somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যাদের অবস্থান। পর্ব-১

৩১ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পৃথিবীর এক আজব দেশ বাংলাদেশ। এখানের অধিকাংশ জনগোষ্ঠী স্বাধীনতা না চাইলেও তারা স্বাধীন হয়ে যায়। রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের একটা অংশ, মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলামী, জামায়াতে ইসলামী, ওলামায়ে ইসলাম, পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টি, জাতীয় দল, কৃষক-শ্রমিক পার্টি, পূর্ব-পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি, পূর্ব বাংলা সর্বহারা পার্টি ইত্যাদি দল স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নেয়। এ ছাড়াও ইসলামপন্থী মানুষ, মুসলিম জাতীয়তাবোধ সম্পন্ন মানুষ এবং চীনপন্থী সমাজতান্ত্রিক আদর্শে বিশ্বাসী মানুষেরা স্বাধীনতার বিপক্ষে অবস্থান নেন। রাজা ত্রিদিব রায়ের সকল চাকমা প্রজাসহ অন্যান্য প্রায় সকল উপজাতি পাকিস্তান রক্ষার ভূমিকা রাখেন। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সকল মানুষ পাকিস্তানের ভাঙ্গন ঠেকাতে তৎপর ছিলেন।

স্বাধীনতার বিপক্ষে তাদের অবস্থানের কারণঃ
১- স্বৈরাচার বিরোধী ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনকে দেশভাঙ্গার আন্দোলনে পরিণত হতে দিতে চাননি।
২- যেখানে শেখ মুজিব পুরো পাকিস্তানের নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা রাখে সেখানে দেশ ভেঙ্গে নিজেদের ক্ষমতাকে ছোট করা অযৌক্তিক।
৩- গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলেই সকল সমস্যা ও সংকটের অবসান হয় সেখানে চিরশত্রু ভারতের প্ররোচনায় যুদ্ধ লাগিয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাননি।
৪- পাকিস্তান বৃহত্তম ও শক্তিশালী মুসলিম দেশ। বিশ্ব মুসলিমের নেতৃত্ব এই দেশ দিচ্ছে।
৫- রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ও সামরিক দিক দিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের চাইতে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে।
৬- পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন হলে ভারতের ঘেরাওয়ের মধ্যে পড়ে এদেশের মুসলিমদের অবস্থা বিপন্ন হবে।
৭- ভারতের সাহায্য নিয়ে পাকিস্তান থেকে বিচ্ছিন্ন রাষ্ট্র তৈরী হলে সেই রাষ্ট্র হবে ভারতের আজ্ঞাবহ একটি রাষ্ট্র, যার জাতীয় পতাকা থাকবে, সরকার থাকবে কিন্তু কোন সার্বভৌমত্ব থাকবে না।

যারা স্বাধীনতা বিরোধী ছিলেন তাদেরকে আমরা ছয়টি ভাগে ভাগ করতে পারি
১-রাজনৈতিক শক্তিঃ পাকিস্তান সরকার, মালেক মন্ত্রীসভা, শান্তি কমিটি, সামরিক সরকারের মুখপাত্র, রাজনৈতিক দলসমূহ।
২-সামরিক শক্তিঃ পাকিস্তান সেনাবাহিনী, আধাসামরিক বাহিনীসমূহ, বাংলাভাষী পাকিস্তান সামরিক বাহিনী, পুলিশ বাহিনী ও রেজাকার বাহিনী।
৩-ধর্মীয় শক্তিঃ ইসলামপন্থী ও মুসলিম জাতীয়তাবোধসম্পন্ন সকল দল ও গোষ্ঠী, ইসলামী ব্যক্তিত্ব, বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী।
৪-বুদ্ধিবৃত্তিক শক্তিঃ বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, সাংবাদিক, আইনজীবী এবং অন্যান্য পেশাজীবী।
৫-প্রশাসনিক শক্তিঃ সরকারি ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা
৬-অন্যান্য সহায়ক শক্তিঃ বিহারী, আলবদর, আশশামস ও মুজাহিদ বাহিনী।

পাকিস্তান সরকারঃ
তৎকালীন পাকিস্তানের সামরিক সরকার অপারেশন সার্চলাইটের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করে তাদের ভাষায় সকল ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীদের’ দমন করতে চেয়েছেন। তারা অভিন্ন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। সামরিক দিক দিয়েও পূর্ব-পাকিস্তানের খুব প্রয়োজন ছিল সামরিক বাহিনীর।
ক- Geo- Military strategic point এ পূর্ব পাকিস্তান একটি গুরুত্বপুর্ণ স্থান
খ- পূর্ব-পাকিস্তানের জনসংখ্যার হিসেবকে কাজে লাগিয়ে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করা সহজ।
গ- চিরশত্রু ভারতকে সামরিক দিক থেকে কাবু রাখার জন্য দ্বিমুখী আক্রমনের কৌশলের জন্য পূর্ব-পাকিস্তান গুরুত্বপূর্ণ[১] ।

