
ছোট্ট ছেলেটি অথবা মেয়েটির ছোট্ট বুকে বর্ষার প্রমত্ত আকাশের মতো অনেক বড় কষ্ট। এতো বড় কষ্ট নিয়ে ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে কান্নায় কতোবার ভেঙে আসে তার চোখ। মা বলেন চোখের অসুখ। পূর্বজন্মের পাপপ্রসূত এই অসুখ বয়ে বেড়াতে হয় আজীবন।
বাবা বাজারে চালের দোকানে কাজ করেন। ভীষণ ভারী ভারী চালের বস্তা পিঠে তুলে যখন পথ দিয়ে হেঁটে যান তিনি, তখন ছেলেটি অথবা মেয়েটির মনে হয় কর্দমাক্ত গলিত পৃথিবীর পৈশাচিক উল্লাসে এখুনি বিচূর্ণ হবে বাবার বেদনাক্লিষ্ট শীর্ণ পা দুটো।
কোন কোন চাঁদহীন প্রেতগ্রস্ত রাতে ছেলেটি অথবা মেয়েটি বাবার ঘুমন্ত মুখের আধিভৌতিক বলিরেখায় একটুকরো মাটির খোঁজে বিহ্বল চোখে তাকায়। পাশে শুয়ে থাকা মায়ের কপালের নিষ্প্রভ সিঁদুরে, হাতের আপাতঅক্ষত শাঁখায় শতবর্ষের গ্লানি ডানা বিধ্বস্ত পাখির মতো অনাদৃত নিষ্প্রাণ পড়ে থাকে।
এলাকার সবচাইতে সমৃদ্ধ বাড়ির দীর্ঘ দালান উর্বর ফসলি জমির কথা উঠলেই ছেলেটি অথবা মেয়েটির আতংকিত বাবার মূক ও বধির দৃষ্টি অনুভূতিশূন্য করতলের ভাগ্যরেখায় নতজানু হয়। সকলেই বলে এদেশ তোদের না। মা আঁচলে মুখ ঢাকেন। তাঁর চোখের জলে নদীর জন্ম হয়।
কষ্টতাড়িত ছোট্ট ছেলেটি অথবা মেয়েটি রাতদিন ভাবে দেশহীন মাটিহীন মানুষের ঠিকানা কোথায়? ভাবতে ভাবতে একদিন নিপতিত হয় শেকড়ছিন্ন মহাকাশের কৃষ্ণগহ্বরে!
ছবিঃ সংগৃহীত

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





