somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খেয়ে যায় মোছওয়ালা নাম পরে দাড়িওয়ালার

২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সম্প্রতি এক মুসলিম মহিলাকে বিমান থেকে বের করে দেওয়া হল নিরাপত্তার অজুহাতে ! কয়েকদিন আগের ঘটনা এক মুসলিম ইংলিশ ক্রিকেটারও বিমানবন্দরে হয়রানির শিকার হয়েছে ! সুপারস্টার শাহরুখ খান ও নাকি এরকম বিড়ম্বনার শিকার হয়েছিলেন যার ফলশ্রুতিতে“মাই নেইম ইজ খান’’ মুভি প্রসব হল ! আমি নিজেও বিমান বন্দরে এরকম ঘটনার ভুক্তভোগী !

ঘটনাকাল ২০১৩ এর জানুয়ারি মাস ! ঘটনাটা হুবুহু তুলে দিলাম !

লাইনে দারিয়ে আছি খাম্বার মত খারা হয়ে কোরিয়ান ইমিগ্রেশনের সামনে । উপরওয়ালার মনে হয় আজ লাইনে বরকত দান করেছেন, লাইন যেন শেষ হতে চায় না । থাইল্যান্ড এবং লাউস ঘুরে এসে শরীর ক্লান্ত হয়ে পরেছে। অবশেষে আমার ডাক এলো ইমিগ্রেশনে যাবার। আমি খুশীর ঠেলায় বোয়াল মাছের মত হা করে একটা হাসি দিয়ে সামনে এগিয়ে গেলাম। ইমিগ্রেশনের মেয়ে অফিসার, বয়স খুব বেশী হবে না, দেখতে সুতা কৃমির মত পাতলা সুশ্রী। আমাকে দেখে সবগুলো দাঁত বের করে দিল, আমি আমার পাসপোর্ট এগিয়ে দিলাম। পাসপোর্ট হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে-ঘারিয়ে নেরে চেরে দেখছে আর কিছুক্ষণ পর পর আমার দিকে আর চোখে তাকাচ্ছে। আমি পকেটে হাত দিলাম কালো চশমাটা পরে অতি ভাব দেখানোর জন্য । সুন্দরী মেয়ে এভাবে তাকাচ্ছে, চোখে কালো চশমা না থাকলে গুনা হয়ে যাবে না!

“কি ব্যাপার কোন সমস্যা?” বললাম আমি।

“তুমি-তো আমাদের হটলিষ্টে আছ!” গর্বে আমার বুকের ছাতাটা ফুলে উঠছে। আমি বুকটা টান টান করে বললাম “তাই নাকি?”
“হুম! তোমাকেই খুঁজছি আমরা !” বলল মেয়েটি।

আমি মনে মনে বলি খাইছে আমারে, আমি এত পপুলার হয়ে গেছি নিজেই জানি না। ইমিগ্রেশনের লোকজন পর্যন্ত আমাকে খুঁজে! আমি সামনের দিকে ঝুকে গিয়ে ভাব নিয়ে বললাম “আমি আবার কি সু-কর্ম সম্পাদন করেছি যে তোমাদের টপ লিস্টে আছি?”

“তোমার নামে এক বাংলাদেশী টপ টেরোরিষ্ট আমাদের লিস্টে আছে। তোমাকে একটু ঐ অফিসে যেতে হবে” হাত দিয়ে দেখিয়ে বলল মেয়েটি।

আমার বুকের ভিতরটা ধরাস করে উঠল। একশ আশি ডিগ্রি এঙ্গেলে আমি মূহূত্যেই যেন চুপসে গেলাম। আমি অফিসে গেলাম, এক অফিসার আমার পাসপোর্ট আর আইডি কার্ড নিয়ে কম্পিউটার এ টিপে টিপে কি যেন দেখছে। আমি বললাম “কি ব্যাপার কাহিনী কি?”

“আমাদের কিছু ইনবেষ্টিকেশন করতে হবে তোমার ব্যাপারে। তোমার নাম আর জাতীয়তা এক টেরোরিষ্টের সাথে মিলে গেছে। ”

“কতক্ষণ লাগবে ইনবেষ্টিকেশন শেষ করতে? ” চিন্তিত হয়ে জিজ্ঞেস করলাম।

“কতক্ষণ লাগবে এটা জিজ্ঞেস কর না, এটা সিরিয়াস প্রবলেম ”

“আমার অধ্যাপক সাথে আছে তুমি চাইলে আমার ব্যাপারে তাকে প্রশ্ন করতে পার। আমি তার ল্যাবে ৫ বছর কাজ করেছি।”

“হুম! থাইল্যান্ডে গেছ কেন?”

“আমার পেপার প্রেজেন্টেশন করতে গেছিলাম! আমাকে তাড়াতাড়ি ছেরে দাও সবাই বাইরে আমার জন্য অপেক্ষা করছে!” বললাম আমি।

“সবই বুঝলাম, তারপরও আমাদের কিছু ইনভেষ্টিকেশনের দরকার আছে” কিছুটা নমনীয় হয়ে বলল লোকটা।

এখানে ওখানে বিভিন্ন জায়গায় ফোন করছে আমার ব্যাপারে খোজ খবর নেবার জন্য। ওদের এই গতি-মতি দেখে আমি আমার অধ্যাপককে ফোন দিয়ে দরিয়ে দিলাম। যাইহোক এভাবে অনেকটা সময় বাংলাদেশ এম্বাসি, পুলিশ ষ্টেশনে ফোন করে খোজ খবর নিয়ে হতাশ হয়ে আমাকে ছেরে দিল। ছাড়ার সময় বলল তোমাকে দেখেই ভাবছিলাম ভাল লোক, তারপর ও আমাদের কিছু অফিসিয়াল কাজ আছে সেগুলো করতে হয়।

আমি মনে মনে বললাম সব ঠাডা কি আমার উপরেই পরে! আমার নামের ঐ সন্ত্রাসীটাকে মনে মনে গালি গিয়ে বললাম, সন্ত্রাসীগিরী করবি ভাল কথা, আমরা গর্ব করে বলব আমাদের দেশের সন্ত্রাসীরা আজ দেশের সীমানা পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও পৌঁছে গেছে! আগের মত আর গম চুরি,ছ্যাঁচড়ামিতেই সিদ্ধহস্ত না, প্রমোশন পেয়ে অনেক উচ্চ পর্যায়ে পৌছে গেছে, কোরিয়ান ইমিগ্রেশনে পর্যন্ত তাদের খুজে! কিন্তু কথা হল আমার নামে নাম রাখতে গেলি কেন!

এই ধরনের ঘটনা যার সাথে ঘটে একমাত্র সেই বুঝতে পারে তখনকার মানুষিক অবস্থা কেমন হয় ! ঘটনাটা মনে পরে গেল সম্প্রতি এর উপর কয়েক টা নিউজ পড়ে !
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:১৪
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×