somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সংক্ষেপে কমনওয়েলথ স্কলারশিপের আদ্যন্ত

০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ ভোর ৫:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সম্ভবত এই মাসের ১২ তারিখে ইউজিসি-তে কমনওয়েলথ স্কলারশিপের ভাইভা।
আমার যদিও বেশ ব‍্য্যাস্ত সময় যাচ্ছে, তারপরও মনে হলো বিষয়টা নিয়ে কিছু লেখা যেতে পারে।

প্রথম কথা: কমনওয়েলথ স্কলারশিপ কী ও কীভাবে কাজ করে

কমনওয়েলথ স্কলারশিপ হচ্ছে একদা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত দেশগুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য ব্রিটেনে পড়াশুনা করার জন্য এখানকার কমনওয়েলথ স্কলারশিপ কমিশন (সিএসসি, ইউ.কে)-এর পক্ষ থেকে দেয়া বৃত্তি। এরা মূলত ডিএফআইডি-র মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে টাকা পায় এজন্য। অন্যান্য দেশেও কমনওয়েলথ স্কলরশিপ দেয়। যেমন- কানাডা। অস্ট্রেলিয়া এক সময় দিতো এখন বন্ধ করে দিয়েছে সম্ভবত। পাশের দেশ ইনডিয়াও কমনওয়েলথ স্কলারশিপ দেয় তার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করার জন্য। সোজা কথা, একটি দেশের কমনওয়েলথ কমিশন সংশ্লিষ্ট দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন স্কলারশিপ দেয়।
আমাদের দেশ থেকে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী আসে ইউ.কে তে এই দেশের কমনওয়েলথ স্কলারশিপ কমিশন থেকে দেয়া বৃত্তি নিয়ে।

ঝামেলা কমানোর জন্য সিএসসি ইউ.কে বিভিন্ন দেশে নমিনেশন এজেন্সি ঠিক করে দিয়েছে প্রাইমারি সিলেকশনের জন্য। বাংলাদেশে এই এজেন্সি হচ্ছে ইউজিসি (ইউনিভাসর্িটি গ্রান্ট কমিশন)। ইউজিসির কাজ হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে করা এপ্লিকেশনগুলো বাছাই করে এবং অতঃপর মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে একটি প্রাইমারি তালিকা সিএসসি ইউ.কে-কে ধরিয়ে দেয়া। চূড়ান্ত নমিমেশন দেয় এই সিএসসি ইউকে।

দ্বিতীয় কথা : কমনওয়েলথ স্কলাশিপের ধাপসমূহ

কমনওয়েলথ স্কলারশিপ মূলত ৩ ধাপে সম্পন্ন হয়। একেবারে গোড়া থেকে বললে।
প্রথম ধাপ: যখন ইউজিসি বিজ্ঞপ্তি দেয় আগ্রহীদের আবেদন করার জন্য। এর মাধমে্য ইউজিসি জানতে পারে কারা এবার আবেদন করতে চায়।

দ্বিতীয় ধাপ: যখন ইউজিসি আগ্রহী প্রার্থীদের কাছে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেয়ার চিঠি পাঠিয়ে কোন নির্দিষ্ট তারিখে তাদের উপস্থিত হতে বলে। (যেমন এ বছর এটা এ মাসের ১২ তারিখ)। সাধারণত আবেদনকারীর তথ্যাদি খুব দুর্বল না হলে ইউজিসি সবাইকেই ডাকে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য।

তৃতীয় ধাপ: ইউজিসি মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের তালিকা প্রকাশ করে এবং তাদেরকে চিঠি দিয়ে তা জানানো হয়। এই ধাপেই মূলত সিএসসি ইউ.কে-র কাছে এপ্লিকেশন করতে হয়।
সিএসসি ইউকে-র ওয়েবসাইটে গিয়ে ইলেকট্রনিক এপ্লিকেশন ফরম পূরণ করতে হয়। এই ফরম একটি ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে সেভ করে রাখা যায়। এটি সাবমিট করার একটি ডেডলাইন থাকে (যা সাধারণত ইউজিসি থেকে রেজাল্ট দেয়ার পর থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত)।
ইলেকট্রনিক এপ্লিকেশন সাবমিট করার পর এর অনেকগুলো (১১ বা ১২ টি) প্রিন্টেড কপি ইউজিসির কাছে জমা দিতে হয়। এগুলো তারা সিএসসি, ইউকের কাছে পাঠায়।

