somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি

০৮ ই মার্চ, ২০১৩ সকাল ১১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এ দেশের যেকোন সরকারের ৫ বছরের টার্মের শেষ বছর সরকার থাকে দৌড়ের উপর, বিরোধীদল থাকে সরকারের নানান ব্যর্থতার ইস্যু নিয়ে আন্দোলনের তুঙ্গে... আমরা দেখে দেখে অভ্যস্ত! তবে এবার একটু প্রেক্ষাপট ভিন্ন। যুদ্ধাপরাধীদের ব্যাপারে রায় হচ্ছে সরকারের শেষ বছরেই। হয়তো আওয়ামী লীগ আশা করছে এতে করে তার ভোট ব্যাংক বাড়বে আগামী নির্বাচনে। আরেক নতুন সংযোজন হলো শাহবাগে তরুণদের স্বাধীনতার চেতনায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে গঠিত গণজাগরণ মঞ্চ, যেখান থেকে যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবীর পাশাপাশি জামাত নিষিদ্ধকরণের দাবীও উঠছে। বিপত্তিটা বাঁধছে এখানেই। একদিকে সাঈদীর ফাঁসীর রায় নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছে অনেকে, প্রায় ৭০ এর উপরে সাঈদীভক্ত তরুণ তাজাপ্রাণ গিয়েছে। ঐদিকে আওয়ামীপন্থী বা বামদের এক দফা এক দাবী, সব যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসী চাই! এদিকে বিএনপি ঠিক আবেগ দিয়ে নয়, যুক্তি দিয়ে বিচার করছে ঘটনাবলী, জামাত শিবিরের উপরে পুলিশের নির্বিচার গুলির প্রতিবাদ করছে, যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নিতে দেখিনি, জামাত, বিএনপি দুই পক্ষের নারীনেত্রী-কর্মিরা এবার গ্রেফতার হলো, এটা আমার কাছে একাধারে হতাশার এবং আশংকার বিষয়! জানি না জামাত-শিবির তাদের করণীয় কি ঠিক করবে? তবে দল নিষিদ্ধ হলে দুটো ঘটনা ঘটতে পারে, হয় তারা সর্বহারাদের মতো সন্ত্রাসী দলে পরিণত হবে, নিজেদের নেতাদের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেয়ার চেষ্টা করবে, না হয় নতুন নাম দিয়ে কোন দল গঠন করবে। কি ভবিষ্যত এই চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার জানা নেই, তবে বিএনপি -আওয়ামী লীগ, জামাত-আওয়ামী লীগ আপাতত মুখোমুখি, বিএনপি এখনো নিজেদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে সরাসরি আন্দোলনে নামেনি, আমরা সাধারণ জনগণ দেখতে থাকি কোথাকার জল কোথায় গিয়ে গড়ায়?

দেশের সব মানুষকে সাথে নেয়া যায় এমন রাজনৈতিক দল প্রধানত দুটো আওয়ামী লীগ, বিএনপি। জাতীয় পার্টিকে হিসেবের বাইরেই রাখি আপাতত। জামাতসহ যেকোন ইসলামী দল বা বামদলগুলোর একটা বড় সীমাবদ্ধতা হলো এখানে নির্দিষ্ট এক আদর্শশ্রেণীর মানুষের ঠাঁই মেলে, সবার জায়গা সেখানে হয় না, যদিও তারা বলে যে আপামর জনসাধারণের দেখভাল করার দায়িত্ব তাদের, কিন্তু নিজেদের দলের ভিতরে বা প্রশাসনিক স্তরের ভিতরে যেহেতু অন্য আদর্শের কাউকে তারা সেভাবে গুরুত্ব দিতে পারে না, তখনই একটা আস্থাহীন পরিস্থিতি তৈরী হয়। এতে করে শুরু হয় আদর্শিক দ্বন্দ্ব। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বামেরা মাওলানা ভাসানীর মতো ধার্মিক নেতাকে মেনে নিতে পারে কারণ তিনি সাম্যের রাজনীতি করেছেন, কিন্তু জামাতে ইসলামীকে (যুদ্ধাপরাধের বিষয়ের বাইরে) মেনে নিতে পারে না বুর্জোয়া দল হিসেবে। এই একই মাপকাঠিতে তারা আওয়ামী লীগ, বিএনপিকেও মেনে নেয় না। কিন্তু বামদের সবচেয়ে বড় যে সমস্যা তা হলো তারা তাদের জীবনাচরণে সবার আগে ধর্মকে বাদ দিয়ে ফেলে (সবচেয়ে সহজ আদর্শিক জিহাদ), ধর্ম নাকি শ্রেণীশত্রু তৈরী করে, কিন্তু অন্যান্য জনসেবা বা বুর্জোয়াবিরোধী আন্দোলন তারা ধীরে ধীরে করে। কেউ কেউ বেশি আগ বাড়িয়ে নাস্তিকতা জোরে শোরে প্রচার করে। এটা অনেকটা ধর্মপ্রচারের মতোই মনে হয় আমার কাছে। কিন্তু এই মুসলিম মেজোরিটি দেশে যেখানে হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধসহ আরো নানা ধর্ম বিদ্যমান সেখানে এই বামতত্ত্ব তেমন একটা জনপ্রিয়তা পায় না, তাই তারা ধর্মকে সরাসরি বাদ না বলে ধর্মীয় মূল আচাররীতিকে 'মৌলবাদ' আখ্যা দিয়ে এক ধরণের ঘৃণা তৈরী করার চেষ্টা করে জনমনে। তাই সাধারণ ধার্মিক সে যে ধর্মেরই হোক না কেন ধর্মীয় জ্ঞান কম থাকলে এসব প্রোপাগান্ডায় সহজে প্রভাবিত হয়। নিজেকে আধুনিক, প্রগতিশীল প্রমাণ করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত এসব ভুল কথার ফাঁদে পা দেয়। তো, মোদ্দাকথা হলো এই যে এসব আদর্শিক দলে আপামর জনসাধারণ ঠাঁই পায় না।

০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×