বেশ কিছুক্ষন আগে কাজী মামুন একটি পোস্ট দিয়েছেন। তার পোস্টের মূল বক্তব্য একটি ছবি দিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন। এক সামিটারের ছবি দিয়ে তিনি বলেছেন এই ভদ্রলোক মুসার কয়েকঘন্টা আগে সামিট করেছেন। কিন্তু এটা কীভাবে সম্ভব। ব্লগার আপনারাই বলুন।
প্রিয় কাজী মামুন, আপনি উপরের ছবিটা দিয়ে বলেছেন এটা মুসার সামিটের মাত্র কিছুক্ষন আগের Max ছবি। কিন্তু কতক্ষন আগের ছবি?
সেই উত্তর আপনি নিজেই দিয়েছেন ১৪ নং কমেন্টের উত্তরে।
আপনি লিখেছেন, মুসার কয়েক ঘন্টা আগে একটা লোক সামিট করলো তাঁর ছবিতে বুদ্ধ মুর্তি আছে, কিন্তু মুসার ছবিতে মুর্তি হাজারে বিজারে কাপড়ে ঢাকা, এবং মুসা ও তাঁর বন্ধুরা এই কথাই বলছে। আবার মুসার পরে সামিট করছে এমন লোকদের ছবিতেও বুদ্ধমুর্তি ফকফকা এতে কি প্রমাণিত হয়?
আপনার দাবী অনুযায়ী এই ভদ্রলোক মুসার সামিটের কয়েক ঘন্টা আগে সামিট করেছে। ভেরি গুড। মুসা কয়টায় সামিট করেছেন সেটা কি আপনি জানেন? আমার জানা মতে ভোরের সময়। সেটা ৫টা ১২ মিনিট। সময়ের এদিক সেদিক থাকতে পারে কিন্তু সেটা ছিল ভোর। এই ছবি দেখুন। ভোর বলেই তো মনে হচ্ছে নাকি?
এই ছবিটা মুসার ক্যামেরায় মুসার তোলা। সূর্য উঠছে পূর্ব দিকে। এভারেস্টের ছায়া এসে মিশেছে পশ্চিম দিগন্তে।
মুসা যদি ভোর ৫টা ১২মিনিটের দিকে সামিট করে তাহলে এই ভদ্র লোক সামিট করেছেন কয়েক ঘন্টা আগে। কয়েক ঘন্টা মানে কয় ঘন্টা? এক ঘন্টা? দুই ঘন্টা? তিন ঘন্টা? মুসার সামিটের এক ঘন্টা আগেও যদি উনি সামিট করে থাকেন তাহলে উনি সামিট করেছেন সূর্য ওঠার আগে। তাহলে উনার ছবি এত আলোকজ্জল কেন? বেশ বোঝা যাচ্ছে উনি রাতের অন্ধকার থাকতে সামিট করেন নাই। করলে চারদিকে এত ঝকঝকে সূর্যের আলো থাকতো না। এটা বেশ বেলার ছবি। অথচ এই ভদ্রলোক মুসার কয়েক ঘন্টা আগে সামিট করেছেন, এই তথ্যটাই আপনি কি অবলীলায়ই না দিলেন। মানুষকে কেন এত বিভ্রান্ত করার চেষ্টা আপনার, আপনাদের?
আপনার ওই ছবির উৎস কি আমি জানি না। এমনি একটা ছবি গুগল করে বের করে এনে সবাইকে দেখিয়ে বিভ্রান্ত করবেন না। আপনি জানতে চেয়েছেন মুসার আগে পরের সামিটারদের ছবি কেমন হয়। দেখুন কেমন হয়। এই ছবিগুলো কিন্তু গুগল করে আনা না। সামিটাররা নিজেরাই এই ছবিগুলো মেইল করে পাঠিয়েছেন। এই ছবিতে আরও দেখতে পাবেন রাতে সামিট করলে সেসব ছবি কেমন হয়। এই যে দুই ভদ্রলোকের ছবি তারা মুসার গ্রুপেরই। এরা দুজন মন্টেনিগ্রোর ব্লেকা এবং জোকো। এরা দুইজন ২৩ তারিখের প্রথম সামিটার। রাত তিনটায় উনারা সামিট করেন। কোথাও কি বৌদ্ভাধমূর্তি দেখতে পাচ্ছেন কেউ। পেছনের কোন ভৌগলিক দৃশ্যও নেই। ভাগ্যিস মুসা রাতে সামিট করে নাই। মুসা যদি এইরকম অন্ধকারওয়ালা সামিটের ছবি নিয়ে আসতো তাইলে আপনার গুটিকয় লোক কি করতেন ঈশ্বর জানেন।
আর এই নীচের ছবিতে এই যে ভদ্রলোক উনার নাম স্লাগি। উনিও মন্টেনিগ্রোর বাসিন্দা। উনি আর মুসা একই সময়ে সামিট করেছিলেন। মুসার ছবির সঙ্গে নিশ্চয়ই উনার ছবির ভোরগত মিলের কোন অভাব নেই? তাদের কোন ছবিতে কি আপনি এখানে বৌদ্ধমূর্তির দেখা পেয়েছেন।
উনারাও কিন্তু মন্টেনিগ্রোর প্রথম এভারেস্টজয়ী। আমি যতটুকু জানি উনাদের দেশে এই অন্ধকারময়, বৌদ্ধমূর্তিহীন ছবি দেখানোয় তাদের কোন সমস্যা হয়নি। বেসক্যাম্পে থাকতেই তাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী তাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। আর আমরা শুরু করেছি ব্লগিং। একেবারে ইনভেস্টিগেটিং ব্লগিং। তাও আবার সেটা দূরশিক্ষণ পদ্ধতিতে। আপনি কোরিয়া থেকে আরেকজন জর্মান থেকে। দেশের লোকরা সবাই ঘাস খায়।
মুসা বিষয়ে এই ধরনের মিথ্যাচার করে আমরা কি নিজেরাই নিজেদের ছোট করছি না?
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
২৪টি মন্তব্য ৯টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম
স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন
দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ
মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!
বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।
ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন
মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )
যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন