ব্র্যাক চেয়ারম্যান ফজলে হাসান আবেদ আমাদের গর্ব নিঃস্বন্দেহে । তবে নামের আগে স্যার উপাধী কতটা সন্মানজনক তা ভাববার বিষয় । যেখানে তিনি এই উপাধী কোন ভাবেই ব্যাবহার করতে পারেন না। ব্যাপারটা দৃষ্টিকটু এবং অসম্মানজনক । কারণ যতবার ব্রিটিশরা এই ধরণের খবর দেখছে ততবার আমাদের নিয়ে উপহাস করছে । মনে মনে হলেও ।
আসুন জানি স্যার উপাধী কিভাবে পায় আর এর ব্যবহার কিভাবে বা কারা করতে পারেন । ব্রিটিশ সরকার ১৩৪৮ সাল থেকে ব্রিটিশ রাজতন্ত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখার জন্য নাইট উপাধি ঘোষণা করে । প্রথমে সেনাবহিনীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও ক্রমে এই উপাধী অন্যান্য সাধারণ মানুষের মাজেও বিতরণ শুরু হয় । পাঁচটি ভিন্ন রকমের নিতে উপাধীর মাধ্যমে স্যার শব্দটার ব্যাবহার বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠে । অর্থাৎ আপনি যদি নাইট উপাধী পান তবে আপনার নামের আগে স্যার শব্দটি ব্যবহার করতে পারবেন । তবে এর জন্য আপনাকে ব্রিটিশ নাগরিক হতে হবে । আপনি যদি অন্য কোন দেশের নাগরিক হন এবং নাইট উপাধিতে ভূষিত হন তবে আপনি স্যার শব্দটি নামের আগে ব্যাবহার করতে পারবেন না । তবে চাইলে আপনি কে বি ই ইংরেজির এই তিনটি শব্দ ব্যবহার করতে পারেন ।
বিল গেটস , এঞ্জেলিনা জোলি , স্টিভেন স্পিলবার্গ সহ আরো অনেক নন্দিত মানুষ জন নাইট উপাধিতে ভূষিত । শুধুমাত্র ব্রিটিশ না হবার কারণে এরা কেওই কিন্তু স্যার শব্দটা ব্যবহার করেন না । কারণ এটা স্পষ্টতই সীমা লংঘন । আরো একটি মজার ব্যাপার হচ্ছে এই নন্দিত মানুষগুলো নিজেরা নিজেদের স্বকীয়তায় এতো জনপ্রিয় এদের আসলে আলাদা করে স্যার বলার দরকার পরে না ।
আমি আগেও অনেকবার দেখেছি কিন্তু বুজতে পারি না ঠিক কি কারণে ফজলে হাসান আবেদ এই স্যার উপাধী ব্যবহার করেন ? যেখানে তিনি জানেন এটা উনি ব্যবহার করতে পারেন না । এখন প্রশ্ন হচ্ছে কেন কেও কিছু বলছে না ? ব্রিটিশরা মুচ্কি হাসতে পারে তবে আপনাকে সরাসরি কিছু বলবে না । ব্যাপারটা খুবই লজ্জা লজ্জাজনক । যেখানে রবীন্দ্রনাথ নাইট উপাধী ফিরিয়ে দিয়ে জনপ্রিয় সেখানে আরেকজন বাঙালি অপ্রয়োজনীয় ভাবে এই উপাধী সমানে ব্যবহার করে যাচ্ছেন । আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষ জানে না এই উপাধী কি বা কারা দেয় । তাহলে কাদের কাছে দেখানোর জন্য এই ব্যবহার । আর যারা জানেন তারা এও জানেন এই উপাধী উনি অপপ্রয়োগ করছেন ।
নাইট উপাধী যারা পান তাদের স্ত্রীদের লেডি বলে সম্বোধন করতে পারেন । এটাই ব্রিটিশ সংস্কৃতি । তবে আমি জানি না ফজলে হাসান আবেদ উনার স্ত্রীকে লেডি উপাধী দিয়েছেন কিনা । উনি যদি স্যার উপাধী ব্যবহার করতে পারেন তবে উনার স্ত্রী অবশ্যই লেডি ব্যবহার করতে পারেন । নিয়ম বা অনিয়ম দুটোই সবার জন্য সমান ।
ব্যাপারটা মোটেই হালকা ভাবে নেবার কিছু না । বর্তমানে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান এবং মিডিয়ার প্রচার এর দিক বিবেচনা করলে এই ধরণের একটি অপপ্রয়োগ লজ্জা জনক । তবে একথা ঠিক ফজলে হাসান আবেদ যদি ব্রিটিশ নাগরিক হয়ে থাকেন তবে নির্দিষ্ট একটা সময় পর উনি স্যার উপাধী ব্যবহার করতে পারেন । কিন্তু উনার নাগরিকত্ব নিয়ে আমি যদি ভুল না করি তবে উনি বাংলাদেশী ।
সম্মান অর্জনের ব্যাপার এবং সামগ্রিক সমগোষ্ঠীর মাঝে সীমাবদ্ধ । আপনি ব্রিটিশ উপাধী ব্রিটিশ শাসনে ব্যবহার করবেন এটাই স্বাভাবিক । যেখানে আপনাকে এই উপাধী দেবার অর্থ পরিষ্কার । আপনার কর্মকান্ড ব্রিটিশ রাজপরিবারের কাছে অনেক প্রাসঙ্গিক । আমার যদি ভুল না হয় তবে আমি প্রয়োজনীয় সব দালিলিক প্রমান এই লেখার সাথে লিংক হিসাবে দিয়েছি । আমি আমার ফজলে হাসান আবেদকে আমার নিজের মতো করে চাই । রানীর দেয়া কোন অলংকারে নয় । এটুকু সন্মান দেশ আপনার কাছে চাইতেই পারে । কারণ যা কিছু করছেন এই দেশেই ।
দেশের প্রথম সারির সংবাদ মাধ্যম গুলো যখন এই ধরণের খবর প্রকাশ করে তখন একটুখানি গুগল করে নিলেই পারে । অন্ধভাবে মোহে পড়ার দিন কি এখনো আছে ? আমার তো মনে হয় না ।
ফজলে হাসান আবেদ
কারা নাইট উপাধী পান আর কিভাবে ?
স্যার
ব্রিটিশ অফিসিয়াল নাইট সাইট
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৭ সকাল ১১:৩৫