![]()
:হেলো
:হাই
:কেমন আছেন?
:এই তো। মোটামুটি।
:মোটামুটি ? কেনো খুব ভালো নেই?
:হঠাৎ করে মন খারাপ। কেউ শুনলে বলবে সুখে থাকতে ভুতে কিলানো।কিন্তু আমার মন খারাপ, কিছু করার নেই।
: কে কি ভাবলো কি যায় আসে? মন খারাপের ভাগিদার বা সঙ্গী পাওয়া কঠিন।
:হুম জানি সে কথা আর তাই তো কাউকে বলিনা।
: আচ্ছা আমাকে বলেন।
: না
:মনের কথা মনে চেপে রাখতে নেই । তাতে কষ্ট আরও বাড়ে।
: বাড়ুক। আমার কষ্ট আমি বুঝবো।
: দুঃখ, কষ্ট , রাগ এসব পুষে না রেখে শেয়ার করে ফেলুন দেখবেন সেটা অনেক কমে গেছে।
: না আমি কমাবোনা। কমাতে চাই না।
: হা হা হা ওকে ঠিক আছে । বলতে হবেনা একটা গান শোনান।
: পারবোনা
: পারবেন না! কি বলেন? আপনি বুঝি গান গাইতে পারেননা?
: পারি কিন্তু ম্যুড নেই।
: ওকে তাহলে একটা কবিতা
: উফ। চুপ করেন তো । কিছুই করবোনা আমি।
: ওকে তাহলে অন্তত বলুন কেনো মন খারাপ হলো। একজন বন্ধু হিসাবে বলুন। বন্ধু মনে না করুন একজন মানুষ হিসাবে।
: হুম
: কি হুম? বলুন
:হঠাৎ আমার মনে হলো আমার কখনও কোথাও পানসী বেয়ে বয়ে চলা হয়নি।
: হা হা হা ! তো কি ? হঠাৎ এমন স্বপ্নের মানে কি? আবার তাই নিয়ে মন খারাপের কারনটাই বা কি?হা হা হা
: চুপ করেন। হে হে করতে হবেনা। এই জন্যই আপনাকে বলতে চাইনি।
: ওকে ওকে স্যরি। আচ্ছা বলুন হঠাৎ এমন ইচ্ছের কারণ কি?
: বলবোনা।
: প্লিজ! আর এমন করবো না। আপনার ইচ্ছেটুকু যথার্থ দাম দেবারই চেষ্টা করবো। নো মোর লাফ! ওকে ? বলুন..গুড গার্ল..
: আমি গার্ল না।
: তাহলে কি বয়?
: না তাও না। আমি মহিলা। ৩৪ বছরের একজন পূুর্ণবয়স্ক মানুষ আমি।
: ওকে ওকে মানছি। এবার বলুন কি হয়েছে, কেনো এত মন, মেজাজ খারাপ?
: আমার কখনও ডিঙ্গি নৌকো বেয়ে ছোট কোনো নদীতে বয়ে চলা হয়নি কিংবা কোনো সোনালী বিকেলের সবুন মায়াময় প্রান্তরে হেঁটে যাওয়া হয়নি। সেই ছবিটা সারাজীবন এক আনন্দময় স্মৃতি হয়ে থাকতে পারতো আমার মনের ক্যানভাসে। আসলে ব্যাপারটা মানে এই ইচ্ছের পিছে একটা লুকানো কারণ আছে।
: আমাকে বলা যায়?
: না বলতে চাইনা।
: বললে মনে হয় ভালো হতো।
:কি ভালো হত শুনি? দেখেন এত কৌতুহল ভালোনা। চুপ থাকেন।
: এখন তো আমার মন খারাপ করে দিলেন। বলবেন না ঠিক আছে কিন্তু ...
: আচ্ছা ঠিক আছে বলছি। অনেকদিন আগে একজন কথা দিয়েছিলো, আমাকে একদিন সে তাদের গ্রামে নিয়ে যাবে। যেখানে অবারিত সবুজ প্রান্তর দিগন্ত ছুঁয়ে থাকে। গ্রামের পাশে আছে এক রত্তি নদী হিমছড়ি নদী। সেখানে পানসী করে বেড়াতে যাবো আমর....
: তারপর?
:তারপর? তার আর পর নেই।
:মানে?কি হলো তার?
: সে হারিয়ে গেছে। মানে হারিয়ে যায়নি আমিই হারিয়ে ফেলেছি তাকে।
:কিভাবে?
: আমি তখন ক্লাস টেন আর সে ইউনিভারসিটিতে পড়ছিলো। হঠাৎ তিনদিনের নোটিসে আমার বিয়ে হয়ে গেলো লন্ডন প্রবাসী একজন ডক্টরের সাথে।
:তারপর?
: তারপর আর কি? আজ কতগুলো বছর কেটে গেলো। সেও সুখে আছে।
: ঠিক তাই। সময় বসে থাকেনা, কারো জন্যই না।যাকগে তা হঠাৎ পুরান প্রেম জেগে উঠলো নাকি?
