somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাখাইন নারীকে ধর্ষণের ফলে দাঙ্গার সহিংসতা সূত্রপাত হয়নি!!

১৬ ই জুন, ২০১২ রাত ১১:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মিয়ানমারের মুলধরারা সংবাদ মাধ্যম, আর্ন্তজাতিক সংবাদমাধ্যম এবং বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম থেকে বারবার প্রচারিত হচ্ছে। আরাকানে তিনজন রোহিঙ্গা মুসলমান কর্তৃক গত ২৮ মে’তে ২৬ বছর বয়সী একজন রাখাইন নারীকে ধর্ষণ করা হয় যার ফলে ‘দাঙ্গা’ শুরু হয়।

কিন্তু সেখানকার স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী, বিকল্প সংবাদ মাধ্যম ও ব্লগাররা মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় ও মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোকে চ্যালেঞ্জ করছেন যে এ ধরণের কোনো অভিযোগে সহিংসতা সূত্রপাত হয়নি। বার্মিজ মুসলিম অ্যাসোসিয়েশন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন, তাছাড়া স্থানীয় বিকল্প সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাতে এর সত্যতা নিশ্চিত হয়েছে। [সুত্র: মোহাম্মদ আরজু, ১২ই জনু, বার্তা নিউজ ২৪.নেট ]



দাঙ্গার শুরু যেখান থেকে:
সেখানকার স্হানীয় মানবাধিকার কর্মী ও ব্লগাররা তথ্য প্রমাণ দিয়ে দেখাচ্ছেন, শুধু আরাকানে বা রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপরই নয়, গত এপ্রিলের উপনির্বাচনের সময় থেকেই পুরো মিয়ানমার জুড়ে সব জাতিগোষ্ঠির মুসলামানদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় লেলেইয়ে দেওয়া হয়েছে আর এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন অং সান সুকি’র ন্যাশনাল লিড ফর ডেমোক্রেসি থেকে নির্বাচিত একজন সাংসদ।

সুকির সাংসদের নেতৃত্বে জাতিগোষ্ঠির মুসলামানদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় লেলেইয়ে দেয়ার ধারাবাহিকতায় ৩ জুন, বৌদ্ধ ধর্মালম্বি সংখ্যাগরিষ্ঠ রাখাইন সম্প্রদায়ের প্রায় তিনশ লোক টাঙ্গো শহরে একটি বাস থামিয়ে যে ১১ জনকে কুপিয়ে হত্যা করে, তাদের মধ্যে ১০ জনই ছিলেন তাবলিগের চিল্লায় রওয়ানা হওয়া জাতিগত বার্মিজ মুসলমান। এদের মধ্যে একজন নারীও ছিলেন, যাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। বাকি একজন ছিলেন একজন বৌদ্ধ, যাকে মুসলমান ভেবে হত্যা করা হয়।

গত উপনির্বাচনের সময় থেকেই মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় ও মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলো (যেমন ‘নিউ লাইট অফ মিয়ানমার’ নামের অনলাইন এজেন্সি) জাতিগোষ্ঠি নির্বিশেষে মুসলামনাদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক প্রচারণা শুরু করে নতুন করে। যেমন ৩ জুনের হত্যাকাণ্ডের পরে সংবাদমাধ্যমগুলো গালিসূচক ‘কালার’ (দক্ষিণ থেকে আসা কালা চামড়ার মুসলমান) শব্দ ব্যবহার করে জানায়, আরাকানিজরা ১১ জন ‘কালার’কে হত্যা করেছে।
[সুত্র: মোহাম্মদ আরজু, ১২ই জনু, বার্তা নিউজ ২৪.নেট ]


আরাকানের ইতিহাস

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী পশ্চিম মায়ানমারের আরাকান (নতুন নাম- রাখাইন, সংখ্যাগুরু রাখাইনদের নামে) রাজ্যের একটি উলেখযোগ্য নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী। এরা ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত। রোহিঙ্গাদের আলাদা ভাষা থাকলেও অধিকাংশই বাংলা ভাষায় কথা বলে। মায়ানমারের আকিয়াব, রেথেডাং, বুথিডাং এলাকায় এদের বাস। মোট জনগোষ্টি ১৪ লাখ, ৫ লক্ষের অ ধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে বাস করে বলে ধারনা করা হয়। [সুত্র: ইউকিপিডিয়া] প্রদেশটির রাজধানী আকিয়াব-এর নাম মুছে ফেলা হয়েছে, নাম রাখা হয়েছে সিতউয়ি। ২০ হাজার বর্গমাইল অধ্যুষিত সমগ্র আরাকান উত্তর-পশ্চিমে ১৭১ মাইলব্যাপী বাংলাদেশ দ্বারা পরিবেষ্টিত। আরাকানের মোট জনসংখ্যা ৪০ লাখ। তন্মধ্যে ২০ লাখ মগ-বৌদ্ধ, ১৪ লাখ রোহিঙ্গা, ৪ লাখ সর্বপ্রণবাদী এবং ২ লাখ হিন্দু-খ্রিস্টান। [সুত্র: ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, ১৫ই জুন, আমারদেশ]

খ্রিস্টপূর্ব ২৬৬৬ অব্দ থেকে ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত আরাকান ছিল একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাজ্য। অষ্টাদশ শতকে বর্মী রাজ বোধাপায়া (১৭৮২—১৮১১) সশস্ত্র আক্রমণের মাধ্যমে আরাকানকে বার্মার অন্তর্ভুক্ত করে নিলে দেশটি তার স্বাধীনতা হারায়। তাও মাত্র অর্ধ শতাব্দীর জন্য। তারপরই এ রাজ্য ব্রিটিশ শাসনে চলে যায়। ব্রিটিশ শাসনের উত্তরাধিকার হিসেবেই এটি আজ মিয়ানমারের অংশ। খ্রিস্টীয় অষ্টম শতাব্দী থেকেই আরাকানের সঙ্গে আরব ও মুসলিম দেশের যোগাযোগ স্থাপিত হয়। ইসলামের অভ্যুদয়ের মাত্র অর্ধ শতাব্দীর মধ্যে সুফী, সাধক, মুবাল্লিগ ও আরব বণিকদের মাধ্যমে আরাকানে ইসলাম ধর্ম প্রচারিত হয়। কালিমা ও বিসমিল্লাহ খচিত আরাকান রাজ্যের নিজস্ব মুদ্রার নিদর্শন পাওয়া যায়। [সুত্র: ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, ১৫ই জুন, আমারদেশ]



রাখাইনদের অতীত ইতিহাস

এই রাখাইনরা হলো সাবেক মগ জাতি। যার মাধ্যমে পুরা ইতিহাসকে মুছে ফেলা হয়েছে। একদা মগরা বর্মী রাজা ও পর্তুগিজদের লগে মিলে আরাকানের ভূমিপুত্র রোহিঙ্গা ও বার্মিজ মুসলিমদের ওপর এথনিক ক্লিনজিং চালিয়েছিল, বাংলাদেশের দক্ষিণ উপকূলে লুটতরাজ চালিয়েছিল, মোগল জমানার শেষের দিকে ও বৃটিশ ঔপনিবেশিকতার সময়ে। তো, অপরাধী মগদের নাম বদল করে দিয়ে বর্মা প্রমাণ করতে চাইছে যে তার দেশের কোথাও মগরা নাই, যারা রোহিঙ্গা ও অন্যান্য জাতির ওপর তিন শতক ধরে এথনিক ক্লিনজিং চালানোর কাজে লিপ্ত ছিল।[সুত্র: খোমেনী ইহসান, ১৪ ই জনু, বার্তা নিউজ ২৪.নেট ]

রোহিঙ্গাদের অভিযোগ মিয়ানমারের শরনার্থীদের বিষয়ে কথা বলতে গেলে অং সান সুচি শুধু কারেনদের ব্যাপারেই বলেন। সুচি রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে একটিও আশার বানী শোনান না। রোহিঙ্গারা যখন অং সান সুচি’র সাহায্য চাইছেন তখন সুচি গেলেন ইউরোপে নোবেল পুরস্কার আনতে। যদিও এটা মায়ানমারের অভ্যন্তরিন ব্যাপার। তবে বাংলাদেশ এ নিয়ে চিন্তিত হওয়ার যঢ়েষ্ট কারণ আছে। বাংলাদেশ সরকার, বিরোধীদল সহ সবার উচিত বিষয়টি বিশ্বদরবারের নজরে আনা।
১১টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×