somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বাস বনাম ঈমান

০৮ ই মে, ২০১৫ রাত ১০:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিশ্বাস বাংলা শব্দ আর ঈমার এর আরবী প্রতিশব্দ।বিশ্বাস মানব জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । বিশ্বাস মানুষের কর্মকে নিয়ন্ত্রন করে থাকে । যেমন বিশ্বাস তেমন কর্ম।বিশ্বাসকে ৩টি প্রধান ভাগে ভাগ করা যেতে পারে:
১. সন্দেহাতীত বিশ্বাস
২. সাধারণ বিশ্বাস
৩. দূর্বল বিশ্বাস
৪. অবিশ্বাস (নেতিবাচক বিশ্বাস)
বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে মানুষের সকল কর্মনীতি নির্ভর করে।একটি উদাহরণ দেয়া যাক। আপনাকে কেউ বললো আজ রাত দুইটার সময় কিছু লোক আপনারা ঘুমন্ত থাকা অবস্থায় আপনাদের ঘরে আগুন লাগিয়ে দিবে।এখানে বিশ্বাসের প্রশ্ন আসে। কেউ আপনাকে এরুপ কথা বললে আপনি বিশ্বাস করলে আপনার মধ্যে এক ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে আর অবিশ্বাস করলে আরেক ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে। বিশ্বাস করার পর আপনার প্রতিক্রিয়া ধরন নির্ভর করে আপনার বিশ্বাসের তীব্রতার উপর।
না দেখে কি বিশ্বাস করা যায়?
বিশ্বাস কখনো না দেখে হয় না-হোক সে দেখা বাহ্যিক চোখ দ্বারা বা অন্ত:চক্ষু দ্বারা। প্রত্যেক মানুষের ৪ টি চক্ষু আছে-দুটি বাহ্যিক চক্ষু অপর দুটি অন্ত:চক্ষু।আমকে আম, কাঠালকে কাঠাল বলে আমরা বিশ্বাস করি বাহ্যিক চোখ দ্বারা দেখে।কেউ আপনার কাছে টাকা ধার চাইলে আপনার টাকা তাকে দেয়া না দেয়া নির্ভর করে আপনি তাকে কতটুকু বিশ্বাস করেন। এ বিশ্বাস/অবিশ্বাস নির্ভর করে আপনি তাকে কতটুকু চেনেন ও তার পূর্বের কার্য্যাবলি পর্যালোচনা করে। আপনি অন্তচক্ষু দ্বারা তার অতীত কার্যাবলী বিশ্লেষণ করে উপরে উল্লেখিত ৪ প্রকারের এক প্রকার বিশ্বাস আপনি করেন।
বিশ্বাস কি কখনো উঠানামা করে?
মানুষের জ্ঞান-বুদ্ধির সীমাবদ্ধতার কারনে আজ সে যা বিশ্বাস করে কাল তাহা ভূল হিসাবে প্রমাণিত হয়। এ কারনে মানুষের বিশ্বাস শুধু উঠা-নামাই করে না, উহা সম্পূর্ণ পরিবর্তিত হতে পারে।
বিশদদবিশ্বাস পরিবর্তন করা কি খারাপ?
আপনি আজকে যা বিশ্বাস করেন তা যদি কেউ ভূল প্রমাণিত করে, তাহলে সে ভূলকে আকড়ে ধরে রাখা তো কোনক্রমেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়।বরং যে আপনার চিন্তার ভূল ধরে দিল সে তো আপনার অনেক বড় উপকার করল।জ্ঞান পিপাসুদের বিশ্বাস প্রতিনিয়তই পরিবর্তিত হতে পারে। নতুন নতুন জ্ঞানে পূর্বের অর্জিত ভূল বিশ্বাস পরিবর্তন করে সত্যের দিকে এগিয়ে যায় বুদ্ধিমানেরাই। আর যারা অন্ধত্ব ও গোড়ামিতে লিপ্ত তারাই পূর্ব পুরুষ থেকে পাওয়া বিশ্বাসকে যাচাই বাছাই ছাড়া অন্ধভাবে কঠোরভাবে আকড়ে ধরে থাকে।
বিশবককদিদ বিশ্বাস কি জোর করার বিষয়?
