এক ধনী ব্যক্তি আপন স্ত্রীর সাথে বসে খানা খাচ্ছিলেন। উন্নত খাবার বিধায় ঘটা করেই তারা বসেছেন। এমন সময় এক ভিক্কুক এসে দরজার পাশে দাঁড়াল। ব্যাপারটা তাদের কাছে খুবই অস্বস্তিকর ও অপমানজনক মনে হলো। তাই ভিক্কুককে তাদের ধমক শুনতে হলো এবং সে চলে গেল।
কখনো কখনো মানুষের দু-একটি আমল এমন হয়, যার ফলে আল্লাহর গজব তেড়ে আসে। এ দম্পতির বেলায়ও তাই হলো। অল্প দিনের ব্যবধানে তাদের বিবাহ বন্ধনে ফাটল ধরল। এমনকি বিচ্ছেদের মতো তিক্ত ঘটনাও ঘটে গেল। স্ত্রী বাপের বাড়িতে চলে এলো। চার মাস ১০ দিন ইদ্দতের সময় পূর্ণ করল। তারপর অন্যত্র দ্বিতীয়বারের মতো বিয়ে হলো। দ্বিতীয় স্বামীও ছিল ধনী। একদিন তারা দু’জন খেতে বসল। এ সময় একজন ফকির এসে দরজার সামনে দাঁড়াল। স্ত্রী বলল, ইতঃপূর্বে আমি দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলাম। ভয় হয়, আল্লাহর কোনো গজব আবার আঘাত করে কি না। তাই আমি একটু আসি। আগে ফকিরটাকে কিছু দিয়ে আসি। স্বামী বলল, ঠিক আছে যাও। আগে ফকিরকে বিদায় করো, তারপর খানা খাবো।
স্ত্রী দরজায় অপেক্ষমাণ ফকিরের কাছে যখন গেল, সাথে সাথে চমকে উঠল, এ যে তার আগের স্বামী! ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে উঠে দ্রুতগতিতে বর্তমান স্বামীর কাছে ফিরে এলো। বলল, ফকিরটা যে আমার প্রথম স্বামী! সে ছিল খুব ধনী। একবার তার সাথে খেতে বসেছিলাম, আজ যেমনিভাবে আপনার সাথে বসেছি। এমন সময় দরজায় এক ভিক্কুকের আওয়াজ শুনলাম। ভিক্কুকটিকে আমার এ স্বামী তাড়িয়ে দিয়েছিল। যার কারণে সেও আজ ভিক্ষার ঝুলি নিলো।
বৃত্তান্ত শোনার পর স্বামী বলল, আরো বিস্ময়কর সংবাদ শুনবে কি? স্ত্রী বলল, বলুন, শুনব। স্বামী বলল, জানো তোমাদের দরজার সেদিনকার সেই ফকির আজ তোমার স্বামী। আমাকেই তোমরা তাড়িয়ে দিয়েছিলে।
এই হলো আল্লাহর কারিশমা। ধনদৌলতের মালিককে বানালেন ফকির। ফকিরকে করলেন ধনী।
আল্লাহ আমাদেরকে হেফাজত করুন।
এই ঘটনা থেকে আমরা শিক্ষা পেলাম যে, ভিক্কুকের সাথে রূঢ় ব্যবহার করা উচিত নয়।
(হজরত আশরাফ আলী থানভী রহ)
হজরত জাবের রা: থেকে বর্ণিত- তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, একজনের খাবার দু’জনের জন্য যথেষ্ট। দু’জনের খাবার চারজনের জন্য যথেষ্ট। চারজনের খাবার আটজনের জন্য যথেষ্ট।
এ হাদিসে একটি মূলনীতি পেশ করা হয়েছে; তা হলোঃ খাওয়া চলাকালীন কোনো মেহমান অথবা ভিক্কুক এলে এই বলে তাদেরকে বঞ্চিত করা যাবে না যে, এখানে তো একজনের খাবার, শরিক করা হলে কম হয়ে যাবে। বরং তাকেও খাবারে শরিক করে নেবে। এতে আল্লাহ তা’আলা বরকত দেবেন।
۩۞۩ ভিক্ষুককে তাড়াবেন না (একটি কাহিনী শুনুন) ۩۞۩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
১১টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।
এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন
তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?
আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন
ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়
সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন
=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=
০১।
=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ
শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।
পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।
জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন