somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পুরোনো সেই দিনের কথা (অষ্টম বারো)

২০ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পুরোনো সেই দিনের কথা (সপ্তম বারো)


85. বাংলাদেশের একটি মার্কেটের নাম আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পরিবর্তনের সাথে সাথে বদলে যেতো- এমনটাই বলা হতো। কথাটা পুরো সত্য নয়; জিমি কার্টার রোনাল্ড রিগ্যান ক্ষমতায় আসলেও মার্কেটের নাম পূর্বসুরী রিচার্ড নিক্সনের নামেই চলছিল ‘নিক্সন মার্কেট’। এখন যেমন ফুটপাতে নতুন কাপড়ই বিক্রি হয় স্বাধীনতার পর এমন ছিল না। সে সময় আমেরিকা থেকে জাহাজে করে পুরাতন, ব্যবহৃত পোষাক সাহায্য হিসেবে এদেশে আসতো। যা নিম্নবিত্ত মানুষেরা কিনে পরতো। এই বাজারের নিক নেম ছিল ‘নিক্সন মার্কেট’।

86. বাংলাদেশেও আমরা পাকিস্থানী পয়সা দিয়ে কেনাকাটা করতে পারতাম। ১৯৭১ সালের আগে প্রবর্তিত ৫ পয়সা, ১০ পয়সা, ২৫ পয়সা, ৫০ পয়সা আশির দশকের মাঝামাঝিতে বাজারে গ্রহণীয় ছিল।

87. ১৯৮৪ সালের অতিথি নিয়ন্ত্রণ আইনানুযায়ী সেন্টারে জন্মদিন, আকিকা, বিয়ে-শাদীতে অতিথি আপ্যায়ন করা যাবে সর্বোচ্চ ১০০ জন; বাড়তি প্রতিজনের জন্যে ২৫ টাকা ফি প্রদান করে পূর্বানুমতি নিতে হবে ঢাকা (উত্তর/দক্ষিণ) সিটি করপোরেশন থেকে। এই অদ্ভুত আইন করেছিল এরশাদ সরকার। যা কাগজে আজো আছে, বাস্তবে নেই। তবে সামরিক শাসনের সেই সময় মানুষ কম হেনস্থা হয় নি।

88. উৎসবে আলোকসজ্জায় ২৫ ওয়াটের বাল্ব ঝোলাতে দেখেছিলাম, রাতে দালানের চারদিকে হলুদাভ এক আলো ছড়াতো। পরে নানা বর্ণের প্লাস্টিকের কভারের ভেতর সেই সময়ের টর্চ লাইটের বাল্ব লাগানো হতো। তাতে রাতটা বর্ণিল হয়ে উঠতো। বসার জন্যে ডেকোরেটরে পাওয়া যেতো কাঠের ফ্লোডিং চেয়ার। বার বার ব্যবহারে সেগুলোর নাটবল্টু নড়বড়ে হয়ে যেতো; ভারী দেহের অতিথির চাপে চেয়ার ভেঙ্গে পড়ার ঘটনা হরহামেশা ঘটতো।

89. খালেদা জিয়ার প্রথম শাসনকালে হঠাৎ ভ্যাট চালু করায় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়; জনগণকে এই বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে স্কুলিং না করায় সরকার আজও আশানুরূপ কর পাচ্ছে না অথচ ব্যবসায়ীরা ভ্যাটের নামে বাড়তি টাকা ঠিকই পকেটে ভরছে।

90. নববর্ষে রমনা বটমুলে ছায়ানটের অনুষ্ঠানই কেবল হতো। ’৯০ সালের দিকে কিছু বিপনন মাফিয়া সামিয়ানা টাঙ্গিয়ে পান্তা-ইলিশ বিক্রি শুরু করে। যার আগে কেউ শোনে নি কেউ খায়ও নি পান্তা ভাতের সাথে ইলিশ ভাজা। বাঙালি ঐতিয্য বলাটা ডাহা মিথ্যা। মিথ্যার বেসাতি করতে যেয়ে আমরা হুজুগে বাঙালি ইলিশ ধ্বংসের পথে নিয়ে গিয়েছিলাম।

91. ল্যান্ড ফোন সংযোগ পেতে সেই আমলে বহু ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হতো। মন্ত্রী-এমপির সুপারিশেও কাজ হতো না; যদি না লাল কালিতে লেখা হতো। এরপরও টিএন্ডটি (অধুনা বিটিসিএল) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্পিড মানি দিয়ে ম্যানেজ করেই তবে সংযোগ পেতে হতো। তাদের সেই রমরমা ব্যবসার দিন আর নেই।

92. এরশাদের সময় যায়যায়দিন, বিচিন্তা, দেশবন্ধু, সুগন্ধ্যা প্রভৃতি বিরোধীদের খুব প্রিয় ছিল। এরশাদকে নিয়ে নানা কোলাজ করা হতো। বিচিন্তার সাংবাদিকরা প্রশ্নের জবারের বিপরীতে পাল্টা প্রশ্ন করতো তাই নাজেহালের ভয়ে অধিকাংশ ব্যক্তিত্ব সাক্ষাতকার এড়িয়ে যেতো। বিচিন্তার সম্পাদক ছিলেন মিনার মাহমুদ।

93. ১৯৮১ সালে দেয়ালে চিকা পড়েছিল, শেখ হাসিনা আসছে জিয়ার গদি কাঁপছে। পাল্টা চিকা মারতে দেরি হয় নি, শেখ হাসিনা যদি বাঁচতে চাও এদেশ ছেড়ে চলে যাও।

94. ভারতের সাথে ২৫ বছরের গোলামীর চুক্তির জুজু আওয়ামী বিরোধীদের অস্ত্র ছিল। বাস্তবে যার কিছুই ঘটে নি। চুক্তির ২৫ বছর পেরোলে আওয়ামী লীগ হাফ ছাড়ে।

95. শুক্রবারে অফিস-স্কুল খোলা থাকতো অর্ধ দিবস, এরশাদ ইসলামীকরণ করতে যেয়ে শুক্রবার ছুটি ঘোষণা করে। আওয়ামী লীগ সরকারের আগে সাপ্তাহিক ছুটি ১দিন ছিল, অফিস চলতো সকাল ৮টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত।

96. এক বছর বলা যায় কোনো প্রি-ওয়ার্ক না করেই আওয়ামী লীগ সরকার ইউরোপ-আমেরিকার শীত প্রধান দেশের অনুকরণে ঘড়ির কাঁটা ১ ঘন্টা এগিয়ে আনে। অভিজ্ঞতা সুখকর ছিল না।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:০৪
১১টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×