somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অন্ধত্ব বনাম চাক্ষ্মুস্মান

০৯ ই মে, ২০১৫ রাত ১১:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দুঃখজনক হলেও সত্য যে বিশ্বের ৯৫% লোক আংশিক/সম্পুর্ণ অন্ধত্বকে অবলম্বন করে।কিন্তু কেও স্বীকার করতে রাজি নয় যে সে তার জীবন পরিচালনা করছে যে চিন্তা-দর্শনের ভিত্তিতে তা অন্ধত্বের ভিত্তিতে গ্রহণ করা হয়েছে।বাস্তবতা ও যুক্তির বিচারে তা কতটুকু সঠিক আর কতটুকু বেঠিক সেটা মুক্ত বিবেক-বুদ্ধির বিচারে যাচাই করা হয়নি। প্রত্যেকে যে ধর্ম/জীবন দর্শণ আনুসরণ করে থাকে বলতে গেলে তার প্রতিটিরই কিছু কম/বেশি সঠিক,যৌক্তিক ও আকর্শনিও দিক আছে।সেই সঠিক,যৌক্তিক ও আকর্ষনীয় বিষয়গুলো ধর্ম/জীবন দর্শণ ভেদে কোনটির ৩০%, কোনটির,৫০%, কোনটির ৮০% রয়েছে।প্রত্যেক ধর্ম/জীবণ দর্শনের অনুসারিরা উক্ত ৩০%/৫০%/৮০% বিষয়গুল নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা ও তার মহত্ত্ব বর্ণনাই ব্যস্ত থাকে এবং উক্ত বিষয়গুলোর উপর ভিত্তি করে আত্ব-তৃপ্তিতে থাকে।মানব জীবনের জন্য কোন বিষয় কল্যাণকর আর কোন বিষয় অকল্যাণকর তা বিচার করা হয় প্রত্যেকের নিজ নিজ ধর্ম/জীবব দর্শণের উপর ভিত্তি করে- যেখানে যুক্তি ও বাস্তবতা গৌণ। যুক্তি ও বাস্তবতাকে ততটুকুই আনা হয় যতটুকু নিজ নিজ দর্শণ ও বিশ্বাসের সাথে মেলে আর যতটুকু না মেলে তার জন্য গোজামেলির আশ্রয় নেয়া হয়।নিজ ধর্ম/মতাদর্শ ঠিক,যে বা যারা এর পক্ষে কথা বলে তারা পরম শ্রদ্ধেও।আর যারা এর বিপক্ষে কথা বলে তারা ঘৃণ্য।
এর ছোট্ট একটি প্রমাণ দেই।ড. জাকির নায়েকের একটি প্রশ্ন-উত্তর অনুষ্ঠাণে দেখলাম একটি হিন্দু মেয়ে ড. জাকির নায়েককে হিন্দু ও ইসলাম ধর্মের মধ্যে কি কি বিষয়ে মিল/অমিল রয়েছে সে বিষয়ে প্রশ্ন করছে। মেয়েটিকে ড. জাকির নায়েক প্রশ্ন করেন যে সে কি তার হিন্দু ও ইসলাম ধর্মে ঈশ্বরের ধারণা বিষয়ক লেকচার শুনেছে কিনা।মেয়েটি হ্যা উত্তর দেয়। এরপর ড. জাকির মেয়েটিকে জিজ্ঞাসা করেন যে ঈশ্বরে একত্বতা ও মুহাম্মাদ (স.) রসুল হওয়ার বিষয়টি যেহেতু তার ধর্মেও আছে, সে বিশ্বাস করে কিনা।মেয়েটি জবাব দেয় যে হ্যা, সে বিশ্বাস করে।কোন ধর্ম সঠিক আর কোনটা বেঠিক সেটা আরেকটি আলোচনার বিষয়।