মালেক মন্ত্রীসভা
পূর্ব পাকিস্তানের সর্বশেষ গভর্ণর ছিলেন ডাঃ আব্দুল মোত্তালেব মালেক। উনি এবং ওনার ১৪ সদস্য বিশিষ্ট মন্ত্রীসভাই মালেক মন্ত্রীসভা হিসেবে পরিচিত। এই মন্ত্রীসভায় ইসলামী ও মুসলিম জাতীয়তাবাদী দল ছাড়াও আওয়ামীলীগের তিনজন সংসদ সদস্য ছিলেন। নিচে তাদের নাম ও দলের নাম উল্লেখ করা হলো[২]।
১- ডাঃ আব্দুল মোত্তালেব মালেক/ মুসলিম লীগ (কাউন্সিল)
২- আবুল কাশেম/ মুসলিম লীগ (কাউন্সিল)
৩- নওয়াজেশ আহমেদ/ মুসলিম লীগ (কাউন্সিল)
৪- আখতার উদ্দিন আহমেদ/ মুসলিম লীগ (কনভেনশন)
৫- মুজিবুর রহমান/ মুসলিম লীগ (কাইয়ুম)
৬- ওবায়দুল্লাহ মজুমদার/ আওয়ামী লীগ (জাতীয় পরিষদ সদস্য)
৭- শামসুল হক/ আওয়ামীলীগ (প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য)
৮- আউং শু প্রু চৌধুরী/ আওয়ামীলীগ (প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য)
৯- এ এস এম সোলায়মান/ কৃষক শ্রমিক পার্টি
১০- মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক/ নেজামে ইসলামী
১১- জসিম উদ্দিন আহমদ/ পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টি
১২- এ কে মোশারফ হোসেন/ পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টি
১৩- এ কে এম ইউসুফ/ পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টি[৩]
১৪- আব্বাস আলী খান/ জামায়াতে ইসলামী

শান্তি কমিটিঃ
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন থেকে যুদ্ধাবস্থা তৈরী হলে এদেশের রাজনৈতিক নেতারা যুদ্ধ থামানো এবং পাকিস্তানের অখন্ডতা রক্ষা করার জন্য শান্তি কমিটি গঠন করেন। এতে মুসলিম লীগের তিনটি অংশ, আওয়ামীলীগের একাংশ, নেজামে ইসলামী, জামায়াতে ইসলামী এবং উপজাতিরা এই কমিটিতে অংশগ্রহন করেন। এই কমিটি গঠনে মূল উদ্যোক্তা ছিলেন পিডিপির নুরুল আমীন। প্রথমে ২৭ সদস্য বিশিষ্ট এবং পরে ১৪০ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় শান্তি কমিটি গঠিত হয়[৪,৫] । ৪ এপ্রিল ১৯৭১ তারিখে নূরুল আমিনের নেতৃত্বে মৌলভী ফরিদ আহমদ, সৈয়দ খাজা খয়েরুদ্দিন, এ কিউ এম শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক গোলাম আযম, মাওলানা নুরুজ্জামান সহ ১২ জন রাজনৈতিক নেতা টিক্কা খানের সাথে দেখা করেন[৬]। সেখানে তারা সেনাবাহিনীকে সহযোগীতা করার প্রতিশ্রুতি দেন এবং সেনাবাহিনীকে ‘বিচ্ছিন্নতাবাদীদের’ ধরার অজুহাতে সাধারণ মানুষদের উপর জুলুম অত্যাচার বন্ধের প্রতিশ্রুতি আদায় করেন। উপরোক্ত নেতারা ছাড়াও কেন্দ্রীয় কমিটিতে মুসলিম লীগের নুরুল হক, আবুল কাশেম, ব্যারিস্টার আখতার উদ্দিন, আওয়ামী লীগের আব্দুল জব্বার খদ্দর, এ কে এম রফিকুল হোসেন, পিডিপির মাহমুদ আলী, ব্যারিস্টার আফতাব উদ্দিন, জমিয়তে উলামার পীর মোহসেন উদ্দিন দুদু মিয়া প্রমুখ নেতা ছিলেন।