: দেখুন । এমনিতেই আমার মেজাজ খারাপ......এর মধ্যে ঠাট্টা করতে আসবেন না।
: হা হা না না এখন বলুন হঠাৎ কেনো মন খারাপ হলো এমন কত কথাই তো মানুষ এই জীবনে দেয় কিন্তু সেটা আর কখনও রাখা হয়না।
: সেদিন তার ফেসবুকে দেখি সেই ছোট্ট ডিঙ্গী নৌকো বেয়ে চলেছে সে .।সাথে নতুন প্রেমিকা...দেখে আমার .........
: হাহাহা দেখে আপনার মন খারাপ হলো?হা হা হা আপনি বড্ড ছেলেমানুষ!
: হতে পারি।কিন্তু আমার মন সত্যিই খারাপ।
: তা আপনিও যান না আপনার মানুষটিকে নিয়ে। ঘুরে আসুন পানসী নিয়ে। দুটিতে মিলে বেশ করে রোমান্টিক সব ছবি তুলুন। তারপর ফেসবুকে দিয়ে দিন যেন তারও পিত্তি জ্বলে যায়।
:আরে সে জন্যই তো আরও মেজাজ খারাপ।
: কেনো?
: সেকথা তাকে বলতেই সে বললো, পাগল নাকি? এসব কি উদ্ভট কথা বার্তা! গ্রাম, বন, জঙ্গল, সাপ খোপ কত কি আছে না আছে।
আচ্ছা বলুন শীতকালে কি সাপ থাকে? তারা তো হাইবারনেশানে যায়।
: হা হা হা ঠিক বলেছেন । শীতকালে সাপেরা থাকে শীত নিদ্রায়। আসলে আপনার স্বামী ডাক্তার মানুষ তো। অনেক ব্যাস্ততা তার। এত সময় নষ্টের সময় নেই তার। একটু বুঝতে চেষ্টা করুন।
: আহারে এতই যদি দরদ তার জন্য তাহলে শুনতে চাইলেন কেনো আমার কথা? আমার কেনো মন খারাপ জানতে চাইলেন কেনো?
: আরে আরে শুনুন। আমি তো বলিনি আপনি অন্যায় বলেছেন। আসলে একেকজনের মন তো একেকরকম । জানেনই তো। আপনি কবি মানুষ । তাই রোমান্টিকতা আপনার স্বভাবজাত।
: আপনিও তো কবি তাহলে এমন কাঠখোট্টা কথাবার্তা কেনো? রোমান্টিসিজম শুধু কবিতায় তাইনা? আপনি একটা ভন্ড কবি।
: আরে আরে আপনি দেখি মহা রেগে যাচ্ছেন। হা হা হা আচ্ছা চলুন কালকেই আপনার মনের ইচ্ছে পূর্ণ করে দেই।
: কালই ! কিভাবে? আপনি কি আলাদীনের দৈত্য?
: হা হা হা তা নই তবে দৈত্যের কি সত্যি দরকার আছে আমাদের জীবনে? চাইলেই মানুষ কি পারেনা তা বলতে পারেন? আসল প্রয়োজনটা হলো ইচ্ছে।
:ইচ্ছে না আপনার মাথা। রাখুন আপনার হাই থট মার্কা কথাবার্তা।
:আরে হাই থট হবে কেনো?
: নয়তো কি? যাবো বললেই কি যাওয়া যায়? আরে যাবোটা কিভাবে?
: কেনো গাড়ি করে, নতুবা ট্যাক্সিক্যাব যেভাবেই ইচ্ছে।
:মানে একা একা?
: আমি না হয় যাবো আপনার সাথে। আপনার ফটোগ্রাফার হয়ে।
: আপনি!! মজা করছেন?
: না না মজা নয় মোটেও । সত্যি চলুন কালই।মনের ইচ্ছেকে যেভাবেই হোক পূরণ করে ফেলতে হয়।
:সত্যি বলছেন?
: হুম সত্যি।
:সত্যি!
: সত্যি সত্যি সত্যি!! এত অবিশ্বাস কেনো? এটা কোনো ব্যাপার হলো? আমার জন্য কোনো ব্যাপারই না। ব্যাপারটা আপনার, আমার সাথে যাবেন কিনা বা আমাকে বিশ্বাস করছেন কিনা।
: না অবিশ্বাস না ঠিক। তবে....... আচ্ছা ঠিক আছে.......
: তাহলে কাল আমরা যাচ্ছি। আমি রাজলক্ষী কমপ্লেক্সের সামনে থেকে আপনাকে পিক করবো ......
: তারপর?
: তারপর ছুটে যাবো .........
:কোথায়?
: যেদিকে দুচোখ যায় । আশুলিয়ার দিকে কিংবা আরও দূরে কোথাও......
: হা হা হা
: ওকে তাহলে কাল ঠিক সকাল ১১টায় দেখা হচ্ছে আপনার সাথে।
:ওকে।
(তারপর কি হলো আগামী পর্বে সমাপ্য। কিছু আগে এই পোস্ট দেবার পর মুছে গেলো । কিভাবে সেটা হলো বুঝলাম না। আবারও দিলাম )

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




