somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রক্তভোর কাফি কামাল (একটি মৌলিক ছোটগল্প)

০৬ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ৮:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রক্তভোর
কাফি কামাল
ভোরের আলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লোকজনের ভিড় বাড়ছে মৃধাবাড়ির পুকুর ঘাটে। এ এক রহস্যময় রক্তাক্ত ভোরের দর্শন। সবটুকু ভীতিকর কৌতূহল সেখানে তাজা খুনের সঙ্গে একাকার। আর এভাবেই একটি রক্তাক্ত ভোরের উদয় হলো দুর্লভপুরে। গ্রামের মসজিদ ফেরত বুড়োরাই প্রথম প্রত্যক্ষ করল সে ভোরের দৃশ্যপট। তাদের শিরদাঁড়া বেয়ে নেমে গেল বিস্ময় আর আতঙ্কের যুতবদ্ধ একটি শিহরণ। হতবাক হয়ে গেল দুর্লভপুরের লোকজন। এ কী হলো! কেন হলো? কে বা কারা দিয়েছে এ দৃশ্যের জন্ম? কৌতূহলময় প্রশ্নে প্রশ্নে সে বিস্ময়াতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লো চতুর্দিক; দিগি¦দিক।
রাতে কালবোশেখির আগমন বার্তা জানিয়ে গেছে এক পশলা বৃষ্টি। ধুলো ওড়া মেঠোপথ থকথকে হয়ে উঠেছে কাদায়। সুবহে সাদেকের ফর্সামুখী অন্ধকারে কাদা মাড়িয়ে মসজিদে গেছেন মুসল্লিরা। মসজিদের শান বাঁধানো পুকুর ঘাটে কাদা ধুয়ে ওজু সেরেছেন তারা। বাড়ি ফেরার সময় একটু সতর্কভাবেই পা ফেলছিলেন সবাই। কিন্তু বাহাদুর বাড়ির বুড়োকর্তা করিম বাহাদুর মৃধাবাড়ি হয়ে ক্ষেতের দিকে যাচ্ছিলেন। জিহ্বায় তসবিহ টিপে হাঁটছিলেন অলস ভঙ্গিতে। হঠাৎ একটি পা কাদার গর্তে ডুব দিলে মুহূর্তেই কুপোকাৎ হলেন তিনি। ভাগ্য ভালই বলতে হবে, তেমন আঘাত পাননি। কিন্তু বয়েসী শরীর তাই একটু সময় নিয়েই উঠে দাঁড়ালেন। যদিও সাতসকাল তবুও আল্লাহর দেয়া বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট কাদায় তিনি কুপোকাৎ হয়েছেন। তাই মুখ নষ্ট করার উপায় নেই। মসজিদ থেকে বেরিয়ে আল্লাহর সিদ্ধান্তের তো আর সমালোচনা করা যায় না। খানিকটা বিরক্তি নিয়েই ধানক্ষেতের পরিবর্তে অদূরে মৃধাবাড়ির পুকুর ঘাটের দিকে হাঁটা ধরলেন। পাঞ্জাবী আর লুঙ্গির কাদাগুলো কাছা মেরে ধুয়ে তারপর ধানক্ষেতে যাবেন। তার এহেন অবস্থা দেখে দক্ষিণপাড়ার বুড়ো মফজল খিক করে হেসে উঠল। হাসির রেশটা বাতাসে ছড়িয়ে পড়ার আগেই বললেনÑ বাহাদুর ভাই মওসুমটি আপনার ভালই যাবে। আছাড়ে-পিছাড়ে বুড়োহাড়গুলো আরও মজবুত হবে। দেখেন আবার কুস্তির মওকাও দরোজার কড়া নাড়তে পারে। বুড়ো বাহাদুর সেদিকে খেয়াল করে না।
পুকুর ঘাটে পৌঁছেই চোখে সর্ষে ফুল দেখলেন বাহাদুর। কিন্তু এখন তো সর্ষে ফুলের মওসুম না। তাহলে!? সত্তরের আশপাশে বয়স। কখনও এমন দৃশ্য দেখেনি। বাঁধানো পুকুরের ঘাটে পড়ে আছে মৃধাবাড়ির সেজো ছেলে সোলেমানের নিথর দেহ। বাম কাঁধ থেকে বুক অব্দি তরমুজের মতো দ্বিফালি। রক্তে ভেসে গেছে পুকুর ঘাট। জলসিঁড়ি দিয়ে চুইয়ে পড়ছে রক্তজল। এমন ভয়ানক দৃশ্য বুড়ো বাহাদুরের ভেতর থেকে বের করে আনে একটি আর্তনাদÑ ও আল্লাহ গো।

