somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পর্দার সুফল-কুফল: একটি বিশ্লেষণ

২০ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইসলাম যে পর্দা প্রথার কথা বলে বাস্তবে তা পুরোপুরি পালন করা বাস্তব সম্মত না। প্রথমত ইসলাম পর্দার নির্দেশ নারী-পুরুষ উভয়কে দেয়।নারী বেগানা পুরুষের দিকে তাকাতে পারবেনা, পুরুষও বেগানা নারীর দিকে দৃষ্টিপাত করবে না।তবে অনিচ্ছাকৃত প্রথম ক্ষনিক দৃষ্টিপাত আল্লাহ ক্ষমা করবেন।এ বিধান পুরোপুরি মানতে গেলে যে সকল সমস্যার উদ্ভব হয় তা হল:
ক)টেলিভিশন বন্দ্ব করে দিতে হবে। কারন তা পর্দা লংঘনের যন্ত্র হয়ে দাড়ায়। কারন শুধু পুরুষ দিয়ে সকল প্রকার অনুষ্ঠান নির্মান সম্ভব নয়।সম্ভব হলেও তা দেখলে নারীর পর্দা লংঘন হয়। আর শুধু নারী দ্বারও সকল প্রকার অনুষ্ঠান তৈরি সম্ভব নয়।সম্ভব হলেও তা দেখলে পুরুষের পর্দা লংঘন হবে।
খ)নারীরা আপাদামস্তক ঢেকে বের হলে পুরুষরা তাদের দেখতে পায় না,কিন্তু তারা পুরষদের দেখে, এতে তাদের পর্দা লংঘন হয়।
গ)গরমকালে নারীদের জন্য বোরকা পরিধান করে বাইরে চলা-ফেরা দুর্বিসহ ব্যপার।রাস্তা-ঘাটে, বিশেষত যানবাহনে সাধারণ পাতলা কাপড় পরে থাকতেই নাভিশ্বাস উঠে, সেখানে বোরকা পরিধান অবস্থায় কি পরিস্থিতি হয় তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।আর যাদের সাইনোসাইটিস এর সমস্যা আছে (বিশেষত: নারীদের এ সমস্যা বেশি থাকে)যানবাহনে বোরকা পরে থাকলে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে।
ঘ)যে সকল প্রতিষ্ঠানের প্রধান বা বিভিন্ন দায়িত্বশীল পদে পুরুষ থাকে, সেখানে কর্মজীবি নারীদের পক্ষে সারাদিন গরমকালে বোরকা পরে কাজ করা সম্ভব নয় । কারন কাজ তত্বাবধানে কিছু সময় পরপর কর্তব্যরত কর্মকর্তাকে পরিদর্শন করতে হয়। আপনি হয়ত বলবেন ইসলামী আইন বাস্তবায়িত হলে যে প্রতিষ্ঠানে নারীরা চাকরী করবে, তার সকল কর্মকর্তা নারী হবে। বাস্তবে কি তা সম্ভব? প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল পদের উপযুক্ত ও যোগ্য লোক সবসময় যে নারীকে পাওয়া যাবে তার গ্যারান্টি কী? আর একটি প্রতিস্ঠানের গুরুত্বপূর্ন পদে যোগ্য লোক না বসালে সে প্রতিষ্ঠানের বারোটা বাজতে সময় নেবে না।
ংঙ) নিষিদ্ধ বিষয়ের প্রতি মানুষের সহজাত আকর্ষণ বেশি থাকে। মাদ্রাসায় পর্দার বিষয়ে বেশি কড়াকড়ি করা হয়, এ কারনে দেখা যায় মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষকেরা বেশি বেশি ব্যভিচারে লিপ্ত হয়ে থাকে।হিফয খানার ছাত্ররা অধিকতর কড়াকড়ি নিয়ন্ত্রনে আবদ্ধ থাকে, এ কারনে হিফয খানার ছাত্ররা বেশি খারাপ হয়ে থাকে। আমার এ বক্তব্যে কেউ মনে করতে পারেন আমি মাদ্রাসা বিদ্বেষী। আমি নিজে মাদ্রাসায় লেখা-পড়া করেছি কামিল পর্যন্ত। আমার মাদ্রাসা বিদ্বেষী হওয়ার কোন কারন নেই। আমি শুধু মাত্র বাস্তব সত্যেকে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। আমার এ বক্তব্য ভিত্তিহীন বলে কেউ এ বলে প্রমান করতে চাইবেন যে কয়টা ইভটিজিং, নারীর সম্ভ্রমহানী, ধর্ষন ইত্যাদি ঘটনার দৃষ্টান্ত আমি উপাস্থাপন করতে পারবো বলে দাবি করতে পারেন? যেহেতু মাদ্রাসার ছাত্র,শিক্ষক কর্তৃক ঘটনাগুলো মিডিয়াতে খুব কম আসে, সেহেতু এর দৃষ্টান্ত দেখানো কঠিন। মিডিয়াতে সাধারণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র শিক্ষক বা সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিতদের ঘটনা বেশি আশার কারন হল-সাধারণ শিক্ষা প্রতিস্ঠানে শিক্ষিতরা ও তাদের পরিবার বহির্মূখি স্বভাবের হয়।