somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাম্প্রতিক খাদ্য সংকট ও আমাদের কৃষি

০৮ ই এপ্রিল, ২০০৮ দুপুর ১:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক
ইদানীং সারাবিশ্বেই খাদ্য-পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শোনা যাচ্ছে, সকলকেই অনেক উদ্বেগ-উৎকন্ঠার সাথে বর্তমান বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা, বর্তমান খাদ্য সংকটের কারণ ও উৎস অনুসন্ধানে লিপ্ত থাকতে দেখা যাচ্ছে। বলা হচ্ছে, বিশ্বজুড়েই খাদ্যশস্যের উৎপাদন কমেছে, খাদ্যশস্যের মজুদও এখন অনেক কম। ফলে, হু হু করে বাড়ছে খাদ্যশস্যের দাম। খাদ্যশস্যের উৎপাদন কমার কারণ হিসাবে বলা হচ্ছে- জলবায়ুগত পরিবর্তনের কথা, বলা হচ্ছে কৃষিজমি হ্রাসের কথা প্রভৃতি। যদিও প্রকৃত কারণ, প্রকৃত অবস্থা এবং প্রকৃত সত্য অনুচ্চারিতই থেকে যাচ্ছে, যেমন করে বায়ুমণ্ডলে আমাদের বসবাস সত্ত্বেও প্রায়ই তা সম্পর্কে আমরা খুব কম সচেতন থাকি।

প্রকৃত সত্যঃ
প্রকৃত সত্য হলো, এখনও দুনিয়ার মোট উৎপাদন মোট চাহিদার তুলনায় বেশী। এটা ঠিক যে, বিগত কিছু সময়ে খাদ্য উৎপাদন কিছু কমেছে, দুনিয়ার খাদ্য মজুদও কমছে। গত বছরে গমের মজুদ কমেছে ১১ শতাংশ। কিন্তু আসলেই কি সবজায়গাতে খাদ্য উৎপাদন কমেছে? উত্তর অবশ্যই না। বরং বেড়েছে। ১৯৮০ সালের তুলনায় বর্তমানে খাদ্যশস্য উৎপাদন বেড়েছে ৪০ শতাংশ- যা জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের তুলনায় অনেক বেশী, যদিও এসময় দুনিয়াব্যাপী ক্ষুধার্তের (FAO 'ক্ষুধার্ত'কে এভাবে সংজ্ঞায়িত করেঃ একজন যে প্রতিদিন বেঁচে/ টিকে থাকার মত খাবারটুকুও পায় না) সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮৫৪ মিলিয়ন।

প্রকৃত অবস্থাঃ

কিছু পরিসংখ্যান দিয়ে প্রকৃত চিত্রটি পরিষ্কার করি।
১। গত বছরে দরিদ্র দেশগুলোর খাদ্য আমদানীর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ২৫ ভাগ যা ১০৭ মিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ। (বিঃদ্রঃ ১০৭ মিলিয়ন ডলার মোট আমদানী নয় - এটা গত বছরের বাড়তি আমদানী!!)
২। খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (FAO) খাদ্য-মূল্য বৃদ্ধির ইনডেক্সে দেখা গেছে শতকরা ৪০ ভাগেরও বেশী মূল্য বৃদ্ধি ঘটেছে।
৩। গম ও তৈলবীজের মূল্য রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। গমের মূল্য প্রতি টনে বৃদ্ধি পেয়েছে ১৩০ ডলার, এই বৃদ্ধির হার ৫২ শতাংশ।
৪। গত ৫ বছরে বিশ্ব খাদ্য সংস্থার খাদ্য ক্রয় মূল্য ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
৫। মানব খাদ্য উৎপাদনের পরিবর্তে অ্যাগ্রোফুয়েলের কাঁচামাল উৎপাদনে বিপুল বিনিয়োগ হয়েছে এবং হচ্ছে। পশু খাদ্য উৎপাদনও বেড়েছে।
ফলাফল- পৃথিবীতে ক্ষুধার্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রধান জ্যাসফ ডাফ জানিয়েছেন- এভাবে চলতে থাকলে খুব অল্প সংখ্যক লোকের খাদ্য কিনে খাওয়ার সক্ষমতা থাকবে।

