বেঁচে থাকার জন্য আমাকে নানা ধরণের কাজকর্ম করতে হয়...অনেকটা বাসাবাড়ির ছুটা কাজের বুয়াদের মতো...আমার এই কাজের তালিকার একটি কাজ হচ্ছে নানা উৎসব অনুষ্ঠানে গানবাজনার লোক সাপ্লাই...হালের অনেকে এই কাজকে বেশ ঠোঁট উল্টে বলেন, ইভেন্ট ম্যানেজম্যান্ট...
সে যাকগে কদিন আগে বনানীর এক সভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের বাড়ির ছোট মেয়ের গায়ে হলুদ...বলতে দ্বিধা নেই, এইসব অনুষ্ঠানে গেলে চোখের ব্যাপক আরাম হয়...:তাই আমি বারেবারে ছুটে যাই...খোঁপায় ফুল গোঁজা দারুণ সুন্দরীদের দেখতে...
tongue emoticon
সেদিন অনুষ্ঠানস্থলে যাওয়ার অনেক আগেই গানবাজনা শুরু হয়ে গেছে...আজকে যে গানের দলটি এসেছে এরা আমার সঙ্গে নতুন কাজ করছে...তাই নিজেই পরখ করতে গিয়েছি...গায়িকা প্রথম গান গাইলেন...শুনে মনে হল গায়ে হলুদের জন্য বেশ চলনসই...
তার গান যে বেশ ভাল হয়েছে তা একটু পরেই টের পেলাম...সুবেশী পাকা গমরঙা এক তরুণী আমার সামনে এসে চোখের ইশারায় আড়ালে ডেকে নিলো...আমারতো হৃদয় ধুকপুক না জানি কী গোপন কখা বলবে এই সুন্দরী...
এরপর বেশ ফিসফিস করে বললেন, ভাইয়া আপনার পেমেন্টটা নেন...আর গান ভাল হচ্ছে, আমি হ্যাপি...আমি একগাল হেসে বললাম, ধন্যবাদ ( মনে মনে বললা আমি রুবেল না....তবে এতো দ্রুত টাকাটা দেয়ার জন্য দোয়া করি, ভাল বর পাও। অবশ্য সবচেয়ে ভাল হতো আমাকে পেলে। কিন্তু সে সুযোগ আর মিলছে কই :-))
আমার কাজ শেষ...বেরিয়ে যাব অনুষ্ঠান থেকে...হঠাৎ শুনি গায়িকা বেশ ন্যাকা সুরে বলছেন, এতােক্ষন আমি বড়দের জন্য গান করেছি...এবার আমি এখানকার ছোট্ট সোনামনিদের জন্য একটি গান গাইবো...আমি চমৎকৃত হলাম...
গায়ে হলুদে বাচ্চাদের গান...এ অভিজ্ঞতা নতুন...তাই বেশ আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করলাম, দেখি কী গান গায়...তিনি গান শুরু করলেন...আর আমি ব্রজাহতের মতো দাঁড়িয়ে রইলাম...এইটা কেমনে বাচ্চাদের গান হয়...এই গান শুনে তো বড়রা উত্তেজিত হয়ে বাচ্চা হওয়ার জন্য যা করা দরকার সে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে...
তিনি গাইছেন, ’বেবী ডল না সোনেদি’...আমার চোখের সামনে সানি লিওনির খাপখোলা তলোয়ারের মতো অনাবৃত দেহ ভেসে উঠছে...আর মাথার ভেতর ঝড় চলছে, শুধু ডল শব্দটি থাকার জন্য যদি এটা ছোট্ট সোনামনিদের গান হয় তাহলে আজ থেকে ‘শেষের কবিতা’-ও আমার প্রিয় কবিতা....এই আমি বলে রাখলুম...
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৬