somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইডিয়টস জার্নি টু আম্রিকা (সাত)

২১ শে অক্টোবর, ২০১৫ সকাল ৭:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আগের কাহিনীর পর.........।

এরপর আমি ক্যাম্পাসে চইলা গেলাম পরের সেমিস্টারের মিডটারম দেওয়ার জন্য। আর আমার আব্বারে কইলাম যে আমার একখান পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট লাগবে থানা থেইকা। ওইটা নাকি আবার স্পেশাল ব্রাঞ্চ দ্বারা স্ট্যাম্পড কইরা ফরেন মিনিস্ট্রি থেইকা এটেস্টেড করানো লাগবে।

আমার পাওয়া তথ্য মোতাবেক এই জিনিসটা পাওয়া মোটামুটি পানির মত সহজ হওয়ার কথা। হাজি দানেশে আমার সেকেন্ড সেমিস্টারের মিড-টার্ম চলতেছিল তখন। তো আমি মনে করলাম আমি ঐখানে মীড টার্মটা দিয়া লাই আর এইসময়ের মধ্যে আমার আব্বা পেপারটা থানা থেইকা বাইর কইরা রাখুক। কিন্তু উপরআলার ইচ্ছা মনে হয় ছিল অন্যরকম। থানার ওসি নাকি নতুন বদলি হইয়া আসছে, তাঁর উপ্রে এই থানায় আসার আগে নাকি কি আকাম কইরা আসছে। লোকটার চাকরি নাকি আর বেশিদিন ছিল না। এই ব্যাটা ঠিক ঠাহর করতে পারতেছিল না যে আমরা ভেরিফিকেশন রিপোর্ট খানা দিয়া কি করতাম। হ্যায় ফ্রড সাস্পেক্ট করতেছিল! আবার সে কোন কিছুতে ফাইসা যায় নাকি এই ভয়ে কয় দিমু না!!! আমার আব্বা এলাকার বিম্পি-আমিলিগ-জামাত সবগুলা নেতারে দিয়া সুপারিশ করাইছে কিন্তু সে কারো কথাই কানে তুলে নাই। এমনকি আমার আব্বা তারে দশ হাজার টাকা সাধছিল (ব্যাপারটা সত্য) কিন্তু সে রাজি হয় নাই। এখন অবস্থা এমুন হইল যে, এই জিনিষটা না হইলে আমার ভিসা ডিনাই হইয়া যাইতে পারে।

এর মইদ্ধে আমার মিড টার্ম শেষ হইল আর ইন্টারভিউয়ের সময়ও কাছে আইসা পড়ছিল। আমি বাড়িত আইসা দেখতাছি এই এই অবস্তা!!! এইবার ফাইনাল ট্রাইটা আমারেই দেওন লাগবো। একদিন বিকালে গেলাম যাইয়া দেখি ওসি ব্যাটা নাকি থানায় নাই। থানার পুলিশ মামারা কয় কালকে সকালে আইসো। তাঁর পরদিন সকালে আবার যাইয়া দেখি “বড় বাবু” নাকি ঘুম থেইকাই উঠে নাই। তো একটু পর সাহেব ঘুম থেকে উইঠা আইলেন! তারপর সকালের মিষ্টি রোদ পোহাইতে শুরু করলেন। আমি যাইয়া মুখ কাঁচুমাচু কইরা সাহেবরে কইলাম, হুজুর, আমার একখান পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট লাগবো।

হুজুররে দেইখা মনে হইল যে, হ্যারে মনে হয় বিশটা মৌমাছি একযোগে হুল ফুডাইয়া দিছে। হ্যাঁয় কয় “এই ব্যাডা ওইটা দিয়া কি করবি”! আমি কইলাম ডিভি পাইছি, আম্রিকা যামু। আমারে কয় চিঠি আইছে? আমি কইলাম হ। এই দেখেন (প্রিন্ট করা কপিটা দেখাইতেছিলাম)!

ব্যাডায় বিনা কারণে খেইপ্পা বোম হইয়া কাগজগুলারে ছুইড়া মাইরা কয়, যা ভাগ ব্যাডা। তরে ভেরিফিকেশন রিপোর্ট দিমুনা। আমারে গাধা পাইছস? আমি তো তাঁর রিয়াকশন দেইখা তব্দা খাইয়া গেলাম। নিজেরে পিপড়ার মতন ছোট মনে হইতেছিল। এর আগে কেউ আমার লগে এরাম তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য কইরা কথা কয় নাই। আর এই শুয়োরের আওলাদ আমার লগে এরাম ব্যাবহার করে! মাগার ব্যাপারটা হইল, এই ব্যাটার কাছ থেইকাই আমার রিপোর্টখানা বাইর করন লাগবো। সো সাক ইট অল আপ। অবশ্য রাগ কইরা আমি যে তার বিশেষ কোন ক্ষতি করতে পারতাম ব্যাপারটা তেমনও না। আমার আত্মীয় সস্বজনদের মইদ্দে কেউ আবার এম্পি-মন্তিরি নাই কিনা! এইদিন টের পাইছিলাম, আমার বাপের সাথে এই নরকের কীট কত্ত খারাপ ব্যাবহার করছিল। হ্যারে এখন পাইলে গাঁটের পয়সা খরচ কইরা হইলেও পুলাপাইন দিয়া ধইরা থাব্রাইতাম।

যাই হউক মন-টন খারাপ কইরা বাড়িত গেলাম। বাড়িত যাইয়া রিপোর্ট করলাম কি কি হইছে। আমার আব্বা কইল কইছিলাম না! তার পরদিন সকালে লজ্জা শরমের মাথা খাইয়া এই বান্দা আবার থানায় হাজির। তৈল মর্দন কইরা হইলেও “বড়বাবুরে (পড়তে হবে শুয়োরের আওলাদরে)” রাজি করানো লাগবে! ওইখানে যাইয়া শুনলাম ঐদিন নাকি ওপেন হাঊজ ডে! কাহিনীটা ঠিক বুজলাম না। একটু পর শুনলাম এলাকার “এলাকার সার্কেল অফিসার” নাকি আসতেছে। সে নাকি বড় বাবুর চেয়েও বড় বাবু! সব মাথার উপ্রে দিয়া যাইতেছিল। যাইহোক, একটু পরে সেই অফিসার আসলেন আরও প্রায় সাত-আট জন এলাকার লোক আসলো। তারপর কার্যক্রম শুরু হইল। একটু পর বুইজ্জা লাইলাম কিসসা টা কি! কাহিনীটা এমন যে লোকজন এলাকার আইন শৃঙ্খলা সম্পর্কিত সমস্যাগুলা ওইদিন তুলবো, আর ব্যাপারগুলা নোট কইরা রাখা হৈবো। পরের মাসের মিটিং এ প্রথমে ওই জিনিষগুলা সমাধা হইছে কি না এইটার উত্তর ওসিরে দেওন লাগবো। কুনো সমস্যার সমাধান না হইলে ওসিরে কারন দর্শাইতে হইবে। কিছুক্ষণ পর যখন আলোচনা প্রায় শেষ, তখন সার্কেল অফিসার কয় আর কারো কিছু বলার আছে? আমি তখন ক্লাসের ছাত্রের মত কইরা হাত তুইলা কইলাম, স্যার, আমার একটা ব্যাপার আছে! সার্কেল অফিসার তো অবাক! আমি তখন টানেটুনে আঠার, কিন্তু দেইখা মনে হইত আমার বয়স পনেররও কম! মানে ব্যাপারটা হইল ওই ভদ্রলোকের বিশ্বাসই হয় নাই যে আমার কিছু কউয়ার থাকতে পারে। এরপর কইলাম, যে আমি ডিভি পাইছি! আমার একটা পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট লাগবে। আমি আর আমার আব্বায় মিল্লা একমাস থেইকা ঘুরতাছি মাগার আমারে ওইটা দেওয়া হইতাছে না। আর আমার ইন্টারভিউয়ের ডেটও আগাইয়া আইছে। আমারে তো ভিসা দিব না! এরপর ওসি আমার মুখের কথা কাইড়া লইয়া কয় না স্যার, ওইগুলা ভুয়া! ডিভি পায় নাই! মাগার সার্কেল অফিসার ওইগুলা শুনতে নারাজ (ইস্মাট লোক মনে হয় কিছু টের পাইছে!)। সেই লোক ওসিরে থামাইয়া দিয়া আমারে কয়। ডিভি পাইছো? তুমি তো খুব লাক্কি মানুষ হে! ওসি সায়েব, এই ব্যাপারটা তাড়াতাড়ি কইরা দিয়েন। তারপরেই সেই দিনের ওপেন হাউজ ডে ক্লোজ হইয়া গেল আরকি! এরপর ওসি আমারে কয় কাইল্কে সক্কালে আইও (এইবার আর ব্যাডা কয়না!)।

(চলতে থাকপে......।)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ৮:৩২
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×