ফজরের আজানের আগেই ঘুম ভেঙে যায় সোলেমানের। ছুটে যায় পুকুরে। সকাল আটটার মধ্যেই তাকে ফিরতে হবে নরসিংদী শহরে। তাই তার এত তাড়াহুড়ো। তখনও ঘুমের ঘোর কাটেনি রানু বেগমের। তবু চোখ কচলাতে কচলাতে বিছানা ছাড়ে সে। চুলোয় রান্না বসিয়ে আঙিনার টিউবওয়েলে যায়। শহরে রওনা দেয়ার আগে দু’টো গরম ভাত খেয়ে যাবে। এ জন্য রানু বেগম একপা রান্না ঘরে একপা আঙ্গিনায় করে দ্রুত কাকস্নান সেরে নেয়। কিন্তু সোলেমানের ফেরার কোন নামগন্ধ নেই। লোকটা গেল কই? নিশ্চয় পাড়ার কোন লোকের সঙ্গে গল্প জুড়ে দিয়েছে। রানু বেগম মনে মনে কিছুটা বিরক্ত হয়। সে দ্রুত টেবিলে খাবার সাজায়। মধ্যখানে একবার ভেবেছিল উঠোনে গিয়ে ডাক দেবে। কিন্তু নতুন বউ, ঘরে ভাশুর। রানু বেগম যখন টেবিলে খাবার সাজাচ্ছিল তখনই বুড়ো বাহাদুরের চিৎকারটি কানে আসে। পুকুর ঘাট থেকে চিৎকারের শব্দ শুনে রানুর কলিজাটা কেমন যেন করে উঠে।
বাহাদুরের চিৎকার শুনে চারদিক থেকে ছুটে আসে নানা লোকজন। কেউ মসজিদ ফেরত নামাজি, কেউ বা লাঙল কাঁধে ক্ষেতমুখী কৃষক। প্রথম দৃশ্যে সবাই হতবাক। পুকুর ঘাটে হৈ চৈয়ের শব্দ শুনে রানু উঠোনে বেরোয়। সোলেমানের বুড়ি মাও সঙ্গে বেরোয়। বুড়ি আগে রানু পেছনে পুকুর ঘাটে ছুটে যায়। তাদের দেখেই সোলেমানের বুড়ি মাকে কয়েকজন ডাক দেয়Ñ মরির মা সোলেমান...। কথাটি শেষ হওয়ার আগেই মরির মা জিজ্ঞেস করেÑ আমার সোলেমানের কি হয়েছে?
কে একজন বলেÑ খুন। খুন শব্দটি শুনেই আর্তনাদ করে দৌড়ে লাশের উপর আছড়ে পড়ে সোলেমানের বুড়ি মা আর তরুণী বউ। মুহূর্তেই কান্নায় ভেঙে পড়লো মৃধাবাড়ির লোকজন। গগনবিদারী চিৎকারসহযোগে সোলেমানের মা বিলাপ ধরলো। ও আল্লাহ গো। আমার সোলেমানের একি হলো গো। কারা সোলেমানরে মারলো গো। কি অন্যায় করছিল সে। আমার বুকের ধনরে কেড়ে নিল গো। অদৃশ্যকে অভিশাপ দিচ্ছে বুড়ি। তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কাঁদছে মৃধাবাড়ির লোকজন। তাদের কান্নার রেশ সমবেতদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ছে। কারও কারও কপোল বেয়ে নামছে নিরব অশ্রু। লোকজনের সামনে উঠোনের বাইরে না বেরুনো রানু বেগম নিহত স্বামীর শরীর জড়িয়ে ধরে বিলাপ করতে থাকে। একপর্যায়ে সংজ্ঞা হারালে সবাই তাকে ধরাধরি করে বাড়িতে নিয়ে যায়। সবার মুখেই প্রশ্ন কেবলÑ কেন খুন হলো, কারা খুন করলো? উত্তর নেই কোনো।
বাহাদুর বুড়োই প্রথম দর্শক। গ্রামের হাজারো লোক থাকতে তার কপালেই জুড়লো একটি খুনকৃত মৃতদেহের প্রথম দর্শকের তকমা। যদিও কেউ তাকে সন্দেহ করেনি, করবেও না। সে যে মসজিদ গিয়েছিল, ফেরার সময় কাদায় কুপোকাৎ হয়ে মৃধাবাড়ির পুকুরপাড়মুখী হয়েছে সেটা দক্ষিণপাড়ার বুড়ো মফজল দেখেছে। ইতিমধ্যেই সে এ কথাটি বেশ কয়েকবার আওড়িয়েছে লোকজনের জিজ্ঞাসার উত্তরে। মৃধাবাড়ির লোকজনও দেখেছে তার কর্দমাক্ত পোশাক-আশাক। এমন কি তার হাতে কোন অস্ত্রও