somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্লগ কাকে বলে, কত প্রকার ও কি কি ?

১০ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৩:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্লগ শব্দটি ইংরেজ Blog এর বাংলা প্রতিশব্দ, যা এক ধরণের অনলাইন জার্নাল । ইংরেজি Blog শব্দটি আবার Weblog এর সংক্ষিপ্ত রূপ। যিনি ব্লগে পোস্ট করেন তাকে ব্লগার বলার হয়। ব্লগাররা প্রতিনিয়ত তাদের ওয়েবসাইটে কনটেন্ট যুক্ত করেন আর ব্যবহারকারীরা সেখানে তাদের মন্তব্য করতে পারেন। এছাড়াও সাম্প্রতিক কালে ব্লগ ফ্রিলান্স সাংবাদিকতার একটা মাধ্যম হয়ে উঠছে। সাম্প্রতিক ঘটনাসমূহ নিয়ে এক বা একাধিক ব্লগার রা এটি নিয়মিত আপডেট করেন।

বেশিরভাগ ব্লগই কোন একটা নির্দিষ্ট বিষয়সম্পর্কিত ধারাবিবরণী বা খবর জানায়; অন্যগুলো আরেকটু বেশিমাত্রায় ব্যক্তিগত পর্যায়ের অনলাইন দিনপত্রী/অনলাইন দিনলিপিসমূহ। একটা নিয়মমাফিক ব্লগ লেখা, ছবি, অন্য ব্লগ, ওয়েব পেজ আর এবিষয়ের অন্য মাধ্যমের লিংকের সমাহার/সমষ্টি। পাঠকদের মিথষ্ক্রিয়াময় ছাঁচে মন্তব্য করার সুবিধে-রাখা বেশিরভাগ ব্লগের একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক। প্রায় ব্লগই মূলত লেখায় আকীর্ণ, কিছু কিছু আবার জোর দেয় শিল্প (আর্ট ব্লগ), ছবি (ফটোব্লগ), ভিডিও (ভিডিও ব্লগিং), সঙ্গীত (এমপিথ্রিব্লগ) আর অডিওর (পডকাস্টিং) ওপর। মাইক্রোব্লগিং-ও আরেকধরনের ব্লগিং, ওটায় খুব ছোট ছোট পোস্ট থাকে। ডিসেম্বর, ২০০৭-এর হিসেবে, ব্লগ খোঁজারু ইঞ্জিন টেকনোরাট্টি প্রায় এগারো কোটি বার লাখেরও বেশি ব্লগের হদিশ পেয়েছে।

ইতিহাসমূল প্রবন্ধ: ব্লগিং-এর ইতিহাস এবং অনলাইন দিনপত্রী "ওয়েবলগ" শব্দটা জোম বার্গার ১৭ ডিসেম্বর, ১৯৯৭-এ প্রথম ব্যবহার করেন। শব্দটার ছোট্ট সংস্করণ "ব্লগ" চালু করেন পিটার মেরহোলজ, ঠাট্টা করে তিনি তাঁর ব্লগ পিটারমে.কম (PeterMe.com)-এর সাইডবারে ১৯৯৯-এর এপ্রিল বা মে মাসের দিকে ওয়েবলগ (weblog) শব্দটা ভেঙে উই ব্লগ (we blog) হিসেবে লেখেন। তার ঠিক পরপরই, পাইরা ল্যাবস-এ ইভান উইলিয়ামস "ব্লগ" শব্দটা বিশেষ্য এবং ক্রিয়া দুটো হিসেবেই ব্যবহার করা শুরু করেন ("ব্লগ করা", মানে দাঁড়ায় "কারোর ওয়েবলগ সম্পাদনা করা বা কারোর ওয়েবলগে লেখা দেওয়া") এবং পাইরা ল্যাবের ব্লগার পণ্যের সাথে সম্পর্ক রেখে "ব্লগার" শব্দটা ব্যবহার করেন, জনপ্রিয় করে তোলেন পরিভাষাটি।

