আমাদের দেশের প্রেসিডেন্টর কথা মনে হলে, কেমন বুড়ো, অসুস্হ, একটা মানুষের চিত্র ভেসে আসে আমাদের মানসে, যিনি বিদেশী দুতদের পরিচায়-পত্র গ্রহন করেন, চাকর-বাকর নিয়ে বিরাট বাড়ীতে বসবাস করেন, চিকিৎসার জন্য বিদেশে যান, মিলিটারীর কুচকাওয়াজে যান, মৃত্যুদন্ড-প্রাপ্ত আসামীদের(নিজ দলের হলে) প্রাণ-ভিক্ষা দেন, ১৬ই ডিসেম্বরে বিদেশীদের জন্য ভোজ-সভা করেন, শেখ সাহেব আর জেনারেল জিয়ার কবর জেয়ারত করেন, ইত্যাদি ইত্যাদি। আমাদের জাতির মাথা, আমাদের ইউনিভার্সিটিগুলোর মাথা, আমাদের সরকারের মাথা, আমাদের সেনা বাহিনীর মাথার এই অবস্হা কেন? এত দুর্বল মানুষ জাতির জন্য কি করবেন, কি ভাববেন; বরং, উনাকে নিয়ে জাতির ভাবনার শেষ নেই!
আমাদের জাতির জাতীয়তাবাদের নেতৃত্ব পেয়েছিলেন শেখ সাহেব; মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী সরকারের কারগারে বন্দী ছিলেন; কিন্তু আমাদের যুদ্ধকালীন সরকারের প্রেসিডেন্ট তিনিই ছিলেন; ফিরে এসে হয়ে গেলেন প্রাইম মিনিস্টার! এগুলো হচ্ছে, সংবিধানের যত নিয়ম কানুন। প্রাইম মিনিস্টারের পদ উনার পছন্দ হয়নি, মনে হয়; উনি আবার প্রেসিডেন্ট হয়ে গেলেন; এবার এটা কার কার যেন পছন্দ হয়নি, তারা উনাকে মেরেই ফেললো! শুরুটাই ভয়ংকর!
শেখ সাহেব যখন বন্দী ছিলেন, উনার অনুপস্হিতিতে উনার ঘনিস্ট সহকর্মী সৈয়দ নজরুল ইসলাম সাহেব প্রেসিডেন্টের কাজ চালিয়ে ছিলেন। শেখ সাহেবকে হত্যা করার পর, উনার প্রক্সিকেও হত্যা করার দরকার ছিলো, বোধ হয়; না হলে, হয়তো সাংবিধানিক ভুল হয়ে যেতো; যাক, সংবিধান সমুন্নত রাখা হয়েছে!
খোন্দকার মোস্তাকে সাহেব ছিলেন শেখ সাহেবের ঘনিস্ট লোক, উনারও আমাদের প্রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ হয়েছিলো; উনি বন্দুক-ওয়ালাদের পিছু পিছু এসেছিলেন, বন্দুক-ওয়ালাদের ভয়ে পেছন দরজা দিয়ে পালিয়া গেছেন। এখন হয়তো আগামী সুযোগের অপেক্ষায় আছেন।
১৯৭৫ সাল থেকে শুরু হওয়া সামরিক শাসন চলাাকালেও দেশে প্রেসিডেন্টের দরকার ছিলো, সামরিক শাসনকর্তা জেনারেল জিয়া বিচারপতি সায়েম সাহেবকেই প্রেসিডেন্ট পদ দিয়েছিলেন; তখন সময় ভালো ছিল, সবকিছু জিয়া নিজেই করতেন, বাকীরা ছিলো সরকারের অলংকার।
এক সময় জিয়া নিজেই প্রেসিডেন্ট পদে এলেন; কারণ, প্রেসিডেন্ট পদে না এলে, সহজে মৃত্যু হয় না; জিয়া যেভাবে এসেছিলেন, সেই পথেই চলে গেছেন; কিন্তু সামরিক বীজ বপন করে গিয়েছিলেন।
এরশাদ বাংলাদেশের মানুষের জন্য এক বিস্ময়, তেলে পোকার মতো, পারমানবিক যুদ্ধ হলে, যদি একজন বাংগালী বেঁছে যান, সেটা হবে আমাদের জাতীর গৌরব, জেনারেল এরশাদ।
রাজনীতির হেরফেরে এক রাজাকারও প্রেসিডেন্ট হয়ে গিয়েছিলেন, সৌভাগ্য যে শেখ হাসিনার চোখে পড়েননি, না হয়, কমপকক্ষে সরকারকে আরেক টুকরা ম্যানিলা রশি কিনতে হতো।
পরের বিখ্যাত প্রেসিডেন্ট ছিলেন এক ডাক্তার, উনি কবর জেয়ারত ইত্যাদি নিয়ে মাথা ঘামাতেন না, হয়তো সুরা কালাম মনে রাখতে পারতেন না; বেশ, ডিস-কোয়ালিফাইড।
এর পরেরটা ছিল সুপারম্যান, দুনিয়ার সব পোস্ট উনার ছিল; কিন্তু মাথায় নাকি সমস্যা ছিল; যাক, সমাধান হয়ে গেছে, উনি নেই!
আরেকজন প্রেসিডেন্ট নিজ দেশের চিকিৎসকদের বিশ্বাস না করে বিদেশে গিয়ে মৃত্যু বরণ করলেন; সমস্যা, জাতির উপরে স্বয়ং প্রেসিডেন্টের আস্হা ছিল না।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৫৩