নেই। না কিরিচ-তরবারি, না দাও-বঁটি। বুড়ো বাহাদুর নিজে নিজেই নিশ্চিত হতে চায় যে সে খুনটি করেনি। তবু বয়স বলে কথাÑ মন আর দেহের আচরণ উল্টোপাল্টা হতেই পারে। সেই হয়তো খুন করেছে কিন্তু এখন যুক্তি দাঁড় করাচ্ছে খুন করেনি। তবে ব্যক্তি বাহাদুর একেবারে আলাভোলা নয়। ঘটনার আকস্মিকতা কাটিয়ে উঠার পর বুঝতে পেরেছে এখানে তার ভূমিকা দর্শকের, খুনির নয়। তাই কেউ তাকে ফাঁসাতে পারবে না। কিন্তু ভাগ্যই তাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। এখন তাকে প্রথম দর্শক হিসেবে সাক্ষ্য দিতে হবে। থানা-পুলিশ আর কোট-কাচারি দৌড়াতে হবে। এবার মওসুমটি তার কুফায় কাটবে সেটা বুঝতে পারলো বুড়ো বাহাদুর।
মৃধাবাড়ির পুকুর ঘাটে ভোরের শান্ত সৌম্য পরিবেশটি কান্নাকাটি আর কোলাহলে মুখর হয়ে উঠলো। ঘোমটা তুলে ততক্ষণে নিজের রাঙা মুখটি বের করলো সূর্য। কোলাহলের ভেতর থেকে কেউ একজন বললেনÑ লাশ, বাড়ির উঠোনে নিয়ে চল। তার কথা শেষ না হতেই কয়েকজন সমস্বরে বলে উঠলোÑ না না, পুলিশ আসার আগে লাশ সরানো যাবে না। পরে সমস্যা হবে। ততক্ষণে তাদের মনে হলো পুলিশে খবর দিতে হবে। খুনের ঘটনায় আবেগ চলে না। মোল্লা বাড়ির তমিজউদ্দিন পুলিশে খবর দেয়ার উদ্যোগ নেন। তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে গ্রামের সফিজ মেম্বারের বাড়ির দিকে রওনা দেন। ওই বাড়ি থেকেই টেলিফোনে গাঙপুর থানায় খবর দিতে হবে।
মেম্বার বাড়ি পৌঁছেই হতাশ হলো তমিজ মোল্লা। ফোনটি কয়েকদিন ধরে নষ্ট। এখন থানায় যাওয়া ছাড়া উপায় নেই। তমিজ মোল্লা ঘাবড়ে গিয়ে বলে- এখন কি হবে?
কেন? তাড়াতাড়ি থানায় যাও। আমার কথা বলো।
এবার তমিজ মোল্লা অনুরোধ করে- সফিজ ভাই চলেন আমার সঙ্গে, একা ভয় লাগে। আইনের লোক সঙ্গে না থাকলে এসব ঘটনায় জড়ানো বিপজ্জনক। কখন কোন প্যাঁচে ফেলে কোন অঘটনে জড়ানো হবে বলা মুশকিল।
সাতসকালে নিজের গ্রামে খুনের কথা শুনে মেম্বারও অবাক। তবু জনপ্রতিনিধি বলে কথা। তড়িঘড়ি পোষাক পাল্টে তমিজের মোটর সাইকেলে চড়ে রওনা দিলেন গাঙপুর থানায়।

মৃধাবাড়ির লোকজন সোলেমানের নিথর দেহ জড়িয়ে কান্নাকাটি করছে। স্বামীর মৃতদেহ দেখেই জ্ঞান হারিয়েছেন নববিবাহিতা রানু বেগম। এখনও তার হাতে মেহেদীর রং মুছেনি। বিয়ের মাত্র ১১ মাসের মাথায় হারাতে হলো প্রাণপ্রিয় স্বামীকে। বিনাদোষে, কারণহীন। কেউ বুঝতে পারছে না কেন এমনটি হলো। তারপরও গ্রামের লোকজন কৌতূহল আর সহানুভূতি নিয়েই বেঁচে থাকে। কোন ঘটনা ঘটলেই তারা ঘটনাস্থলে ভিড় করে। এটা-ওটা জানতে চায়। আহ্-উহ্ করে। মৃধাবাড়িতেও তার ব্যতিক্রম হলো না।
পাঞ্জাবি-লুঙ্গির কাদা না ধুয়েই ঢলতে ঢলতে বাড়ি ফিরলেন বুড়ো বাহাদুর। বোকার মতো চেহেরায় ঘরের দাওয়ায় কিছুক্ষণ বসে থেকে কাপড় পাল্টে নিলেন। ততক্ষণে কয়েকটি রুটি আর ঝোলের বাটি টেবিলে রেখে গেছে পুত্রবধূ। কিন্তু তার পেটে ক্ষুধা নেই, মনটাও বড্ড এলোমেলো।
