লন্ডন পার্লামেন্ট হলো আধুনিক গণতন্ত্রের চর্চাকেন্দ্র; বৃটিশ এমপি'রা গণতন্ত্রে এতই দীক্ষিত যে, লিখিত কোন 'সংবিধানের'ও দরকার হয়নি এ যুগেও। বৃটিশ দখল করেছিল রাজতান্ত্রিক ভারত, ফিরিয়ে দিয়েছে গণতান্ত্রিক ভারত; ২০০ বছর শোষণ করার পর, শোষণ বিরোধী সিস্টেম রেখে গেছে মানুষের জন্য।
বাংলাদেশ জন্ম থেকে প্রজাতন্ত্র; অর্থাৎ, সরকার পরিচালিত হবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি অনুসরণ করে; সেই অনুসারে, শাসনতন্ত্র শুধু গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলকে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালু করতে অনুমতি দেয়।
বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে দলকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে; দলের সব পদই নির্বাচনের মাধ্যমে হতে হবে। দেশের বড় ৩টি দলের সভাপতির পদে একই ব্যক্তি আছে যথাক্রমে ৩৪, ৩৩ ও ৩২ বছর; পদটিতে নির্বাচন হয়; কিন্তু দলের নেতারা এখানে গণতন্ত্রের প্রয়োগ করেনি ৮০ দশকের পর। সেইদিক থেকে, বড় ৩টি দল আসলে দেশে রাজনীতি করার যোগ্যতা হারিয়েছে।
বেগম খালেদা জিয়া বিএনপি'র চেয়ার পারসনের পদে ৩৩ বছর থাকায়, আসলে দলটি গণতান্ত্রিক পদ্ধতি থেকে পুরোপুরি সরে গেছে; দেশের মানুষের সিংহভাগ অশিক্ষিত হওয়ায়, এ ব্যাপারে দলটিকে চ্যালেন্জের সন্মুখীন হতে হয়নি আজও।
বেগম খালেদা জিয়া দেশের গত সংসদ নির্বাচনে যাননি; এ বছর চেস্টা করেছিলেন আন্ন্দোলনের মাধ্যমে নতুন নির্বাচন আদায় করতে আওয়ামী লীগ সরকার থেকে; সোজা ভাষায়, সরকার উনাকে এমনভাবে কোণথাঁসা করেছে যে, উনার দল টিকানোই মুশকিল হওয়ার কথা। ৯১ দিনের আন্দোলনে মানুষ চরম মুল্য দিয়েছে; সঠিকভাবে বিচার হলে, অনেকের ফাঁসী হওয়ার কথা; ১৫০ জন নিহত, ২০০ জন পংগু, ৪০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ ও সময় বিনস্ট।
আন্দোলনের সময় উনার ছোট ছেলের মৃত্যু হয়; মনে হয়, এটা আন্দোলনের প্রভাব। ২ মাস আগে তিনি লন্ডন যান অপর নির্বাসিত ছেলের সাথে দেখা করতে; দলকে বলেছে চিকিৎসা করাতে যাচ্ছেন। এখন ফিরে এসেছেন; মনে হচ্ছে, লন্ডন থেকে গণতন্ত্র শিখে এসেছেন; ৩৩ বছর পর, দলের শীর্ষ পদ থেকে সরে গিয়ে, দলে গণতন্ত্র আনবেন। যদি সেটা না করেন, কি করে তিনি গণতান্ত্রিক নির্বাচন চাইবেন?