somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাসুল সঃ পরবর্তীতে হাদিস লেখার উপর নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিয়েছিলেন (আপডেটেড)

১৪ ই নভেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গতকালকে আমি একটা লেখা দিয়েছিলাম

আমার মূল পয়েন্ট ছিলো:
১. রাসুল সঃ প্রথম দিকে হাদিস লেখার ব্যাপারে শর্তহীন নিষেধ আরোপ করেছিলেন

২. রাসুল সঃ হাদিসের মৌখিক প্রচার কখনোই নিষেধ করেন নি। তবে সাবধান করেছেন, যেন কেউ তার নাম দিয়ে কোনো মিথ্যা প্রচার না করে।

৩. সবার শেষে উপসংহারে বলেছি: এই হাদিস থেকে বোঝা যায়, রাসুল সঃ হাদিস প্রচার বন্ধ করার জন্য এই নিষেধাজ্ঞা দেন নি, কারণ তাহলে তিনি বলতেন না যে, তবে আমার কথা প্রচার কর। এতে কোনো দোষ নাই

তার মূল উদ্দেশ্য ছিলো এটা নিশ্চিত করা যে লিখিত কোরানের সাথে তার কথা যেন মিশে না যায় (অনেক সাহাবীকে এইভাবে লিখতে দেখেই এই নিষেধাজ্ঞা দেন তিনি)।

______________________________________________

এই পর্বে আমরা কয়েকটি হাদিস নিয়ে পর্যালোচনা করবো--- এই প্রশ্ন সামনে রেখে যে,

রাসুল সঃ কি পরবর্তীতে হাদিস লেখার উপর নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নিয়েছিলেন?

১. যায়িদ ইবনে থাবিত (রসুলের মৃত্যুর ৩০ বছরেরও বেশি সময় পরে) মুয়াবিয়ার দরবারে রসূলের সম্পর্কে একটি গল্প বলেছিলেন। মুয়াবিয়ার গল্পটি ভালো লাগে এবং এটি লিখে রাখার আদেশ দেন। কিন্তু যায়িদ বল্লেন : রসূল আমাদেরকে আদেশ করেছেন তার কোন হাদীস কখনো না লিখতে।

প্রথমেই বলে নেই, 'আল মুসনাদ' ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বলের সঙ্কলিত হাদিস গ্রন্থ। উইকিপিডিয়ায় এই মুসনাদ সম্পর্কে।

হাদিস পছন্দ করেন না এরকম এক ব্লগার অলরেডি এটা নিয়ে মন্তব্য করেছেন: রসূল সঃ এর মৃত্যুর ৩০ বছর পরের এই গল্প থেকে বুঝা যায় হাদীস লেখার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা রসূল সঃ মৃত্যুর আগে তুলে নেন নি।

এটা অবশ্য কারো বলা লাগে না। কমনসেন্স থেকেও আপনার আমারও মনে হবে যে, তাইতো, সম্ভবত,

হাদীস লেখার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা রসূল সঃ মৃত্যুর আগে তুলে নেন নি

উইকিপিডিয়ায় মুসনাদ নিয়ে কিছু নেগেটিভ কথা আছে। আমি সেগুলো কানে দিতে চাই না। আমি ধরে নিচ্ছি, হাদিসটা সহি আছে। সুতরাং, লজিকালি এই কথা বলাই যায় যে,

সম্ভবত, হাদীস লেখার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা রসূল মৃত্যুর আগে তুলে নেন নি'সম্ভবত' বলছি তার কারণ হলো আর একটা সম্ভাবনা আছে। সেটা হলো,

হতে পারে যে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবার ব্যাপারটা তার কাছেই পৌছে নি। হতেই পারে।

হাদিস লেখার বিপক্ষে মোট এই দুটো বক্তব্য পাওয়া যায়: ক) হাদিস লিখো না খ) সম্ভবত নিষেধাজ্ঞা রসূল মৃত্যুর আগে তুলে নেন নি


এছাড়া হাদিসের বিপক্ষে হাদিস থেকে আমি আর কোনো বক্তব্য পাই নি।

আমি এই জন্য হাদিস অস্বীকারকারী বা সাবমিটারস বা কোরান-অনলিদের ওয়বেসাইট -এ গিয়েছি। কিন্তু মোটের উপর এই দুই রকমের বক্তব্য ছাড়া আর কিছু পাই নি। কেউ দেখিয়ে দিলে আমি পরে ইনক্লুড করে নেব।


২. এই হাদিসটার কথা আমি গতকালকের লেখায় কিছুটা বলেছি:

আবদুল্লাহ ইবনে আমর রঃ থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুল সঃএর কাছে এসে বললেন: হে রাসুল সঃ, আমি হাদিস বর্ণনা করতে চাই। এইজন্য আমি স্মরণশক্তি ব্যবহারের সাথে সাথে লেখনীর সাহায্যও নিতে আগ্রহী, অবশ্য আপনি যদি আচ্ছা বলেন। তখন রসুল সঃ অনুমতি দিলেন। (সুনানে দারেমি, পৃষ্ঠা ৬৭)

৩. এটাও আবদুল্লাহ ইবনে আমর রঃ থেকে বর্ণিত।
রাসুল তাকে বলেন: জ্ঞান সংরক্ষণ কর।। তিনি জিজ্ঞেস করলেন: কীভাবে? রাসুল সঃ বললেন: লিখে রাখো।

৪. একজন আনসার সাহাবী অনুযোগ করলেন যে, তিনি রাসুল সঃ থেকে কিছু হাদিস শোনেন কিন্তু মাঝে মাঝে ভুলে যান। রাসুল সঃ বললেন: তোমার ডান হাতের সাহায্য নাও। এবং লেখার ইংগিত করলেন। (তিরমিজি)


৫. বিখ্যাত সাহাবি রাফি ইবনে খাদিজ বলেন: আমি রাসুল সঃ কে বললাম: আমরা আপনার কাছ থেকে অনেক কিছু শুনি, সেগুলো লিখে রাখি? রাসুল সঃ বললেন: লেখো। কোনো সমস্যা নাই। (তাদরিব-উর-রাবি)

৬. সায়্যিদুনা আনাস বলেন: রাসুল সঃ বলেন: লেখার মাধ্যমে জ্ঞান সংরক্ষণ কর। (জামিউল বায়ান)


৭. আবু রাফি হাদিস লেখার অনুমতি চাইলেন রাসুল সঃএর কাছ থেকে। রাসুল সঃ অনুমতি দিলেন। (তিরমিজি)


এটা বর্ণিত আছে যে, আবু রাফি কর্তৃক লিখিত হাদিস অন্য সাহাবিরা কপি করে নিয়ে যেতেন (আমরা যেমন ক্লাসের লেকচারের পর অথবা ক্লাস মিস হলে ভালো ছাত্রটার লেকচার খাতা কপি করি)।

সালমা রঃ বলেন: আমি কিছু ছোট কাঠের বোর্ড দেখতে পেলাম আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাসের কাছে। তিনি সেটার উপর রাসুল সঃ এর কাজের কিছু বর্ণনা লিখছিলেন। এই বর্ণনা তিনি পেয়েছিলেন আবু রাফির কাছ থেকে। (তাবাকাতে ইবনে সাদ)



এইবার চলেন সবাই মিল্লাঝিল্লা বিবেচনা করি।
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিচার চাই? না ভাই, আমরা "উল্লাস" চাই

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৩৭





দীপু চন্দ্র দাস একটি পোশাক শিল্প কারখানায় চাকরি করতো। সম্প্রতি দীপু দাস তার যোগ্যতা বলে সুপার ভাইজার পদে প্রমোশন পেয়েছিলো।

জানা যায়, সুপারভাইজার পজিশনটির জন্য আরও তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×