শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল ব্যক্তি, তিনি যা যা চেয়েছিলেন সবই করেছেন, আরো করবেন; উনার সাফল্যের কাছে শেখ সাহেব, তাজুদ্দিন সাহেব, জেনারেল জিয়া, এরশাদ সাহেব, বাংলাদেশ মিলিটারী কিছুই না; সবকিছু ঠিক আছে, শুধু উনার সফলতার ভাগ পায়নি সাধারণ মানুষ। কিন্তু উনি যেই পদগুলো দখল করে বসে আছেন, সেগুলোর সাথে দেশের সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকারের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে।
বাংলাদেশের মানুষ মানসিকভাবে ধরে নিয়েছেন যে, আওয়ামী লীগ মানে উনার দল, এখানে মানুষের বলার কিছু নেই, কোন অধিকার নেই; দল কিভাবে চলবে, সেটা দলের ব্যাপার, এখানে দেশের মানুষের কি? কিন্তু রাজনৈতিক দল দেশের সংবিধান অনুসারে করতে হয়, চলতে হয়; রাজনৈতিক দল সংবিধানকে মানতে হয় বলেই উহাতে জনগণের স্বার্থ জড়িত; যদি কোন রাজনৈতিক দল দেশের বা জাতির ক্ষতি করে থাকে, উহা যতই শক্ত হোক, উহার কার্যকলাপ বন্ধ করা দরকার; যেমনটা ঘটছে জামাতের সাথে।
শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের খারাপ সময়ে হাল ধরতে হয়েছে; কথা ছিল উনি হাল ধরবেন, বাকীরা উনার নেতৃত্বে কাজ করবেন; তবে, গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে হাল ধরার সুযোগ অন্যদেরও দিতে হয়; তিনি যে হাল ধরেছেন, সেটা ছেড়ে দেননি, আর ছাড়ার সম্ভাবনা নেই; আসলে হাল তো হাল, তিনি নৌকাসহ দখল করে নিয়েছেন। মানুষ ও নৌকার লোকেরা মানসিকভাবে ধরে নিয়েছেন যে, নৌকা উনার!
এরপর, সরকারের সবচেয়ে ২টি বড় পদ, প্রধানমন্ত্রীত্ব ও বিরোধীদকের নেতৃত্ব; এই ২টি ১৯৯১ সাল থেকে উনার; ১৯৯১ সালের পর বিরোধীদলের নেতৃত্বের দায়িত্বও উনি কাউকে দেননি। উনি ২ বার বিরোধীদলের নেতৃত্ব থাকার সময়, বিরোধীদলের একমাত্র কাজ ছিলো সরকারকে ঠেকানো। বিরোধীদলের নেত্রী হিসেবে তিনি সরকারকে কাজ করতে সাহায্য, কিংবা বাধ্য করার চেস্টা না করে, সরকার ঠেকানোর কাজ করেছেন; এতে উনার ও পার্টির পথ পরিস্কার হয়েছে, কিন্তু জাতি সরকার থেকে কিছু পায়নি; সরকার ভয়ে নিজের আখের ঘুটায়েছে।
এত বছর পর, উনাকে বুঝা উচিত, উনি সব কিছু মিলে একজন মানুষ; এবং উনার সব কাজই মানুষের মৌলিক অধিকারের সাথে যুক্ত; উনি যদি ভাবেন পার্টি উনার, সেটা ভুল; উনি যদি ভাবেন যে, উনার দল জয়ী হয়েছে, দেশ চালাবেন পার্টির মতানুসারে, সেটাও ভুল। উনাকে ইতিহাসে টিকতে হলে, আরো বেশী কাজ করার জন্য পদের সংখ্যা কমিয়ে আনতে হবে; এত পদে থেকে, সব পদের দায়িত্ব সঠিকভাবে সুপারম্যানও পালান করতে পারবেন না।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ রাত ৮:১৯