তৃতীয় কথা: এবার চূড়ান্ত রেজাল্ট

সব তো হলো এবার অপেক্ষার পালা। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তটা আসে সিএসসি ইউকে-র কাছ থেকে। এখানে তাদের সিদ্ধান্তই শেষ কথা। কোন দেশের নমিনেশন এজেন্সি (যেমন আমাদের ক্ষেত্রে ইউজিসি'র) এখানে কোন হাত নেই। সাধারণত মাস তিনেকের মধ্যে তারা রেজাল্ট জানানো শুরু করে।


কিছু সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর

১. ইউজিসি'র মৌখিক পরীক্ষায় কী ধরনের প্রশ্ন করে?
উত্তর: সতি্য বলতে কী - কী প্রশ্ন জিজ্ঞেস করলো আর তার উত্তর কে কীভাবে দিলো তার উপর স্কলারশিপের জন্য প্রাথমিক নমিনেশন খুব একটা নির্ভর করে না। মূলত এস এস সি, এইচ এস সি, এবং অনার্স, মাস্টার্স এর রেজাল্টের উপর ভিত্তি করে প্রার্থীদের সিরিয়াল করা হয়। এছাড়া পাবলিকেশন্স হচ্ছে অন্যতম বড় বিবেচ্য বিষয়।
এসবের উপর ভিত্তি করে হয়তো ঠিকই হয়ে থাকে কাকে কাকে নমিমেশন দেয়া যেতে পারে।
তারপরও পরীক্ষা যেহেতু- প্রশ্ন তো করতেই হবে। সাধারণত যার যার বিষ‍য়ের মৌলিক বিষয়ের উপর প্রশ্ন হয়ে থাকে।

২. প্রাথমিক নমিনেশন পাবার পর চূড়ান্ত নমিনেশন -এর নিশ্চয়তা কতটুকু?

উত্তর: এটা অনেকখানিই নির্ভর করে প্রার্থীর আবেদনের শক্তির উপর। সাধারণত যাদের একাডেমিক এবং এক্সট্রা একাডেমিক রেকর্ড খুব ভালো এবং যারা চূড়ান্ত আবেদনপত্রটিতে তাদের গবেষণার যৌক্তিকতাকে খুব ভালোভাবে তুলে ধরতে পারে তাদের চূড়ান্ত নমিনেশন নিশ্চিতভাবেই হয়ে যায়।
এখানে উল্লেখ্য যে, কমনওয়েলথ কমিশন তাদের বিবেচনায় আবেদনপত্রের কয়েকটি পয়েন্ট কে খুবই গুরুত্ব দেয়। যেমন- গবেষণার ধারণা ও এর ইমপ্যাক্ট। আবেদনকারীর দেশে এই গবেষণার কী প্রভাব থাকবে। আবেদনকারী কীভাবে এই গবেষণা দ্বারা তার দেশের অগ্রগতিতে ভূমিকা রাখতে পারবে ইত্যাদি। এই প্রশ্নগুলোর উত্তরে অনেক নম্বর থাকে। সুতরাং কেউ যদি অনেক ভালো রেজাল্টধারী হয়, অনেকগুলো পাবলিকেশন্সও থাকে তার কিন্তু এই প্রশ্নগুলোর উত্তর যুতসই মতো না দিতে পারে তবে তার অবস্থান নড়বড়ে হয়ে যায়।


এ বিষয়ে আরেক পর্বে লিখবো কীভাবে কমনওয়েলথ স্কলারশিপ নিয়ে পছন্দসই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াটা নিশ্চিত করা যায়।

সবার জন্য শুভ কামনা।
সফলদের আগাম শুভেচ্ছা।

অক্সফোর্ড, ৪ নভেম্বর, ২০১৩
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:২২
৫টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

×