এখানে আমি যে বিষয়টি প্রমাণ করতে চায় তা হল কোন বিষয় এর সঠিক/বেঠিকের যাচাইয়ে আমরা( প্রায় পৃথিবীর ৯৫% মানুষ)যুক্তি, বিবেক-বুদ্ধি ও বাস্তবতার স্থলে অন্ধত্বকে মাপকাঠি হিসাবে নিয়ে থাকি। ড. জাকির যদি হাজারো যুক্তি দেখাতেন আর প্রমাণ করার চেষ্টা করতেন যে আল্লাহর একত্ব ও মুহাম্মাদ আল্লাহর রসুল এ বিষয়টি বিশ্বাস করা অতিব যৌক্তিক এবং সঠিক বিষয় আর এমন প্রমাণ করতেন যে এমন সঠিক বিষয় তোমাদের ধর্মে নেই, সুতরাং তোমাদের ধর্ম ভাল না ইত্যাদি-তাহলে কি মেয়েটি কোনক্রমেই ড. জাকিরের কথায় একমত হত?ড. জাকির নায়েক যত শক্তিশালি যুক্তি আনুক না কেন, মেয়েটি তা গ্রহণ করত না।এ মেয়েটি একটি উদাহরণ মাত্র।বাস্তবে আমরা যে যেটা বিশ্বাস ও অনুসরণ করি তাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আপ্রান চেষ্টা করে থাকি।আমি এখানে বলছি না ড. জাকির নায়েক সঠিক/ভূল বলছেন বা মেয়েটি জাকির নায়েকের সাথে একমত হয়ে ঠিক বা বেঠিক করেছেন।এটা আমার এখানে আলোচনার বিষয় না। আমার আলোচনার বিষয় হল কোন বিষয় ঠিক বা বেঠিক তা যাচায়ের জন্য আমরা যুক্তি, বিবেক-বুদ্ধি ও বাস্তবতার স্থলে অন্ধত্বকে মাপকাঠি হিসাবে নিয়ে থাকি যা মানবতার জন্য অত্যান্ত দুঃখজনক ও ক্ষতিকর।
আমার পিতা-মাতা যে ধর্ম,মত-পথ অবলম্বণ করেছেন সেটাকে যাচায়-বাছায় না করে অনুসরণ করা কখনো বুদ্ধিমত্তার কাজ নয়। একদিন একজন লোক বলছিল মুসলমানদের বেশি করে সন্তান নেয়া উচিত যাতে করে মুসলমানের সংখ্যা বাড়ে।আল কুরআনের কোথাও মুসলমানের সন্তান মুসলমান হয়- এ নীতিকে সমর্থন করে কোন বক্তব্য নেই।
একসময় চট্টগ্রামে কে বা কারা বোদ্ধ মন্দির ভাঙ্গে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৌদ্ধরা প্রতিবাদ মিছিল করে। আমার এক সহকর্মী এ প্রতিবাদি মিছিলে অংশ নিতে একদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকে। একই সময় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় মায়ানমারে শত শত মুসলমান নিধনযজ্ঞের শিকার হচ্ছিল। এর প্রতিবাদে সারা বিশ্বের ন্যায় কিছু মুসলমান প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নিচ্ছিল।কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ করা মহত্ত্বর কাজ কোন সন্দেহ নেই।আমার পক্ষের লোককে নির্যতিত হলে প্রতিবাদ করি।চরম অবিচার বলে চিৎকার করি।আর বিপক্ষের লোক নির্যতিত হলে, নির্যাতিতের দোষ খুজি বা চুপ থাকি।
প্রতিবাদ করতে হলে সকল অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে।অন্যায়কে অন্যায় আর ভালকে ভাল বলার মত হৃদয়ের অধিকারী লোকই সত্যিকার মহৎ।সকল ধরনের ধর্মীয়/দর্শনগত চিন্তা-চেতনার সংকীর্ণতার উর্ধে উঠতে পারাটায় অন্ধত্ব মুক্ত হওয়া।
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×