somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তরুণ উদ্যোক্তা বনাম আই বুড়ো সমাজ

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বর্তমান সরকার তরুণ উদ্যোক্তা তৈরিতে যথেষ্ট সচেতন । কিন্তু তরুণরা আসলে উদ্যোক্তা হবার যোগ্যতা রাখে কিনা তা ভাবা দরকার । আজকের পত্রিকায় দেখলাম সরকারের উদ্যোক্তা তৈরির ৩৪৮ কোটি টাকা আমাদের তরুণরা মেরে দিয়েছে ।এটা খুবই স্বাভাবিক ।
যেখানে তরুণদের আদর্শ ব্যবসায়ীরা সবাই ঋণ খেলাপি সেখানে হাতে খড়ি সরকারের টাকায় হয়েছে এটাই সরকারের বড় পাওনা । কি কারণে সরকার আমাদের তরুণদের নিয়ে এতো আশাবাদী আমার জানা নেই । তবে আপনি যত বেশী আশা করবেন আপনার হতাশার ধাক্কা তত জোরে আসবে । অন্তত ইকোনমিক্সের স্যাচুরেশন তত্ত্বের ভিত্তিতে এটা নিচ্ছিত ভাবে বলা যায় ।

বর্তমানে তরুণ উদ্যোক্তা বলতে একটা ওয়েব সাইট বা আই ডি বি ভবনে একটা কম্পিউটারের দোকান সর্বোচ্চ এটুকু বুজি আমরা ।আর আমাদের তরুণদের দোষ দিয়ে লাভ নেই । কারণ এর চেয়ে বেশী কিছু দেবার সামর্থ এদের আছে কিনা আমার জানা নেই । সরকার সমস্যার গোড়ায় না গিয়ে কোটি কোটি টাকা ঢালছে তরুণদের পেছনে । আসুন জানি কেন আমাদের তরুণদের উপর এতটা বিশ্বাস করা যায় না ।

উদ্যোক্তা হতে হলে ভালো আইডিয়া দরকার । আর এই আইডিয়ার ভান্ডার খুলে বসে আছে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় গুলো । যেখানে বি বি এ আর এম বি এ কোর্সের ছড়াছড়ি । ব্যবসা বিদ্যায় ভালো করলেই যে ব্যাবসায়ী হওয়া যাবে একথা কোথাও লিখা নেই । সুতরাং প্রচন্ড আইডিয়া নিয়েও আমাদের তরুণরা উদ্যোক্তা হতে পারছে না । এর কারণ এদের সিলেবাসের কোথাও আইডিয়া কিভাবে বাস্তবায়ন করবে তার উল্ল্যেখ নেই । আর ব্যবসা প্রশাসনের একটা ছেলে সামান্য একটা কম্পিউটার প্রোগ্রামিং জানে না । যেখানে এই সব বেসিক কম্পিউটার প্রোগ্রামিং গুলো আমেরিকার মতো দেশে স্কুলে থাকতে শিখানো হয় সেখানে আমাদের তরুণরা কম্পিউটার সাইন্স পড়তে গিয়ে এইসব শিখছে ।

বুজতেই পারছেন যে ব্যবসা জানে সে কম্পিউটার জানে না আর যে কম্পিউটার জানে সে ব্যবসা জানে না । মিলন হবে কি করে ? সামান্য এই কারণে কত তরুণ তাদের ব্যবসা প্রসার করতে পারছে না কল্পনাও করতে পারবেন না । সরকার তরুণদের সিলেবাসের দিকে মনোযোগ দিলে দেখবেন এমনিতেই জুকারবার্গ তৈরী হবে । কোটি কোটি টাকা ঢালতে হবে না ।

সরকারি ভাবে উদ্যোক্তাদের লোন আমাদের দেশ ছাড়া অন্য কোন দেশ দেয় বলে আমার জানা নেই । কারণ যে ব্যবসা এখনো আলোর মুখ দেখেনি তার পেছনে সরকার টাকা ঢাললেই যে তা আলোর মুখ দেখবে এটা আশা করা যা্য় না । দেশে অনেক ধরণের আর্থিক প্রতিষ্ঠান আছে । এর মাঝে বর্তমানে নানা ধরণের ফান্ডিং কোম্পানি আছে যারা নানা ভাবে উদ্যোক্তাদের আর্থিক সহায়তা করছে ।

