somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন কবি ও একটি স্বপ্নের গল্প

২৬ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


:হেলো
:হাই
:কেমন আছেন?
:এই তো। মোটামুটি।
:মোটামুটি ? কেনো খুব ভালো নেই?
:হঠাৎ করে মন খারাপ। কেউ শুনলে বলবে সুখে থাকতে ভুতে কিলানো।কিন্তু আমার মন খারাপ, কিছু করার নেই।
: কে কি ভাবলো কি যায় আসে? মন খারাপের ভাগিদার বা সঙ্গী পাওয়া কঠিন।
:হুম জানি সে কথা আর তাই তো কাউকে বলিনা।
: আচ্ছা আমাকে বলেন।
: না
:মনের কথা মনে চেপে রাখতে নেই । তাতে কষ্ট আরও বাড়ে।
: বাড়ুক। আমার কষ্ট আমি বুঝবো।
: দুঃখ, কষ্ট , রাগ এসব পুষে না রেখে শেয়ার করে ফেলুন দেখবেন সেটা অনেক কমে গেছে।
: না আমি কমাবোনা। কমাতে চাই না।
: হা হা হা ওকে ঠিক আছে । বলতে হবেনা একটা গান শোনান।
: পারবোনা
: পারবেন না! কি বলেন? আপনি বুঝি গান গাইতে পারেননা?
: পারি কিন্তু ম্যুড নেই।
: ওকে তাহলে একটা কবিতা
: উফ। চুপ করেন তো । কিছুই করবোনা আমি।
: ওকে তাহলে অন্তত বলুন কেনো মন খারাপ হলো। একজন বন্ধু হিসাবে বলুন। বন্ধু মনে না করুন একজন মানুষ হিসাবে।
: হুম
: কি হুম? বলুন
:হঠাৎ আমার মনে হলো আমার কখনও কোথাও পানসী বেয়ে বয়ে চলা হয়নি।
: হা হা হা ! তো কি ? হঠাৎ এমন স্বপ্নের মানে কি? আবার তাই নিয়ে মন খারাপের কারনটাই বা কি?হা হা হা
: চুপ করেন। হে হে করতে হবেনা। এই জন্যই আপনাকে বলতে চাইনি।
: ওকে ওকে স্যরি। আচ্ছা বলুন হঠাৎ এমন ইচ্ছের কারণ কি?
: বলবোনা।
: প্লিজ! আর এমন করবো না। আপনার ইচ্ছেটুকু যথার্থ দাম দেবারই চেষ্টা করবো। নো মোর লাফ! ওকে ? বলুন..গুড গার্ল..
: আমি গার্ল না।
: তাহলে কি বয়?
: না তাও না। আমি মহিলা। ৩৪ বছরের একজন পূুর্ণবয়স্ক মানুষ আমি।
: ওকে ওকে মানছি। এবার বলুন কি হয়েছে, কেনো এত মন, মেজাজ খারাপ?
: আমার কখনও ডিঙ্গি নৌকো বেয়ে ছোট কোনো নদীতে বয়ে চলা হয়নি কিংবা কোনো সোনালী বিকেলের সবুন মায়াময় প্রান্তরে হেঁটে যাওয়া হয়নি। সেই ছবিটা সারাজীবন এক আনন্দময় স্মৃতি হয়ে থাকতে পারতো আমার মনের ক্যানভাসে। আসলে ব্যাপারটা মানে এই ইচ্ছের পিছে একটা লুকানো কারণ আছে।
: আমাকে বলা যায়?
: না বলতে চাইনা।
: বললে মনে হয় ভালো হতো।
:কি ভালো হত শুনি? দেখেন এত কৌতুহল ভালোনা। চুপ থাকেন।
: এখন তো আমার মন খারাপ করে দিলেন। বলবেন না ঠিক আছে কিন্তু ...
: আচ্ছা ঠিক আছে বলছি। অনেকদিন আগে একজন কথা দিয়েছিলো, আমাকে একদিন সে তাদের গ্রামে নিয়ে যাবে। যেখানে অবারিত সবুজ প্রান্তর দিগন্ত ছুঁয়ে থাকে। গ্রামের পাশে আছে এক রত্তি নদী হিমছড়ি নদী। সেখানে পানসী করে বেড়াতে যাবো আমর....
: তারপর?
:তারপর? তার আর পর নেই।
:মানে?কি হলো তার?
: সে হারিয়ে গেছে। মানে হারিয়ে যায়নি আমিই হারিয়ে ফেলেছি তাকে।
:কিভাবে?
: আমি তখন ক্লাস টেন আর সে ইউনিভারসিটিতে পড়ছিলো। হঠাৎ তিনদিনের নোটিসে আমার বিয়ে হয়ে গেলো লন্ডন প্রবাসী একজন ডক্টরের সাথে।
:তারপর?
: তারপর আর কি? আজ কতগুলো বছর কেটে গেলো। সেও সুখে আছে।
: ঠিক তাই। সময় বসে থাকেনা, কারো জন্যই না।যাকগে তা হঠাৎ পুরান প্রেম জেগে উঠলো নাকি?
: দেখুন । এমনিতেই আমার মেজাজ খারাপ......এর মধ্যে ঠাট্টা করতে আসবেন না।
: হা হা না না এখন বলুন হঠাৎ কেনো মন খারাপ হলো এমন কত কথাই তো মানুষ এই জীবনে দেয় কিন্তু সেটা আর কখনও রাখা হয়না।