সরকারের মুখপাত্রঃ
তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের মুখপাত্র হিসেবে কিছু বাঙ্গালী নেতা অংশগ্রহন করেন। তারা বহির্বিশ্বে পূর্ব পাকিস্তানের ঘটনাকে আভ্যন্তরীণ ইস্যু এবং এই ইস্যুতে প্রতিবেশী ভারতের ষড়যন্ত্রের বিষয়গুলো প্রাচারণার দায়িত্বে ছিলেন। পাকিস্তানের অখন্ডতা রক্ষায় বহির্বিশ্বের সহযোগিতা কামনা করেন। এদের তালিকা নিন্মে দেয়া হল[৭]

১- হামিদুল হক চৌধুরী/ মালিক, পাকিস্তান অবজার্ভার
২- মাহমুদ আলী/ পিডিপির ভাইস চেয়ারম্যান
৩- শাহ আজিজুর রহমান/ মুসলিম লীগ নেতা/ পরবর্তিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী (১৯৮৩)
৪- জুলমত আলী খান/ মুসলিম লীগ নেতা/ পরবর্তিতে এরশাদ আমলের মন্ত্রী
৫- মিসেস রাজিয়া ফয়েজ/ মুসলিম লীগ নেতা/ পরবর্তিতে এরশাদ আমলের মন্ত্রী
৬- ড. ফাতিমা সাদিক/ অধ্যাপিকা, ঢাকা ভার্সিটি
৭- এডভোকেট এ কে সাদী/ আইনজীবী, ঢাকা হাইকোর্ট
৮- মৌলভী ফরিদ আহমদ/ পিডিপি নেতা/ সৌদী ও মিশরের দায়িত্বে ছিলেন
৯- তবারক হোসেন/ চীনের দায়িত্বে ছিলেন/ সর্বশেষে বাংলাদেশ আমলে পররাষ্ট্র সচিব ছিলেন
১০- বিচারপতি নুরুল ইসলাম/ বিশেষ দূত, জেনেভা/ পরবর্তিতে এরশাদ আমলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
১১- ড. সাজ্জাদ হোসাইন/ বিশেষ দূত, মধ্যপাচ্য এবং ইসলামী রাষ্ট্রসমূহ/ ভিসি, ঢাবি।

রাজনৈতিক দলঃ
পাকিস্তান গঠনের পর থেকেই পূর্ব পাকিস্তানে মুসলিম লীগের জনপ্রিয়তা কমতে থাকে। উপরন্তু এই মুসলিম লীগ তিন ভাগে ভাগ হয়ে তাদের শক্তি আরো হারিয়ে ফেলে। কাউন্সিল, কনভেনশন এবং কাইয়ুম এই তিন ভাগে তারা ভাগ হয়। মুসলিম লীগের তিন পক্ষই স্বাধীনতা যুদ্ধের বিরোধীতা করে। এছাড়া ন্যাপ (মুজাফফর), ন্যাপ (ভাসানী), মনি সিং এর কমিউনিস্ট পার্টি, জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলামী, ওলামায়ে ইসলাম, পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টি, জাতীয় দল, কৃষক শ্রমিক পার্টি, পূর্ব-পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি, পূর্ব বাংলা সর্বহারা পার্টি, কৃষক শ্রমিক সমাজবাদী দল এবং আওয়ামী লীগের একাংশ অখন্ড পাকিস্তানের পক্ষে তাদের রাজনৈতিক অবস্থান নিশ্চিত করে।

আওয়ামী লীগের একাংশঃ
২৫ মার্চ অপারেশন সার্চলাইট এবং ২৬ মার্চ মেজর জিয়ার ক্যু এর পর আওয়ামী লীগের একটা অংশ খুব দ্রুত ভারতে সশস্ত্র অবস্থায় পাড়ি জমায়[৮]। কারণ তাজউদ্দিন আহমদের সাথে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত সরকারের সঙ্গে আগেই সমজোতা হয়েছিল এবং তাজউদ্দিন আহমদ দেশবিক্রীর চুক্তি করেছে[৯,১০,১১]। আর এর ফলেই বেসামরিক লোকের সাথে মিশে গিয়ে সশস্ত্র আওয়ামী কর্মীরা ভারত পাড়ি দেয়। এই ধরণের ষড়যন্ত্রের সাথে একমত না হয়ে অনেক আওয়ামী লীগ থেকে মনোনীত হয়ে নির্বাচিত জাতীয় পরিষদ সদস্য এবং প্রাদেশিক পরিষদ সদস্যসহ বহু নেতা কর্মী স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহন করা থেকে শুধু বিরত থাকেননি বরং পূর্ব পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রীত্ব গ্রহন, শান্তি কমিটিতে নেতৃত্ব প্রদান, রেজাকার বাহিনীতে যোগদান সহ সব ধরণের স্বাধীনতা বিরোধী কর্মকান্ডে অংশগ্রহন করেন। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মেয়ে আক্তার সোলায়মান অখন্ড পাকিস্তানের পক্ষে প্রচারণা চালান এবং মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেন। এই ব্যাপারে তিনি সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘অধিকাংশ আওয়ামীলীগের সদস্যরা আওয়ামিলীগের একটা অংশের বিচ্ছিন্নতাবাদী পরিকল্পনার কথা জানতেন না। আমরা জানি জনগণ নির্বাচনের সময় অধিকতর শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ পাকিস্তান গড়ে তোলার লক্ষ্যেই আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছিল’।[১২] এছাড়াও আওয়ামীলীগ নেতা ড. কামাল হোসেনও যুদ্ধে যোগ না দিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানে চলে যান এবং সেখানে আইন পেশায় আত্মনিয়োগ করেন[১৩]। আওয়ামীলীগ নেতাদের মধ্যে জাতীয় পরিষদ সদস্য এবং প্রাদেশিক পরিষদ সদস্যদের যারা স্বাধীনতা বিরোধী ছিলেন এমন বহু নেতার তালিকা পাওয়া যায় আখতার মুকুল এবং সামছুল আরেফীন সাহেবের লেখা বইয়ে[১৪,১৫]। নির্বাচিত সদস্যের বাহিরে খন্দকার নূর হোসেন, তার ছেলে খন্দকার মোশাররফ হোসেন[১৬], মুসা বিন শমসের[১৭] এবং মীর্জা কাশেম[১৮] মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।

