somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সামুর ব্লগারদের 'সাহিত্য আড্ডা'।

০১ লা ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এক মাসেই দুইবার হলো সাহিত্য আড্ডা। দেশের বিশেষ পরিস্থিতির জন্য গত সাহিত্য আড্ডা এক সপ্তাহ পিছিয়ে দেয়া হয়েছিলো। তাই চলে এসেছিলো এ মাসেরই প্রথম তারিখ। আর এই মাসের শেষ সপ্তাহ ছিল গতকাল। তাই মধ্য অগ্রাহয়ণের এই চমৎকার বিকেলে আয়োজন করা হয়েছিলো সেই কাঙ্খিত সাহিত্য আড্ডা। আগেই জানা ছিলো আসছেন না, আমাদের অত্যন্ত প্রিয় এবং সম্মানিত কামাল ভাই। এজন্যই কে কে আসবেন এটা নিশ্চিত ছিলোনা।

ভীষণ অনিশ্চয়তার মধ্যে যখন দেশ সেই মুহূর্তে যে আমরা এই আড্ডাটা দিতে পেরেছি এতেই অনেক অনেক খুশি। সবচেয়ে বড় কথা হলো স্পিরিট (স্পিরিট এর বাংলা কি?)। প্রত্যেকে এসেছেন ভীষণ এক টানে। এ টান কিসের? আমরা দেখতে চাই কাউকে? ব্লগাররা কেমন, এরা মানুষ না অন্য কিছু? না জানতে চাই, কিছু? নাকি নিজেদের ভাব বিনিময় করতে চাই? কিছু চেপে থাকা কথা উগরে দিতে চাই। অথবা, ভুলে থাকতে চাই কিছুক্ষণ এর জন্য সব কিছু থেকে নাকি কিছু ভুলে থাকতেই এই আড্ডায় আসা? জানি না, কে কিসের টানে আসে। উদ্দেশ্য বিহীনভাবে কেউ আসে এটা আমার মনে হয়না। সাহিত্য আড্ডায় সাহিত্য নিয়েই আলোচনা হবে এইটাই হয়তো অনেকের প্রত্যাশা। তবে আমার ভালো লাগে- আলোচনা যাই হোক- চেনা হয় অচেনা সব মুখের সাথে। যাদের চেনার কথা ছিলো না, যাদের যানার কথা কথা ছিলো না, তাদের সাথে দেখা হয়, কথা হয়। যাদের সাথে কেবল ভার্চুয়াল সম্পর্ক গড়ে উঠার কথা ছিলো, তাদের সামনা সামনি দেখতে কি যে ভালো লাগে! এক একটি মুখ যেন আশ্চর্য বিভায় উজ্জ্বল।

প্রতিবার ঠিক ঠিক সময়ে এসে হাজির হয়ে আমাদের জন্য অপেক্ষা করতেন কামাল ভাই। তিনি যেহেতু অনুপস্থিত তাই তার দায়িত্ব নিয়েছেন আমাদের 'সাহিত্য আড্ডার' সমন্বয়ক অলওয়েজ ড্রিম। এরপর এলাম আমি। সাড়ে তিনটায় সকলের আসার কথা থাকলেও হয়তো অনেকে ভুলেই গিয়েছিলেন। যাই হোক এরপর এলেন কুহক ভাই। সেলিম আনোয়ার, তামিম, এম মশিউর, আশরাফুল ইসলাম দুর্জয়, অর্নব, আলাউদ্দিন আলী, ঘুড্ডির পাইলট অবশেষে নেক্সাস ভাই। আরো দুই একজন ব্লগার শেষ মুহূর্তে হাজির হয়েছিলেন। সকলের কথা মনে নেই।

কি আলোচনা হলো? এক কথায় বলতে পারবোনা। কেন? কারণ ঠিক নির্দিষ্ট কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়নি। অনেক অনেক বিষয় নিয়েই আলোচনা হয়েছে, সেই আলোচনা হঠাৎ করেই পথ পরিবর্তন করে অন্য আলোচনায় গড়িয়েছে। নিজেদের প্রয়োজনে দুইজন তিনজন করে গ্রুপ করে আলোচনা চালিয়ে গেছেন অনেকে। আবার অনেকে অন্যের কথা শুনেছেন, বলেছেন অনেক কম। আবার কেউ কেউ বলার জন্য এতোটাই উন্মুখ ছিলেন, যে শোনার জন্য যেন তার কান নয়। আড্ডার আদি রস এটাই।

ক্লোন কবিতা কি? আর কেনই বা এটা ক্লোন কবিতা? এই ব্যাপারে প্রথমে আলোচনায় মেতে উঠেছিলাম, আমি আর কুহক ভাই। এই বিষয়ে পরবর্তী আড্ডায় কামাল ভাইয়ের কাছ থেকে জানার আগ্রহ ব্যক্ত করে এই আলোচনা শেষ হয়। ক্লোন শব্দটা কুহক ভাইয়ের পছন্দ নয়। আমারও তেমন পছন্দ নয়। আমি আমার ভাব প্রকাশ করি এভাবে- 'আমার কেবলই মনে হয় কিছু কিছু কবির বিশেষ কিছু কবিতা আমার লেখার কথা ছিলো। কিন্তু তারা আগেই লিখে ফেলেছেন। এখন আমি কি করতে পারি? আমার মন বলে আমি যেন আমার মতো করে লিখি। আমি কেবল কবিতাটার কাঠামো ঠিক রাখি। আর বদলে দিই কবিতার অঙ্গ সৌষ্ঠব। তখন এই কবিতা কি আমার কবিতা হয়ে উঠেনা? একই কাঠামোতে (Structure) এর উপর কি কয়েকটা আলাদা আলাদা দালান গড়ে উঠতে পারেনা? বিষয়টা অনেকটা তো এমনই। তবে অবশ্যই এক্ষেত্রে মূল কবিতা পাশাপাশি থাকতে হবে। কেননা, আমার এই কবিতার হয়তো জন্মই হতোনা যদিনা আমি মূল কবিতাটার কাঠামোটা না পেতাম।