সূর্য যখন মধ্যগগনে যৌবনের উত্তাপ ছড়াচ্ছে তখনই তমিজ মোল্লার মোটরসাইকেলটি এসে থামলো মৃধাবাড়ির পুকুর ঘাটে। মোটরসাইকেলে করে এসেছেন গাঙপুর থানার এসআই খলিল। অপ্রশস্ত আঁকাবাঁকা রাস্তার কারণে পুলিশের পেট্রোল ভ্যানটি মৃধাবাড়ি পর্যন্ত আসতে পারে না। সেটি গ্রামের মূল রাস্তায় রেখে কয়েকজন কনস্টেবল পেছন পেছন আসছে। পুলিশ দেখে মৃধাবাড়ির লোকজনের মিইয়ে পড়া কান্নার স্বর নতুন করে উছলে উঠলো। সোলেমানের বউ নতুন করে জ্ঞান হারালো। সোলেমানের বুড়ি মায়ের বিলাপ রূপ নিল গোঙানীতে। এরই মধ্যে কোন এক মহিলা তাকে বলেছে- পুলিশ ময়নাতদন্তে নামে লাশের শরীর থেকে অঙ্গ-প্রত্যক্ষ কেটে নেয়। শুনেই বুড়ি আর্তনাদ করে ওঠে। ছুটে গিয়ে পুলিশের হাত ধরে বলেÑ বাবারে, আল্লাহর দোহাই লাগে, আমার সোলেমানের শরীরটা কাটাকুটি করবেন না। এসআই খলিল নির্বিকার ভঙ্গিতে সফিজ মেম্বারের দিকে তাকালেন।
সফিজ মেম্বার পুলিশ অফিসারের চোখের ভাষা বুঝে। চাহনির সমূহ কারণও ধরতে পারে। এখন তাকে দেনদরবারকারীর ভূমিকায় নামতে হবে। নিহত সোলেমানের পরিবার মামলা করবে কিনা, কাউকে সন্দেহ করে কিনা, ময়না তদন্ত করবে কিনা, মেম্বার কাউকে ফাঁসাতে চায় কিনাÑ অনেক জিজ্ঞাসা অফিসারের চাহনিতে। প্রতিটি জিজ্ঞাসার বিপরীতে চলবে কড়কড়ে নোটের কারবার। মামলা করলেও টাকা, ময়না তদন্ত না করালেও টাকা। সবচেয়ে বেশি টাকা খুনকে কেন্দ্র করে গ্রামের কাউকে ফাঁসানো গেলে। দু’পক্ষই জলের মতো খসাবে টাকা। মৃধাবাড়ির লোকজনের হুঁশ নেই। পাশের মোল্লা বাড়ি থেকে কয়েকটি চেয়ার এসে পুকুর পাড়েই বসানো হলো পুলিশকে। চা-নাস্তার এন্তেজাম করতে প্রতিবেশীদের তাগাদা দিচ্ছেন সফিজ মেম্বার।
সফিজ মেম্বার সোলেমানের বড় ভাই হোসেনকে পুকুর ঘাট থেকে বাড়ির আঙিনায় নিয়ে যায়। পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে বলেÑ কি করবি?
হোসেন কোন জবাব না দিয়ে মেম্বারের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকায়।
মেম্বার বলেÑ দেখ, সোলেমানের খুনের পেছনে কি তোরা কাউকে সন্দেহ করছিস?
হোসেন নিরুত্তর।
সফিজ মেম্বার জনপ্রতিনিধি হিসেবে নিজে কখনও খুনের ঘটনা নাড়াচাড়া করেনি। কিন্তু গাঙপুরের অনেক খুনের ঘটনাপ্রবাহ সে খুব কাছ থেকে দেখেছে। তার কাছে খুব কঠিন কিছু মনে হচ্ছে না। মেম্বার চেহেরায় চিন্তার রেখা তুলে বললেনÑ তোরা যদি কাউকে সন্দেহ না করিস তবে মামলা করবি কার বিরুদ্ধে? এ ঘটনায় তো মামলা করতে হবে। তোরা না চাইলেও পুলিশ মামলা করবে। তাই কি করবি দ্রুত আমারে বল। পুলিশকে তো জানাতে হবে।
এতক্ষণ নিরত্তর থাকলেও মেম্বারকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠে হোসেন। মেম্বার পিঠে হাত বুলিয়ে সান্তনা দেয়। হোসেন এবার ফুঁপাতে ফুঁপাতে বলেÑ আমার ভাইটা খুন হয়ে গেল। কারও সঙ্গে তো আমাদের ঝগড়া-বিবাদ নেই। সোলেমানতো বাড়িতেই থাকে না। নরসিংদীতে চাকরি করে। সফিজ ভাই কাকে সন্দেহ করব! কার বিরুদ্ধে মামলা করব?
