া দেখি অকি! বিশাল লাইন! লোকে দলে দলে ডিভি করতাছে! সবার চোখে মুখে ইদের আনন্দ! এক লোকের আম্রিকা যাওনের খুব শখ! ব্যাডায় চাইর ফেমিলি মেম্বার দিয়া চাইরটা ডিভি করতাছে! আমার তো আর হাসি থামে না! আমি আইছি মজা লইতে আর এই ব্যাটারা আইচে আম্রিকা যাইতে! কেউ আমারে ভুতা দাঁও দিয়া কাইট্টা মাইরালায় না কিয়েরে?

অনেকক্ষণ বইয়া থাকনের পর আমার পালা আইল, আমি ছবি দিলাম, ট্রান্সক্রিপ্টের ফুডুকপি দিলাম আর পঁচিশ টাকা দিলাম ওরা কি না কি চাপাচাপি কইরা একটু পর আমারে একটা কাগজ দিয়া কয় হইয়া গ্যাছে! এই কাগজটা যতন কইরা রাইখেন! আমিও ইডিয়ট নাচতে নাচতে বাসায় আইয়া বইয়ের র‍্যাকের ভিত্রে জিনিসটা হান্দাই দিলাম! আমি তো জানি আমার লটারি কপালডা ফাটা! গেবনেও আমার লটারি লাগত না! লটারি কাটা হইয়া গ্যাছে, শখও মিট্টা গ্যাছে আর কি লাগে! সো ব্যাপারটা পুরাপুরিই ভুইলা গেলাম!

(চল্পে......।)
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৪৭
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×