এটা স্বীকার না করে উপায় নেই যে ক্লোন করা জিনিস যেমন তার মূল প্রানী থেকে দুর্বল হয়, এক্ষেত্রেও সেই সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তবুও, আমি আমার অনুভূতি গুলো দিয়ে আরেকবার মুর্ছনা আনতে চাই। সে যদি কারো ভালো লাগে তো বেশ, আমার ভালো লাগাটাই মূখ্য।

আর কি কি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে? ওইযে আগেই বলেছি জানিনা। বরঞ্চ বলা উচিত কি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়নি। রাজনীতি, অর্থনীতি, ভূগোল, দর্শণ, চলচ্চিত্র, ব্লগের করুণ দশা, এর কারণ, উপায়, নিরুপায় আরো কত কি? ব্লগ দিবস নিয়েও বেশ কথা হলো। বিশেষ করে একটা র‌্যালী করা যায় কিনা এই ব্যাপারে সকলের মতামত ছিলো একাট্টা।

খোঁজ খবর হচ্ছিলো, ব্লগের কাদের কাদের বই আসছে এই বইমেলায়। আমরা কি একটা বই বের করতে পারি, আমাদের আড্ডার বিষয় আশয় নিয়ে? এই ব্যাপারে কথা চলছে। সামনে আরো ব্যাপক কথা হবে। নিবন্ধ বা প্রবন্ধ লেখা খুব একটা সহজ নয়। কিন্তু আমাদের ব্লগের যারা এই আড্ডাটা চালাচ্ছি, তারা কেউ কেউ দায়িত্ব নিয়ে প্রবন্ধ লিখবেন বলে আশা করছি। প্রতিটি মাসে যদি একটি করে প্রবন্ধ লেখা হয় তবে সামনের বার থেকে চৌদ্দটি প্রবন্ধ দাঁড়িয়ে যাওয়া অসম্ভব নয়। তখন সেই প্রবন্ধ গুলো দিয়েই একটি বইয়ের মলাটের ভেতর একত্রিত করে পাঠকের হাতে তুলে দেয়া তো যেতেই পারে। জানিনা, কতদূর কি হবে। এটা কেবল একটা প্রস্তাবনা। সফলতা বা বিফলতা প্রত্যেকের দায়িত্বের উপর নির্ভর করবে।

আসুন দেখি, কারা কারা এলেন এই মিঠেল বিকেলে, পাবলিক লাইব্রেরির চত্ত্বরে।

-ঘুড্ডির পাইলট। হাতে আঁকার কাগজ।

-সদ্য বিবাহিত আড্ডার সমন্বয়ক অলওয়েজ ড্রিম।

-তমিম ভাই। কি সৌম্য চাহারা!

-কুহক ভাই। একটা নতুন সিগমা'র লেন্স নিয়েছেন (২৮-২০০)। আমার তো জটিল লাগলো। কাজ ভালো হলেই হয়।

-সেলিম আনোয়ার ভাই, অসুস্থতা সত্ত্বেও চলে আসছেন। খাচ্ছেন, যষ্ঠী মধু। না কেবল খাচ্ছেন না, খাওয়াচ্ছেন ও। আমি এর আগে যষ্ঠী মধু দেখিনি। এটা যে ছাল ছাড়ানো একটা চিকন গাছের ডালের মতো হয়, জানতামই না?!

-মশিউর ভাই। বেশ হাসি খুশি মানুষ। এই সেদিন, ছন্দ নিয়ে চমৎকার একটা পোস্ট দিয়েছেন।

- অনাহুত (অর্ণব)।

- দুর্জয় ভাই। ইদানিং দারুণ দারুণ সব কবিতা লিখছেন।

-নেক্সাস ভাই।

- আহমেদ আলাউদ্দিন ভাই।



















আজ এই পর্যন্তই। ছবি আপলোড করতে করতে ক্লান্ত! যারা দেশের চলমান রাজনৈতিক কারণে অথবা ব্যক্তিগত অন্য যেকোনো কারণে আসতে পারেননি তারা যেন সামনের আড্ডায় আসতে পারেন সেই প্রার্থনা করছি। আমাদের এই আড্ডা চলতে থাকুন এর নিজস্ব ঢংয়ে। সাহিত্য আড্ডা বললেও আড্ডার নিজস্ব কোনো এজেন্ডা নেই। উপস্থিতিই এর এজেন্ডা ঠিক করে আর এগিয়ে নিয়ে যায়। তবুও আমরা চেষ্টা করছি কিছুটা এজেন্ডা ভিত্তিক কাজ করতে। যাদের খুব মিস করেছি তাদের কয়েকজন, এ, টি, এম মোস্তফা কামাল ভাই, স্বপ্নবাজ অভি, কাল্পনিক ভালোবাসা, ৎঁৎঁৎঁ, আজাদ মাহবুবুল সহ আরো অনেকে। সবাইকে নিরন্তর ভালোবাসা এবং শুভেচ্ছা।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১:২৩
২৯টি মন্তব্য ২৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×