somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এত ব্লগার থাকতে রাজিব হায়দার (থাবা বাবা) কেন?

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্লগার আহমেদ রাজিব হায়দার শোভনকে জবাই করবার খবর শুনে আঁতকে উঠেছিলাম। নামটা এই কয়েকদিনের আন্দোলনে শুনিনি। তাই রাজিব হায়দার ওরফে থাবা বাবা সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হলাম। প্রথম খটকা ছিল, এত ব্লগার থাকতে থাবা বাবা কেন? সে ছাড়া এই আন্দোলন নেতৃত্বহীনতায় ভুগে শেষ হয়ে যাবে এই রকমটাতো এই কয়দিনে মনে হয়নি। তাহলে জামায়াত শিবির কেন তাকে মেরে আন্দোলনকে আরো চাঙ্গা করে তুলবে, অন্তত এই সময়ে যখন আন্দোলন খানিক সীমিত হয়ে আসছে। সারাদিনের কর্মসূচি থেকে সরে গনজাগরণ মঞ্চ ৭ ঘন্টার ঘোষনা দিয়েছে। এত বোকা তো জামায়ত শিবির না। তাহলে? প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে যা পেলাম, তাতে আরো আঁতকে উঠলাম। উত্তর মিলল অনেক প্রশ্নের .. বলি।

প্রশ্ন: এত ব্লগার থাকতে রাজিব হায়দার (থাবা বাবা) কেন?
উত্তর: কারণ থাবা বাবা অতি প্রগতিশীল ছিলেন। তিনি নাস্তিক ও সোচ্চার। তার লেখায় সরিসরি তা প্রকাশও হতো। থাবা বাবার নামে মহানবী ( সা: ) বিষয়ে উল্টা পাল্টা পোস্ট দিয়ে সাধারণ মানুষকে সকলেই বোকা বানানো যাবে। যে কোন মুসলিমের কাছে মহানবী ( সা: ) প্রাণের ব্যক্তিত্ব। তাঁকে নিয়ে কোন বাজে কথা মানুষ সহ্য করবে না।

প্রশ্ন : রাজিবকে জামায়ত শিবির মেরেছে তার প্রমাণ কি?
উত্তর : ১১ ফেব্রুয়ারী জামায়াত শিবির এর ব্লগ সোনার বাংলায় গনজাগরনে পেছনের মানুষদের পরিচয় দেয়া হয়েছে। কার জানেন? শুধু মাত্র একজনের। তিনি থাবা বাবা। এবং তার ফেসবুক পোস্টও দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে তাকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে ধর্মকারি ব্লগের প্রধান হিসাবে যে ব্লগ আমাদের মহানবী ( সা: ) কে নিয়ে অত্যন্ত নোংরা কথাবার্তার জন্য সরকারি ভাবেই আগেই নিষিদ্ধ হয়েছে। এবার বুঝেছেন এত ব্লগার থাকতে থাবা বাবা কেন গণজাগরণের প্রধান হিসাবে পরিচয় করিয়ে দেয়া হলো। অথচ আমরা জানি রাজিব হায়দার শাহবাগে আসতেন, কিন্তু নিয়মিত না, বক্তৃতা বা কোন টেলিভিশন অনুষ্ঠানেও তাকে দেখা যায়নি।১১ ফেব্রুয়ারীর কেন অনুমান করতে পারেন নিশ্চই, হুম ঠিক ধরেছেন। সেদিনই হয়তো রাজিরকে মারার প্ল্যানটা হয়েছিল।

প্রশ্ন : এভাবে মারলে তো সাধারণ মানুষের ঘৃণাই বাড়বে, লাভ তো হবে না, তাহলে কি উদ্দেশ্য ?
উত্তর: জামায়াত চেয়েছে সাধারন মানুষের ঘৃণা বাড়ুক, সাথে ভয় ও সহানুভূতিও। এই ঘৃণা ও ক্ষোভ থেকে আন্দোলনকারী থাবা বাবাকে আপন করে নেবে, থাবা বাবার জন্য স্লোগান দেবে। সাধারণ মানুষের সিমপ্যাথি তৈরী হবে, সাথে আগ্রহ। এখানেই মূল খেলা। এর মধ্যে জামায়াত - শিবির থাবা বাবার নামে অনেকগুলো পেজ তৈরী করে রেখেছে, যেখানে মহানবী ( সা: ) , দেবী দুর্গা সহ অন্যান্য ধর্ম সম্পর্কে অন্তত বাজে কথা লেখা আছে। থাবা বাবা নামে সার্চ করলে সেগুলো আগে আসবে। মানুষ সেগুলো পড়বে। মানুষ মহানবী ( সা: ) কে প্রাণের চেয়ে ভালবাসে। তাই এসব কথা পড়ে তাদের ক্ষোভ ও রাগ তৈরী হবে। এর মধ্যে জামায়াত শিবিরের অনলাইন অ্যাকটিভিস্টরা আন্দোলনকারী সেজে বিভিন্ন ভাবে ছড়িয়ে দেবে, শাহবাগে যারা আন্দোলন করছে তাদের নেতৃত্বে আছে মহানবী ( সা: ) সম্পর্কে কুৎসা রটনাকারীরা- তাদের সাথে আর তারা নেই। যেমন - ‘কাল থেকে আর শাহবাগ যাবোনা’ ইত্যাদি। এতে সাধারন মানুষ দ্বিধান্বিত হয়ে পড়বে। এই ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করবে জামায়াত। জনগণকে জানাবে শাহবাগে আন্দোলন আসলে রাজাকারদের বিরদ্ধে না, ধর্মের বিরুদ্ধে। ব্যস কেল্লা ফতে। বাংলাদেশের মানুষ আর যাই হোক, ধর্ম নিয়ে বাজে কথা সহ্য করে না। আর এই ফাঁকে রাজাকারে ফাঁসি ও জামায়াত শিবিরের নিষিদ্ধের দাবী ম্রিয়মান হয়ে যাবে। এ ধাক্কায়ও বেঁচে যাবে জামায়াত। বড় মাস্টার প্ল্যান না? জামায়াতের মাস্টার প্ল্যানের দক্ষতা তো আমাদের আগে থেকেই জানা।