চীনপন্থী সমাজতান্ত্রিক দলঃ
সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং ভারতের সঙ্গে বৈরী সম্পর্কের কারণেই চীন মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নেয়। চীনের এই নীতির প্রভাব পড়ে এদেশের চীনপন্থী দলগুলোর উপর। আর ভারতের জন্যও সমস্যা ছিল চীনপন্থী বামেরা। তারা পূর্ব বাংলায় স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সব মিলিয়ে এদেশের চীনপন্থীরা স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহন করেনি। বরং পাকিস্তানের পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছে।

মুক্তিযোদ্ধাদের মোটিভেশন ক্লাসে এরকম বলা হত যে, “একজন রাজাকারকে যদি তোমরা ধর, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে, তাকে নানাভাবে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করবে। বার বার এইরকম করবে। তাকে নানাভাবে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করবে। এতেও যদি কাজ না হয়, প্রয়োজনে শারিরীক নির্যাতন করবে এবং এভাবে যত পারো তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করবে। এরপর এদের কারাগারে নিক্ষেপ করবে। আর যদি একজন চীনা কমিউনিস্টকে ধর সাথে সাথে তার প্রাণ সংহার করবে”[১৯]।

রুশপন্থী কমিউনিস্ট পার্টি ৩১.০৮.১৯৭১ তারিখে তাদের যে রাজনৈতিক নীতিমালা প্রকাশ করে তাতেও চীনা নেতাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী ও শত্রুদের সাহায্যকারী হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের থেকে সাবধান থাকতে বলা হয়েছে। “মনে রাখতে হবে চীনের নেতারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করিতেছে ও আমাদের শত্রুদের সাহায্য করিতেছে। দেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী চীনপন্থীদের সম্পর্কে হুশিয়ার থাকতে হবে[২০]।”

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পরও চীনপন্থীদের উপর মুজিববাদীদের হুমকির কথা বর্ণনা দিয়ে শেখ হাসিনার স্বামী ওয়াজেদ মিয়া বলেন, “ঐদিন(১৫ জানুয়ারী ১৯৭২) ড. ইসহাক তালুকদার আমাকে আরো জানান যে, কাজী জাফর ও রাশেদ খান মেননদের দলসহ পিকিংপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাকর্মীদের নিধন করা হবে বলে মুজিব বাহিনী হুমকি দিয়েছে। যার ফলে সম্ভাব্য হানাহানি ও রক্তপাত এড়ানোর জন্য ঐ দলগুলোর নেতা ও কর্মীরা লুকিয়ে আছেন[২১]”

এম আর আখতার মুকুল বলেন, “পিকিংপন্থী পূর্ব পাকিস্তানের কমিউনিস্ট পার্টি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে পূর্ব পাকিস্তানে ভারতীয় আগ্রাসন বলে আখ্যায়িত করলো যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলে এদের নেতৃত্ব দেন কমরেড আবদুল হক, কমরেড সত্যেন মিত্র, কমরেড বিমল বিশ্বাস, কমরেড জীবন মুখার্জী প্রমুখ। এসব অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধের সময় পিকিংপন্থী হক গ্রুপের সাথে মুক্তি বাহিনীর বেশ কয়েক দফা সশস্ত্র সংঘর্ষ হয়[২২]।”