এর বিপরীতে আরো কয়েকটি চিত্র দেখা যাক।
১। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের চাল রপ্তানীর ১২ শতাংশ দখল করে আছে। ২০০৬ সালে আমেরিকা প্রায় ১.৮৮ বিলিয়ন ডলারের ধান উৎপাদন করেছে- যার প্রায় অর্ধেক রপ্তানী করে।
২। সাম্প্রতিক সময়ে কৃষি উৎপাদন ও বাজারজাতকারী বহুজাতিক কর্পোরেট কোম্পানীগুলোর অধিকাংশেরই নীট মুনাফা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বিশ্ব-রপ্তানী বাণিজ্য গুটিকয়েক কোম্পানীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। যেমন- মোট গম রপ্তানীর ৮৫-৯০% অংশীদারিত্ব মাত্র ৩-৬ টি কোম্পানীর, একইভাবে কফি রপ্তানীর ক্ষেত্রে এই হার ৮৫-৯০%, ধানের ক্ষেত্রে ৭০%।
৩। আমেরিকায় সরাসরি খাদ্যের জন্য ৫৮ ভাগ চাল ব্যবহার করা হয়, ১৬ ভাগ ব্যবহার করা হয় প্রক্রিয়াজাত খাদ্য হিসাবে এবং ১০ ভাগ গৃহপালিত পশুর খাদ্য হিসাবে।
৪। ২০০৭ সালে ইউএসডিএ প্রকাশিত প্রতিবেদন মতে যুক্তরাষ্ট্র ৯০.৫ মিলিয়ন একর জমিতে ভুট্টা চাষ করার পরিকল্পনা করে- যা ১৯৪৪ সালের পরের যেকোন সময়ের তুলনায় বেশী। এত বেশী জমি ভুট্টার চাষের আওতায় আনার উদ্দেশ্য অ্যাগ্রোফুয়েল।

প্রকৃত কারণঃ
কৃষি উৎপাদন কমেছে স্বল্পোন্নত বা উন্নয়নশীল দেশসমূহে, তারাই সেকারণে তাদের খাদ্য চাহিদা পূরণের লক্ষে উন্নত দেশসমূহের উদ্বৃত্ত খাদ্যের দিকে হাত বাড়িয়েছে, খাদ্যশস্য আমদানী করতে বাধ্য হচ্ছে। উন্নত বিশ্বও কৃষি উৎপাদন কিছু কমিয়েছে- তবে সেটা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যেই বা কারণেই (অ্যাগ্রোফুয়েল উৎপাদনে, পশুখাদ্য উৎপাদনে মুনাফা অনেক বেশী) কমিয়েছে। উন্নত দেশসমূহ খাদ্য উৎপাদনের ঘাটতি, মজুদ হ্রাস প্রভৃতি প্রচারণা তুলে- নিজেদের উদ্বৃত্ত খাদ্যশস্য চড়া মূল্যে বিক্রি করছে। বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল বা স্বল্পোন্নত বা অনুন্নত দেশসমূহে খাদ্য উৎপাদন হ্রাসে জলবায়ুগত দুর্যোগের প্রভাব থাকলেও তা নগণ্য। এবারে কিছু চিত্র তুলে ধরে দেখানোর চেষ্টা করবো কিভাবে এই দেশসমূহের কৃষি উৎপাদন কমছে।