তারা এসব বিষয়কে খুব কঠোরভাবে ন্যায় না, এ কারনে এদের কর্তৃক সংঘটিত অনেক ঘটনা বিচার আচার ও আইন আদালতের সম্মুখিন হয়, যার কারনে মিডিয়াতে এদের ঘটনা স্থান পায়। মাদ্রাসার বেশিরভাগ ছাত্র ও শিক্ষক, ইমাম,মুয়াজ্জিন যাদেরকে আমরা পুত পবিত্র মনে করি, বাস্তবে তারা সমকামিতা ও ব্যভিচারে লিপ্ত হয়ে থাকে। প্রমাণ পেতে হলে মাদ্রাসার ছাত্র/শিক্ষক/ইমাম/মুয়জ্জিনদের সাথে খুব ঘনিষ্ঠভাবে দীর্ঘদিন চললে আপনি যা জানতে ও বুঝতে পারবেন তা জীবনে কখনো স্বপ্নেও দেখেননি।আমার এ মন্তব্য আমার নিজ চোখে দেখার উপর ভিত্তি করে। আমি কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা দেখে এ মন্তব্য করছি না।এটা ব্যক্তিগত উদ্যেগে বহু প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের উপর জরিপ চালিয়ে বলছি। সুতরাং বেশি কড়াকড়ি কখনো ভাল ফল আনে না।
নারীর সম্ভ্রম রক্ষায় পর্দা: যদি ধরে নেই পর্দা পালন পুরোপুরি সম্ভব- এতে আমাদের কী উপকার হবে?এর উত্তরে বলা হবে নারীর সম্ভ্রম ও মর্যাদা রক্ষায় পর্দার বিকল্প নেই। আসলেই কি তাই?পর্দা পালন বিবেচনায় সমাজকে আমরা তিন ভাগে ভাগ করতে পারি।যথা:
১. কঠোর ভাবে পর্দা পালনের সমাজ: এ শ্রেনীর সমাজে প্রকাশ্য নারী হয়রানি অনেক কম বা নেই বললেই চলে । ইভটিজিং ও ধর্ষনের মত ঘটনা ঘটেনা বললেই চলে। তবেততবে গোপনে সমকামিতা, ব্যভিচার ব্যপকহারে হয়ে থাকে। আর এ ধরনের সমাজে নারীরা স্বামী নির্ভর হওয়াই তারা স্বামী কর্তৃক বিভিন্ন ধরনের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকে। নারীদের কর্মক্ষেত্র সাধারণত চার দেয়ালে সীমাবদ্ধ থাকে।
২. পর্দা মোটেই পালন হয় না এমন সমাজ: পাশ্চাত্য সমাজ এ শ্রেনীর সমাজের মধ্যে পড়ে। এ ধরনের সমাজে নারী হয়রানী ও ধর্ষনের ঘটনা নিত্য-নৈমত্তিক ব্যপার। যেতেতবে প্রথমোক্ত ও তৃতীয় প্রকারের সমাজে ধর্ষনের মত ঘটনার পর নারীর জীবন যেরুপ অভিশপ্তের হয়ে যায়, এ সকল দেশে তার কিছুই হয় না। এটা শুধুমাত্র একটা সাধারণ ক্রাইম বলে বিবেচিত হয়।
৩. মধ্যেম শ্রেণীর সমাজ (কিছু লোক ভালভাবে পর্দা পালন করে,কিছু লোক পর্দার প্রতি উদাসিন): বাংলাদেশ,ভারত,পাকিস্তান,মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ীর সমাজ এ ধরনের সমাজ ব্যবস্থা বিদ্যমান।নারী হয়রানি ও ধর্ষনের হার এ শ্রেনীর সমাজে সবচেয়ে বেশি।
কেউ আমার সাথে দ্বিমত পোষন করে প্রমান স্বরুপ বিভিন্ন পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলবেন যে দ্বিতীয় প্র্রকার সমাজে নারী নির্যাতন ও ধর্ষনের হার সবচেয়ে বেশি।আপনাকে মনে রাখতে হবে যে আন্তর্জাতিক যে সংস্থাগুলো এ সকল পরিসংখ্যান তৈরি করে তারা সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারি-বেসরকারি রিপোর্ট এর উপর ভিত্তি করে তাদের পরিসংখ্যান প্রস্তুত করে।পাশ্চাত্য দেশগুলোতে যত ধর্ষন ও নারী হয়রানীর ঘটনা ঘটে তার সবগুলোই থানাই রিপোর্ট হয়। আর আমাদের দেশে ৯০% নারী হয়রানী ও ধর্ষনের ঘটনা লোক চক্ষুর অন্তরালেই থেকে যায়।যারা হয়রানী বা ধর্ষনের শিকার তারা নিজেরাই তাদের মান সম্মানের খাতিরে ঘটনাগুলো গোপন রাখে। সুতরাং ৩য় প্রকারের সমাজ সবচেয়ে খারাপ। সুতরাং মুক্তি পেতে হলে আমাদেরকে হয় প্রথম প্রকারের সমাজ ব্যবস্থায় আসতে হবে অথবা দ্বিতীয় প্রকারের সমাজ ব্যবস্থায় যেতে হবে
৯টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×