উপরের ছবিটি দেখলে মন খারাপ হবে না এমন লোক খুজে পাওয়া মুশকিল। আবেগী মন আমাদের চোখের জল দেখলে নিজের চোখেও জল আসে। কিন্তু বাস্তবতা নিয়ে আমরা একটুও চিন্তা করি না।
বছর দুয়েক আগে যখন হাইওয়েতে সিএনজি চালিত অটোগুলি বন্ধ করে দেয়া হল তখনও এরকম আবেগী ছবি আর তাদের আন্দোলনের খবর বেশ নজরে পড়ত। তারা কি করে খাবে, কিভাবে চলতেবে, যত অত্যাচার গরীবের উপর, সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হবে ইত্যাতি ইত্যাদি। যা হউক সরকার তার অবস্থানে কঠোর হলেন। প্রতিদিনের চিত্র মহাসড়কে সিএনজি দুর্ঘটনার চিত্র পাল্টে গেল।
মূল কথা ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সা। জেলা শহরগুলিতে গেলেই চোখে পড়ে এই ব্যাটারি চালিত রিক্সা। শুধু জেলা শহর নয় বিভাগীয় শহরেও তাদের দাপিয়ে বেড়াতে দেখা যায়। এসব রিক্সা প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনায় পড়ে, চালকের অদক্ষতা আর দ্রুতগতিতে চালানোর মনোভবে। যেহেতু রিক্সার দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার খুবই কম তাই সে ঘটনা খবরেও আসে না। ছেড়া ফাটা কাটা পর্যন্তই।
এসব রিক্সা চালকেরা অধিকাংশ অদক্ষ। এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে রিক্সা কিনে রাস্তায় নেমে পড়েন। কোন সিগনাল/সংকেত মানার ধার ধারেন না তারা। যত্রতত্র সামনের চাকা এগিয়ে দিয়ে বসে থাকতে তারা বড়ই অস্তাদ। ট্রাফিক পুলিশদের কোন পাত্তায় দেন না তারা। গত বছর তিন আগে কুমিল্লার কান্দিরপাড়ে এক রিক্সাচালক সিগনাল না মানার অপরাধে একটা বাড়ি দিলে সে চাকু নিয়ে এসে বসিয়ে দেয় ট্রাফিক পুলিশের পেটে। আর ভাড়া নিয়ে বাড়াবাড়ি তো প্রতিদিনের নৈমেত্তিক ঘটনা।
এসব ব্যাটারি চালিত রিক্সা বন্ধে বারংবার মাইকিং শতর্কীকরণ করা হলেও তারা কোন পাত্তায় দেন না এসবে। রিক্স ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্তও কিন্তু হঠাৎ করে না। প্রথম শতর্ক করা হয় তারপর রিক্সা আটকে দেয়া হয়েছে, রিক্সা আটক করা হয়েছে। সর্বশেষ চিকিৎসা হিসেবে গুড়িয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত। যখন গুড়িয়ে দেয়া শুরু হল তাদের চোখে চলে এল জল, আমাদের চোখও ছল ছল।
এসব রিক্সা চার্জ হয় অবৈধ সংযোগে। যার ফলে বাড়ীত বিদ্যুৎ বিল আমাদেরও গুনতে হয়। এইতো দুদিন আগেই পত্রিকার খবর বিদ্যুতের দাম ১৫% বাড়াতে হবে আবার। কারণ খরচ ঘাটতি হচ্ছে তাই। এখন প্রশ্ন আসে কেন তারা সংযোগ বন্ধ করছে না। অর্থাৎ একটা খারাপের জন্য আরেকটা খারাপের অনুমোদন। এক বিভাগ তার দায়িত্ব পালন করছে না বলে আরেক বিভাগ করতে পারবে না এই কথাটা কতটা ন্যায় বিচার সম্পন্ন। তা হলে তো দেশে কোন বিচার ব্যাবস্থায় থাকে না।
প্রশ্ন তোলা হচ্ছে এরা কি করে খাবে। যারা প্রশ্ন করছে তাদের আসেল দেশ সম্পর্কে কোন ধারণাই নেই। এখন একজন খেতের মজুরের বেতন ৪৫০টাকা। ৯টার সময় তারা কাজে যোগ দিবেন ৫টার সময় কাজ শুরু করবেন। একটা ডিমের দাম ১০টাকা। এক কেজি ছাগলের মাংশের দাম ৭০০টাকা। এসকল রিক্সা চালকেরা কিন্তু হাসমুরগী পালন, কৃষি কাজ এসবের কাছেও যেতে চান না। পায়ে কাদা আর হাতে ময়লা লাগার ভয়ে। আর যখন অটো রিক্সা ছিল না কোন না কোনভাবে কিন্তু তারা চলেছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১০:৪৯