somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এবং অতঃপর ছাগলজমিন সমাচার

০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সকালে উঠে রোজকার মতো মেইল চেক করছি, হঠাৎ চোখ গেল বন্ধুর পাঠানো একটা মেইলে। সাবজেক্ট লাইনে কেবল কোলন আর অর্ধ- ব্র্যাকেটের ছড়াছড়ি। দেখে বুঝলাম বন্ধু হাসির ইমোটিকন দিয়েছিলো আমার আউটলুক এক্সপ্রেস সেটা আর কনভার্ট করে নাই। খূলেই পেলাম দ'টো লিংক, প্রথমটা মানবজমিন পত্রিকার আর ২য় টা একটা ইংরেজী ওয়েব সাইটের। নিচে ইংরেজী হরফে লেখা কতটা গর্দভ হলে বাংলাদেশে পত্রিকার সাংবাদিক হয় ?

মানবজমিনের লিংকে ঢুকে তো আমি রীতিমতো টাশকিত এবং শিহরিত। খবরটা পড়লে আপনিও যে হবেন তাও বলতে পারি ...

"চন্দ্র অভিযান বানোয়াট সায় দিলেন নিল আর্মস্ট্রং"

কিন্তু চিন্তায় পড়লাম বাংলাদেশের মোল্লারা না আবার এটা নিয়ে কোন ফতোয়া দেয়। ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি মোল্লারা নীল আর্মষ্ট্রং এর বরাত দিয়ে নানা ইসলামী মতবাদ প্রচার করছে। যেমন আর্মষ্ট্রং নাকি চাদে পা দিয়েই একটা গায়েবি আওয়াজ শুনেছিলেন এবং চাঁদের বুকে লম্বা গভীর একটা ফাঁটল দেখেছিলেন। চন্দ্র অভিযানের পর বিশ্ব ভ্রমনে বের হয়ে তারা যখন মিশরে তখন নাকি ণীল আর্মষ্ট্রং সেই একই আওয়াজ শুনে স্তম্ভিত হয়ে যান। খোজ নিয়ে জানতে পারেন এটা হলো আজান, মুসলিম রা তাদের প্রার্থনার পূর্বে এগুলো উচ্চস্বরে পাঠ করেন। ফাটঁলের রহস্যও উদঘাটিত হলো অচিরেই। শেষ নবী নাকি তাঁর লাঠি দিয়ে আঘাত করায় চাঁদ দ্বিখন্ডিত হয়ে গিয়েছিল। পরে আবার সেটাকে জোড়াও দেন তিনি। ফাটঁলটা হয়তো সেই টুকরা করার ফল। নীল আর্মষ্ট্রং এরপর ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন, কিন্তু জালিম মার্কিন সরকারের চাপে সেটা জনসম্মূখে প্রকাশ করতে পারেন নাই।

এইসব নানারকম ভাবতে ভাবতে আমি গেলাম দ্বিতীয় লিংকটাতে। এইবার বুঝলাম বন্ধুর কথার রহস্য। দ্য ওনিয়ন নামের সাইটটিতে আসলে চন্দ্র অভিযানের কন্সপিরেসি থিউরী নিয়ে ব্যাপক একটা ঠাট্টা করা হয়েছিল। মানবজমিন পত্রিকার সাংবাদিক মহাশয় সেটা একেবারেই ধরতে পারেন নাই। ঠাট্টা না বুঝুক, ব্যাটার কি কমন সেন্সও নাই নাকি ? কিংবা তার সম্পাদকের ?

আরে ব্যাটা গর্দভ এটা সত্যি হলে তো সব মাধ্যমেই এটা লীড নিউজ হতো!!! ছাগল জমিনে গিয়া কাঁঠাল পাতার বদলে পিয়াজ খাওয়ায় মনে হয় এই দশা ...

