somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিছু প্রিয় বইয়ের রিভিউ ০৩: The Fault In Our Stars

২৯ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
বুক রিভিউ: The Fault In Our Stars
লেখক: John Green



কেমন হতো যদি খুব অল্প বয়সেই আপনি জানেন যে আপনার শরীরে চুপটি করে আছে এমন কোন অপ্রতিরোধ্য এক রোগ, যে একদিন আপনার জীবন কে গ্রাস করে নেবেই ; আপনি সাময়িক ভাবে তাকে একটু দমিয়ে রেখে কিছুটা সময় ধার করে চলছেন কেবল?

শুরুটা এমন-
" Late in the spring of my seventeenth birthday, my mother decided I was depressed, presumably because I rarely left the house, spent quite a lot of time in bed, read the damn book over and over, ate infrequently, and devoted quite a bit of my abundant free time to thinking about death. "

লেখক জন গ্রিনের The Fault In Our Stars- দুই জন সতের বছর বয়সী ক্যান্সার আক্রান্ত একটু অন্যরকম কিশোর - কিশোরীর আর পরিবারসহ তাদের ঘিরে থাকা কিছু মানুষের মনকে গভীর ভাবে স্পর্শ করে যাওয়ার মতো এক গল্প ।

হ্যাজেল গ্রেস, ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত এক কিশোরী যার সময় কাটে টিভি দেখে, An Imperial Affliction নামের একটা বই বারবার পড়ে আর মৃত্যুকে ভেবে । তার ক্যান্সার নিরাময় যোগ্য নয়, ঔষধ দিয়ে তা সাময়িকভাবে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে কেবল । নিঃশ্বাস নেয়ার জন্যে সবসময় তাকে যন্ত্রের সাহায্য নিতে হয়। প্রতি বুধবার সে চার্চে আরও কিছু ক্যান্সার আক্রান্ত মৃত্যু পথযাত্রী মানুষের সাথে মিলিত হয় এবং একে অপরকে সুস্থ হয়ে ওঠার, অসুখের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার শক্তি যোগায়। সেই সাপোর্ট সেন্টারেই একদিন হ্যাজেল দেখলো সমবয়সী নীল চোখের এক ছেলে একদৃষ্টে তার দিকে তাকিয়ে আছে ।

ছেলেটার নাম অগাস্টাস, ক্যান্সারের কারণে যার অপারেশন করে একটা পা হাঁটুর নিচ থেকে কেটে ফেলতে হয়েছে ( হ্যাজেলের ভাষায় এখন তার পায়ের সংখ্যা ১.৪ টি ). ঐ অপারেশনের পর গত এক বছরে তার শরীরে আর ক্যান্সারের কোন উপস্থিতি ধরা পড়ে নি । অগাস্টাসের সবচেয়ে বড় ভয় - মৃত্যুর পর তার স্মৃতি কারো মনে থাকবে না।

হ্যাজেলের কাছে কোন সমাপ্তি ছাড়াই হঠাৎ করে শেষ হয়ে যাওয়া An Imperial Affliction বইটার সকল চরিত্র বাস্তবের রক্ত মাংসের মানুষের মতো সত্য । সে যতোবার বইটা পড়ে, তার ততোবার মনে হয় সে যেন আয়নায় নিজেকেই দেখছে, সে জানতে চায় বইটা শেষ হয়ে যাওয়ার পর চরিত্রগুলোর ভাগ্যে কি ঘটেছিল? তারা কোথায় আছে? কেমন আছে?? .......... এসব প্রশ্নের জবাব জানতে সে বহুবার ঐ বইয়ের লেখককে চিঠি লেখে, কখনোই জবাব পায় না । কিন্তু বইটা পড়ার পর অগাস্টাস যখন লেখক কে চিঠি লিখলো, তখন লেখক তাদের দুজনের চিঠিরই জবাব দিলেন এবং বললেন বইটার চরিত্রগুলোর কি হয়েছিল তা জানতে হলে তাদের দুজনকে আমস্টার্ডাম যেতে হবে, বহুদূরের যে শহরে লেখক বসবাস করছেন ।

জীবনের সবচেয়ে বড় ইচ্ছাটা পূরণে রওনা হয় তারা ; হ্যাজেল নিজের প্রশ্নগুলোর জবাব খুঁজতে আর অগাস্টাস হ্যাজেলের ইচ্ছা পূরণ করতে ।
তারপর?

........... মৃত্যুর দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে চলা দুজনের জীবনই যেন লেখা হলো নতুন ভাবে । কিন্তু ওমনভাবে কি তারা আদৌ কখনো চেয়েছিল??
নিউইয়র্ক টাইমস বেস্ট সেলার লিস্টের শীর্ষে থাকা এই বইটা নীলক্ষেতে খুঁজলেই পাবেন, দাম পড়বে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা মাত্র ।
আশা করি জন গ্রিনের সৃষ্টি বর্তমান সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় এই বইয়ের অদ্ভুত সারল্য মাখা কিছু মানুষের জীবনের গল্প আপনারও ভালো লাগবে । হয়তো জীবনকে নিয়ে ভাবাবে গতানুগতিকের বাইরে একটু অন্যরকম ভাবে ।

__________________________________________

কিছু প্রিয় বইয়ের রিভিউ ০১: The Kite Runner
Click This Link


কিছু প্রিয় বইয়ের রিভিউ ০২ : One Night @The Call Center
Click This Link


হ্যাপি রিডিং! :)
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×