১। অসম কৃষি ভর্তুকিঃ বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কৃষিচুক্তিতে স্বাক্ষর করার পর থেকে স্বল্পোন্নত/অনুন্নত দেশসমূহ কৃষি ভর্তুকি প্রায় শূণ্যের কোঠায় নিয়ে যেতে বাধ্য হয়। অথচ, যেসব উন্নত অর্থাৎ ওইসিডি দেশে কৃষি ভর্তুকির পরিমাণ ছিল ১৯৯৫ সালে ১৮২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ১৯৯৭ সালে সেটা বেড়ে দাঁড়ায় ২৮০ বিলিয়ন ডলার, ২০০১ সালে ৩১৫ বিলিয়ন ডলারে, ২০০২ সালে ৩১৮ এবং ২০০৫ সালে এসে দাঁড়ায় কমবেশী ৩০০ বিলিয়ন ডলারে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ১০০ ডলারে ভর্তুকি দিতে হয় ২৫ থেকে ৩০ ডলার। ইউরোপীয় ইউনিয়নে ভর্তুকির পরিমাণ ৪০-৫০ ডলার।

২। মুক্তবাণিজ্যঃ কৃষিক্ষেত্রে কোটা ও উচ্চশুল্ক আরোপ করে তৃতীয় বিশ্বের দেশসমূহ কৃষিপণ্যের আমদানীকে প্রতিরোধ করেছিল। ১৯৯৫ সালে "এগ্রিমেন্ট অন এগ্রিকালচার" কৃষিচুক্তিতে স্বাক্ষর করার পর এই প্রতিরোধ ব্যবস্থা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই কৃষিচুক্তি, কোটা পদ্ধতি বাতিলের মাধ্যমে কৃষিবাজার উন্মুক্ত করতে এবং একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ কৃষিপণ্য স্বল্প শুল্কে আমদানী করতে বাধ্য করে।

ফলাফলঃ আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচ্চ ভর্তুকির কারণে বিশ্বব্যপী কৃষিপণ্যের দাম কমে যায়। আর উল্টো দিকে তৃতীয় বিশ্বে ভর্তুকি হ্রাস, বেসরকারী খাতে কৃষি উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি, রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ হ্রাস প্রভৃতি কারণে কৃষি উৎপাদনের খরচ বাড়তে থাকে। আবার অন্যদিকে মুক্তবাজারের কারণে উন্নত দেশসমূহের কমদামী পণ্যের সাথে প্রতিযোগীতার মুখে উন্নয়নশীল দেশের পণ্য টিকতে পারে না। ফিলিপিন, ভারত, শ্রীলংকা সহ উন্নয়নশীল দেশসমূহের অসংখ্য চাষী দেউলিয়া হয়ে পড়েছে। ফিলিপন বিশ্লেষক এইলেন কও বলেছেন, শস্যের মূল্য একবার কমে যাওয়ার কারণে দেখা গেছে, প্রতিযোগীতায় টিকতে পারবে না বলে অনেক কৃষক ভুট্টা জমিতেই রেখে এসেছেন এবং সেগুলো জমিতেই পঁচে নষ্ট হয়। ঘানায় মাঠের পর মাঠ পতিত পরে থাকতে দেখা যায়, তারই পাশে দেখা যায়- আমদানীকৃত খাদ্য শস্যের বস্তা। ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে শুল্ক উদারনীতির প্রতিক্রিয়ায় ১৯৯৮ সালে কমপক্ষে ২৩৩ জন কৃষক আত্মহত্যা করে, আর ২০০২ সালে ২৬০০ এর বেশী কৃষক আত্মহত্যা করে।