এটাই যেন চাচ্ছিলেন মেম্বার। পুলিশ বাদি মামলা হলেই তার লাভ। যখন যে ঝামেলা পাকাতে চাইবে তারেই গেঁথে দেয়া যাবে মামলার বড়শিতে। তাই একটু দম নিয়ে বলেÑ তাহলে মামলা করে কি করবি। পুলিশই বাদী হয়ে মামলা করুক। কি বলিস?
হোসেন দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেÑ সফিজ ভাই সোলেমানের বউয়ের সঙ্গে কথা বলে দেখি।
এবার মেম্বার একটু বিরক্ত হয়। বলেÑ বউয়ের সঙ্গে কথা বলে কি হবে। এখনও নতুন বউ, বাচ্চা-কাচ্চা নাই। মামলা করলে বছরের পর বছর কোর্ট-কাচারিতে দৌড়াতে হবে। সে কি দৌড়াবে? বাপের বাড়ির লোকজন যদি নতুন করে...।
সফিজ মেম্বার কথা শেষ করতে পারে না। সোলেমানের বুড়ি মা বিলাপ করতে করতে মেম্বারের হাত চেপে ধরে। বাবা, আমার ছেলেটারে পুলিশ নিয়ে যেতে চাইছে। তারে নাকি কাটাকুটি করবে। আমার ছেলের লাশটারে অন্তত বাঁচাও। তারে কাটাকুটি করতে দিও না।
আবার কথার লাইন পায় সফিজ মেম্বার। মা-ছেলেকে উদ্দেশে বলেÑ ঠিকই আছে। তোমরা মামলা করলে লাশটারে কাটাকুটির হাত থেকে বাঁচানো যাবে না। মামলা না করলে হয়তো টাকা-পয়সা দিয়ে কাটাকুটি ঠেকানো যাবে। এখন দেখো চিন্তা করেÑ বলেই মেম্বার পুকুর পাড়ের দিকে যায়।
মেম্বারকে ইশারা করেই এসআই খলিল মৃতদেহ ও কিলিং স্পটের চারদিকে হেঁটে দেখেন। নিহতের কাঁধ থেকে বুক পর্যন্ত ফেড়ে ফেলা হয়েছে। পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছেÑ ধারালো দা-কিরিচের কোপেই নিহত হয়েছে সোলেমান। পুকুর ঘাটের ঠিক মাঝখানেই হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে। নিহতের হাতে গোছ করা ভেজা লুঙ্গি। তার মানে সে গোসল করে পুকুর থেকে উঠে আসার সময়ই খুনি আকস্মিক হামলা করেছে। আঘাতের আকস্মিকতা ও ভয়াবহতার কারণে চিৎকারের সুযোগও হয়তো পায়নি বেচারা। পুকুর ঘাট থেকে নিহতের বাড়ির দূরত্বে শ’ খানেক মিটার। মৃধাবাড়ি থেকে বেরিয়ে সামনের পথটি পুকুর পাড় ধরে চলে গেছে গ্রামের মূল রাস্তার দিকে। তাই হয়তো তার ক্ষীণ চিৎকারের শব্দ পৌঁছায়নি কারও কানে। উপস্থিত অনেকের সঙ্গেই কথা বললেন অফিসার। ডেকে আনা হলো প্রথম প্রথম দর্শক বুড়ো বাহাদুরকেও। কিন্তু খুনের ঘটনার কোন মোটিভ পাওয়া যাচ্ছে না। বাড়ির লোকজন বলছে তাদের সঙ্গে কারও কোন ঝগড়া-বিবাদ নেই। কাছাকাছি সময়ে কারও সঙ্গে মনোমালিন্যও ঘটেনি। নিহত সোলেমান নম্র-ভদ্র হিসেবে পরিচিত। চাকরি করে শহরে। মাঝে মধ্যে গ্রামে আসে। তাহলে কেন খুন হলো ছেলেটি? এসআই খলিল অনেক হত্যাকাণ্ডের প্রতিবেদন তৈরি করেছে, তদন্ত করেছে। অভিজ্ঞতা নেহায়াৎ কম নয়। তবু মাথায় কিছুই আসছে না।
পুলিশ অফিসারের সামনে দাঁড়িয়ে বুড়ো বাহাদুর কাঁপতে শুরু করলেন। কম বয়স্ক কেউ হলে সহজেই তাকে সন্দেহ করা যেত। কিন্তু অফিসার ইতিমধ্যে জেনে নিয়েছে বুড়ো সাধারণ মানুষ, নির্ঝঞ্ঝাট। তবু ধমক দিয়ে জিজ্ঞেস করেÑ সোলেমানের মৃতদেহটি প্রথমে আপনি দেখছেন?
বুড়ো ভয়ে ভয়ে জবাব দেয়Ñ জি জনাব।
অফিসারের পাল্টা প্রশ্নÑ এত ভোরে পুকুর ঘাটে কি করছিলেন?
বুড়ো ভয়ার্ত স্বরে বললÑ স্যার, ফজরের নামাজ পড়ে ক্ষেতের দিকে যাচ্ছিলাম।
তারপর?
এবার বুড়ো পুরো ঘটনার নাতিদীর্ঘ একটি বর্ণনা দেয়। অফিসার ডায়েরিতে পয়েন্টগুলো টুকে নেয়। পুলিশের জিজ্ঞাসার মধ্যখানে কেউ কেউ স্বপ্রণোদিত হয়ে সাক্ষ্য দেয়Ñ খুব ভাল মানুষ স্যার।
অফিসার সেদিকে কান দেয় না। বুড়োর নামধাম লিখে নিয়ে ধমকের সুরে জানতে চায়Ñ ছেলেরা কি করে?
জ্বি স্যার, চাকরি-বাকরিÑ বুড়োর সংক্ষিপ্ত উত্তর।
অফিসার কড়া নির্দেশ দেয়Ñ সাক্ষ্য দিতে হবে। যখন ডাকবো তখনই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
এবার বুড়ো বাহাদুর কিছুটা স্বস্তি পায়। পরমুহূর্তেই সফিজ মেম্বার তাকে একপাশে ডেকে নিয়ে বলেÑ বাহাদুর মিয়া, ঝামেলায় তো জড়িয়ে পড়েছন। পুলিশের খাতায় নাম উঠেছে। বাঁচতে চাইলে অফিসারকে কিছু দিয়ে খুশি করতে হবে, বুঝলেন।
মওসুমের কুফা কাটাতে বুড়ো বাহাদুর অফিসারের জন্য একবাণ্ডিল কিছু যোগাড় করতে যায়।

পুকুরে টলটলে জল। ঘাটে দাঁড়িয়ে অফিসার টলটলে জলে পোষা মাছের ঘাই দেখে। ইচ্ছে করে ঝুপ করে পুকুরে ঝাঁপ দেয়। ইচ্ছে মতো সাঁতার কাটে। কিন্তু সেটা সম্ভব না। অফিসারদের অনেক কিছুই সম্ভব হয় না। তার মনে পড়ে ছোটবেলার কথা। কলাগাছের ভেলা বানিয়ে পুকুরে ভেসে বেড়াতো বন্ধুদের সঙ্গে। গুলতি নিয়ে বনে-বাদাড়ে ঘুরে বেড়াতো। মাটির মার্বেল বানিয়ে, শুকিয়ে-পুড়িয়ে গুলতি দিয়ে পাখি শিকার করতো। তার নিখুঁত নিশানা ছিল বন্ধুদের ঈর্ষার কারণ। তখনই পাড়ার মুরব্বিরা বলতেন- দুষ্টুটি বড় হয়ে পুলিশ না হয় সন্ত্রাসী হবে। খলিল প্রথমটিই হয়েছে। গুলতি হাতে বনে-বাদাড়ে নয় এখন সে পিস্তল কোমরে গুঁজে জনারণ্যে ঘুরে বেড়ায়।
অবশেষে সিদ্ধান্ত হল সোলেমানের পরিবার কোন মামলা করবে না। পুলিশই অপমৃত্যু মামলা করবে। কিন্তু ময়না তদন্ত তো করতেই হবে। সফিজ মেম্বারের মধ্যস্থতায় কাটাকুটির বিষয়েও দফারফা হয়। সোলেমানের ভাই একটি কাগজে লিখে দেবে তারা অক্ষত লাশ চায়। কাটাকুটি করে ময়না তদন্ত চায় না। সেটার জন্য পুলিশকে হাজার দশেক টাকা দেয়ার মধ্যস্থতা করে দেয় সফিজ মেম্বার। তবুও একটি আনুষ্ঠানিকতা সারতে জেলা হাসপাতালে নিতে হবে সোলেমানের লাশ। সেখানে তারা কাটাকুটির মাপজোখ করবেন, কি অস্ত্র ব্যবহার হয়েছে তা এবং কিভাবে মৃত্যু হলো তার একটি প্রতিবেদন তৈরি করবেন। এসব কিছুই আইনি আনুষ্ঠানিকতা। তাই দেরি না করে একটি বিছানার চাঁদর জড়িয়ে তারপর চাটাই মুড়ে যতœ করেই সোলেমানের মৃতদেহটি পুলিশের পেট্রোল ভ্যানে তুলে দিল প্রতিবেশীরা। তাদের হম্ভিতম্ভি করে নিজেদের পরিশ্রম কমালো কনস্টেবলগুলো। প্রথমে থানায় পরে জেলা হাসপাতালে নেয়া হল লাশ। পুলিশের সঙ্গে সঙ্গে ফেউয়ের মতো লেগে রইলেন সফিজ মেম্বার আর হোসেন। মেম্বার ইতিমধ্যেই অফিসারকে বুঝিয়ে দিয়েছেন এ মামলায় ভবিষ্যৎ জটিলতার কারণ নেই। তাই কিছু পেলে ময়না তদন্তের কাটাকুটির দরকার নেই। বরং, পুলিশ বাদি মামলা হলে পুলিশেরও লাভ, তারও লাভ। অফিসার হেসে মেম্বারকে জানায়Ñ তার আগ্রহ নেই, হ্যান্ডসাম এমাউন্ট হলে চলবে।
সন্ধ্যারাতেই নরসিংদী শহর থেকে মৃধাবাড়িতে ফিরে আসে সোলেমানের লাশ। এতক্ষণ আত্মীয়-স্বজনরা অপেক্ষা করছিল। লাশ ফিরে আসার পরমুহূর্তেই নতুন করে কান্নার রোল উঠলো। সফিজ মেম্বার তাদের সান্তনা দিয়ে বলেÑ আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছে। তাকে তো আর ফিরে পাওয়া যাবে না। তবে আমাদের সোলেমানরে আর কাটাকুটি করতে দেইনি। বিশাল ক্ষতির মাঝেও যেন মৃধাবাড়ির লোকজন একটু স্বস্তি পেল। সোলেমানের মৃতদেহ কবরে শোয়াতে শোয়াতেই হোসেনের কানে এলো সদ্যবিধবা রানুকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চায় তার বাপের বাড়ির লোকজন।

দুর্লভপুরের মৃধাবাড়িতে যখন বিদায়ী কান্নার রোল তখন ঝিঝি ডাকা মধ্যরাতে শিবপুরের দৌলতখালী ভূঁইয়া বাড়ির দহলিজে দরবার বসেছে। আরাম কেদারায় বসে গম্ভীরমুখে পা নাচাচ্ছিলেন একাব্বর ভূঁইয়া। ভীষণ মন খারাপ। সামনে গোমড়া মুখে বসে আছে তার লাঠিয়াল-কোপোয়াল বাহিনীর লোকজন। আগেরদিন তিনি নিজের পোষাবাহিনীকে হায়ার পাঠিয়েছিলেন হোসেনপুরের জমিদার বাড়িতে। নসু জমিদারের সঙ্গে লেগেছে চৌধুরী বাড়ির। হোসেনপুরের লাঠিয়ালরা নাকি হাল আমলের বিত্তশালী চৌধুরীর দিকে ঝুঁকেছে। তাই বন্ধুর স্বার্থে তিনি নিজের বাহিনী পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি, উল্টো আহতদের নিয়ে হাসপাতালে টানাহেঁচড়া করতে হচ্ছে। মামলাও হতে পারে। তাই একাব্বর ভূঁইয়া লোকজনের উপর চোটপাট করতে করতে স্বগোক্তি করে। বলেছিলাম দু’চারটা ফেলে দিবি এখন দেখছি নিজেরাই...।
এক্কাবর ভূঁইয়ার রাগটা সলিমুদ্দিনের উপরই বেশি। তার অদম্য সাহস, নিখুঁত নিশানা আর কৌশলী আক্রমণের সুনাম আছে। সেই কিনা...। তাই রাগতস্বরেই জানতে চায়Ñ কি সলিমুদ্দিন কি করে এলি?
সলিমুদ্দিন চুপচাপ।
কথা বলিস না কেন?
পরমুহুর্তে সলিমুদ্দিনের গলায় চাপা আক্রোশÑ কি বলতাম?