উৎসকথাব্লগিং জনপ্রিয় হওয়ার আগে, ডিজিটাল গোষ্ঠীগুলোর নানান ধরন ছিলো, ছিলো ইউজনেট (Usenet), ছিলো জিনি(GEnie), বিক্স (BiX)-এর মতো বাণিজ্যিক অনলাইন সার্ভিস, আরো ছিলো পুরনো আমলের কম্পুসার্ভ (CompuServe), ই-মেল লিস্টস আর বুলেটিন বোর্ড সিস্টেমস (বিবিএস)।১৯৯০-এর দিকে, ইন্টারনেট ফোরাম সফটওয়্যার "থ্রেড"-এর মাধ্যমে কথোপকথন চালানোর ব্যবস্থা শুরু করে। থ্রেড হচ্ছে একটা ভার্চুয়াল "কর্কবোর্ড"-এ বার্তাগুলোর মাঝখানের সাময়িক সংযোগের সমষ্টি।

আধুনিক ব্লগের উৎপত্তি ঘটে অনলাইন দিনপত্রী থেকে, যেখানে লোকেরা তাঁদের ব্যক্তিগত জীবনের বিবরণ রাখতেন। এধরনের বেশিরভাগ লোকেরাই নিজেদের বলতেন ডায়েরিস্টস, জার্নালিস্টস অথবা জুমালারস। সোয়ার্থমোর কলেজ-এ ১৯৯৪-এর দিকে পড়ার সময় ব্যক্তিগত ব্লগিং-করিয়ে জাস্টিন হল-কে অন্যতম আদি ব্লগার হিসেবে ধরা হয়, যেমনটা ধরা হয় জেরি পুমেল-কেও। ডেভ উইনার-এর স্ক্রিপ্টিং নিউজ-এরও সবচাইতে পুরনো আর সবচাইতে বেশি দিন ধরে চালু থাকা ওয়েবলগ হিসেবে খ্যাতি আছে।

প্রথম দিককার ব্লগগুলো ছিলো স্রেফ সাধারণ ওয়েবসাইটের হাতে-বানানো উন্নততর উপকরণ। তবে, সময়ের সাথে বিপরীতক্রমে পোস্ট-করা ওয়েব প্রবন্ধগুলো লেখা এবং দেখভাল করা সহজ করার জন্যে বিবর্তিত কৌশলগুলোই প্রকাশ ব্যবস্থাটা বড়সড় একটা জনগোষ্ঠীর কাছে, যারা তেমন প্রযুক্তিদক্ষ নয়, বেশ সহজে ব্যবহারযোগ্য করে তোলে। এতে করেই শেষমেষ আলাদা ধরনের একটা অনলাইন প্রকাশনা ব্যবস্থা গড়ে ওঠে যেটা আজকাল আমাদের চেনা চেহারার যেরকম ব্লগ সেরকমটা তৈরি করে। উদাহরণস্বরূপ, কিছু কিছু ব্রাউজার-নির্ভর সফটওয়্যারের ব্যবহার এখন ব্লগের একটা নিতান্তুই সাধারণ ব্যাপার। ব্লগ হোস্ট করার জন্যে আছে নির্ধারিত ব্লগ হোস্টিং সার্ভিস, এছাড়াও ওগুলো ব্লগ সফটওয়্যার কিংবা নিয়মিত ওয়েব হোস্টিং সার্ভিস ব্যবহার করেও চালানো যায়।

কিছু আদ্যিকালের ব্লগার, যেমন দ্য মিস্যানথ্রোপিক বিচ ১৯৯৭ সালের দিকে যখন ব্লগিং শুরু করে, তারা নিজেদের অনলাইন উপস্থিতির নাম দিয়েছিলো জাইন (zine)। তখনো "ব্লগ" নামের পারিভাষিক শব্দটা আজকালকার সাধারণ ব্যবহারের পর্যায়ে আসে নি।

জনপ্রিয়তা বৃদ্ধিশুরুটা ধীরগতির হলেও, ব্লগিং দ্রুতই জনপ্রিয়তা পায়। ১৯৯৯ সাল এবং তার পর থেকেই ব্লগ ব্যবহার বাড়তেই থাকে। প্রথম দিককার কিছু ব্লগ হাতিয়ারের প্রায়-সমসাময়িক আবির্ভাব ব্যবহারটা আরো লোকপ্রিয় করে:

• ১৯৯৮ সালে ব্রুস আবেলসন ওপেন ডায়রি নামান, এতে করে হাজারো অনলাইন দিনপত্রী জন্ম নেয়। ওপেন ডায়রির আবিষ্কার হচ্ছে পাঠক মন্তব্য, এটাই ছিলো প্রথম ব্লগ কমিউনিটি যেখানে পাঠকেরা অন্য লেখকের ব্লগ অন্তর্ভুক্তিতে মন্তব্য করতে পারতেন।

• ১৯৯৯-এর মার্চে ব্র্যাড ফিটজপ্যাট্রিক শুরু করেন লাইভ জার্নাল।

• জুলাই, ১৯৯৯-এ এন্ড্রু স্মেলস কোন ওয়েবসাইটে একটা "খবর পাতা" রাখার বিকল্প হিসেবে জন্ম দেন পিটাস.কম-এর, এর পরপরই সেপ্টেম্বর, ১৯৯৯-এ আসে ডায়েরিল্যান্ড, যেখানে ব্যক্তিগত দিনপত্রীমূলক কমিউনিটির ওপর জোর দেওয়া হয়। ইভান উইলিয়ামস এবং মেগ হুরিহান (পাইরা ল্যাবস) ব্লগার.কম চালু করেন অগস্ট, ১৯৯৯-এ। (গুগল এটা কিনে নেয় ২০০৩-এর ফেব্রুয়ারিতে)।

সামাজিক ব্লগসামাজিক ব্লগ হচ্ছে যেখানে বহু সংখ্যক ইন্টারনেট ব্যবহারকারী তাদের সুচিন্তিত মতামত ও লেখনীর মাধ্যমে একটি প্লাটফর্ম গড়ে তোলেন। বাংলা ভাষায় এই পর্যন্ত প্রায় পঞ্চাশটি সামাজিক ব্লগের সুচনা হয়েছে কিন্তু তাদের অধিকাংশই জনপ্রিয়তা হারিয়েছে, কিন্তু বন্ধ হয়ে গেছে। মুষ্টিমেয় কিছু ব্লগ আছে যেখানে ব্লগারদের নিয়মিত পদচারনা ঘটেঃ
১। সামহোয়্যারইন ব্লগঃ http://www.somewhereinblog.net

২। সোনারবাংলাদেশ ব্লগঃ http://www.sonarbangladesh.com

৩। সচলায়তনঃ http://www.sachalayatan.com

৪। আমার ব্লগঃ http://amarblog.com

৫। প্রথম আলো ব্লগঃ http://www.prothom-aloblog.com

ব্যক্তিগত ব্লগঃ এখানে ব্যাক্তি কোন একটি বিষয়ের উপর তার মতামত পোষ্ট আকারে তুলে ধরেন এবং পাঠকদের সাথে এর উপর মতামত আদান প্রদান করেন।

কোম্পানী/প্রাতিষ্ঠানিক ব্লগঃ কোম্পানী/প্রতিষ্ঠান তাদের কোন পণ্য বা সেবার উপর নতুন নতুন তথ্য প্রদান করেন এবং পাঠক তাদের মতামত প্রদান করতে পারেন।
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

দুলে উঠে

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৫৬

দুলে উঠে
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

মন খুশিতে দুলে দুলে ‍উঠে
যখনই শুনতে পাই ঈদ শীঘ্রই
আসছে সুখকর করতে দিন, মুহূর্ত
তা প্রায় সবাকে করে আনন্দিত!
নতুন রঙিন পোশাক আনে কিনে
তখন ঐশী বাণী সবাই শুনে।
যদি কারো মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তরে নিয়ে এ ভাবনা

লিখেছেন মৌন পাঠক, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩০

তরে নিয়ে এ ভাবনা,
এর শুরু ঠিক আজ না

সেই কৈশোরে পা দেয়ার দিন
যখন পুরো দুনিয়া রঙীন
দিকে দিকে ফোটে ফুল বসন্ত বিহীন
চেনা সব মানুষগুলো, হয়ে ওঠে অচিন
জীবনের আবর্তে, জীবন নবীন

তোকে দেখেছিলাম,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×