somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আপনার ঈমানের বিপদচিহ্নগুলি জেনে নিনঃ (প্লাস প্রতিকারের উপায়সমূহঃ)

২০ শে মে, ২০১৪ রাত ১১:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

[সমস্ত প্রশংসা একমাত্র মহান আল্লাহতায়ালার জন্য। দরূদ ও সালাম আল্লাহর রসূল, দোজাহানের সর্দার, বিশ্বশান্তির একমাত্র আদর্শ হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর। আমরা দোয়া করি আল্লাহতায়ালা লেখক ও পাঠক উভয়পক্ষকেই হেদায়াত দান করুন। আমীন]


নীচের পাঁচটি বিষয়কে আপনার ঈমানের বিপদচিহ্ন বলতে পারেন। এর মধ্যে কোন এক বা একাধিক যদি আপনার ভিতর উপস্থিত থাকে তাহলে বুঝবেন আপনার ঈমান মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন। আপনি খুব দ্রুতগতিতে এক ভয়ংকর জাহান্নামের দিকেই যাচ্ছেন। তাই আপনাকে খুব দ্রুত সতর্ক হতে হবে। পথ পরিবর্তন করে ফিরে আসতে হবে চির শান্তির জান্নাতের দিকে। কারণ আজ হয়তো অনেকেই আপনাকে সতর্ক করছে। কিন্তু সে সময় খুব বেশি দূরে নয় যেদিন আর আপনাকে সতর্ক করা হবে না। সেটা হবে এক 'হিসাবের' দিন। তাই আর দেরী কেন আমরা জলদি জলদি জেনে নিই আমাদের ঈমানের বিপদচিহ্নগুলো এবং আমাদের করনীয়গুলোওঃ

(১) নিজের ঈমান ও আমলের ওপর অনেক বেশি আস্থা রাখা। নামাজ না পড়ি তাতে কী, আমার ঈমানতো ঠিক আছে। নামাজ রোজা হয়তো পড়িনা কিন্তু আমার ভিতরটা ফ্রেশ। মানুষকে কখনো ঠকাইনা। মানবসেবাই বড় ইবাদত। ঈমান আমলের দরকার কী। এরকম ধ্যন-ধারনা রাখা।

(২) নেক কাজ খারাপ লাগা। নেক কাজ নিজে করতে খারাপ লাগা, অন্য কেউ করলে তাতে খারাপ লাগা, নেক কাজ কেউ করতে বললে তার প্রতি রাগ হয়ে যাওয়া। এমনকি নেক কাজ না চেনা অর্থাৎ নেক কাজ সম্পর্কে অজ্ঞ হওয়া।

(৩) গুনাহের কাজ করতে ভাল লাগা। গুনাহের কাজ দেখতে ভাল লাগা। গুনাহের কাজের কথা শুনতে ভাল লাগা। গুনাহের কাজকে গুনাহের কাজ মনে না হওয়া। গুনাহের কাজের পক্ষে যুক্তি খাড়া করা। গুনাহের কাজের পক্ষে দৃষ্টান্ত পেশ করা। গুনাহের কাজ করতে কেউ নিষেধ করলে তার প্রতি প্রতিশোধপরায়ন হওয়া।

(৪) অহংকার করা। বিশেষ করে নিজের পোস্ট-পদবী, অর্থ, ক্ষমতা এবং পান্ডিত্যের কারণে দ্বীনের বিষয়ে আমিই বেশি বুঝি। আমাকে জ্ঞান দেয়ার প্রয়োজন নেই। এরকম ভাব করা।

(৫) আল্লাহ, নবী-রাসূল আলাইহিমুস সালাম, কুরআন, হাদীস, সাহাবী রাজিয়াল্লাহুতায়ালা আনহুম, আকাবীরগণ, মসজিদ, মাদ্রাসা ও দ্বীনী প্রতিষ্ঠানসমূহ, ইসলামি সংস্কৃতি এবং ইসলামি আকিদাগত বিষয়ে বেয়াদবিমূলক বা ভুল কিছু প্রকাশ করা, অথবা খারাপ কিছুর সাথে সম্পর্কিত করা।

অতঃপর যদি আপনার মাঝে উপরোক্ত বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে যেকোন এক বা একাধিক বৈশিষ্ট্য খুঁজে পান তবে দুনিয়া ও আখিরাতের সমূহ ক্ষতি ও বিপদ এড়াতে প্রয়োজনীয় প্রতিকারের ব্যবস্থা নিন। তবে যা করার অতি দ্রুত করুন কারণ আপনি জানেননা কখন আপনার ঘুড়িতে টান দেয়া হবে। আর নির্ধারিত সময়ের পরে আল্লাহ রব্বুল য়ালামীন কারো জন্য কোন 'অবকাশ' রাখেন না।