১৯৯৫-৯৬ অর্থবছরে বাংলাদেশ কৃষিখাতে যে ভর্তুকি দিয়েছে তা মোট কৃষি উৎপাদনের ১.৫৪%। ১৯৯৮-৯৯ এ এই হার নেমে দাঁড়ায় ০.৮৯% এ, আর ২০০১-০২ এ এই হার ছিল ০.৬৭%। এর মানেই হলো বর্তমানে বাংলাদেশে কৃষিতে আসলে তেমন কোনো ভর্তুকি দেয়া হয় না। যেটুকুও বা দেয়া হয় সেচ, সার ও বীজের ক্ষেত্রে তার খুব সামান্যই ক্ষুদ্র কৃষকের কাছে পৌঁছে। যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলিতে কৃষিতে বাজেট বাড়ানো হয়েছে বলে দাবি করা হয়, কিন্তু বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে- প্রত্যক্ষ সেবা খাতে বাজেট আসলে কমে গেছে। ২০০৪-০৫ অর্থ বছরে কৃষি বাজেট যেখানে ৯০% বেড়েছে, সেখানে কৃষি বিষয়ক প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে বাজেট বেড়েছে ২০০%, আর কৃষি সেবায় কমেছে ১০%।
অন্যদিকে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কৃষিচুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে খুলে দেয়া হয় কৃষি পণ্যের বাজার। বাংলাদেশে শুল্ক হ্রাসের প্রবণতা বিশ্বব্যংক, আইএমএফ এর পরামর্শে আরো আগে শুরু হয়েছিল। ১৯৯২-৯৩ এ বাংলাদেশে আমদানী শুল্কের মোট ১৫ টি ধাপ ছিল যেখানে সর্বোচ্চ শুল্ক ছিল ৩০০%। ১৩ বছর পর ২০০৪-০৫ এ এসে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ শুল্কহার ২৫% (ধাপ চারটিঃ ০%, ৭.৫%, ১৫% ও ২৫%)।
এই দুই প্রভাবে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীরা আরো বেশী ঋণগ্রস্ত ও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বাড়ছে ভূমিহীন কৃষকের সংখ্যা, কমছে চাষযোগ্য জমির পরিমাণ। ২০০০-০১ সালে মোট কৃষি জমির পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৪৮ লাখ হেক্টর যা এই সময়কালে কমে হয়েছে ৮৪ লাখ হেক্টর।

এভাবে উন্নয়নশীল দেশের কৃষকদের সর্বস্বান্ত করে, দেশের কৃষিকে ধ্বংস করে এবং খাদ্যশস্যের জন্য উন্নত দেশসমূহের উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল বানিয়ে, তারপরে সুযোগ বুঝে খাদ্যশস্যের দাম বাড়িয়ে উন্নত বিশ্ব গড়ে তুলে মুনাফার পাহাড়।
এবারে বাংলাদেশের কৃষির অবস্থাটি একটু বিষদে দেখা যাক..

দুই
ঐতিহাসিকভাবেই বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ। যে দেশের মোট জনসংখ্যার ৭৬% বাস করে গ্রামাঞ্চলে। আবার গ্রামাঞ্চলের ৯০% মানুষ জীবিকার জন্য সরাসরি কৃষি খাত ও কৃষিসংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের উপর নির্ভরশীল।
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে সর্বাধিক কর্মসংস্থানের খাতটি হচ্ছে কৃষি। বিগত ২০০৫-০৬ অর্থবছরের তথ্য অনুযায়ী দেশের মোট কর্মসংস্থানের ৫১.৬৯% ই হয়েছে কৃষিখাতে এবং মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) কৃষি খাতের অবদান হচ্ছে ২১.৭৭%। সবচেয়ে বড় কথা- দেশের মানুষের অন্ন জোগাতে এই খাতটিই প্রধান ভূমিকা রাখে। তো, বর্তমানে এহেন গুরুত্বপূর্ণ খাতের অবস্থাটি কেমন?