ইসলামী দলসমূহঃ
ইসলামী দলসমূহের মধ্যে সাংগঠনিক শক্তি জামায়াতের থাকলেও জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে নেজামী ইসলামী ভালো অবস্থানে ছিল। সব ইসলামী দলগুলো তাদের নিজেদের মধ্যকার বিভেদকে অতিক্রম করে ইসলাম ও পাকিস্তান রক্ষায় এবং ভারতের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে জাতিকে সচেতন করার জন্য একত্রে কাজ করেন এবং বক্তব্য বিবৃতি দিয়ে পাকিস্তানের পক্ষে ও বিচ্ছিন্নতাবাদী এবং ভারতীয় ক্রীয়ানকদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন।

মুসলিম জাতীয়তাবাদী দলঃ
মুসলিমলীগের নেতৃত্বে সকল মুসলিম জাতীয়তাবাদী দল তাদের বিভেদ সত্ত্বেও পাকিস্তান রক্ষায় একাট্টা হয়ে যায়। স্বাধীনতা বিরোধী প্রায় সকল প্লাটফর্মের নেতৃত্বে তারা ছিলেন।

সামরিক শক্তিঃ
পাকিস্তান সেনাবাহিনী, আধাসামরিক বাহিনীসমূহ, বাংলাভাষী পাকিস্তান সামরিক বাহিনী, পুলিশ বাহিনী ও রেজাকার বাহিনী।

পাকিস্তান সেনাবাহিনীঃ
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মধ্যে যারা বাঙ্গালী ছিলেন না তারা পুরোদস্তুর পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন। আর যেসব সেনা অফিসার বাঙ্গালী ছিলেন তাদের মধ্যেও অধিকাংশ অফিসার তাদের শপথের ব্যাপারে ও দেশের প্রতি কমিটমেন্টের ব্যাপারে বিশ্বাসী ছিলেন। বিপুল সংখ্যক বাঙ্গালী সেনা কর্মকর্তা মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে পাকিস্তান রক্ষার জন্য যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন। যুদ্ধে পাকিস্তানের পক্ষে গুরুত্বপুর্ণ অবদান রেখেছেন এমন ১০৪ জন সেনা অফিসারের তালিকা পাওয়া যায় সামছুল আরেফীন সাহেবের লিখা বইয়ে। এর মধ্যে মেজর ফরিদ উদ্দিন, ক্যপ্টেন ফখরুল আহসান, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট ইমদাদ হোসেন, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট নাছির উদ্দিন, স্কোয়ার্ড্রন লিডার হাসানুজ্জামান মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর আক্রমনে মৃত্যুবরণ করেন[২৩]। মজার বিষয় হলো শেখ মুজিব সেনাবাহিনীর এই অফিসারদের প্রায় সকলকেই বাংলাদেশের সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করে নেন। শুধু তাই নয় যেসব বাঙ্গালী সেনা অফিসার পশ্চিম পাকিস্তানে কর্মরত ছিলেন তাদেরও তিনি সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করে নেন। জিয়াউর রহমানও একই নীতি বজায় রেখে এসব অফিসারদের প্রমোশন দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসারদের আক্রোশের কবলে পড়েন[২৪]।

পুলিশ বাহিনীঃ
পুলিশ বাহিনী যুদ্ধাবস্থায় সামরিক বাহিনীর কমান্ডের অধীনে পরিচালিত হয়। তৎকালীন পুলিশের অল্প কয়েকজন হাতে গোণা অফিসার ছাড়া বাকী সবাই মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নেন এবং এরজন্য তাদেরকে মূল্যও দিতে হয়। মুক্তিবাহিনীর বেশিরভাগ আক্রমণের শিকার হয়েছে পুলিশ বাহিনী এবং প্রচুর হতাহত হয়েছে তাদেরকে। সেসময় যারা পুলিশের অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং স্বাধীনতা বিরোধী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন তাদের তালিকাও সামছুল আরেফীন সাহেবের বইয়ে লিপিবদ্ধ হয়েছে[২৫,২৬]। এখানেও মজার কাজ করেছেন শেখ মুজিব। মুক্তিবাহিনীর বিরুদ্ধে অবস্থানকারী কোন পুলিশ অফিসারকে দায়িত্ব থেকে অপসারন তো করেননি বরং তাদের সবাইকে সচিব বানিয়ে পুরষ্কিত করেন। আইজি টি আহমেদ, অতিরিক্ত আইজি আহমেদ ইব্রাহীম, ডিআইজি আবদুর রহীম এরা সবাই শেখ মুজিবের আমলে পর্যায়ক্রমে স্বরাষ্ট্র সচিব হন। এখানে আরো ইন্টারেস্টিং বিষয় রেজাকার বাহিনী গঠন করার পর পুলিশ থেকে ডি আইজি আব্দুর রহীমকে নিয়ে রেজাকার বাহিনীর প্রধান করা হয়। রেজাকার বাহিনীর প্রধানও শেখ মুজিব কর্তৃক পুরষ্কিত হন।

