somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিজ্ঞানের খাতা- পর্ব ১৭: ফলের জ্যুস তৈরির মেশিন ব্লেন্ডার আবিষ্কার।

৩০ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৯:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বৈশাখের শেষে বাংলার আকাশ বাতাস মুখরিত হবে আমের মৌ মৌ গন্ধে। আম জাম কাঁঠাল লিচু বনে মধু মাছিরা মুখর হয়ে রবে সারা বেলা। আম আর দুধ দিয়ে ভাত মেখে খেতে ভালো বাসে এমন বাঙালী পৃথিবীর বুকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। আমের রস আমাদের উপাদেয় পানীয়। রস আস্বাদন করার জন্য দাঁত আর জিহবা যথেষ্ট হলেও যখন একাধিক ব্যক্তির জন্য সেটা সরবরাহ করা হয় তখন ব্লেন্ডার অত্যাবশ্যকীয় হয়ে পড়ে। আজ ব্লেন্ডার নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই।

মোটর আবিষ্কার আমাদের জীবনকে স্বাচ্ছন্দময় করে তুলেছে। প্রাথমিক অবস্থায় মোটর শুধু শিল্প কারখানা এবং গাড়ীতে ব্যবহৃত হত। কারণ তখনকার দিনের মোটরের সাইজ ছিলো বিশাল এবং কার্য ক্ষমতা বা হর্স পাওয়ার ছিলো বেশী। হর্স পাওয়ার হলো ক্ষমতার একক। পরে অল্প ক্ষমতার মোটর আবিষ্কৃত হয় যার দ্বারা গৃহে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি তৈরী করা সম্ভব হয়। অল্প ক্ষমতার এই মোটর গুলোকে বলা হত ফ্রাকশানাল হর্স পাওয়ার মোটর (fractional horsepower motor)। টু রেসিন, উইনকনসিন ইনজিনিয়ার্স, চেস্টার বিচ এন্ড ফ্রেডরিক অসিয়াস এবং লুইস হ্যামিলটন প্রথম দিকে ছোট মোটর প্রস্তুত করেন যা AC অথবা DC বৈদ্যুতিক শক্তিতে চলতে পারে। AC ও DC বিদ্যুৎ কি তা আমি আমার বিজ্ঞানের খাতাঃ বৈদ্যুতিক চেয়ারের মৃত্যুদন্ড লেখায় বলেছি। ১৯১০ সালে সর্বপ্রথম হ্যামিলটন বিচ বৈদ্যুতিক “হ্যান্ড হেল্ড ম্যাসাজার” তৈরী করতে সক্ষম হন।

১৯২২ সালে স্টেফান পোপলাওস্কি ব্লেন্ডার আবিষ্কার করেন। পোপলাওস্কিই প্রথম কন্টেইনারের নিচের অংশে ব্লেড সংযুক্ত করেন। পোপলাওস্কি ছিলেন পোলিশ। ১৮৮৫ সালের ১৪ আগস্ট তিনি পোল্যান্ডে জন্মগ্রহন করে এবং ১৯৫৬ সালের ৯ ডিসেম্বর উইসকনসিনের রেসিনে দেহত্যাগ করেন। ১৯৩২ সালে একটি যন্ত্রের প্যাটেন্ট লাভে সক্ষম হন যে যন্ত্রটি ফল এবং সবজিকে তরলে রুপান্তরিত করতে সক্ষম। বুঝতেই পারছেন যন্ত্রটি কি জিনিস! ব্লেন্ডার আবিষ্কারের ফলে রান্নাঘরের সময় অনেকটা কমে এলো। ফলে প্রতিটি আমেরিকানের রান্না ঘরের এখন ব্লেন্ডারের সরব উপস্থিতি। বাঙালী উচ্চবিত্ত তো বটেই এখন মধ্যবিত্তের ঘরেও ব্লেন্ডার পাওয়া যায়। ফলের জুস, মসলা পেষা সব কাজেই ব্লেন্ডারের ব্যবহার চলছে। আমি এক আন্টির বাসায় গিয়ে অবাক হয়ে দেখলাম তিনি চালের গুঁড়ি বানাচ্ছেন ব্লেন্ডারে পিষে।




প্রথম দিকে ব্যবসায়িক ভাবে সফল ব্লেন্ডার হচ্ছে ওয়ার্নিং ব্লেন্ডার। অর্কেষ্ট্রা দলনেতা ফ্রেড ওয়ার্নিং এর নামানুসারে ব্লেন্ডারের নামকরন করা হয়। এটার আসল নাম ছিলো মিরাকল মিক্সার। ১৯৩৭ সালে ওয়ার্নিং ব্লেন্ডার প্রথম বাজারে আসে এবং প্রতিটির মূল্য ছিলো ২৯.৭৫ ডলার। ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত মোট ১০ লক্ষ ওয়ার্নিং ব্লেন্ডার বিক্রি হয়। ফ্রেডরিক ওসিয়াস প্রথমে পোপলাওস্কির ব্লেন্ডারের মান উন্নতকরণের উপর কাজ করতেন। তিনি অর্থনৈতিক কারণে পরে ওয়ার্নিং এর সাথে যোগ দেন।

১৯২২ সাল- দ্যা স্টিভেনস ইলেকট্রিক কোম্পানী’র মালিক স্টেপান যে পোপলাওস্কি ব্লেন্ডার উদ্ভাবন করেন।
১৯২২ সাল- ওষুধের দোকান গুলোতে হরলিকস দানা মেশানো দুধ ঝাকানোর কাজে ব্লেন্ডার গুলো বিক্রি করা হতো।
১৯২৩ সাল- দ্যা স্টিভেনস ইলেক্ট্রিক কোম্পানী বাজারে নিয়ে এলো লিকুইফায়ার ব্লেন্ডার। (তরলিকরন ব্লেন্ডার)
১৯৩২ সাল- পোপলাওস্কি ফলের রস তৈরীর মেশিনের প্যাটেন্ট অর্জন করলেন।
১৯৩৭ সাল – ফ্রেডরিক ওসিয়াস পোপলাস্কির ব্লেন্ডারের উন্নতিসাধন করেন এবং বাজারে আনেন মিরাকল মিক্সার।
১৮৩৮ সাল – ওসিয়াস তার পণ্যের নাম পরিবর্তন করে রাখে ওয়ার্নিং ব্লেন্ডার। অর্কেষ্টা দলের দলনেতা ফ্রেড ওয়ার্নিং ছিলেন ওসিয়াসের অর্থদাতা।
১৯৪৬ সাল – জন অস্টার স্টিভেনস ইলেক্ট্রিক কোম্পানী কিনে নেন এবং বাজারে নিয়ে আসেন অসটেরিজার (Osterizer®)।



.

সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৯:৪১
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×