somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তাজুদ্দিন সাহেবকে অসহায়ভাবে মৃত্যুবরণ করতে হলো কেন?

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



শেখ সাহেবকে হত্যা করার জন্য অনেকেই চেস্টা করে যাচ্ছিল ১৯৭২ সালের শুরু থেকেই; অবশেষে, শেখ সাহেব ও আওয়ামী লীগের দক্ষতা ও দুরদর্শীতার অভাবকে কাজে লাগিয়ে সিআইএর নেতৃত্বে শেখ সাহেবকে হত্যা করা হলো! শেখ সাহেবের পর, সেই তালিকায় কে ছিল ১ম স্হানে? আমার মনে হয়, তাজুদ্দিন সাহেব। উনিও যদি আমার মতো ভাবতেন, উনার দরকার ছিলো ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট শেখ সাহেবের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর, প্রথমে একটি নিরাপদ যায়গায় আত্মগোপন করা, তারপর প্রথম সুযোগেই ভারতে চলে যাওয়া। তিনি পালিয়ে যাননি, এটা ছিল ভুল; উনি ভুলের মাশুল দিয়েছেন।

উনাকে ধরে জেলে নেয়ার পর, জেল কেন আক্রান্ত হলো না উনার ১৯৭১ সালের বাহিনীর দ্বারা? দেশে তখন, উনার ১৯৭১ সালের সেনা বাহিনীর ১ লাখ সৈনিক ছিল, যাঁদের ২০/২৫ হাজার তখন ক্যান্টনমেন্টগুলোতে!

১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ সকাল থেকে শুরু হওয়া মুক্তিযুদ্ধে যাঁরা যোগদান করেছেন, অংশ নিয়েছিলেন, বিজয় অবধি যুদ্ধ করেছিলেন, তাঁরা কোন বাহিনীর সদস্য হয়েছিলেন, তাঁরা কোন সরকারের বাহিনী? তাঁরা বাংলাদেশ বাহিনীর সদস্য ছিলেন, তাঁরা তাজুদ্দিনের সাহেবের সরকারের অংশ, বাংলাদেশ বাহিনী।

যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর সদস্য মোটামুটি ১ লাখ ২০ হাজারের মতো ছিলেন; ১৬ই ডিসেম্বর অবধি ২২ হাজার মুক্তিযোদ্ধা প্রাণ দিয়েছেন; বাকীরা বিজয় অবধি যুদ্ধ করেছেন।

যুদ্ধ জয়ের পর, বাহিনীর কে কোথায় গেলো? কমান্ডারেরা কোথায়, সরকার কোথায়, সৈনিকেরা কোথায়?

১৮ই ডিসেম্বর, ১ নং সেক্টরের সৈনিকদের বলা হয় যে, যাঁদের বাড়ী নিকটে, তাঁরা বাড়ী যেতে পারবেন, অস্ত্র জমা দিয়ে যেতে হবে; বেংগল রেজিমেন্ট, ইপিআর, আনসারদের বলা হলো ১ সপ্তাহ পরেই চিটাগং ক্যান্টনমেন্টে ফেরত আসতে; পুলিশদের বলা হলো, চট্টগ্রাম পুলিশ লাইনে ফিরে আসতে। ছাত্র, কৃষক ও শ্রমিকদের ফেরত আসতে বলা হয়নি, এবং ফিরে আসার ঠিকানা দেয়া হয়নি।

১ নং সেক্টরে ২২ হাজার মানুষ ট্রেনিং নিয়ে যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন; এঁদের থেকে আড়াই হাজার প্রাণ দিয়েছেন। যুদ্ধকালীন, এঁরা কোনদিন তাজুদ্দিন সাহেবকে দেখেননি; বাড়ী যাবার পর, এঁদেরকে আর কোথায়ও ডাকা হয়নি, অফিসিয়েলী ডিসসার্জ করা হয়নি; যুদ্ধে জয়ের জন্য অভিনন্দন জানানো হয়নি তাজুদ্দিন সাহেবের পক্ষ থেকে, অস্ত্র জমা দিয়ে বাড়ী যাবার পর, এই সৈনিকেরা সাধারণ জনতার মাঝে
হারিয়ে গেছেন।

এই হারিয়ে যাওয়া সৈনিকদের সরকার প্রধান ছিলেন তাজুদ্দিন সাহেব; উনি নিজের বাহিনীকে ছেড়ে দিয়েছেন জনতার মাঝে; উনাকে ধরে নেয়ার পর, এই সৈনিকেরা ভাবার সুযোগ পায়নি যে, তাঁদের সরকার প্রধানকে কালো শক্তি ধরে নিয়ে গেছে, উনাকে উদ্ধার করার দরকার আছে; সেই ভাবনার সেতু তাজুদ্দিন সাহেব ভেংগে দিয়েছিলেন।

সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৬ সকাল ৯:৩৫
১২টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×