কৃষি খাত অলাভজনক খাত, কৃষকের মাথায় হাতঃ
আমাদের কৃষি, সরকারের বিমাতাসুলভ আচরণে দারুন সংকটে নিমজ্জিত, কিন্তু এই নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে আলোচনা সবচেয়ে কম। সার ও ডিজেল সংকটে কৃষকের আন্দোলনের সময় ব্যাতীত এবং সম্প্রতি খাদ্য ঘাটতির সময় ব্যাতীত আমরা সাধারণত কৃষি নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাতে চাইনি কখনোই। অথচ, আমাদের অর্থনীতির প্রাণ এই কৃষি ধীরে ধীরে শুকিয়ে যাচ্ছে। আমাদের কৃষকেরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে, রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে প্রচণ্ড পরিশ্রম করে যে উৎপাদন করে, শেষ পর্যন্ত তার উৎপাদন খরচই সে তুলতে পারে না। ফলে অব্যাহত ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে সে ঋণের দায়ে পড়ে এবং শেষ পর্যন্ত সে তার শেষ অবলম্বন এক টুকরো আবাদী জমি বিক্রি করতে বাধ্য হয়। এভাবে সর্বস্বান্ত ও বেকার হয়ে পড়ে, বাঁচার তাগিদে সে শহরে পাড়ি জমায়।
নীচের সারণীতে এক পলক চোখ বুলালেই আমরা দেখতে পাবো, কিভাবে ধীরে ধীরে কৃষি একটি অলাভজনক খাতে পরিণত হয়েছে।

সারণী-বিভিন্ন ফসলের প্রাপ্তি/ব্যয় অনুপাত

শস্য/বছর--------১৯৮১/৮২-১৯৮৬/৮৭-১৯৯১/৯২-১৯৯৬/৯৭-২০০১/০২-২০০৫/০৬

আউশ (দেশীয়)--০.৯৬------১.০৪------১.০৯------০.৬৬------০.৭৬------০.৬২
আউশ (উফশী)--১.২৮------১.৩৩------১.৩৬------০.৮২------০.৭৬------০.৮১
আমন (এলটি)---১.৪৯------১.৮৫------১.৪৮------১.০৬------১.০৬------০.৯৬
আমন (এম)-----১.২২------১.৭৯------১.৬৫------১.০৯------১.২৭------০.৯৯
বোরো (এলটি)--১.৪৬------১.১৩------০.৯৮------০.৬৫------০.৮৩------০.৭০
বোরো (এম)-----১.৪৪------১.৬৯------১.৩২------০.৯৮------১.০২------০.৮৯
গম (এম)---------১.৩৩------১.১৪------১.১৬------১.০৯------১.০৪------১.০৭

লাভজনক না হওয়ার কারণগুলোঃ
প্রথমত, ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির তুলনায় উপকরণ খরচের হার বেড়েছে।
দ্বিতীয়ত, উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়ার হার উপকরণের দাম বাড়ার হারের চেয়ে কম হয়েছে।
তৃতীয়ত, উপকরণ ব্যয় বাড়ার হার অত্যন্ত উচ্চ ও দ্রুত হয়েছে বাজারবিরোধী তৎপরতায় (যেমন মধ্যস্বত্বভোগীদের মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি, কালোবাজারি ও মজুতদারি)।
চতুর্থত, কৃষি উদারীকরণের কারণে বাজার এমনভাবে নিয়ন্ত্রণহীন করা হয়েছে যে বাজার থেকে উৎপাদকরা কম ও ব্যবসায়ীরা অধিক লাভ পেয়েছে। যেহেতু বাজারে ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণের কোনো ব্যবস্থা নেই, সেহেতু ব্যবসায়ীরা কৃষক তথা উৎপাদকের কাছ থেকে তুলনামূলক কম দামে পণ্য কিনে নেয়। আর ব্যবসায়ীদেরই বাজারে সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে, যা উৎপাদকের নেই।
কৃষিখাতটি এহেন অলাভজনক হওয়ার এই কারণগুলোর আরো গভীরে ঢুকতে চাইলে কয়েকটি বিষয়ে আমাদের দৃষ্টি দেয়া দরকার। নীচে একে একে সংক্ষেপে সে আলোচনাটি করা যাকঃ