প্রশ্ন : ব্লগার থাবা বাবার লেখালেখির ধরণের কারণে ধর্মীয় ক্ষোভ থেকে তাকে মেরেছে হয়তো কেউ, এর সাথে আন্দোলনের সম্পর্ক কি?
উত্তর : যদি ধরেই নেই মহানবী ( সা: ) নিয়ে বানানো পেইজ গুলো থাবা বাবারই করা তাহলেও একটা জিনিষ লক্ষ্য করা যায় এইসব পেইজে শেষ পোস্টটা এসেছে ২১ জুন, ২০১২। তাহলে এতদিন না মেরে অপেক্ষা করলো কেন ? যদি এই ব্লগের কারনে মারা হয় তাহলে সেটা অনেক আগেই হয়ত মানুষ তা করে ফেলত। এই খুনটা হয়েছে আন্দোলনকে মাথায় রেখে। এবং হয়তো আরো কিছু প্লান আছে, যা সামনে বোঝা যাবে।

প্রশ্ন : জামায়াতের এই প্ল্যান পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হলে কি হবে?
উত্তর: এখানেও জামায়াতের ভয়ংকর কুচক্রী পরিকল্পনা আছে। জামায়াতের এই পরিকল্পনামত অসফল হবার সুবিধা আছে। আন্দোলন বানচাল হতে নিলে আন্দোলণকে বাঁচানোর স্বার্থে ব্লগাররা আন্দোলন থেকে পেছনে সরে যাবে। আন্দোলন চলে আসবে ছাত্র- জনতার হাতে। খালি অবস্থায় হালটা গিয়ে পড়বে বাম দলের হাতে। ছাত্রলীগ সহজাত প্রবণতার কারণেই তা হতে দেবেনা। আর একবার এই আন্দোলন দলীয়করণ হয়ে গেলে সাধারণ মানুষের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহন কমে যাবে। তাতেও জামায়াতের একই লাভ।

প্রশ্ন: জামায়াত কতটুকু সফল?
উত্তর: এখন পরযন্ত পুরোটাই সফল। মানুষের মনে ঘৃণা ও থাবা বাবার প্রতি রাজিবের প্রতি সিমপ্যাথি ও আগ্রহ তৈরী হয়েছে। আন্দোলন থেকে তার মৃতদেহ রাষ্ট্রীয় সম্মানে সমাহিত করার দাবী উঠেছে এবং আন্দোলনকারীর বেশে থাকা জামায়াত শিবির অনলাইন অ্যাকটিভিস্টরা তাদের বানানো পোস্টগুলো থাবা বাবার নামে দিয়ে অথবা থাবা বাবার পোস্টগুলো ব্যবহার করে বলতে আরম্ভ করছে, কাল থেকে আমি আর শাহবাগে নাই। অন্তত রাজিব মারা যাবার এখন অবধি ৮ ঘন্টা পুরাই সফল।

প্রশ্ন : তাহলে কি হবে?
উত্তর: জামায়াতের এই পরিকল্পনা আসলে সফল হবে না। কারণ মানুষ বুঝে গেছে জামায়াত শিবির কিভাবে তাদের ধর্মীয় আবেগ নিয়ে খেলে, ব্যবহার করে। মানুষ এই গভীর ষড়যন্ত্র ধরে ফেলবে। আমরা বোকা না, আমরা বুঝি। বরং মানুষের কাছে আরো স্পষ্ট হয়ে যাবে জামায়াত শিবির তাদের একাত্তরের চেহারা বদলাতে পারেনি। মহানবী ( সা: ) এর অবমাননাকে যারা জমিয়ে রেখে পুঁজি করে, তাদের ঘৃনিত চেহারা আবার সবার সামনে উন্মোচন হবে।

প্রশ্ন: যদি সাধারণ মানুষ তাদের পরিকল্পনা মত বিভ্রান্ত হয়ে যায়?
উত্তর: সাধারণ মানুষের বিভ্রান্তি দূর করাও এখন আন্দোলনের অংশ। রাজাকার ও জামায়াত শিবির দেশ গড়তে এই বিভ্রান্তি দূর করার জন্য সবাইকে দ্বিগুন সক্রিয় হতে হবে। মানুষকে সত্যটা জানিয়ে ও গণজাগরণে উপস্থিত থেকে।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১১:০১
১২টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেসবুক বিপ্লবে সেভেন সিস্টার্স দখল—গুগল ম্যাপ আপডেট বাকি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০




কিছু তথাকথিত “বাংলাদেশি বিপ্লবী” নাকি ঘোষণা দিয়েছে—ভারতের সেভেন সিস্টার্স বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে! সহযোগী হিসেবে থাকবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী আর পাকিস্তানি স্বপ্ন।শুনে মনে হয়—ট্যাংক আসবে ইনবক্সে। ড্রোন নামবে লাইভ কমেন্টে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×