somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিড়াল সমাচার ( পোস্টটি সামহোয়্যারের সকল বিড়াল নিকধারী ব্লগার ও বিড়ালপ্রেমীদের উৎসর্গ করা হল)

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ১০:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আশাকরি সবাই একমত হবেন যে গৃহপালিত প্রানীদের মধ্যে বিড়াল অন্যতম একটি প্রাণী যে বহু কাল ধরে মানুষের একান্ত কাছাকাছি অবস্থান করার সৌভাগ্য লাভ করেছে। নরম স্বভাবের এই প্রাণীটির বেশ কিছু আকর্ষনীয় চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কারণে অনেকের কাছে সে অতি আদরের। বিড়ালকে ঘিরে বহু কল্পকাহিনীও সৃষ্টি হয়েছে। এসব তো আমাদের অনেকেরই জানা। যেহেতু জানার কোনো শেষ নেই, কাজেই আমাদের জানার বাহিরেও অনেক কিছু অজানা থাকা অসম্ভব কিছুই নয় , তাহলে ভুমিকা রেখেই শুরু করি।

১. যদি দেখেন বিড়াল আপনার হাত, গাল বা চুল লেহন করছে তখন বুঝতে হবে সে আপনার প্রসংশায় পঞ্চমুখ। এই লেহন করার মধ্যে দিয়ে সে বুঝাচ্ছে, আপনি তাদেরই একজন ।


২. আপনার উপস্থিতি টের পাবার পরও বিড়ালকে যদি চিৎহয়ে শুয়ে থাকতে দেখেন তখন বুঝতে হবে আপনার উপর রয়েছে তার অগাধ বিশ্বাস ও আস্থা। কারণ তার এই অবস্থান থেকে সে আক্রমন প্রতিহত করে কোনভাবেই নিজেকে রক্ষা করতে পারবে না।



৩. যারা বিড়াল পোষেন তারা মানসিক নিষ্পেষণে কম ভুগেন, তাদের তুলনামূলকভাবে অন্যদের চেয়ে হার্ট এ্যাটাক বা হার্ট এ্যারেস্ট কম হয় এবং তাঁরা দীর্ঘায়ু লাভ করেন ।


৪. বিড়ালের বিশ্বাস মানুষের সহাবস্থানে যে বাড়ীতে তার বসবাস, সে নিজেও সেই বাড়ীর একজন অংশীদার।


৫.বিড়াল কখনই অপর বিড়ালের সাথে যোগাযোগ বা সংবাদ আদান প্রদানের জন্য "মিয়াউ" শব্দ ব্যবহার করে না। সে এই শব্দটি কেবল মানুষের ক্ষেত্রে ব্যবহার করে।


৬. যদি বিড়াল আপনাকে দেখা মাত্র সে তার লেজ উপরে তুলে সম্পূর্ণভাবে ঊর্ধ্বাভিমুখী প্রসারিত করে রাখে তাহলে বুঝতে হবে সে আপনাকে অভিবাদন জানাচ্ছে।


৭. বিড়াল সঙ্গী হিসেবে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের সাথে বেশী মানানসই। কারণ এরা মেয়েদের কোমল স্বরে উত্তমভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো ও সাড়া দিতে পারে।


৮.যদি কখনো আপনার বিড়াল অসুস্থতার কারণে নিজেকে পরিষ্কার করা বন্ধ করে দেয়, তাহলে আপনি তাকে পরিষ্কার করে দিন, এতে করে তার ভিতরের অপরিষ্কার থাকার মনবৃত্তি বিস্মৃত হয়ে যাবে।


৯. কেবলমাত্র মেয়ে বিড়ালের গায়ের রং ত্রিবর্ণ থেকে চারবর্ণ পর্যন্ত হয়ে থাকে ।
ত্রিবর্ণ বলতে কালো, লাল এবং ক্রীম রঙের পশমকে বুঝায় এবং ত্রিবর্ণের সাথে সাদা রঙের মিশ্রণ হলে তাকে চারবর্ণের বিড়াল বলা হয়। কেবল মেয়ে বিড়াল একচেটিয়াভাবে ত্রিবর্ণ ও চারবর্ণের পশমের অধিকারী হয়ে থাকে। কোনো ক্ষেত্রে পুরুষ বিড়ালের দেহের পশমে এই রঙগুলো দেখা গেলে সেটা হবে অস্বাভাবিক। সাধারনত এই জাতের পুরুষ বিড়াল বোঁজা বা আটকুরে হয়ে থাকে।


১০. বিড়াল শাস্তি কি জিনিস সেটা বুঝে না ,তবে ভালো কাজ করার জন্য প্রাপ্ত পুরস্কারটি ঠিকই বুঝে ।


১১.বিড়ালের রাত্রিতে পরিষ্কার দেখার জন্য চমৎকার দর্শনশক্তি আছে ।



১২. বিড়াল দিনে ১৬ থেকে ১৮ ঘন্টা ঘুমায়। কিন্তু নিদ্রা থাকাকালীন অবস্থায় সে যে কোনো উদ্দীপনায় দ্রুত সাড়া দেবার ক্ষমতা রাখে ।


১৩. বিড়াল হাটা বা দৌড়ানোর কালে একই পার্শ্বের সামনের ও পিছনের পা এক সাথে চালনা করে। চতুস্পদ প্রানীজগতে কেবলমাত্র উট, জিরাফ এবং বিড়ালের মধ্যে এই ধরনের বৈশিষ্ট্য দেখা যায়।


