জমে থাকা কবিতারা - ১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
ক)
কাঁদছে দুঃখী একটা মেয়ে আনমনে,
কাঁদছে নীরব রাতে একাকী; হাত বাড়ালেই বৃষ্টির ফোঁটা, তবু
লোনা জল তার খুব প্রিয়। সে জিহ্বা বাড়িয়ে লোনা জল খায়।
যে জলে ধুয়েছে শোক, কত রকম অসুখ। সে শুধু চোখের জল ভালোবাসে।
আমার যদি ক্ষমতা থাকতো আমি তাকে বাতাসের টিস্যু কিনে দিতাম; কারুকার্যময়।
আমার ক্ষমতা থাকলে আমি শুষে নিতাম তার এই অপারগতার অশ্রুজল।
যদিও আমি সাধ্যের বাইরে বসে তার অবায়বে ফুঁ দি শুধু। যদিও জানি পৌঁছুই না এই
উপশমের প্রকার। তবুও আমি ভাবি এটাই ভালোবাসার ধরন, আমি মধ্যপন্থী এক
বিবশ প্রেমিক শুধু!
কাঁদছে দুঃখী মেয়েটি অন্ধকার বারান্দায়। ফুঁসে ফুঁসে উঠছে কাঁধ, বিপন্ন দুলুনিতে।
বৃষ্টির ঝাপটা কখনও বা লোনাজলে মিশে একাকার। হঠাৎ কান্না ভুলে তাকায় মেয়েটি-
বৃষ্টি ভেজা আসমানেরও ভেতর দিয়ে; মেঘগুল্মের ফাঁকে যেখানে কিছুটা তারায়
আমার নিচিহ্নতা।
আমার ক্ষমতা থাকলে আমিও বজ্রের সাথে টুপ করে খসে পড়তাম ঐ ব্যালকনিতে।
খ)
দুঃখগুলো মুছবো বলে শূন্য দুহাত জ্যাকেটের পকেটে ঢুকিয়ে পলায়নপর এক গানের সুর শিশ দিতে দিতে অগন্তব্যে হাঁটছিলাম। যদিও আমার চকচকে বেশভূষায় কেউ কেউ বিভ্রান্ত হয়; কেউ কেউ বলে উঠে এই ঠিকরে বের হওয়া আভিজাত্যে কোন বিষণ্ণতা নেই। পলিস করা জুতো জোড়ায় রাজ্যের জাঁকজমক। সুখ আমার পকেটের স্নাপ বাটনের উজ্জ্বল পাথর।
কেউ কি কখনও আমার মনের ভিতর দিয়েছে উঁকি!
কেউ কি কখনও একটা একটা করে সবগুলো পোশাক খুলে আমাকে করেছে নিরাভরণ!
কেউ কি আমার শিশ্নের উত্তাপ নিয়ে বলেছে, সুখী মানুষ এতটা শীতল কেন!
কেউ যখন রাখে না খোঁজ এই গভীরতার, কেউ যখন মাপে না মাঝহৃদয়ের উষ্ণতা;
তখন কাকে বলবো বলঃ আমি খুব দুঃখে আছি, বুকের অদেখা অলিন্দে শুধু হাহাকার, ঠমকের চমক ভেদ করে যা পৌঁছুই না দৃষ্টির সীমানায়!
আমাকে তাই তুমি মাঝে মাঝে আদিম করো। মননে আর বিশ্বাসে। সুখ আর দুঃখের তারতম্যে আমি হয়ত বুঝাতে পারবো আনন্দ আর ক্লেশের মিশ্রণ মানুষের মানবিক আদিমতার সাথে খুব সম্পর্কিত!
গ)
অবাক একটি চিত্রনাট্য নিয়ে বসে আছি। পাত্রপাত্রী ঠিক-ঠাক; অস্বচ্ছ আঁধারের মত এক স্বল্পভোরে শুরু হবে প্রথম চিত্রগ্রহণ। সবুজ পাতাময়তায় দারুণ নির্জন এক বনানী- আদিগন্ত বৃষ্টি আর কিছুটা আলোর সকাল; এক প্রথাগত প্রেমিকার বহনের দুঃসাহস নিয়ে নিঃসঙ্গ এক প্রেমিকের পথচলা। পিছনে বিহগল বেজে চলেছে, হেরে যাবার, পালাবার; জীবন থেকে!
অবাক একটা সাহস নিয়ে বসে আছি। লেখার খাতা খোলা। কলমের কালি চুপসে বাতাসে অদৃশ্য কলতায়। শব্দশরীর উড়ছে জানালার পানে, যেন বল্গাহীন এক সায়াহ্নে দেখা উত্তরপুরুষের টানাটানা লিপিসমতায়। আমার সাহসরা পথচারী আজ।
অবাক কল্পনায় তোমাকে ভেবে দারুণ কিছু সংলাপ লিখে চলেছি। দ্বারাপবনের ক্ষোভজমনে যেটুকু মোক্ষলাভ তাকেই বিশুদ্ধ চিন্তায় মন্ত্রপুত করে সাজাবো ভাবছি। কৃষ এক আরধ্য দেবীর জবানে তোমার কথা রেখে আমি উন্নাসিক; বিহ্বল কল্পনায়!
এই ভাবনা যা তেপান্তরের, এই প্রক্ষালন যা বিষণ্ণ আঁধারের, এই বানীচিত্র যা একান্ত ভালোবাসার; তার পুরোটাই তোমার মনস্তাপে- আমি তো শুধু ভাবনার আগ্রহ আর অবাধ্য রেণুর কায়িক উত্তাপ, যার কোন নিজস্বতা নেই।।
১৭টি মন্তব্য ১০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?
অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।

১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন
১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন
ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন
=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?
যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!
যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।