নেহাৎই আনুষ্ঠানিকতা নয়। যে ভাবধারা, যে বোধ, যে নৈতিকতাগুলোকে আঁকড়ে রয়েছে আমাদের ঐতিহ্যের শিকড়, সেগুলোকে আরও এক বার ঝালিয়ে নেওয়া।
আরও একটা প্রজাতন্ত্র দিবসে পৌঁছে উপলব্ধিটা এ রকমই।
কুচকাওয়াজ আছে, ট্যাবলো আছে, জমায়েত আছে। রাজধানীর রাজপথে আছে মহামহিম সমারোহ। কিন্তু প্রশ্নও আছে। প্রজাতন্ত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর সাড়ে ছয় দশক কাটিয়েও যখন ভারতীয়ত্বের শিকড়ে কামড় বসাতে চায় অসহিষ্ণু আক্রোশ, যখন লকলকে আগুনের মতো ঝলসে উঠতে চায় বিভাজনকামী হিংসা, যখন পড়শিকে কাছে টানার চেষ্টা করলেই রক্তাক্ত হতে হয়, তখন প্রশ্ন ওঠে, গণতন্ত্রের এত আড়ম্বর কি শুধু বহিরঙ্গেই? ২৬ জানুয়ারির অনুশীলন কি শুধুই বাধ্যতাজনিত? এ অনুশীলন কি ভারতের আত্মস্থ নয়?
উপলব্ধি বলছে, শুধু আত্মস্থই নয়, গভীর অন্তরে নিহিতও। ঝড়ঝাপটা আসেই। কিন্তু সে সব রুখে দেওয়ার মন্ত্রও এই ভারতীয় জাতিসত্ত্বাতেই মিশে রয়েছে। প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে রাষ্ট্রপতির ভাষণও সে কথাই মনে করিয়ে দিল আর এক বার।
ভারতীয়ত্বের বুনিয়াদি ধারণায় আঘাত হানছে যে সব হিংসা, তাদের থেকে সতর্ক থাকতে বলেছেন রাষ্ট্রপতি। হিংসা, অসহিষ্ণুতা আর অযৌক্তিকতার আঘাত থেকে নিজেদের রক্ষার দায়িত্ব নিজেদেরই নিতে হবে। মনে করিয়ে দিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদাধিকারী।
গণতন্ত্রে অভিযোগ থাকবে, দাবি থাকবে, প্রয়োজনে বিদ্রোহও থাকবে।এই সব কিছুই গণতন্ত্রের অংশভাক। বলছে রাষ্ট্রপতির ভাষণ। সঙ্গে মনে করিয়ে দিচ্ছে, এই গণতন্ত্রের যা কিছু অর্জন, স্বীকৃতি দিতে হবে তাকেও।
সত্যিই তো! অসহিষ্ণুতা, হিংসা আর সন্ত্রাস বলে হতাশ হওয়ার সময় এ নয়। ভারত অনেক অর্জনও করেছে। আরও একটা প্রজাতন্ত্র দিবসে পৌঁছে সেই অর্জনই উষ্ণীষের পালক হয়ে দেখা দিক। বাকি সব আবর্জনা।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৫১