রান্নাঘরে ডিম রন্ধনরত রমনী
সুধী ব্লগারবৃন্দ, আজ আমি আপনাদের শেখাবো কিভাবে ডিম ভাজতে হয় এবং ডিম সিদ্ধ করতে হয়। রান্নার এ পদ দুইটি আপনারা অতি সহজে ও দ্রুত বানিয়ে নিতে পারেন। সবচেয়ে বড় কথা, আইটেম দুটি ভাত, রুটি কিংবা পাউরুটির সাথে গপাগপ খেয়ে ফেলা যায়।
ডিম ও তার ভাংগা অংশ
ধনী-গরিব, হিন্দু-মুসলিম, আস্তিক-নাস্তিক সকলের খাদ্য তালিকায় একটা বিশাল অংশ জুড়েই রয়েছে ডিমের আইটেম। আরো মজার ব্যাপার হচ্ছে, ডিমের এ আইটেম দুটি ব্রেকফাষ্ট-লান্চ-ডিনার যে কোন সময়েই ভক্ষন করা যায়। আইটেম দুটি পুষ্টিগুনে যেমন অনন্য, তেমনি দামেও বেশ সাশ্রয়ী।
১। ডিম ভাজা/ ডিম ভাজি/ আন্ডা ভাজা/ অমলেট:
সুপ্রাচীনকাল থেকেই মানুষ ডিম ভাজা খেয়ে আসছে। আগেই বলে নিচ্ছি, এই রান্নার পদ্ধতিটি একেবারেই বেসিক রান্নার কারিকুলামের অন্তর্ভুক্ত। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কথা ভেবে বাহারি মসলা-পাতির কথা বিবেচনা্য নিয়ে আসলাম না। ডিম ভাজার জন্য আপনার যেসকল উপকরন প্রয়োজন(১জন মানুষের জন্য), তা হলো-
১. প্রমান সাইজের ১টা ডিম(হাঁস বা মুরগী),
২. সামান্য সয়াবিন তৈল,
৩. ১০ থেকে ১২ ইন্চি ব্যাসের কড়াই,
৪. ১২ ইন্চি লম্বা খুন্তি,
৫. লবন(আন্দাজ মতো),
৬. কাঁচা মরিচ(আন্দাজ মতো),
৭. পেঁয়াজ কুচি(আন্দাজ মতো),
৮. একটা বাটি।
প্রস্তুতির সময়: ২ মিনিট।
রান্নার সময়: ৪ মিনিট।
মোট সময় : ৬ মিনিট।
রান্না পদ্ধতি: প্রথমে একটা ডিম নিয়ে অতি সাবধানে ফাটাতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যাতে, ডিমটা ফাটাতে গিয়ে ছিটকে না পড়ে। অনুশীলনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে ডিম ফাটানো আয়ত্বে চলে আসে। এবার খোসা ছাড়িয়ে ফাটানো ডিমটা একটা বাটিতে নিয়ে সামান্য লবন, সামান্য পেঁয়াজ কুচি আর সামান্য মরিচ কুচি দিয়ে ভালো ভাবে গোলাতে হবে।
এরপর একটা কড়াই চুলায় চাপিয়ে সামান্য সয়াবিন তৈল তাতে ঢেলে গরম করতে হবে। তৈল গরম হলে গোলানো ডিম ঢেলে দিতে হবে। কিছুক্ষন পর খুন্তি দিয়ে ডিমটা উল্টিয়ে দিতে হবে। কতক্ষন ভাজতে হবে তা একান্তই খাদকের রুচির উপর নির্ভর করবে।
হয়ে গেলো ডিম ভাজা। এরপর গরম গরম পরিবেশন করুন। পেঁয়াজ, মরিচ ছাড়াও ডিম ভাজা যায়। তবে লবন অবশ্যই প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে অন্যান্য পদ্ধতি একই ভাবে ফলো করতে হবে।
কয়েকটি নমুনা:
পেঁয়াজ-মরিচ কুচি সহ
পেঁয়াজ-মরিচ কুচি ছাড়া
২। ডিম সিদ্ধ/ আন্ডা সিদ্ধ:
ডিম সিদ্ধ আইটেমটি সকালের নাস্তার জন্য সবচেয়ে পারফেক্ট। এর জন্য যেসকল উপকরন প্রয়োজন, তা হলো-
১. ডিম,
২. প্রমান সাইজের পাতিল,
৩. ডাব্বু চামুচ(ডাইল তোলা চামুচ),
৪. পানি।
রন্ধন পদ্ধতি: চুলায় পাতিল চাপিয়ে পানি ঢেলে গরম করতে হবে। এরপর ডিম ছেড়ে দিতে হবে। পাতিলটা ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিলে ভালো হয়। এতে দ্রুত সিদ্ধ হবে। প্রায় ৮ থেকে ১০ মিনিটে ডিম সিদ্ধ হয়ে যাবে। মনে রাখতে হবে, একটা ডিম সিদ্ধ হতে যতক্ষন লাগে, একই পাত্রে ৪/৫টা ডিম সিদ্ধ হতেও একই সময় লাগে। গরম ডিম সাবধানে ডাব্বু চামচ দিয়ে উঠিয়ে আনতে হবে। এরপর খোসা ছড়িয়ে ডিমে লবন ছিটিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন।
ডিম সিদ্ধ দুই প্রকার। যথা;
১। হাফ বয়েল- অল্প সময়ে রান্না করা হয়। এক্ষেত্রে ডিমের কুসুম নরম থাকে।
২। ফুল বয়েল- পরিমিত সময়ে পান্না করা হয়। এক্ষেত্রে ডিমের কুসুম শক্ত থাকে।
হাফ বয়েল
ফুল বয়েল
আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ দরিদ্র সীমার নেচে বসবাস করে। তাই ডিমই হতে পারে আমিষের অন্যতম প্রধান ও সাশ্রয়ী উৎস।
আজ আর নয়। সামনের পোষ্টে জানাবো কিভাবে আদা চা ও দুধ চা বানাতে হয়।
উৎসর্গ: পোষ্ট টি উৎসর্গ করছি এদেশের সকল পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টদের, যারা ডিমের তরকারীর উপর বেঁচে আছে এবং হয়তোবা পুষ্টির ঘাটতি নিয়েই পড়াশোনা চালিয়ে দেশের কর্ণধার হবার স্বপ্ন দেখছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৪১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




