১৯৭২ সাল, স্বাধীনতাযুদ্ধ শেষ, আমরা রক্ত দিলাম, দেশ পেলাম, এবার দেশ গড়ার পালা; দেশ গড়তে শ্রম দিতে হয়; আনুমানিক ২ কোটী মানুষ বেকার তখন; দিনে, ২ দিনে একবেলা খাচ্ছে মানুষ; কিন্তু বেকার। ১ লাখ ২০ হাজার মুক্তযোদ্ধা বিনা বেতনে, বিনা খাবারে যুদ্ধ করলেন, মরলেন, জাতিকে স্বাধীন করলেন; দেশ স্বাধীন হওয়ার পর, তাঁরা কি পোড়া বাড়ীগুলোর যায়গায় নতুন বাড়ী তুলতে পারতেন না বিনা বেতনে? তাঁরা কি প্রাইমারী স্কুলের জন্য ছালাঘর, হাইস্কুলের জন্য ছালাঘর নির্মাণ করতে পারতেন না বিনা বেতনে? এসব কাজ তো যুদ্ধ থেকে অনেক সোজা, মরতে হচ্ছে না, মারতে হচ্ছে না; নিজের বাড়ীতে ঘুমায়ে, দিনে বিনা বেতনে সরকারী কাজ করা, জাতির কাজ করা; এটা বেকার থাকা থেকে ভালো ছিলো না?
১৯৭২ সাল, বিশ্বব্যাংকের চেয়ারম্যান ম্যাকনামারা আসলেন বাংলাদেেশে; তিনি বাংলাদেশকে খুবই নীচু হারে ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে চাইলেন। তখনকার বাংলাদেশ সরকার, এই নীচু সুদের হারে ৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণ নেয়নি; নিয়েছে আমেরিকান রিলিফ। সেই সময়ে বাংলাদেশকে কেহ ১ মিলিয়ন ডলারও ঋণ দিচ্ছিল না, দিচ্ছিল ভিক্ষা। সেদিন ৩ বিলিয়ন ডলার নিয়ে বাংগালীদের পড়ালে আজ অনেক আমেরিকান বাংলাদেশে এসে চাকুরী খুঁজতেন। যারা ফাইন্যান্স বুঝেন, তাদের বুঝতে কস্ট হবে না যে, নতুন স্বাধীন দেশে ৩ বিলিয়ন ডলারের ক্যাপিটেল দেশকে কিভাবে সাহায্য করতো সেই সময়ে!
সেদিন ক্যাপিটেল পেয়েও হারালেন বাংলাদেশ; কমদক্ষ লোকেরা বুঝলেন না যুদ্ধের পর একটা নতুন জাতির জন্য এই ঋণটা কত প্রয়োজনীয় ছিল সেদিন ।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০১৭ ভোর ৪:৪০