রেজাকার বাহিনীঃ
“রেজাকার” শব্দটির অর্থ হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবক[২৭]। ১৯৭১ সনে পাকিস্তান সামরিক বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য তৎকালীন পাকিস্তান সরকার “আনসার আইন ১৯৪৮” বাতিল করে “রাজাকার অধ্যাদেশ ১৯৭১” অনুযায়ী এ বাহিনী গঠন করে। জেনারেল নিয়াজী এক সাক্ষাৎকারে মুনতাসীর মামুনকে বলেছিলেন যে, রাজাকার বাহিনীর তিনিই স্রষ্টা। বিলুপ্ত আনসার বাহিনীর কর্মকর্তা ও সদস্যরা সয়ংক্রিয়ভাবে নবগঠিত রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার ও রাজাকার সদস্য হিসেবে গণ্য হন।

এর বাইরে রাজনৈতিক কর্মী, স্থানীয় বখাটে, বেকার যুবকদের মধ্য থেকে প্রায় ৩৭০০০ জনকে এ বাহিনীতে কমান্ডার হিসেবে রিক্রুট করা হয়। প্রতিটি কমান্ডারের অধীনে কমপক্ষে দশজন রেজাকার সদস্য ছিলেন। এ বিপুল সংখ্যায় রাজাকার রিক্রুট হওয়ার পিছনে অনেকগুলো কারণ কাজ করেছিল। বাংলাদেশের সবগুলো ইসলামপন্থী ও মুসলিম জাতীয়তাবাদী দলের কোনটিই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনি । ফলে তাদের সমর্থকদের মধ্য থেকে একটা অংশ স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজাকার বাহিনীতে শামিল হয় । তবে এ বাহিনীতে আদর্শবাদী লোকদের সংখ্যা ছিল খুবই নগণ্য। প্রকৃত পক্ষে নিয়মিত ভাতা, রেশন, স্থানীয় ক্ষমতার ব্যবহার এবং সর্বোপরি হিন্দু সম্প্রদায় ও স্বাধীনতার পক্ষের সদস্যদের ঘরবাড়ী ও বিষয়-সম্পত্তি অবাধে লুটপাট ও ভোগ দখল করার লোভে সমাজের সুযোগ-সন্ধানী এক শ্রেণীর লোক ব্যাপকহারে রাজাকার বাহিনীতে যোগদান করেন[২৮]।

কামরুদিন আহমদ তার “স্বাধীন বাংলার অভ্যুদয়” বইতে এ বিষয়ের একটা প্রকৃত চিত্র তুলে ধরেছেন[২৯]। তিনি লিখেছেন, বাঙ্গালীদের রাজাকার বাহিনীতে ভর্তি হবার কতকগুলো কারণ ছিল, তা হলঃ

১. দেশে তখন দুর্ভিক্ষাবস্থা বিরাজ করছিল । সরকার সে দুর্ভিক্ষের সময় ঘোষণা করল, যারা রেজাকার বাহিনীতে যোগ দেবে, তাদের দৈনিক নগদ তিন টাকা ও তিন সের চাউল দেয়া হবে । এর ফলে বেশ কিছু সংখ্যক লোক, যারা এতদিন পশ্চিমা সেনার ভয়ে ভীত হয়ে সন্ত্রস্ত দিন কাটাচ্ছিল, তাদের এক অংশ এ বাহিনীতে যোগদান করল।

২. এতদিন পাক সেনার ভয়ে গ্রামে-গ্রামাঞ্চলে যারা পালিয়ে বেড়াচ্ছিল, আত্মরক্ষার একটি মোক্ষম উপায় হিসেবে তারা রেজাকারদের দলে যোগ দিয়ে হাঁফ ছেড়ে বাচলো।

৩. এক শ্রেণীর সুবিধাবাদী জোর করে মানুষের সম্পত্তি দখল করা এবং পৈতৃক আমলের শক্রতার প্রতিশোধ নেয়ার সুযোগ গ্রহণের জন্যেও এ বাহিনীতে যোগ দিয়েছিল।

রেজাকার বাহিনীতে ভর্তি হবার পর তাদের বুঝানো হলো যে, যুদ্ধে পাক সেনারা হারলে, পাক সেনাদের সঙ্গে সহযোগিতা করার অপরাধে মুক্তি বাহিনী তাদের সকলকে হত্যা করবে। সুতরাং জীবন রক্ষা করার জন্য মুক্তি বাহিনীর গুপ্ত আশ্রয়স্থলের সংবাদ তারা পাক সেনাদের জানিয়ে দিতে শুরু করে।