বিএডিসি'র ভূমিকাঃ সোনালী(!!) অতীতে
বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে কার্যত এককভাবেই কৃষি উৎপাদনের বিভিন্ন উপকরণ যেমন সার, বীজ, কীটনাশক ও সেচ-যন্ত্রপাতি আমদানী, সংগ্রহ ও বিতরণ-বিপননের কাজগুলো করত। একটা সময়ে ভর্তুকি দিয়ে বিএডিসির মাধ্যমেই এককভাবে সার বিতরণ করা হত। এই ভর্তুকির ব্যবস্থার ফলে ক্ষুদ্র ও গরীব কৃষকদের জন্য কম দামে সার কেনার সুযোগ ছিল। এছাড়াও বিএডিসির তত্ত্বাবধানে সমবায়ভিত্তিক মালিকানা ব্যবস্থায় কৃষকদের পানি-সেচের সুবিধা দেয়া হত। এই ব্যবস্থায় সেচ কার্যক্রমের ব্যয় কম পড়ত বলে দরিদ্র ও প্রান্তিক চাষীরা সহজেই সুযোগটি নিতে পারত। অন্যদিকে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সেচের পানি সরবরাহ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পানি নিষ্কাশনের কাজ দেখভাল করত। ব্যবসায়ী-সিণ্ডিকেটের কারণে বাজারে কোনো সমস্যা দেখা দিলে সেটি এড়াতে বা মোকাবেলায় টিসিবির মাধ্যমে সরকার হস্তক্ষেপ করতে বা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারত। এ দেশে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) নামের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি খুবই শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে পারত।

কৃষির বিরাষ্ট্রীয়করণ ও উদারীকরণঃ
উপরের চিত্রটি আজ আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। কেন?
১৯৭১-৭২ অর্থবছরে যেখানে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় কৃষি খাতে সরকারের মূলধনী ব্যয় ছিল ৩১%, সেখানে তা কমতে কমতে ২০০৫-০৬ অর্থবছরে ৩%-এরও নীচে নেমে এসেছে। তেমনিভাবে ১৯৯১ সালে যেখানে কৃষি খাতে সরকারের রাজস্ব ব্যয় ছিল ১০%, সেখানে ২০০৫-০৬ অর্থবছরে তা কমে ১.২%-এ নেমে আসে। এর অর্থ হল, কৃষি খাতে সরকারের ভর্তুকি প্রদান মারাত্মকভাবেই কমেছে। কেন?

কারণ, কৃষির বিরাষ্ট্রীয়করণ ও তথাকথিত উদারীকরণ।
আশির দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে বাংলাদেশ কৃষি উপকরণ সরবরাহ খাতে উদারীকরণ তথা বিরাষ্ট্রীয়করণ শুরু করে। এটি করা হয় কৃষিতে বেসরকারী খাতের সম্পৃক্ততা বাড়ানো এবং বহির্বাণিজ্য উদারীকরণ মানে আমদানী পর্যায়ের শুল্ক হ্রাস করার মাধ্যমে। বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ এর চাপে ক্রমান্বয়ে কৃষিখাতে ভর্তুকি হ্রাস ও অন্যান্য রাষ্ট্রীয় সেবা সুবিধা কমিয়ে আনার মাধ্যমে বাংলাদেশের কৃষিতে দ্রুততর উদারীকরণ ঘটে।
বিশ্বব্যাংক ১৯৭৯ সালে খাদ্যনীতির ওপর প্রথম একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এর বছর তিনেক পরে ১৯৮২ সালে 'বাংলাদেশঃ খাদ্যশস্যে স্বয়ম্ভরতা ও ফসলের বৈচিত্র্যকরণ' শীর্ষক দ্বিতীয় প্রতিবেদন প্রকাশ করে। দুটি প্রতিবেদনেই বিশ্বব্যাংক উৎপাদন বাড়ানো ও খাদ্যশস্যে স্বনির্ভরতা অর্জনের ওপর জোর দিয়ে কৃষি উদারীকরণের পরামর্শ দেয়।