: সেদিন তার ফেসবুকে দেখি সেই ছোট্ট ডিঙ্গী নৌকো বেয়ে চলেছে সে .।সাথে নতুন প্রেমিকা...দেখে আমার .........
: হাহাহা দেখে আপনার মন খারাপ হলো?হা হা হা আপনি বড্ড ছেলেমানুষ!
: হতে পারি।কিন্তু আমার মন সত্যিই খারাপ।
: তা আপনিও যান না আপনার মানুষটিকে নিয়ে। ঘুরে আসুন পানসী নিয়ে। দুটিতে মিলে বেশ করে রোমান্টিক সব ছবি তুলুন। তারপর ফেসবুকে দিয়ে দিন যেন তারও পিত্তি জ্বলে যায়।
:আরে সে জন্যই তো আরও মেজাজ খারাপ।
: কেনো?
: সেকথা তাকে বলতেই সে বললো, পাগল নাকি? এসব কি উদ্ভট কথা বার্তা! গ্রাম, বন, জঙ্গল, সাপ খোপ কত কি আছে না আছে।
আচ্ছা বলুন শীতকালে কি সাপ থাকে? তারা তো হাইবারনেশানে যায়।
: হা হা হা ঠিক বলেছেন । শীতকালে সাপেরা থাকে শীত নিদ্রায়। আসলে আপনার স্বামী ডাক্তার মানুষ তো। অনেক ব্যাস্ততা তার। এত সময় নষ্টের সময় নেই তার। একটু বুঝতে চেষ্টা করুন।
: আহারে এতই যদি দরদ তার জন্য তাহলে শুনতে চাইলেন কেনো আমার কথা? আমার কেনো মন খারাপ জানতে চাইলেন কেনো?
: আরে আরে শুনুন। আমি তো বলিনি আপনি অন্যায় বলেছেন। আসলে একেকজনের মন তো একেকরকম । জানেনই তো। আপনি কবি মানুষ । তাই রোমান্টিকতা আপনার স্বভাবজাত।
: আপনিও তো কবি তাহলে এমন কাঠখোট্টা কথাবার্তা কেনো? রোমান্টিসিজম শুধু কবিতায় তাইনা? আপনি একটা ভন্ড কবি।
: আরে আরে আপনি দেখি মহা রেগে যাচ্ছেন। হা হা হা আচ্ছা চলুন কালকেই আপনার মনের ইচ্ছে পূর্ণ করে দেই।
: কালই ! কিভাবে? আপনি কি আলাদীনের দৈত্য?
: হা হা হা তা নই তবে দৈত্যের কি সত্যি দরকার আছে আমাদের জীবনে? চাইলেই মানুষ কি পারেনা তা বলতে পারেন? আসল প্রয়োজনটা হলো ইচ্ছে।
:ইচ্ছে না আপনার মাথা। রাখুন আপনার হাই থট মার্কা কথাবার্তা।
:আরে হাই থট হবে কেনো?
: নয়তো কি? যাবো বললেই কি যাওয়া যায়? আরে যাবোটা কিভাবে?
: কেনো গাড়ি করে, নতুবা ট্যাক্সিক্যাব যেভাবেই ইচ্ছে।
:মানে একা একা?
: আমি না হয় যাবো আপনার সাথে। আপনার ফটোগ্রাফার হয়ে।
: আপনি!! মজা করছেন?
: না না মজা নয় মোটেও । সত্যি চলুন কালই।মনের ইচ্ছেকে যেভাবেই হোক পূরণ করে ফেলতে হয়।
:সত্যি বলছেন?
: হুম সত্যি।
:সত্যি!
: সত্যি সত্যি সত্যি!! এত অবিশ্বাস কেনো? এটা কোনো ব্যাপার হলো? আমার জন্য কোনো ব্যাপারই না। ব্যাপারটা আপনার, আমার সাথে যাবেন কিনা বা আমাকে বিশ্বাস করছেন কিনা।
: না অবিশ্বাস না ঠিক। তবে....... আচ্ছা ঠিক আছে.......
: তাহলে কাল আমরা যাচ্ছি। আমি রাজলক্ষী কমপ্লেক্সের সামনে থেকে আপনাকে পিক করবো ......
: তারপর?
: তারপর ছুটে যাবো .........
:কোথায়?
: যেদিকে দুচোখ যায় । আশুলিয়ার দিকে কিংবা আরও দূরে কোথাও......
: হা হা হা
: ওকে তাহলে কাল ঠিক সকাল ১১টায় দেখা হচ্ছে আপনার সাথে।
:ওকে।


(তারপর কি হলো আগামী পর্বে সমাপ্য। কিছু আগে এই পোস্ট দেবার পর মুছে গেলো । কিভাবে সেটা হলো বুঝলাম না। আবারও দিলাম )
৮টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কথা: দাদার কাছে—একজন বাবার কিছু প্রশ্ন

লিখেছেন সুম১৪৩২, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৫



দাদা,
কেমন আছেন? আশা করি খুবই ভালো আছেন। দিন দিন আপনার ভাই–ব্রাদারের সংখ্যা বাড়ছে—ভালো তো থাকারই কথা।
আমি একজন খুবই সাধারণ নাগরিক। ছোটখাটো একটা চাকরি করি, আর নিজের ছেলে–মেয়ে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×