somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডুব ছবির কার্ডিয়াক এনালাইসিস

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৭:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বাইবেলের বর্ণনায় যীশু খ্রিস্ট একবার গ্যালিলি নদী পার হচ্ছিলেন। সাথে ছিলেন উনার অনুসারীরা। হটাৎ শুরু হয় দমকা ঝড়। ডুবে যাবার মতো অবস্থা। যীশু হাত তুললেন উপরের দিকে। আর মনে মনে প্রার্থনা করলেন ডুবে না যাওয়ার জন্য। যীশু খ্রিস্ট ওই দিন ডুবে যাননি অবশ্যই । নাহলে আজকে তার এতো অনুসারী বেঁচে থাকতো না। অনুসারী বা নিজের স্রষ্টাকে বাঁচিয়ে রাখতে ওই দিন নৌকাটা ডুবে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করা যীশুর জন্য অনেক জরুরি ছিল।

আমার ধারণা আমি বেশ ক্রিয়েটিভ একজন মানুষ। সবসময় সব কিছুর মাঝে ভিন্নতা না থাকলে হয় না। সেটা বাসার ইন্টেরিয়র হোক বা নিজের জীবন ধারা। কিন্তু আমার সবচেয়ে পাশের যে মানুষটি আমার সহধর্মিনী সে কিন্তু আমার ইন্টেরিয়র এর কোনো আসবাবপত্র না। চাইলেই ক্রিয়েটিভ একটা লুক দিয়ে দিলাম। জলজ্যান্ত একজন মানুষ আমার মতোই। ফলাফল কার্ডিয়াক কনফ্লিক্ট। এই কার্ডিয়াক কনফ্লিক্ট ব্যাপারটা বেশ জটিল। খারাপ ব্যবহারের মাঝে ভালো লাগার একটা ব্যাপার। সবাই সবসময় ঠিক বুজতে পারে না। আমার জন্যও অনেক জামেলার ব্যাপার এই বোঝাবুঝি জিনিসটা। কারণ ক্রিয়েটিভ মানুষদের কার্ডিয়াক এটাক খুব কম হয়ে থাকে।

উপায়ন্তর নিরস্ত হলাম অদ্ভুত এক স্কুলের। নিউ ইয়র্ক প্র্যাকটিকেল স্কুল অফ ফিলোসফি। ছুটির দিনে ক্লাস করতাম। বাকিটা অনলাইনে।নিজের অদ্ভুত ক্রিয়েটিভিটি আর বাস্তব মানুষের সাথে উঠা বসায় চিনতে পারলাম আমার সহধর্মিনীর কার্ডিয়াক আচরণ। জলজ্যান্ত একজন মানুষ। যার নিজের মাঝেও অনেক ক্রিয়েটিভিটি আছে। হয়তো আমার মতো না। কিন্তু ওটাকেও ক্রিয়েটিভ বলা হয় অন্য গোচরে। নিজেদের কার্ডিয়াক কনফ্লিক্ট বেশ সহনীয় হয়ে উঠলো ধীরে ধীরে।

দেশে ক্রিয়েটিভ মানুষ আর তাদের আশেপাশের মানুষের সংখ্যা বেশ ভারী। ডুব এর মতো একটা ছবি হলে গিয়ে যারা দেখেন তারা অবশ্যই সকল কার্ডিওলজির উর্ধে। ফারুকী ভাই নিজেও একজন হৃদয় খোলা মানুষ। কিন্তু আর সবার মতো উনিও কার্ডিয়াক কনফ্লিক্ট এর শিকার। একদল হয়ে গেলো ডুব ছবিটার পক্ষে। আরেকদল অবশ্যই বিপক্ষে বা হুমায়ুন আহমেদের পক্ষে। শুরু হলো প্রলয়ংকারী ঝড়। ফারুকী ভাই বেশ হিমশিম খাচ্ছেন উনার অনুসারীদের নিয়ে ডুবে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেতে। ক্ষনে ক্ষনে আসছেন টিভি পর্দায় বা টক্ শোতে। বোঝাবার চেষ্টা করছেন ভিন্ন ধারা কি। কিন্তু বাস্তববাদী সাধারণ মানুষগুলো কেন যেন কোন ভাবেই হুমায়ুন আহমেদকে ভুলতে পারছেন না। আবার ফারুকী ভাই এর মতো হৃদয়বান মানুষের বিপরীতেও কথা বলতে পারছেন না। প্রচন্ড এক কার্ডিয়াক কনফ্লিক্ট এর মধ্যে সবাই। কথায় কথায় হুমায়ুন আহমেদ কেও স্যার বলছে আবার ফারুকী ভাইকেও। এই ধরণের সমস্যা সাধারণত স্বামী স্ত্রীর মধ্যে হয়ে থাকে।

অনেকটা মাছের কাঁটা গলায় আটকে থাকার মতো একটা ব্যাপার। এই মুহূর্তে কেও বমিও করতে পারছে না। ক্রিয়েটিভ মানুষ হয়ে হড়হড় করে বমি করবে এটা খুব একটা ভালো দেখায় না।

ফারুকী ভাই ঝড় থামাতে চেষ্টা করছেন না তা কিন্তু না। কিন্তু যতই উনি টিভি পর্দায় বা মিডিয়াতে আসছেন ঝড় আরো বেগ পাচ্ছে।একবার বলছেন ডুব ছবিটি বানিয়েছেন বিশেষ কিছু দর্শকদের জন্য। আরেকবার বলছেন সময়ের অনেক আগে উনি ডুব ছবিটি বানিয়ে ফেলেছেন। ভাবুন একবার আপনার স্ত্রীকে যদি এই কথা গুলু বলেন আপনি আপনার কি সংসার করা হবে ? দিন শেষে কিন্তু ঘরেই ফিরতে হবে। আপাতত মানলাম দর্শকদের দর্শন বাদ বেশ উঁচু মাপের। এরা ক্রিটিভিটির খুব একটা তেমন কদর দিচ্ছে না। তাই বলে তো আর দর্শক বাদ দিয়ে যাবে না। পারবেন আপনি আপনার স্ত্রীকে ছাড়া সংসার করতে ?

এতে যেহেতু কাজ হচ্ছে না উপায় একটাই। আমার মতো প্রাকটিকাল ফিলোসফির ক্লাস করা। মানে অতি ক্রিয়েটিভ মানুষের ধারণায় চেতনা বিবর্জিত অচেতন মানুষদের বোঝা। চেষ্টা করতে দোষ কি ?

এতেও যদি কিছু না হয় শেষ ভরসা উপরের দিকে হাত তুলে কান্নাকাটি করা। যীশু খ্রিস্ট ডুবে যাওয়া থেকে রক্ষা পেতে হাত তুলেছিলেন উপরে। সেদিন শান্ত হয়েছিল সেই প্রলয়ংকারী ঝড়। সেই হিসাবে ফারুকী ভাই এর এখন বেশি বেশি করে উপরে হাত তোলা দরকার। টিভি টক্ শোতে না গিয়ে যাওয়া দরকার মাজার মজলিশে। হয়তো এতে করে যদি ঝড় শান্ত হয়। উনি যতবার টিভির পর্দায় আসছেন ততবার উনার নৌকা দুলে উঠছে সবাইকে নিয়ে। আজ বা কাল ঝড় থামবেই। ঝড়ের সাথে যুদ্ধ করা যায় না। শুধু ঝড়ের সময় নিজেদের রক্ষা করা যায়। কারণ ফারুকী ভাই যদি ডুবে যান তাহলে সাথে ডুববে উনার চেতনা আর তার অনুসারীরা।

ক্রিয়েটিভিটি বা প্রাকটিকাল ফিলোসফি যাই বলি না কেন দিন শেষ এ সবাই মিলেই একটা সংসার। আরেক জনের ভাঙা সংসারের গল্প বলতে গিয়ে ফারুকী ভাই অবস্যই চাইবেন না নিজের গোছানো সংসার ভাঙতে ? সরাসরি কোন দিকে পাল না তুলেও সাগর পারি দেয়া যায় । ধরুন এই লেখাটি । পুরোটা পড়ার পরও বোঝা কঠিন ঠিক কোন দিকে পাল । ঝরের মাঝে টিকে থাকাটাই আসল । আশা করি ভাই বুজতে পারবেন । ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৯:০৮
১০টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×