খন্দকার আবুল খায়ের বলেন আমি যে জেলার লোক সেই জেলার ৩৭ টি ইউনিয়নের থেকে জামায়াত আর মুসলীম লীগ মিলে ৭০ এর নিবাচনে ভোট পেয়েছিল দেড়শতের কাছাকাছি আর সেখানে রেজাকারের সংখ্যা ১১ হাজার যার মাত্র ৩৫ জন জামায়াতে ইসলামের ও মুসলিম লীগারদের[৩০]। বাকীদের মধ্যে অধিকাংশ ছিল আওয়ামীলীগের ও সাধারণ মানুষ।

তিনি আরো বলেন, আমার কিছু গ্রামের খবর জানা আছে, যেখানে ৭১ এর ত্রিমুখী বিপর্যয়ের হাত থেকে বাচার জন্য গ্রামে মিটিং করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, দুই দিকেই ছেলেদের ভাগ করে দিয়ে বাঁচার ব্যবস্থা করতে হবে । এই সিদ্ধান্ত মুতাবিক যে গ্রামের শতকরা ১০০ জন লোকই ছিল নৌকার ভোটার, তাদেরই বেশ কিছু সংখ্যক ছেলেদের দেয় রাজাকারে। যেমন কলাইভাঙা গ্রামের একই মায়ের দুই ছেলের সাদেক আহমদ যায় রাজাকারে আর তার ছোট ভাই ইজহার যায় মুক্তিফৌজে।

রাজাকার বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী আবু সাইয়িদের মূল্যায়ন প্রায় একই; তিনি বলেন, বিভিন্ন তথ্যসূত্র থেকে প্রাপ্ত প্রমাণাদি হতে একথা বুঝতে অসুবিধা হবার কথা নয় যে, রাজাকার রাজাকারই; তবে সব রাজাকার এক মাপের ছিলো না । প্রাথমিকভাবে রাজাকার বাহিনীতে সমাজের বিভিন্ন স্তরের যুবক অন্তৰ্ভূক্ত হলেও তাদেরকে তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা যায়

১. যারা নিজেদের ইসলাম ও পাকিস্তান রক্ষা করার লক্ষ্যে পাক সামরিক বাহিনীকে সহায়তা, বাঙালী হত্যা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যুদ্ধ করাকে কর্তব্য মনে করেছিলো। যারা পাকিস্তানী জাতীয়তাবাদ বা মুসলিম জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী ছিলো।

২. যারা হিন্দু সম্পত্তি দখল লুটপাট, ব্যক্তিগত গ্রামীণ রেষারেষিতে প্রাধান্য বিস্তার ও প্রতিশোধ গ্রহণ এবং নানান অপকর্ম করার সুযোগ গ্রহণ করেছিলো, এবং দেশ ছেড়ে যাওয়া অসম্ভব ছিল তাদের বেশিরভাগ পেটের তাড়নায় কর্মসংস্থানের জন্য এবং একই সাথে ভয়ভীতি এবং প্রলুব্ধ হয়ে রাজাকার বাহিনীতে নাম লেখাতে বাধ্য হয়।

রাজাকার বাহিনী সুশৃঙ্খল বাহিনী ছিলো না। বরং এদেরকে পাক বাহিনী দাবার ঘুটি হিসেবে ব্যবহার করেছে। অধিকাংশই হয়েছে বলির পাঠা। তাদেরকে সামনে রেখেই পাকবাহিনী সর্বত্র অগ্রসর হয়েছে[৩১]

রাজাকার বাহিনীর প্রধান কমান্ডার ছিলেন পুলিশের ডিআইজি আবদুর রহিম যাকে শেখ মুজিব স্বাধীনতা যুদ্ধে হতাহতের সংখ্যা নির্ধারণের জন্য ১২ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির প্রধান ও পরবর্তীতে স্বরাষ্ট্র সচিব করেছিলেন। রাজাকার বাহিনীর মূল পরিচালক, জেলা ও মহকুমা কমান্ডারদের তালিকা পাওয়া যায় সামছুল আরেফিন সাহেবের বইয়ে[৩২, ৩৩]
- চলবে

তথ্য উৎসঃ
১- বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধ : বহুমাত্রিক বিশ্লেষন/ এম আই হোসেন/ পৃঃ- ৯০
২- চরমপত্র/ এম আর আখতার মুকুল/ পৃঃ- ৩৩০
৩- তিনি তৎকালীন সময়ে পিডিপি’র সাথে যুক্ত থাকলেও পরে জামায়াতে ইসলামীতে যুক্ত হন এবং যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত অবস্থায় কারাগারে ইন্তেকাল করেন
৪- একাত্তরের ঘাতকেরা কে কোথায়?/ মুক্তিযোদ্ধা চেতনা বিকাশ কেন্দ্র/ পৃঃ- ৩০
৫- চরমপত্র/ এম আর আখতার মুকুল/ পৃঃ- ৪৩
৬- বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধ : বহুমাত্রিক বিশ্লেষন/ এম আই হোসেন/ পৃঃ- ৯৩
৭- চরমপত্র/ এম আর আখতার মুকুল/ পৃঃ- ৩৩১
৮- বাংলাদেশ সরকার ১৯৭১/ এইচ টি ইমাম/ পৃঃ ১৪৩
৯- বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ‘র’ এবং সিআইএ/ মাসুদুল হক/ পৃঃ- ৮১
১০- বাংলাদেশে ‘র’/ আবু রুশদ/ পৃঃ- ৪৯
১১- দুঃসময়ের কথাচিত্র সরাসরি/ ড. মাহবুবুল্লাহ ও আফতাব আহমেদ/ পৃঃ- ৪৬২
১২- বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধ : বহুমাত্রিক বিশ্লেষন/ এম আই হোসেন/ পৃঃ- ৯৮
১৩- দুঃসময়ের কথাচিত্র সরাসরি/ ড. মাহবুবুল্লাহ ও আফতাব আহমেদ/ পৃঃ- ১৬৮
১৪- চরমপত্র/ এম আর আখতার মুকুল/ পৃঃ- ৩৩২-৩৩৩
১৫- বাংলাদেশে নির্বাচন ১৯৭০-২০০১/ এ এস এম সামছুল আরেফীন/ পৃঃ- ৫০২- ৫১৭
১৬- শেখ হাসিনার বেয়াই এবং মন্ত্রীসভার সদস্য
১৭- শেখ সেলিমের বেয়াই
১৮- সাবেক যুবলীগ সভাপতি মীর্যা আযমের পিতা
১৯- দুঃসময়ের কথাচিত্র সরাসরি/ ড. মাহবুবুল্লাহ ও আফতাব আহমেদ/ পৃঃ- ৩০৯
২০- বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধ : বহুমাত্রিক বিশ্লেষন/ এম আই হোসেন/ পৃঃ-১০৩
২১- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ঘিরে কিছু ঘটনা ও বাংলাদেশ/ ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া/ পৃঃ- ১৩৭
২২- আমি বিজয় দেখেছি/ এম আর আখতার মুকুল/ পৃঃ- ৩৬৫
২৩- মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্যক্তির অবস্থান/ এ এস এম সামছুল আরেফীন/ পৃঃ- ৩৬২-৩৭৫
২৪- দ্বিতীয় খুনের কাহিনী/ মশিউল আলম/ প্রথমা প্রকাশনী
২৫- মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্যক্তির অবস্থান/ এ এস এম সামছুল আরেফীন/ পৃঃ- ৩৮০-৩৯৬
২৬- বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধ : বহুমাত্রিক বিশ্লেষন/ এম আই হোসেন/ পৃঃ- ১১৩-১১৬
২৭- শান্তি কমিটি ১৯৭১/ মুন্তাসির মামুন/ পৃঃ- ১২
২৮- মূলধারা ‘৭১/ মঈদুল হাসান/ পৃষ্ঠা- ৭৫
২৯- স্বাধীন বাংলার অভ্যুদয় এবং অতঃপর/ কামরুদ্দিন আহমদ/ পৃঃ- ১২৬-১২৭
৩০- "১৯৭১-এ কি ঘটেছিলো, রাজাকার কারা ছিলো/ খন্দকার আবুল খায়ের/ পৃঃ- ৪৪-৪৫
৩১- সাধারণ ক্ষমার ঘোষনার প্রেক্ষিত ও গোলাম আযম/ আব্দুল্লাহ আবু সাঈদ/ পৃঃ- ৭৫
৩২- মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্যক্তির অবস্থান/ এ এস এম সামছুল আরেফীন/ পৃঃ- ৪০৭-৪০৯
৩৩- দি ঢাকা গেজেট/ ২ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৮
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

সম্পর্ক

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২


আমারা সম্পর্কে বাঁচি সম্পর্কে জড়িয়ে জীবন কে সুখ বা দুঃখে বিলীন করি । সম্পর্ক আছে বলে জীবনে এত গল্প সৃষ্টি হয় । কিন্তু
কিছু সম্পর্কে আপনি থাকতে চাইলেও থাকতে পারবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×