'কাঠামোগত সমন্বয় কর্মসূচি' -স্যাপঃ
এরই মধ্যে অর্থাৎ আশির দশকের গোড়ার দিকে স্যাপ এর আওতায় বাংলাদেশের কৃষি খাতে সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু হয়, যা নব্বইয়ের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত চলে। এই কর্মসূচির আওতায় বাস্তবায়িত উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপগুলো হচ্ছেঃ
# কৃষিখাতে বিশেষ করে সারে ভর্তুকি হ্রাস/ প্রত্যাহার, সার সরবরাহ- ব্যবস্থার বেসরকারীকরণ,
# আশির দশকের শেষ নাগাদ বেসরকারীভাবে সেচ যন্ত্রপাতি আমদানীর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার,
# ১৯৯৫ সালে বেসরকারী খাতে চালসহ খাদ্যশস্য আমদানীর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার,
# কৃষি খাতে বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মাধ্যমে সার আমদানী, বিক্রয় ও বিতরণ এবং সেচ কার্যক্রম ও বীজ বিতরণের দায়িত্ব ক্রমান্বয়ে সংকোচন,
# আশির দশকেই সরকারীভাবে খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থায় সংস্কার সাধন। পল্লী অঞ্চলে রেশন বন্ধ করে খাদ্য নিরাপত্তার নতুন কর্মসূচি কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) ও ভিজিডি (ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং) পরিচালনার নীতি গ্রহণ করা হয়।
# ১৯৯২ সালে জাতীয় বীজনীতি প্রবর্তন করে তাতে বীজ উৎপাদন বেসরকারী খাতে ছেড়ে দেয়া হয়। তবে পাঁচটি শস্য এককভাবে সরকারের হাতেই রেখে দেয়া হয়।


সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে যে, কৃষি খাতের আয় ও লাভ কমে যাওয়ার বিষয়টি একাধারে জটিল ও বহুমুখী। তবে পুরোটাই বাংলাদেশের সরকারী তথা রাষ্ট্রীয় নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। বিশেষত গত দেড় দশকে বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক কৌশলে ক্রমান্বয়ে কৃষি বিষয়ক সবরকম সংরক্ষণমূলক ব্যবস্থা তুলে নেয়ার কাজ করা হয়েছে। "মুক্তবাজার অর্থনীতিতে চাহিদা-যোগানের মিথস্ক্রিয়ায় পণ্য-সামগ্রীর দাম নির্ধারিত হয়", "মুক্তবাজার অর্থনীতিতে সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারে না", -এসব তত্ত্বকথা বলে বিশ্বব্যাংকের কথিত কাঠামোগত সমন্বয় কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশ ট্রেডিং কর্পোরেশন (টিসিবি)সহ প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রীয় সংস্থাকে পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় করে ফেলায়, প্রয়োজনের সময় সরকারের পক্ষে কার্যকরভাবে বাজারে হস্তক্ষেপ করা সম্ভব হচ্ছে না।


সমাধানঃ
সমাধান একটাই। বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ এর কবল থেকে বেরিয়ে স্বাধীন অর্থনীতি গড়ে তোলা, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব প্রতিষ্ঠানসমূহকে পুনরুজ্জীবিত ও সক্রিয় করা, রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনায় ও বাজেটে কৃষি খাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া। এক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা প্রধান। ফলে অতীত সরকারসমূহের ভূমিকা পর্যালোচনা করে, জনগণের উচিত সচেতনতা বৃদ্ধি করা- সর্বাত্মক কৃষি আন্দোলনের মাধ্যে সরকারকে বাধ্য করা এবং প্রয়োজনে কৃষি-বিরোধী সরকারসমূহকে আস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করে জনগণের প্রকৃত সরকার গঠন করা!!!
দুনিয়াজুড়ে, কৃষকদের আন্দোলন জোরদার হচ্ছে, কৃষকদের মধ্যে দাবিদাওয়া নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং এ আন্দোলন বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ-ডব্লিওটিও এর তাঁবেদার সরকারকে উচ্ছেদের আন্দোলনেও গিয়ে রূপান্তরিত হচ্ছে। কেননা, এটাই একমাত্র সমাধান।

