somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্রষ্টায় বিশ্বাস: কারা সঠিক? (আশা করি আস্তিক-নাস্তিক উভয়ে একমত হবেন)

২২ শে মে, ২০১৫ রাত ১:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যারা স্রষ্টায় বিশ্বাস করে তাদের কাছে প্রমান বলতে একমাত্র যুক্তি আছে।অপরদিকে যারা স্রষ্টায় অবিশ্বাসী (নাস্তিক) তাদের কাছেও তাদের কথার স্বপক্ষে যুক্তি আছে। কাদের যুক্তি কি ও তা কতটুকু যুক্তিযুক্ত তা আলোচনার পূর্বে স্রষ্টার পরিচয় সম্পর্কে আলোচনা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
স্রষ্টার পরিচয়: যিনি স্রষ্টা হবেন তাকে সৃষ্টির দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্লেষণ করা যাবে না।যিনি স্রষ্টা তার কোন শুরু নেই আবার শেষও নেই। যদি বলা হয় তার জীবন আছে তাও ঠিক নয় আবার যদি বলা হয় তিনি মৃত তাও গ্রহণযোগ্য নয়। কারন জীবন থাকে সৃষ্টির। স্রষ্টার যদি জীবন থাকে তাহলে প্রশ্ন আসে তার জীবন কে সৃষ্টি করেছে?যদি বলা হয় স্রষ্টা সর্বশক্তিমান- এ শব্দটিও স্রষ্টার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। কারন স্রষ্টা তো ‘শক্তিরও’ সৃষ্টিকর্তা। কোন কিছু করতে তার কোন শক্তিরই প্রয়োজন হয় না।যদি বলা হয় তিনি দয়ালু, তাহলে প্রশ্ন আসে স্রষ্টার মধ্যে কে দয়া সৃষ্টি করেছেন? দয়া,নিষ্ঠুরতা এক প্রকার বিশেষণ যা সৃষ্টির অন্তর্ভুক্ত। যদি বলা হয় স্রষ্টা বিনা উদ্দেশ্য কিছু করেন না এ কথাও যেমন গ্রহণযোগ্য নয়, আবার উদ্দেশ্য ছাড়া কিছু করেন তাও গ্রহণযোগ্য নয়।সৃষ্টি উদ্দেশ্যর মুখাপেক্ষি, স্রষ্টা নয়। উদ্দেশ্য বলতে কোন লক্ষ্য অর্জন বোঝায়।আবার স্রষ্টা খেলাচ্ছলে কিছু করেন বললে প্রশ্ন আসে স্রষ্টা কি বিনোদনের মুখাপেক্ষি?যদি বলা হয় স্রষ্টার যখন ইচ্ছা হয়- প্রশ্ন হল স্রষ্টার কি মন আছে? মন থাকলে তার মনের কে সৃষ্টিকর্তা?সুতরাং স্রষ্টার মন থাকতে পারে না। সৃষ্টির ইচ্ছা হয়, সৃষ্টি ইচ্ছা হওয়ার মুখাপেক্ষি। স্রষ্টার ইচ্ছা হয় বললে প্রশ্ন আসে কে তার মধ্যে ইচ্ছা জাগান?
মানুষ নাস্তিক কেন হয়?
নাস্তিকেরা দু’টি প্রধান যুক্তির কারনে নাস্তিক হয়। যুক্তি দু’টি হল:
ক)তারা পৃথিবীতে বিদ্যমান কোন ধর্মেই স্রষ্টা, সৃষ্টির কারন ও মহাবিশ্ব ইত্যাদি সম্পর্কে গ্রহণযোগ্য,বিজ্ঞোচিত ও যৌক্তিক জবাব ও নির্দেশনা পায়নি
খ)আর স্রষ্টা সম্পর্কে উল্লেখিত প্রশ্নের মত বহু প্রশ্নের কারনে।
আস্কিক,বিশেষত:মুসলমানদের যুক্তি:
ক)আল কুরআনেই স্রষ্টা, সৃষ্টির কারন ও মানুষের পরিণতি সহ মানব জীবনের সকল সমস্যার সমাধান রয়েছে।
খ) স্রষ্টা সম্পর্কে উপরোক্ত প্রশ্ন উত্থাপন করলে তাদের জবাব স্রষ্টা সম্পর্কে এত প্রশ্ন করা ঠিক নয়।
বিশ্লেষণ:
মুসলমানগন কুরআনের পক্ষে কথা বলে এর প্রধান কুরআন তারা মুসলিম বংশে জন্মগ্রহণ করেছে।কুরআন আসলে স্রষ্টার বিধান হওয়ার যোগ্য কিনা তা কোন মুসলমান মাথায়ও আনে না।তারা শুধু পক্ষের লোকদের থেকে কুরআনের পক্ষের গুনগান শুনতে পছন্দ করে, কেউ সমালোচনা করলে তাকে অপছন্দ করে। নিজের ভূল তো সমালোচক তথা যিনি বা যারা ভূলকে খুজে পেয়েছে তাদের থেকে জানার কথা, তাদেরকে শত্রু মনে করলে সত্যে কখনো জানা যায় না।
এবার আসি স্রষ্টার ব্যপারে। আপনি যখন স্রষ্টার অস্তিত্বের পক্ষে যুক্তির আশ্রয় নেন যে সবকিছু এমনে এমনে সৃষ্টি হতে পারে না, এত সুশৃঙ্খল সৃষ্টি অটোমেটিক হয়েছে তা বিশ্বাস করা অযৌক্তিক ঠিক তদ্রুপ আপনাকে স্রষ্টা সম্পর্কে বাকি প্রশ্নগুলোরও যৌক্তিক উত্তর দিতে হবে। আপনি প্রশ্ন করা থামিয়ে দিতে পারেন না। তাহলে নাস্তিকেরা আপনার প্রশ্ন- এতসুন্দর সুশৃঙ্খল সৃষ্টি স্রষ্টা ছাড়া অটোমেটিক কিভাবে হতে পারে? থামিয়ে দিতে পারে এ বলে যে এ বিশাল সৃষ্টির কাছে আমার কিছুই নয়; সুতরাং এ প্রশ্ন করা ঠিক নয়।আপনি একটি প্রশ্নের যৌক্তিক উত্তর খুজবেন আর অপর প্রশ্নগুলো যেগুলোর উত্তর দিতে গিয়ে আপনি বেকায়দায় পড়ে যান সেগুলোর ব্যপারে প্রশ্ন করা থামিয়ে দেয়ার জন্য বলবেন যে ওসব প্রশ্ন করা ঠিক নয় সেটা গ্রহণযোগ্য নয়।
আমার বিশ্বাস:
যেহেতু স্রষ্টা আছে বললে তারও কোন প্রমাণ নেই, আবার নাই বললে তারও কোন ভিত্তি নেই; সুতরাং যে বিষয়ে কোন প্রমান নেই সে বিষয়ে চ্যালেঞ্জ সহকারে কোন কথা বলা গোড়ামিত্ব ও বোকামি ছাড়া কিছু নয়। যে বিষয়ে আপনার প্রমান নেই সে বিষয়ে আপনি আপনার অনুমানের ভিত্তিতে বড়জোর মতামত দিতে পারেন। এ কারনে কেউ যদি আমাকে বলে সে স্রষ্টায় বিশ্বাস করে না তাহলে সেটাকে আমি শুধুমাত্র তার মত হিসাবে গ্রহণ করি। আমার ব্যক্তিগত মত হল- স্রষ্টা বলে কেউ আছেন। তবে স্রষ্টাকে বোঝা সৃষ্টির পক্ষে সম্ভব নয়। আর পৃথিবীর সকল ধর্ম মানব রচিত। সামাজিক কল্যানের কথা বিবেচনা করে কিছু ভাল মানুষ কর্তৃক ধর্মগুলো সৃষ্টি। যেহেতু মানব মস্তিস্ক থেকে ধর্মগুলো তৈরি তাই ভাল উদ্দেশ্য থাকলেও প্রত্যেক ধর্মেই এমন কিছু বিধান রয়েছে যা মানবতার জন্য ক্ষতিকর। যারা ধর্ম বানিয়েছেন তাদের দূরদর্শিতায় ঐ সকল ক্ষতিকর দিকগুলো ধরা পড়েনি। তাদের উদ্দেশ্য ভাল ছিল।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০১৫ রাত ১:২২
৯টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন-হাদিস অনুযায়ী তারা পাকিস্তান এবং অন্যরা অন্যদেশ

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২১



সূরাঃ ৮ আনফাল, ৬০ নং আয়াতের অনুবাদ-
৬০। তোমরা তাদের মোকাবেলার জন্য যথাসাধ্য শক্তি ও অশ্ব-বাহিনী প্রস্তত রাখবে। এর দ্বারা তোমরা সন্ত্রস্ত রাখবে আল্লাহর শত্রুকে, তোমাদের শত্রুকে, এছাড়া অন্যদেরকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×