وَلَن يُؤَخِّرَ ٱللَّهُ نَفۡسًا إِذَا جَآءَ أَجَلُهَاۚ وَٱللَّهُ خَبِيرُۢ بِمَا تَعۡمَلُونَ
(সূরা মুনাফিকুন, আয়াত ১১)

"যখন কারও নির্ধারিত কাল এসে যাবে, তখন আল্লাহ তাকে কিছুতেই অবকাশ দেবেন না; আর তোমরা যা-কিছু কর আল্লাহ সে সম্পর্কে সবিশেষ অবহিত।"

প্রতিকারের উপায়সমূহঃ

(১) কালেমা তাইয়্যেবা ও কালেমা শাহাদাত বলুন।

لا اله الا الله محمد رسول الله

(আল্লাহ ছাড়া কোন মা'বুদ নেই; হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আল্লসিহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর রসূল)

اشهد ان لا اله الا الله وحده لا شريك له واشهد ان محمدا عبده ورسوله

(আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন মা'বুদ নেই। তিনি এক। তাঁর কোন অংশীদার নেই। আমি আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আল্লসিহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও রসূল)

(২) তওবা করুনঃ

প্রথমত, বর্তমান গুনাহ সমূহ ছেড়ে দিন।
দ্বিতীয়ত, পূর্বের গুনাহগুলোর জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান। দিলকে নরম করার চেষ্টা করুন।
তৃতীয়ত, ভবিষ্যতে গুনাহ করবেন না বলে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হোন। ভবিষ্যতে পুনরায় গুনাহ হয়ে গেলে যেন পুনরায় তওবা করতে পারেন এজন্য আল্লাহতায়ালার কাছে 'তৌফিক' প্রার্থনা করেন।

এ দু'আটি পড়তে পারেনঃ

استغفر الله ربي من كل ذنب واتوب اليه ولاحول ولاقوة الابالله العلي العظيم

"আমার প্রতিপালক আল্লাহর কাছে আমি ক্ষমা চাই আমার সমস্ত পাপ থেকে; তাঁর দিকেই আমি মুখ ফেরালাম; সর্বশক্তিমান আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কোন কিছু করার শক্তি সামর্থ্য নেই।"

(৩) হক্বকানী য়ালেম উলামা, পীর মাশায়েখ, আল্লাহওয়ালা, ঈমানদার ও পরহেযগার লোকদের সান্নিধ্যে আসুন এবং আল্লাহর নাফরমান বান্দাদের থেকে দূরে থাকুনঃ

যেমনটা সূরা ফাতেহায় বলা হয়েছেঃ

صراطالذين انعمت عليهم
غيرالمغضوب عليهم ولاالضالين

"হে আল্লাহ, আমাকে চালিত করুন তাদের পথে যাদের প্রতি আপনি অনুগ্রহ করেছেন। তাদের পথে নয় যাদের ওপর আপনার গজব নাযিল হয়েছে, তাদের পথেও নয় যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে।"

আল্লাহওয়ালা লোকদের সান্নিধ্য পাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো আপনাকে মসজিদে যেতে হবে। মসজিদের আমলের সাথে জুড়বেন। জুমার বয়ান শুনবেন, তালিমের হালকায় বসবেন। দেখবেন আল্লাহওয়ালা লোকদের সাথে আপনার আস্তে আস্তে মহব্বত হবে। আপনার ভিতরের পরিবর্তন আপনি নিজেই একসময় বুঝতে পারবেন। আরেকটু আগে যখন বাড়বেন এক চিল্লা বা তিন চিল্লা সময় আল্লাহর রাস্তায় লাগাবেন। আপনার ঈমানের ভিতর তখন নূর পয়দা হবে। আমল সুন্দর হবে। আপনি ইচ্ছা করলে কোন হক্ককানী পীরের মুরিদও হতে পারেন। অথবা বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে যেতে পারেন। যাই করেন না কেন আপনার প্রতিটি পদক্ষেপ ইনশা'আল্লাহ আল্লাহ সুবহানু ওয়া তায়ালার দিকেই হবে। আল্লাহ সুবহানু ওয়া তায়ালা আপনাকে সাহায্য করবেন। দুনিয়ায় বসে আপনি যেন জান্নাতের সুবাস পাবেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ ভোর ৬:৪০
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×