ভদ্রলোক সকাল সাতটার সময় অনেক কষ্টে আলস্য কাটিয়ে ঘুম থেকে উঠলেন। সারারাত খেলা দেখে সাত সকালে ঘুম থেকে উঠে অফিসে যাওয়া আসলেই অনেক কষ্টের। বাথরুমে গিয়ে আয়েস করে দাড়ি কামিয়ে, গোসল সেরে ঠিক সারে সাতটায় আরো আয়েস করে বারান্দায় আজকের পত্রিকাটা নিয়ে বসলেন। বিরক্তি নিয়ে এক কাপ চায়ের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলেন। এক কাপ চা দিতে সারা সকাল বাধিয়ে দিচ্ছে আশ্চর্য!!!তাকে অফিস ধরতে হবে, মাস শেষে 40000 টি টাকা বেতন। নট এ মেটার অফ জোক। প্রায় দাসির কাছাকাছি এক ভদ্র মহিলা ভাদ্র মাসের আম পাকা গরমে রান্না ঘর থেকে ছুটতে ছটতে চা নিয়ে এলেন। মানুষটা আবার কাজের মেয়ের হাতের চা খেতে পারে না । কাছে আসার সাথে সাথে ঘামের বোটকা গন্ধে ভদ্রলোক নাক কুচকে ফেললেন, মুখে কিছু বললেন না । ভদ্র মহিলা ওভাবেই দৈাড়তে দৈাড়তে বড় বাচ্চাটাকে রেডি করে স্কুলে পাঠালেন। ছোট টাকে সকালের নাস্তা খাওয়ালেন, ড্রাইভারের লাঞ্চ, হাজবেন্ডের লাঞ্চ, বাচ্চা গুলোর দুপুরের খাবার, বুয়ার সারাদিনের ইন্সট্রাকশন- আটটা বাজতে পাঁচ মিনিট বাকি। দৈারতে দৈারতে কোন রকমে গোসল সারলেন। আটটার সময় ভদ্রলোক তাগাদা দেয়া শুরু করলেন কৈ হলো তোমার? প্রত্যেকদিন তোমর জন্য দেরি হয়্। আর পারব না এর পর থেকে বাসে আস তুমি !!!!! সকাল বেলা কি এমন দুনিয়া উদ্ধার কর তুমি? গাড়িতে পাশাপাশি বসে বিরক্তি চেপে ভদ্র লোক বললেন চুলটাও ঠিক মতো আচরাতে পারো না? ভদ্র মহিলা একটু বিব্রত হয়েই ভাবা শুরু করলেন – দুটো বাচ্চাকে খাইয়ে, ঘুম পাড়িয়ে, রান্না ঘর, বিছানা গুছিয়ে ঘুমাতে ঘুমাতে রাত মাত্র আড়াইটা। ভোর পাঁচটা থেকে উঠে আবার দৌর ঝাপ। অফিসটাওতো যেতে হবে, হোক না বেতন কম- মাত্র আশি হাজার টাকা ।
এই কারনেই দূর্গা মার দশ হাত অথবা যে রাধে সে চুলও বাধে এই যাতীয় বস্তাপচা প্রকৃত শোষনমূলক প্রবাদ যতদিন চলবে ততদিন বাংলাদেশ ছাইয়ের উন্নতি করবে । ”যতদিন মেয়েরা রান্না ঘড় থেকে বরে না হবে” এই কথাটা হচ্ছে সবচেয়ে হঠকারি কথা । মেয়েরা রান্না ঘরে না গেলে খাওয়ার সমাধান কি? যতদিন আমাদের দেশের পুরুষরা রান্না ঘরে না ঢুকবে ততদিন এই দেশের প্রকৃত অর্থে কোন পরিবর্ত্ন হবে না (স্মার্ট্ ফোন ছাড়া )। বাজি ধরে বলতে পারি এমন কি যে বিপ্লবীরা সমাজ বদলের কথা বলেন তারা বৌ বা মায়ের রান্না করা ভাত খেয়েই মিছিলে আসেন ।