ভূঁইয়া ঠাট্টা করেÑ এই যে হেরে এলি।
সলিমুদ্দিন জবাব দেয়Ñ না হেরে কি করব। জমিদারের নিজের কোন লোক মাঠে নামলো না। আমরা বাইরের মানুষ তাই কৌশলটা খাটিয়ে উঠতে পারলাম না। হাতের মধ্যে পড়েও চৌধুরীর ভাতিজাটা ফসকে গেলো?
মানে!Ñ ভূঁইয়ার কণ্ঠে বিস্ময়।
সলিমুদ্দিন বলে যায়Ñ কোপ দিলাম ঘাড়ে কিন্তু লাগলো বাহুতে। মুহূর্তের মধ্যে পঙ্খির মতো ঘুরেই মারলো দৌড়। আর এতদ্রুত পুলিশ এলো কেমন করে সেটাই বুঝলাম না। তাই তো গোটানো ছাতার মধ্যে কিরিচটি লুকিয়ে পড়িমরি করে ছুটলাম। ধানক্ষেত, নদী-বিল ধরে সারারাত হেঁটে উপোস শরীরে ফিরলাম।
ভূঁইয়া জানে সলিমুদ্দিন পালানোর লোক না তাই প্রশ্ন করে- এটা কথা হলো! এ জন্য হেরে পালালি? ভূঁইয়ার ঠাট্টা যেন সলিমুদ্দিনের কলিজায় গিয়ে বিধে। তাই পরাজয়ের আক্রোশটা গলায় ফুটিয়ে বলে- তাই তো পথে একটা ফেলে দিলাম।
ফেলে দিলি মানে! এবার ভূঁইয়ার কণ্ঠে মাত্রা ছাড়ানো বিষ্ময়।
সলিমুদ্দিনের চোখ দিয়ে যেন আগুন ঝরছে। সে বলে যায়- ফেরার পথে ক্ষুধা-তৃষ্ণায় জানটা বেরিয়ে যাচ্ছিল। কালবোশেখীর বৃষ্টির কারণে কর্দমাক্ত পথে দুইবার আছাড় খেলাম। তো ফজরের আগে-আগে দুর্লভপুরের একটি পুকুরঘাটে পা ধুতে নামছিলাম। তখনই ঘটলো ঘটনাটা।
ভূঁইয়া তখন বিষ্ময়ের তুঙ্গে চড়া কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে- তারপর?
সলিমুদ্দিন যেন তখনও লড়াইয়ের মাঠে, আক্রোশে তার গলার রগ ফুলে উঠেছে। ঘোরের মধ্যেই সে বলে যায়Ñ পুকুর ঘাটে নামতে গেছি, তখনই দেখি কেউ একজন উঠে আসছে। মানুষ বলেও মনে হলো আবার দেও-দানোর মতোও লাগলো। ছাতার ভেতর হাত ঢুকিয়ে কিরিচের বাঁটটি ধরলাম। শালা তখনই জিজ্ঞেস করলোÑ কে? জবাব দিলাম না দেখে বললো- কথা বলিস না কেন? কিন্তু তখন আমার পেটের মধ্যে মোচড় খাচ্ছে ক্ষুধা। তৃষ্ণায় জবান শুকিয়ে কাঠ। চোখে ভাসছে হোসেনপুর। কোপ মারছি ঘাড়ে, লাগলো বাহুতে। হাতের নিশানা নিয়ে সন্দেহ জন্মালো। মুহুর্তেই ঠিক করলাম, দেখি পুনর্বার। পরপর দু’টো কোপ দিলাম বামঘাড়ের একই বিন্দুতে। মাগো, বলে একটি ক্ষীণ আওয়াজ হলো মাত্র। কাটাগাছের মতোই পড়ে গেলো পুকুর ঘাটে।
একাব্বর ভূঁইয়া নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না। বিস্ফোরিত চোখে লক্ষ্য করলোÑ সলিমুদ্দিন কোপোয়ালের চোখে-মুখে অপরাধের লেশমাত্র নেই।
Click This Link

Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই এপ্রিল, ২০১২ বিকাল ৪:০১
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=হিংসা যে পুষো মনে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮


হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।

কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৪৯

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

সবাই যখন ওসমান হাদিকে নিয়ে রিকশাওয়ালাদের মহাকাব্য শেয়ার করছে, তখন ভাবলাম—আমার অভিজ্ঞতাটাও দলিল হিসেবে রেখে যাই। ভবিষ্যতে কেউ যদি জানতে চায়, এই দেশটা কীভাবে চলে—তখন কাজে লাগবে।

রিকশায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×