somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের মসজিদে আজকের ফজরবাদ তা’লিমে যা শিখলাম

২৫ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

[সমস্ত প্রশংসা একমাত্র মহান আল্লাহতায়ালার জন্য। দরূদ ও সালাম আল্লাহর রসূল, দোজাহানের সর্দার, বিশ্বশান্তির একমাত্র আদর্শ হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর। আমরা দোয়া করি আল্লাহতায়ালা লেখক ও পাঠক উভয়পক্ষকেই হেদায়াত দান করুন। আমীন]


আমাদের প্রিয় নবীজী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া সাল্লাল্লামের অভ্যাস ছিল শেষ রাতে মদিনার অলিগলিতে প্রদক্ষিন করা। তখন মদিনার ঘরগুলো থেকে কুরআন তিলাওয়াতের সুমধুর আওয়াজ ভেসে আসত। হযরত আবু মূসা আল-আশ’য়ারী রাজিআল্লাহু তায়ালা য়ানহু ছিলেন সুললিত কন্ঠে কুরআন তিলাওয়াতকারীদের অন্যতম। একদিন নবীজী সাল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া সাল্লাল্লাম আবু মূসা আল-আশ’য়ারী (রাঃ) –র কুরআন তিলাওয়াত শুনতে পেলেন। আবু মূসা আল-আশ’য়ারী (রাঃ) বলেন নবীজী সাল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া সাল্লাল্লাম তাকে বলেছেন, যদি তুমি গতরাতে দেখতে আমি তোমার কুরআন পড়া শুনেছি! তোমাকে দাউদের সুরসমূহের মধ্য থেকে একটি সুর দান করা হয়েছে।

আরেকটি ঘটনা। একদিন নবী করীম সাল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া সাল্লাম শেষ রাতে মদিনার অলিগলিতে হাঁটছিলেন। তিনি তখন হযরত ওমর (রাঃ) –র বাড়ির সামনে। শুনতে পেলেন ভেতর থেকে কুরআন তিলাওয়াতের আওয়াজ। খুব মজবুত আর জোর কন্ঠের আওয়াজ ভেসে আসছিল। যখন তিনি হযরত আবু বকর (রাঃ) –র বাড়ি অতিক্রম করছিলেন তখন খুব মৃদু কন্ঠে কুরআনের তিলাওয়াত ভেসে আসছিল। পরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের উভয়ের কাছে জানতে চাইলেন ঘটনা কী? ওমর তুমি এত জোরে পড়ছিলে কেন? ওমর (রাঃ) বললেন, তার কুরআন তিলাওয়াত শুনে যেন অন্য মানুষেরা ঘুম থেকে জেগে কুরআন তিলাওয়াতে আগ্রহী হয়। আবু বকরকে জিজ্ঞাসা করলেন তিনি এত আস্তে পড়ছিলেন কেন? আবু বকর (রাঃ) জবাব দিলেন, তার উদ্দেশ্য হলো আল্লাহকে শুনানো। আল্লাহকে শুনানোর জন্যতো আস্তে পড়াই যথেষ্ট। তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু য়ালাইহি ওয়া সাল্লাম আবু বকর (রাঃ) –কে বললেন, তুমি তোমার আওয়াজকে আরেকটু বাড়িয়ে নাও। আর ওমর (রাঃ) –কে বললেন, তুমি তোমার আওয়াজকে আরেকটু কমিয়ে নাও।

আমাদের দেশেও আগে ঘরে ঘরে শেষ রাতে বা ভোরবেলায় কুরআন তিলাওয়াত, জিকিরের শব্দ শুনা যেত। ফজরের নামাজ সবাই মসজিদে এসে জামাতের সাথেই আদায় করত। হায় আফসোস! এখন আর কোন ঘর থেকেই কুরআনের শব্দ ভেসে আসে না। ফজরের সালাতে কাতার হয় দু’টা বা তিনটা। বড়জোর চার কাতার। মানুষগুলো এখন টিভি দেখে রাত পার করে। আর ঘুমিয়ে ফজরের সালাত কাযা করে। মানুষগুলোর মুখের দিকে তাকানো যায় না। এত পেরেশান। এত মলিন মুখও হয় মানুষের! আল্লাহর রহমত থেকে, কুরআন থেকে দূরে সরে থাকাতেইতো আজ মানুষের এ বেহাল দশা।

এইত রোযা আসছে। আসছে কুরআনের দিন। সবাই কুরআন পড়বে। কিন্তু কি যে পড়বে? কত মানুষতো কুরআন পড়তেই জানেনা। বাংলা বা ইংরেজি প্রতিবর্ণায়নে কুরআন পড়ে। এই কুরআনতো আল্লাহ রব্বুল য়ালামীন নাযিল করেন নাই। কি লাভ হবে বলেন? এ’ দুনিয়ায় সব কিছু শিখলাম। ডাক্তার হলাম। ইঞ্জিনিয়ার হলাম। বিজ্ঞানী হলাম। কিন্তু আল্লাহর কালাম শিখার সময় হলোনা। কবে বুড়ো হবে তার আশায় বসে থাকে। যখন আর কোন কূল কিনারা নাই, রিটায়ার্ড পার্সন, ডাক্তার এক কাপ ভাত আর আধা চামচ সব্জির অর্ডার দিয়ে দিয়েছে তখন মসজিদে যায়, কুরআন নিয়ে বসে। তালিমে বসে। হাদিসের দরসে বসে। অথচ আল্লাহতায়ালা যৌবন বয়সের ইবাদাত পছন্দ করেন।

তাই আমার যুবক ভাই বোন বন্ধুরা। সমাজের জ্ঞানী গুণিরা। বৃদ্ধ মুরব্বিরা। আসুন আমরা কুরআন শিখি। আল্লাহর রহমতের সাথে থাকি। আল্লাহতায়ালা আমাদের যে সম্পদ দিয়েছেন তার একটা অংশ কুরআন শিক্ষার জন্য ব্যায় করি। এজন্য য়ালেম ওলামাদের কাছে ধর্না দেই। তাদের খেদমতে গিয়ে নিজে কুরআন শিক্ষার ব্যবস্থা করি। বাচ্চাদেরকে কুরআন শিক্ষা দেই। দক্ষ হাফেজা য়ালেমা দ্বারা মা-বোনদেরকে কুরআন শিক্ষার ব্যবস্থা করে দেই। ভাই আপনার স্ত্রী সন্তান, আপনার মা বোন তাদেরকে দ্বীনের ওপর চলার ব্যবস্থাতো আপনাকেই করে দিতে হবে।

আসুন আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করি এই রমযান আসার পূর্বেই যেন আমরা কুরআন শিক্ষার জন্য সময় ও অর্থ ব্যায় করতে প্রস্তুত হই। এজন্য আল্লাহ যেন আমাদেরকে দ্বীনের জন্য কবুল করেন। আমাদেরকে কোন একটা সহজ পথ দেখিয়ে দিন। পরম করুণাময় আল্লাহর কাছে এই প্রার্থনা করি। আমিন।


[দ্বীনের কথাকে ছড়িয়ে দিন সাধ্যমত। হয়ত পরবর্তীরা পূর্ববর্তীদের থেকেও ভাল স্মরণ রাখতে পারবে। হয়ত আপনার একটা ক্লিকে কেউ আগ্রহী হবে দ্বীনের ওপর চলতে। কুরআন শিক্ষা করতে। পৃথিবীটা কত সুন্দর হবে। এই সুন্দর পৃথিবীতে আপনার ছেলেমেয়েরা কত শান্তিতে থাকবে।]
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০১৪ ভোর ৬:৪১
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×