এক্ষেত্রে প্রশ্ন আসতে পারে যে, আসলেই কি দাতাসংস্থার লম্বা হাত এড়ানোর ক্ষমতা আমাদের মত দেশের সরকারগুলোর আছে, যেখানে সরকার নিজেরাই দুর্নীতিবাজ? থাকলে, কিভাবে?
উত্তরে বলবো, অবশ্যই আছে। তবে সেটা যেকোন সামরিক বা সেনা সমর্থিত সররকারের চেয়ে গণতান্ত্রিক সরকারের বেশী আছে। কেননা, এই সামরিক সরকারের জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা গণতান্ত্রিক সরকারের চেয়ে কোনো অংশে বেশী থাকতে পারে না- হোক না গণতান্ত্রিক সরকার যতই দুর্নীতিগ্রস্ত!!
আসলে, গণতান্ত্রিক সরকারকে যেহেতু ৫ বছর পরপর হলেও জনগণের কাছে যেতে হয়- ফলে কিছুটা হলেও তার জনগণের কথা ভাবতে হয়। ফলে- সে সর্বদাই থাকে দুধরণের চাপের মধ্যে- একটি আন্তর্জাতিক দাতা গোষ্ঠীর, আরেকটি দেশের মানুষের। এখন দেশের মানুষের চাপটি যদি বড় করা যায়- মানুষের লড়াই সংগ্রাম যদি বেশী থাকে, তবে সে আন্তর্জাতিক চাপের কাছে মাথা কম নোয়ায়। কিছু উদাহরণ দেইঃ
স্যাপ কর্মসূচির আওতায়১৯৮৪-৮৫ সালে সার বিপণন বেসরকারীকরণ করা হয় (১৯৮৫ সালের জুলাই মাসের মধ্যে বিএডিসি থানা পর্যায়ের প্রায় ৪২৩টি বিক্রয় কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়। ১৯৮৮ সালের মাঝামাঝিতে এসে প্রায় ৮০০০ পাইকার ও ডিলারকে প্রত্যাহার করা হয়), এবং মার্চ ১৯৮৯ সালে কারখানা থেকেও বেসরকারীভাবে সার সংগ্রহ ও বিপণনের অনুমতি দেয়া হয়।
কিন্তু ১৯৯৫ সালে আবার সরকার বাধ্য হয় ইউরিয়া সারের বিপণন ও বিতরণ পুরোপুরি রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে। এটি এখনও বজায় আছে। এটি কিন্তু বিশ্বব্যাংকের স্যাপ কর্মসূচির পরিপন্থী। একাজটি সরাকার করলো শুধুমাত্র এই কারণে যে- সে সময় সার নিয়ে কৃষকরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেছিল- এমনকি বুকের রক্তও ঢেলে দিয়েছিল।
এছাড়াও আমাদের গ্যাস, বন্দর, কয়লা এসব নিয়েও দাতাগোষ্ঠীদের বিভিন্ন চক্রান্ত সফল হয় নি, বা গণতান্ত্রিক সরকারসমূহ বাস্তবায়ন করতে পারেনি- সেগুলোকে নিয়ে আন্দোলনের ফলেই।
সুতরাং পুরোটাই নির্ভর করছে, আমাদের জনগণ কতখানি সচেতন ও কিভাবে ক্রিয়া করছে তার উপর।


তথ্যসূত্রঃ
উন্নয়ন অন্বেষণ এর গবেষণাপত্র এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০০৬।

[বন্ধু নাস্তিকের ধর্মকথার অনুরোধে তিনটি পোস্ট (দুটি লেখা) কে একত্রিত এই পোস্ট তৈরি করেছি, অনেকেরই এটি আগেই পড়া হয়ে থাকতে পারে।]
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:৫৪
৪৩টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×