বিশ্বাস/অবিশ্বাস হয় স্বত:স্ফুর্তভাবে।মানুষ তার ৪ চক্ষু দ্বারা কোন কিছু দেখে তা বিশ্বাস করে। কেউ যদি কোন কিছু অবিশ্বাস করে তার অর্থ হল সে তার ৪ চক্ষু দ্বারা উহাকে দেখতে পাচ্ছে না।
বিষয়টি যদি এমন হয় যে আপনি যা দৃঢ়ভাবে সত্যে ও অকাট্য বলে বিশ্বাস করেন অপর একজন ব্যক্তি তা দৃঢ়ভাবে অবিশ্বাস করে,সেক্ষেত্রে কে সঠিক বিষয়ে বিশ্বাসী?সেক্ষেত্রে হতে পারে উভয়ের যে কোন একজন সঠিক অপরজন বেঠিক অথবা উভয়েই আংশিকভাবে ঠিক অথবা উভয়েই ভূল।যদি উভয়ে গোড়া না হয়, তাহলে তাদের জন্য আশার বিষয় হল কিছুদিন সময় নিলেও তাদের জ্ঞানের বিকাশ হবে এবং সত্যের সন্ধান পাবে।তাদেরকে যে কাজটি করতে হবে তাহল উভয়কে উভয়ের চিন্তা-চেতনাকে পরস্পরের সাথে অত্যান্ত বন্ধুত্বপূণ ভাষায় ও পরিবেশে বিনিময় করতে হবে।উভয়কে স্বীকার করে নিতে হবে যে তারা যত বড় জ্ঞানবানই হোক না কেন তাদের চিন্তা-চেতনাই কিছু ভূল থাকতে পারে।
নিজের বুঝ বা বিশ্বাসকে ১০০% সঠিক বলে সকলের কাছেই প্রতিয়মান হয়।পৃথিবীর মানুষগুলো হাজার হাজার বিশ্বাসে বিভক্ত।তিক্ত সত্যে হল পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ ভূল বিষয়ে বিশ্বাস করে অথচ নিজেদের বিশ্বাসকে ১০০% সঠিক মনে করে।নিজের বিশ্বাস নিজের কাছে ১০০% সঠিক বলে প্রতিয়মান হলেও একথা মনে রাখতে হবে যে মানুষ হিসাবে আমার জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারনে আমার বিশ্বাসে ভূল থাকতে পারে।মানুষ যখন এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি পোষন করতে পারবে, ঠিক তখন মানবতা সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে।
আপনি যখন কোন কিছুকে বেঠিক বলে বিশ্বাস করেন তখন যদি আপনাকে কেউ জোর করে যে আপনি যেটাকে বেঠিক বলছেন সেটাকে আপনাকে ঠিক বলতেই হবে অন্যাথায় আপনি ধর্মত্যাগি হয়ে যাবেন বা আমাদের সমাজ থেকে বের হয়ে যাবেন- এমন কথা বলা মূর্খতা বৈ কি?
সুতরাং ঈমান (বিশ্বাস) জোর করার বিষয় নয়।হতে পারে আপনার বিশ্বাস ঠিক আর আপনার বিশ্বাস প্রত্যাখ্যান কারি বেঠিক,কিন্তু যে প্রত্যাখ্যান করেছে তাকে তো বুঝতে হবে যে যা সে প্রত্যাখ্যান করেছে তা বেঠিক।যখন সে বুঝবে যে সে যা প্রত্যাখ্যান করেছে তা প্রকৃতপক্ষে সঠিক ছিল আর তার বিশ্বাস ভূল ছিল তখন তো আপনি তাকে জোর করলেও সে আগের বিশ্বাসে ফিরে যাবে না।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×