১৪. বিড়াল তার খারার শেষে তাৎক্ষণাৎ মুখ পরিস্কার করে ফেলে।
এটা একটি বিড়ালের উদ্বর্তন সহজাত প্রবৃত্তি। কোনো অনিষ্টকারী শিকারী মুখের খাবারের গন্ধ টের পেয়ে তাকে আক্রমন বা তাড়িত করতে না পারে এরকম ধারণার বশবর্তী হয়ে খাবারের পর সে দ্রুত কাজটা সেরে ফেলে।


১৫. বিড়াল লেবু ও কমলালেবুর গন্ধ নিরতিশয় অপছন্দ করে।


১৬.বিড়াল ভয়ে আতঙ্কিত হলে বা অসুস্থ হলে গড়গড় শব্দ করার মাধ্যেমে নিজেকে আশ্বস্ত করতে পারে।



১৭.প্রাচীন মিশরীয়দের রেওয়াজ অনুযায়ী সেখানে কোনো বিড়ালের মৃত্যু হলে তারা ভ্রু চেঁচে শোক পালন করত।



১৮.মানুষের যেমন একক ও অদ্বিতীয় আঙ্গুলের ছাপ রয়েছে তেমনি বিড়ালেরও রয়েছে একক ও অদ্বিতীয় নাক প্যাড। প্রত্যেকটি বিড়ালের নাক প্যাডের ডিজাইন আলাদা।



১৯ . সাধারনত কালো বিড়াল সাদা বিড়ালের চেয়ে অপেক্ষাকৃত নার্ভাস ও শান্ত স্বভাবের হয়।


২০. চকলেট জাতীয় খাবার বিড়ালের জন্য বিষ।



২১. বিড়াল ঘুমন্ত অবস্থায় থাকাকালীন পেছন দিক দিয়ে কেউর আবির্ভাব এড়াতে পিছন ফিরে কোনো কিছুর উপর ঠেস দিয়ে ঘুমাতে পছন্দ করে।



২২. বিড়ালের কান আল্ট্রাসনিক

এর মানে আপনার আমার কছে যে শব্দ শ্রবণাতীত, বিড়ালের কানে সেটা পুনরাবৃত্তি ঘটে ।


২৩.বিড়ালের গোঁফ পর্যায়ক্রমে পরে যায় এবং নতুন গজায়।
বিড়ালের গোঁফ অনেকটা এন্টেনার কাজ করে। এর অবর্তমানে অন্যান্য প্রানীদের নড়াচড়া ও স্থিতিবিন্যাস করার ক্ষেত্রে প্রভাব পরার সম্ভাবনা থাকে। কাজেই অপ্রয়োজনে এদের গোঁফ না ছাটাই ভালো ।



২৪. স্ত্রীবিড়াল প্রতি ৪ মাস অন্তর ৩থেকে ৭টি বাচ্চা প্রসব করে এবং তার জীবদ্দশায় প্রায় ১০০টি বিড়ালছানার জন্ম দিতে পারে।



২৫.বিড়াল বর্ণের পার্থক্য বুঝতে পারে। তবে বর্ণের সংখ্যা উপলব্ধি করা তার জন্য সীমিত এবং সেটা নির্ভর করে আলোর পরিমানের উপর। আর এই কারণে রাতের অন্ধকারে সে রঙিন বস্তুকে সাদা ও কালো দেখে কিন্তু তা সত্বেও সে বস্তু ও বস্তুর দূরত্ব ভালোভাবে প্রভেদ করতে পারে ।


২৬. বিড়ালের হাঁচি শুনে বের হলে যাত্রা শুভো হয়, এ ধরনের কুসংস্কার সমাজে প্রচলিত আছে ।


২৭.বিড়াল প্রকৃতিজাত অর্থেই পাকা শিকারী। কিন্তু জন্মের পর বিড়াল তার ছানাকে শিকার ধরার উপর উপযুক্ত তালিম না দিলে সে কখনই সত্যিকারের শিকারী হতে পারে না।


২৮.বিড়াল তার মুখ দিয়েও ঘ্রাণ উপলব্ধি করতে পারে।
ঘ্রাণ ইন্দ্রিয়যন্ত্র নাক ছাড়াও তার মুখের উপরিভাগে জ্যাকবসন নামে একটি অঙ্গ আছে যার সাহায্যে সে ঘ্রাণ নিতে পারে ।



২৯. এটি একটি অবাক করা তথ্য যে, পুরুষ বিড়ালের চেয়ে মেয়ে বিড়ালের দর্শনশক্তি বেশী।


৩০. অধিকাংশ বিড়াল মেনথলের( লজেন্স , টুথপেস্ট ইত্যাদি ) প্রতি আকৃষ্ট থাকে ।



৩০. বিড়াল প্রতিদিন তার বাথরুম কার্যে বেশ কিছু সময় ব্যয় করে থাকে। সে প্রতিবারই বাথরুমে যাবার আগে ও পরে এবং নিদ্রা যাবার আগে সে চেটে নিজেকে পরিস্কার করে নেয়। এর অর্থ সারা দিন কাজকর্মের শেষে সে শিথিল বা আলগা হচ্ছে। আবার গরমে অস্থির হলে দ্রুততার সাথে ববংবার এই কাজটি করতে দেখা যায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ১০:৫০
৫৭টি মন্তব্য ৫৫টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×