চন্দ্র অভিযান বানোয়াট সায় দিলেন নিল আর্মস্ট্রং
মানবজমিন ডেস্ক: চন্দ্র অভিযান মিথ্যে ও বানোয়াট। দীর্ঘদিন এমন বিতর্ক চলার পর এবার তাতে সায় দিয়েছেন চন্দ্র অভিযানের মূল নায়ক নিল আর্মস্ট্রং। ১৯৬৯ সালের ২০শে জুলাই তিনিই প্রথম চাঁদের মাটিতে পা রেখেছিলেন। তিনিই বললেন, তাকে এবং সহযোগী নভোচারীদের দিয়ে সম্ভবত নিউ মেক্সিকোর কোন ধ্বনিমঞ্চ (সাউন্ডস্টেজ)-এ চিত্রায়িত হয়ে থাকতে পারে চন্দ্র জয়ের ওই দৃশ্য। অনলাইন দ্য ওনিয়ন ডট কম (িি.িঃযবড়হরড়হ.পড়স) এ খবর দিয়ে আরও জানায়Ñসোমবার নিজ বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনে আর্মস্ট্রং চন্দ্র অভিযান নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কে তার সায় দেন। এ সময় তিনি চন্দ্রপৃষ্ঠে দাঁড়িয়ে দেয়া তার বিখ্যাত উক্তিÑ‘ওয়ান স্মল স্টেপ ফর ম্যান, ওয়ান জায়ান্ট লিপ ফর ম্যানকাইন্ড’কে পাল্টে তিনি বলেন, এটা হওয়া উচিত ছিলÑওয়ান স্মল স্টেপ ফর ম্যান, ওয়ান জায়ান্ট লাই ফর ম্যানকাইন্ড। অর্থাৎ চন্দ্রপৃষ্ঠে মানুষের ছোট্ট পদচিহ্ন, মানবজাতির জন্য ভয়ঙ্কর মিথ্যা। ওই সংবাদ সম্মেলনে নিল আর্মস্ট্রং জানান, চন্দ্র অভিযানের ভিডিও ইউটিউবে দেখেছেন এবং চন্দ্র অভিযান নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টিকারী রাফ কোলম্যানের ওয়েবসাইট ওমিশন কন্ট্রোল ডট অর্গ-এর বেশ কিছু ব্লগ পড়েছেন তিনি। বলেছেন, এগুলো দেখে ও পড়ে আমার মনে হয় আমি মিথ্যের সঙ্গে বসবাস করছি। আমার কাছে এটা বেদনাদায়ক এ জন্য যে, ১৯৬৯ সালের ২০শে জুলাই আমি ও আমার সহযোগীরা আট দিনে ২ লাখ ৫০ হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে চাঁদের মাটি স্পর্শ করিনি। সেখানে যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে তা-ও খাঁটি নয়। এর মাধ্যমে মানবজাতির সামনে কোন নতুন যুগ উন্মুক্ত হয়নি। বস্তুত চন্দ্র অভিযানের পুরো ঘটনা খুব সম্ভব নিউ মেক্সিকোর কোন এক জায়গায় এক সাউন্ড স্টেজে চিত্রায়িত হয়েছে। প্রায় ৪০ বছর আগে মহাকাশ গবেষণায় যখন রাশিয়া অনেকখানি এগিয়ে যায়, প্রথমে পশু ও পরে মানুষ মহাশূন্যে পাঠাতে সক্ষম হয় তখনই যুক্তরাষ্ট্র এ লড়াইয়ে জিততে উঠেপড়ে লাগে। এক পর্যায়ে তারা নিল আর্মস্ট্র, এডউইন অলড্রিন ও মাইকেল কলিন্সকে পাঠায় চাঁদে। তাদের মধ্যে চাঁদের মাটিতে প্রথম পা রাখেন নিল আর্মস্ট্রং, পরে এডউইন অলড্রিন। মাইকেল কলিন্স রয়ে যান তাদেরকে বহনকারী নভোতরীর নিয়ন্ত্রণে। এর মধ্য দিয়ে মহাশূন্য গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্র নেতৃস্থানীয় হয়ে ওঠে। কিন্তু আর্মস্ট্রং স্বীকার করেনÑ তিনি এবং এডউইন অলড্রিন চাঁদের বুকে যুক্তরাষ্ট্রের যে পতাকা উড্ডয়ন করেছিলেন তা কিছুটা নড়াচড়া করছিল এমনটা বলতে তিনি ভুল করেছেন। আর্মস্ট্রং বলেনÑচাঁদ, যা বায়ুশূন্য সেখানে পতাকা নড়াচড়া সে তো একেবারে অসম্ভব। আসলে কোন এয়ারকন্ডিশনের বাতাসে নড়েছে পতাকা। আর আমাদেরকে যে হেলমেট পরানো হয়েছিল তাতে বাইরের কোন শব্দই শোনা যায় না। এরপরই আর্মস্ট্রং সুভ্যেনির হিসেবে রাখা চাঁদের মাটির কিছু নমুনা মুঠো করে ধরেন এবং তা ফেলে দেন ময়লার ঝুড়িতে। ওদিকে রাফ কোলম্যানের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ১৯৬৯ সালে মানুষকে চাঁদে পাঠানোর মতো বাস্তব প্রযুক্তিগত ক্ষমতা ছিল না যুক্তরাষ্ট্রের। বিশ্বের সেরা বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ এবং পাইলটদের অধীনে ঐতিহাসিক ওই মিশনের জন্য নভোচারীদের হাজার হাজার ঘণ্টা প্রশিক্ষণ দেয়া সত্ত্বেও আর্মস্ট্রং স্বীকার করেছেনÑচন্দ্র অভিযান নিয়ে বিতর্কিত তত্ত্বই সঠিক। এক ও অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনের জন্য মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা’র কয়েক হাজার কর্মকর্তা ঘণ্টার পর ঘণ্টা একত্রে কাজ করছিলেন। কিন্তু তাদের কেউ কি জানতেন আসলে কি হচ্ছিল। ৩১ বছর বয়সী পার্টটাইম ভিত্তিতে কর্মরত সহকারী লাইব্রেরিয়ান রাফ কোলম্যান সম্পর্কে আর্মস্ট্রং বলেছেনÑআমি যতটুকু জানি তার চেয়ে চন্দ্র অভিযানের ধোঁকা সম্পর্কে বেশি জানেন কোলম্যান। বছরের পর বছর তিনি এ বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করছেন। ওমিশন কন্ট্রোল ডট অর্গ আরও জানিয়েছে, আর্মস্ট্রং চাঁদের যেখানে অবতরণ করেছিলেন তার পাশেই ইংরেজি ‘সি’ অক্ষর খোদিত একটি পাথর খণ্ড পড়ে ছিল। আর্মস্ট্রং এ বিষয়টি অভিযানের আগেÑপরে উল্লেখ করেননি। আবেগপ্রবণ আর্মস্ট্রং এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ওই পাথরখণ্ডটি সম্ভবত নাসা থেকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু পাথরখণ্ডটি আর্মস্ট্রং উল্টে দিতে ভুলে গিয়েছিলেন। কেন এমন ধোঁকাবাজি? এ রকম প্রশ্নের জবাবে আর্মস্ট্রং-এর উদ্ধৃতি দিয়ে কোলম্যান বলেছেনÑতখনকার সোভিয়েত ইউনিয়নকে মহাশূন্য অভিযানে পেছনে ফেলতে যুক্তরাষ্ট্র ওই ঘটনা সাজিয়েছিল। সংবাদ সম্মেলনে আর্মস্ট্রং চাঁদে তার প্রথম পা রাখার দৃশ্য প্রদর্শন করেন। কয়েকবার বিভিন্ন গতিতে ওই দৃশ্যের ফিল্ম প্রদর্শন করে তিনি বলেনÑচাঁদের বুকে মানবজাতির পা রাখার ঘটনা চিত্রায়ন ছাড়া কিছু নয়। এতে প্রথমে তাকে পিছন দিকে ধীরগতিতে পিছাতে বলা হয়। পরে তা বিপরীত দিকে চালিয়ে দেয়া হয়Ñ যা দেখে মানুষ মনে করে তিনি চাঁদের গায়ে হাঁটছেন। আর্মস্ট্রং বলেনÑএ দৃশ্যের মধ্যেই সব। চোখ খোলা রাখলে তা ধরা পড়বে। প্রকৃতপক্ষেই তা চাঁদের গায়ে ছোট পদচিহ্ন, কিন্তু বাস্তবে তা মানবজাতির জন্য ভয়ঙ্কর এক মিথ্যে।


মানবজমিন লিংক
দ্য ওনিয়ন লিংক
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০০৯ দুপুর ১২:১৩
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×