সরকার সরাসরি আর্থিক সাহায্য না দিয়ে এই সব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দিতে পারতো ।এতে তরুণরা ভুলেও এই টাকা মেরে দেবার সাহস করতো না । কারণ আর্থিক এই প্রতিষ্ঠান গুলো জানে কিভাবে টাকা আদায় করতে হয় । আমেরিকাতে এমনটাই হয় । সরকার মোটেও আর্থিক সহায়তা করে না এইখানে । আপনার ব্যাবসার জন্য টাকা দরকার হলে ব্যাংকের কাছে যান বা এঞ্জেল ইনভেস্টরদের কাছে যান । মিলে মিশে ব্যবসা করেন । এটাই ব্যাবসার নিয়ম । সবখানে ।

সারা দেশে আপনি যদি কয়েকশো আই সি টি ভবনও বানিয়ে ফেলেন আপনি একটা নতুন উদ্যোক্তা তৈরী করতে পারবেন না । কারণ যাদের আপনি কম্পিউটার শিখাচ্ছেন তারা ঠিক কার কাছে এই শিক্ষার ফল বিক্রি করবে আমার জানা নেই । যে কোনো বিদ্যার চাহিদা না থাকলে সেই বিদ্যা অকার্যকর । এক সময় এই তরুণরা হতাশায় ভুগবে ।

ঠিক যেমনটা হয়েছে টেলিকম ইন্ডাস্ট্রিতে । এক সময়ের হাইটেক অফিসাররা এখন কার্যত নিজেদের অকার্যকর মনে করছে । টেলিকম ইন্ডাস্ট্রিতে এক যুগ কাজ করেও সামান্য ব্যাংক এর এক্সিকিউটিভ পদের জন্য ডাক পায় না এই অফিসাররা । কারণ ব্যাংকের চাহিদা অনুযায়ী এই হাইটেক অফিসারদের তেমন একটা প্রয়োজন নেই । আর এরা টেলিকম ইন্ডাস্ট্রি থেকে বের হয়ে নিজে কিছু একটা করবে তারও উপায় নেই । কারণ হাইটেক জিনিস নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে ব্যবসা কি ভুলে গেছে এরা ।

সরকার তরুণদের পেছনে টাকা লগ্নি না করে এই সকল কর্মকর্তা কর্মচারী যারা চক্ষু লজ্জায় সমাজের সামনে আসতে পারছে না তাদের পেছনে লগ্নি করতে পারে । এতে অন্তত লগ্নির টাকা ফেরত আসার সম্ভবনা নিশ্চিত ।আমাদের সমাজে এই আই বুড়ো তরুণদের দিকে তাকাবার কেও নেই । অথচ এদের মাঝে লুকিয়ে আছে অসম্ভব এক সম্ভবনা । যাদের আছে প্রয়োজনীয় আধুনিক বিদ্যা আর ব্যবসা চালানোর বাস্তব জ্ঞান । কোন এক অজানা কারণে এরা এক সময় পিছিয়ে পড়ছে । নিজের আত্মসম্মান বাঁচাতে পাড়ি জমাচ্ছে বিদেশের মাটিতে ।

যে পরিমান অভিজ্ঞ আই বুড়োর দল বিদেশে মাটি কামড়ে পরে আছে এদের যদি দেশে ফেরানো যায় তবে দেশের উদ্যোক্তার পরিবেশ এমনিতেই বদলে যাবে । আপনাকে বুজতে হবে আমাদের দেশের তরুণ আর আমেরিকার তরুণদের মধ্যে মানসিক ফারাক বিস্তর । বয়স এক হলেই আপনি তরুণ বলবেন এটা ঠিক না । আমাদের আসল তরুণ এই আই বুড়োর দল ।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:০৬
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×