আগামী ভোট কি আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের মাঝে আশার সন্চার করছে, নাকি অনিশ্চয়তা, হতাশা ও ভয়ের সন্চার করছে? যাঁরা আগামী ভোটে, শেখ হাসিনাকে চান না, তাঁরা কি পরিমাণ আশাবাদী, সেটা তাঁরা জানেন; তাঁদের কেহ কেহ বিএনপি'র বিজয়ে আস্হা রাখছেন, অনেকেই ড: কামালের উপর আশা করছেন। কিন্তু যাঁরা শেখ হাসিনাকে বরাবরই সাপোর্ট করেন, তাঁদের কি অবস্হা? শেখ হাসিনা কিন্তু আগামী ভোটের ব্যাপারে তেমন মুখ খুলছেন না: তিনি ও তাঁর দলকে ভোট নিয়ে চিন্তিত বলেও মনে হচ্ছে না; তিনি ও তাঁর দল ভোট নিয়ে চিন্তিত না হওয়ায়, সাধারণ মানুষ বেশী চিন্তিত হয়ে যাচ্ছেন!
আফগানিস্তানের বিগত ভোটে মানুষ লাইন ধরে ভোট দিয়েছেন, ইরাকীরা নিশ্চিত সুইসাইড আক্রমনের আশংকার মাঝেও লাইন ধরে ভোট দিয়েছেন; যদিও মানুষের আশা অপুরণ থেকে যায়, তারপরও মানুষ ভোটের লাইনে দাঁড়ায়, তারপরও আশায় আশায় দিন গুণেন। বাংগালীরাও এসব দেশের মানুষের মত বারবার ভোটের লাইনে দাঁড়ায়েছেন।
বাংলাদেশের গত ভোটে, যারা এমপি হয়েছে, তারা ভোটারদের দেখেনি, ভোটারেরাও তাদের দেখনি; ফলে, গত ৫ বছর এমপি'রা সাধারণ মানুষের জন্য কিছুই করেনি! এবারের ভোট কি সাধারণ মানুষের জন্য আশার বাণী নিয়ে আসবে নাকি ভোটের সময় ভীতিজনক কিছু ঘটবে? মানুষ কি আগত ভোটের জন্য অপেক্ষা করছেন, নাকি কোনভাবে পাশ কাটিয়ে যেতে পারলেই বাঁচেন!
শেখ হাসিনা আগামী ভোটে জেতার জন্য, মানুষের সাপোর্ট পাবার জন্য আপাতত: কিছু করছেন বলে মনে হয় না, এটা ভয়ের ব্যাপার! শেখ হাসিনার কার্যকলাপে, স্বাধীনতার পক্ষের ও পুরানো আওয়ামী লীগের লোকজন খুবই ক্ষুব্ধ: উনার সময় জাতীর ধন-সম্পদ বাড়ার কথা, ধনী বাড়ার কথা নয়; কিন্তু ধনী বেড়েছে, যদিও এতবেশী ধনী বাড়ার মতো অর্থনৈতিক কর্মকান্ড দেশে নেই।
বাজেট, ঋণ ও সরকারী খরচ অনুযায়ী বুঝা যাচ্ছে, সরকার দেশের ইনফ্রাষ্ট্রাকচারে বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করছে; দেশে ধনীর হার বৃদ্ধি ও জিডিপি থেকে সহজে অনুমান করা সম্ভব, এই টাকাগুলো সরকারের সাথে পরিচিত বড় বড় ব্যবসায়ীরা নামে মাত্র কাজ দেখায়ে দখল করে নিয়েছে; সরকারের 'উন্নয়ন উন্নয়ন' চীৎকারের সাথে সাধারণ মানুষের অর্থনীতির সাথে কোন মিল নেই: দেশে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা, অর্ধ বেকার, বিদেশে চাকুরীর আশায় দালালের হাতে শেষ সম্বল তুলে দেয়ার প্রবণতা, সরকারের "উন্নয়ন উন্নয়ন" চীৎকারের সাথে মিলছে না।
ধনী বৃদ্ধির অর্থনীতি থামিয়ে, মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের অর্থনীতি নিয়ে, সাধারণ মানুষের সাথে রাজনৈতিক আলোচনা হওয়ার দরকার আছে; ভোটের সময় হাউকাউ হলেও মানুষ আশার বাণী শুনতে চান; শেখ হাসিনা এবারের ভোট নিয়ে সেই রকম কোন আলোচনায় যায়নি এখনো, এখনো তিনি ড: কামাল, ডা: বদরুদ্দোজাকে নিয়ে ব্যস্ত; ড: কামাল বা ডা: বদরুদ্দোজা কেন উনার জন্য সাবজেক্টে পরিণত হলো, সেটা কোনভাবেই পরিস্কার নয়।
দেশে একাডেমিক কোন জরীপ ব্যবস্হা নেই; ভোটের প্রতি মানুষের আগ্রহ, ভোটের দিক থেকে দলগুলোর অবস্হান, কিছুই বুঝার উপায় নেই; সরকারী দলের লোকজনের মাঝে, যুগোপযোগী এমপি হওয়ার মতো রাজনীতিবিদ নেই বললেই চলে! আবার, অন্য রাজনৈতিক দলগুলতে রাজনীতিবিদ তো দুরের কথা ভালো মানুষই নেই। পুরো বিপক্ষের মাঝে ড: কামাল হোসেন ছাড়া, অন্যেরা পরিক্ষিতভাবে অসফল রাজনীতিবিদ; সবেধন নীলমনি, ড: কামাল হোসেনও কোনদিন রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দেখাতে সক্ষম হননি।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ৯:০২